10-10-2021, 09:00 AM
Update 2
আজ সুচির অন্য কলেজে প্রথম দিন । দিদির পরামর্শে কমার্স স্ট্রিম নিয়ে ভর্তি হয়েছে সে । সোসাইটির গেট পর্যন্ত আকাশ আর সুচি একসাথে গিয়ে , সুচি একটা অটো ধরলো আর আকাশ হেটে কলেজের রাস্তা ধরলো। যাওয়ার আগে অবশ্য সুচি আকাশকে সাবধান করতে ভুলে গেল না “ ওইসব ছেলেদের সাথে মিশবি না কিন্তু ! „
আকাশ একটু হেসে কোন জবাব না দিয়ে ফুটপাত দিয়ে হাটতে শুরু করলো। ওইসব ছেলেদের সাথে মেশার কোন ইচ্ছাই ছিল না আকাশের। কিন্তু সেদিন বিপ্লব বিচ্ছু চোখ দুটো বড়ো বড়ো করে বলেছিলো “ ওদের মোবাইলে অনেক ভিডিও আছে । „
“ কিসের ভিডিও ? „ আকাশ খুব অবাক হয়েছিল বিপ্লবের কথাটা শুনে।
“ ওই বড়রা নিজেদের মধ্যে যা করে । „
“ কি করে ? „ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করেছিল আকাশ।
“ ও দেখলেই বুঝবি। খুব মজার জিনিস । „ কথাটা বিপ্লব এমনভাবে বলেছিল যে আকাশের ইচ্ছা হয়েছিল সেইসব ভিডিও দেখতে। তাই বিপ্লব নিয়ে গিয়েছিল ক্লাস নাইনের দাদার কাছে। সেই দাদা হেসে বলেছিল “ শনিবার তো হাফডে হয়। কলেজের পর দেখাবো। „
শনিবারে ভিডিও দেখার আগেই সুচি এমন ভাবে বকলো যে আর ওদের আশেপাশে যায়নি আকাশ---- ‘ কিন্তু এখন আবার দেখতে ইচ্ছা করছে কি এমন আছে ওই ভিডিও তে। কিন্তু এতদিন পর হঠাৎ আবার দেখতে চাইলে কি দেখাবে ! ‚ এই সঙ্কোচে আকাশ আর ওই দাদাদের কাছে গেল না ।
কলেজে গিয়ে , ক্লাসরুমে বসে এই প্রথম মেয়েদের সংখ্যা গুনতে শুরু করলো । মোট বিয়াল্লিশ জন ছাত্রছাত্রী আছে ওর ক্লাসে। আর তার মধ্যে সতেরো জন মেয়ে। একজনকেও তেমন সুন্দর দেখতে লাগলো না আকাশের। মেয়েদের সংখ্যা গুনতে গুনতে কয়েকজনের মুখ প্রথম দেখলো সে ‘ আরে ! একে তো আগে কখনো দেখিনি ! আমাদের সাথেই পড়তো ? ‚
পাশে বসে থাকা বিপ্লব অনেকক্ষণ ধরে আকাশ কে দেখছিল। কিছুক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে আকাশের কপালের ভ্রুকুটি দেখে প্রশ্নটা করেই ফেললো সে “ কি দেখছিস বলতো তখন থেকে ? „
“ ওই মেয়েটাকে আগে তো কখনো দেখিনি । „ আঙুল তুলে একটা মেয়ের দিকে দেখালো আকাশ।
বিপ্লব আকাশের আঙুল সোজা তাকিয়ে মেয়েটাকে দেখে বললো “এরমধ্যে ভুলে গেলি ! ওই মেয়েটাই তো আগের সপ্তাহ বুধবার সিড়িতে তোর সাথে ধাক্কা খেলো। „ কথাটা শুনে আকাশ বিপ্লবের দিকে তাকালো ---‘ সত্যি তো এই মেয়েটাই তো মনে হচ্ছে। এতক্ষণ চিনতে পারছিলাম না কেন ? ‚
কিন্তু আজকেই কেন সে মেয়েদের দিকে তাকাচ্ছে সেটা বুঝলো না। হয়তো সুচির কড়া নজরদারি আর নেই তাই । হঠাৎ মুক্তির হাওয়া গায় লাগলো তাই। কিংবা বিগত কয়েক মাসের ঘটনা তাকে কিশোর থেকে যুবকে পরিনত হতে সাহায্য করছে তাই।
কলেজ থেকে ফেরার সময় একা একা ফুটপাত দিয়ে হাটার সময় নিজেকে খুব মুক্ত লাগতে শুরু করলো । আগে এই ধরনের কোন অনুভূতি হয়নি। এখন খাটে শুয়ে সিলিংয়ে ঝুলতে থাকা পাখার দিকে তাকিয়ে নিজের ভূত-ভবিষ্যৎ ভাবতে ইচ্ছা করে। আগে দিদিমাকে জড়িয়ে ধরে খুব শীঘ্র ঘুম চলে আসতো। আর ঘুমটাও হতো খুব সুন্দর আর মিষ্টি ।
সুচি কলেজ থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে খেয়েদেয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে জয়শ্রীর সাথে সোসাইটির পার্কের বেঞ্চে এসে বসলো । কিছুক্ষণ পর আকাশ এসে যোগ দিলে সুচি বললো “ আজ ক্রিকেট খেলবি না ? „
“ প্লেয়ার কম তাই খেলছে না। সৈকত দা গেছে সৈকত দেখতে। „
আকাশের কথায় সুচি আর জয়শ্রী দুজনেই হেসে উঠলো। তারপর সুচি বললো “ ওদের সাথে মিশিশ নি তো ! „
মাথা নিচু করে মাটিতে গজিয়ে ওঠা সবুজ ঘাস দেখতে দেখতে বেশ শান্ত স্বরে আকাশ বললো “না । „ আকাশের কথায় সুচির ঠোটের কোনায় একটা বিজয়ের হাসির রেখা দিল।
রাতে খাটে শুয়ে স্নেহা দেবী আকাশের বাবাকে বললেন “ মা চলে যাওয়ার পর থেকে ওকে একটু বেশি চুপচাপ দেখছি । আগের থেকে অনেক শান্ত হয়ে গেছে । খুব চিন্তা হচ্ছে আমার.......
স্ত্রী কথা শেষ হওয়ার আগে আকাশের বাবা বললেন “ মায়ের মৃত্যু ওকে একা করেছে এটা ঠিক। কিন্তু এই বয়সটাই তো মানসিকভাবে বেড়ে ওঠার বয়স। চরিত্র গঠন হওয়ার সময়.....
এবার আকাশের মা স্বামী কথার মাঝে বলে উঠলেন “ যদি খারাপ কিছু......
“ অযথা চিন্তা করো না। আমাদের ছেলে এরকম কোন কিছু করবে না। এখন ও কোনটা ভুল কোনটা ঠিক সেটা বুঝছে । ভালো খারাপ নিয়েই জীবন। চিন্তা করো না। ওকে একটু সময় দাও। আমি তো সারাদিন বাড়িতে থাকি না। ওর খোঁজ খবরও নিতে পারি না। তুমি ওর একটু আশেপাশে থাকো.....
স্বামীর কথায় স্নেহা দেবী তেমন আশ্বস্ত হতে পারলেন না। তাই ছেলেকে একটু বেশি খেয়াল রাখার চিন্তা করতে লাগলেন।
মা যে তার জন্য চিন্তিত সেটা আকাশ খুব ভালো ভাবে অনুভব করতে পারলো। কিন্তু প্রথমে সুচি তারপর মায়ের এই হঠাৎ এতো নজরে রাখার কারন সে বুঝতে পারলো না। তাই পরের কয়েকটা মাস আকাশ একা কলেজ , টিউশন গিয়ে আর পড়াশোনার মধ্যে দিয়েই কাটাতে লাগলো। রাতে শুয়ে ভবিষ্যতে কি করবে ভাবতে লাগলো। কয়েকবার ভাবলো ---- ‘ বাবার ব্যাবসাকে আরও বড়ো করে দেশবিদেশে ছড়িয়ে দেবে আর পাশাপাশি সিনেমা বানাবে। তারপর একটা পছন্দ মতো নায়িকাকে বিয়ে করবে। ‚ এই চিন্তা বাদ দিতে হলো কারন ‘ নায়িকাদের অনেক অ্যাফেয়ার্স থাকে আর তাড়াতাড়ি ডিভোর্স ও হয়ে যায়। ‚
কয়েকদিন ভাবলো---- ‘ প্রেম করতে হবে। আমাদের ক্লাসে তো কোন মেয়ে নেই প্রেম করার মতো । কলেজে উঠে প্রেম করতে হবে। প্রেম করা দরকার। কিন্তু কলেজ তো এখনও পাঁচ ছয় বছর পরে। ‚ পরমুহুর্তেই আবার ভাবলো----- ‘ প্রেম আর বিয়ের দেরী আছে। আগে ব্যাবসা করতে হবে। নিজের একটা প্রাইভেট এরোপ্লেন কিংবা জেট থাকলে কেমন হয় ! কি সুন্দর সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়াবো । ‚
আজ সুচির অন্য কলেজে প্রথম দিন । দিদির পরামর্শে কমার্স স্ট্রিম নিয়ে ভর্তি হয়েছে সে । সোসাইটির গেট পর্যন্ত আকাশ আর সুচি একসাথে গিয়ে , সুচি একটা অটো ধরলো আর আকাশ হেটে কলেজের রাস্তা ধরলো। যাওয়ার আগে অবশ্য সুচি আকাশকে সাবধান করতে ভুলে গেল না “ ওইসব ছেলেদের সাথে মিশবি না কিন্তু ! „
আকাশ একটু হেসে কোন জবাব না দিয়ে ফুটপাত দিয়ে হাটতে শুরু করলো। ওইসব ছেলেদের সাথে মেশার কোন ইচ্ছাই ছিল না আকাশের। কিন্তু সেদিন বিপ্লব বিচ্ছু চোখ দুটো বড়ো বড়ো করে বলেছিলো “ ওদের মোবাইলে অনেক ভিডিও আছে । „
“ কিসের ভিডিও ? „ আকাশ খুব অবাক হয়েছিল বিপ্লবের কথাটা শুনে।
“ ওই বড়রা নিজেদের মধ্যে যা করে । „
“ কি করে ? „ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করেছিল আকাশ।
“ ও দেখলেই বুঝবি। খুব মজার জিনিস । „ কথাটা বিপ্লব এমনভাবে বলেছিল যে আকাশের ইচ্ছা হয়েছিল সেইসব ভিডিও দেখতে। তাই বিপ্লব নিয়ে গিয়েছিল ক্লাস নাইনের দাদার কাছে। সেই দাদা হেসে বলেছিল “ শনিবার তো হাফডে হয়। কলেজের পর দেখাবো। „
শনিবারে ভিডিও দেখার আগেই সুচি এমন ভাবে বকলো যে আর ওদের আশেপাশে যায়নি আকাশ---- ‘ কিন্তু এখন আবার দেখতে ইচ্ছা করছে কি এমন আছে ওই ভিডিও তে। কিন্তু এতদিন পর হঠাৎ আবার দেখতে চাইলে কি দেখাবে ! ‚ এই সঙ্কোচে আকাশ আর ওই দাদাদের কাছে গেল না ।
কলেজে গিয়ে , ক্লাসরুমে বসে এই প্রথম মেয়েদের সংখ্যা গুনতে শুরু করলো । মোট বিয়াল্লিশ জন ছাত্রছাত্রী আছে ওর ক্লাসে। আর তার মধ্যে সতেরো জন মেয়ে। একজনকেও তেমন সুন্দর দেখতে লাগলো না আকাশের। মেয়েদের সংখ্যা গুনতে গুনতে কয়েকজনের মুখ প্রথম দেখলো সে ‘ আরে ! একে তো আগে কখনো দেখিনি ! আমাদের সাথেই পড়তো ? ‚
পাশে বসে থাকা বিপ্লব অনেকক্ষণ ধরে আকাশ কে দেখছিল। কিছুক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে আকাশের কপালের ভ্রুকুটি দেখে প্রশ্নটা করেই ফেললো সে “ কি দেখছিস বলতো তখন থেকে ? „
“ ওই মেয়েটাকে আগে তো কখনো দেখিনি । „ আঙুল তুলে একটা মেয়ের দিকে দেখালো আকাশ।
বিপ্লব আকাশের আঙুল সোজা তাকিয়ে মেয়েটাকে দেখে বললো “এরমধ্যে ভুলে গেলি ! ওই মেয়েটাই তো আগের সপ্তাহ বুধবার সিড়িতে তোর সাথে ধাক্কা খেলো। „ কথাটা শুনে আকাশ বিপ্লবের দিকে তাকালো ---‘ সত্যি তো এই মেয়েটাই তো মনে হচ্ছে। এতক্ষণ চিনতে পারছিলাম না কেন ? ‚
কিন্তু আজকেই কেন সে মেয়েদের দিকে তাকাচ্ছে সেটা বুঝলো না। হয়তো সুচির কড়া নজরদারি আর নেই তাই । হঠাৎ মুক্তির হাওয়া গায় লাগলো তাই। কিংবা বিগত কয়েক মাসের ঘটনা তাকে কিশোর থেকে যুবকে পরিনত হতে সাহায্য করছে তাই।
কলেজ থেকে ফেরার সময় একা একা ফুটপাত দিয়ে হাটার সময় নিজেকে খুব মুক্ত লাগতে শুরু করলো । আগে এই ধরনের কোন অনুভূতি হয়নি। এখন খাটে শুয়ে সিলিংয়ে ঝুলতে থাকা পাখার দিকে তাকিয়ে নিজের ভূত-ভবিষ্যৎ ভাবতে ইচ্ছা করে। আগে দিদিমাকে জড়িয়ে ধরে খুব শীঘ্র ঘুম চলে আসতো। আর ঘুমটাও হতো খুব সুন্দর আর মিষ্টি ।
সুচি কলেজ থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে খেয়েদেয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে জয়শ্রীর সাথে সোসাইটির পার্কের বেঞ্চে এসে বসলো । কিছুক্ষণ পর আকাশ এসে যোগ দিলে সুচি বললো “ আজ ক্রিকেট খেলবি না ? „
“ প্লেয়ার কম তাই খেলছে না। সৈকত দা গেছে সৈকত দেখতে। „
আকাশের কথায় সুচি আর জয়শ্রী দুজনেই হেসে উঠলো। তারপর সুচি বললো “ ওদের সাথে মিশিশ নি তো ! „
মাথা নিচু করে মাটিতে গজিয়ে ওঠা সবুজ ঘাস দেখতে দেখতে বেশ শান্ত স্বরে আকাশ বললো “না । „ আকাশের কথায় সুচির ঠোটের কোনায় একটা বিজয়ের হাসির রেখা দিল।
রাতে খাটে শুয়ে স্নেহা দেবী আকাশের বাবাকে বললেন “ মা চলে যাওয়ার পর থেকে ওকে একটু বেশি চুপচাপ দেখছি । আগের থেকে অনেক শান্ত হয়ে গেছে । খুব চিন্তা হচ্ছে আমার.......
স্ত্রী কথা শেষ হওয়ার আগে আকাশের বাবা বললেন “ মায়ের মৃত্যু ওকে একা করেছে এটা ঠিক। কিন্তু এই বয়সটাই তো মানসিকভাবে বেড়ে ওঠার বয়স। চরিত্র গঠন হওয়ার সময়.....
এবার আকাশের মা স্বামী কথার মাঝে বলে উঠলেন “ যদি খারাপ কিছু......
“ অযথা চিন্তা করো না। আমাদের ছেলে এরকম কোন কিছু করবে না। এখন ও কোনটা ভুল কোনটা ঠিক সেটা বুঝছে । ভালো খারাপ নিয়েই জীবন। চিন্তা করো না। ওকে একটু সময় দাও। আমি তো সারাদিন বাড়িতে থাকি না। ওর খোঁজ খবরও নিতে পারি না। তুমি ওর একটু আশেপাশে থাকো.....
স্বামীর কথায় স্নেহা দেবী তেমন আশ্বস্ত হতে পারলেন না। তাই ছেলেকে একটু বেশি খেয়াল রাখার চিন্তা করতে লাগলেন।
মা যে তার জন্য চিন্তিত সেটা আকাশ খুব ভালো ভাবে অনুভব করতে পারলো। কিন্তু প্রথমে সুচি তারপর মায়ের এই হঠাৎ এতো নজরে রাখার কারন সে বুঝতে পারলো না। তাই পরের কয়েকটা মাস আকাশ একা কলেজ , টিউশন গিয়ে আর পড়াশোনার মধ্যে দিয়েই কাটাতে লাগলো। রাতে শুয়ে ভবিষ্যতে কি করবে ভাবতে লাগলো। কয়েকবার ভাবলো ---- ‘ বাবার ব্যাবসাকে আরও বড়ো করে দেশবিদেশে ছড়িয়ে দেবে আর পাশাপাশি সিনেমা বানাবে। তারপর একটা পছন্দ মতো নায়িকাকে বিয়ে করবে। ‚ এই চিন্তা বাদ দিতে হলো কারন ‘ নায়িকাদের অনেক অ্যাফেয়ার্স থাকে আর তাড়াতাড়ি ডিভোর্স ও হয়ে যায়। ‚
কয়েকদিন ভাবলো---- ‘ প্রেম করতে হবে। আমাদের ক্লাসে তো কোন মেয়ে নেই প্রেম করার মতো । কলেজে উঠে প্রেম করতে হবে। প্রেম করা দরকার। কিন্তু কলেজ তো এখনও পাঁচ ছয় বছর পরে। ‚ পরমুহুর্তেই আবার ভাবলো----- ‘ প্রেম আর বিয়ের দেরী আছে। আগে ব্যাবসা করতে হবে। নিজের একটা প্রাইভেট এরোপ্লেন কিংবা জেট থাকলে কেমন হয় ! কি সুন্দর সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়াবো । ‚