07-10-2021, 03:44 PM
জয় কলেজ জীবনে বাবা মাকে প্রস্তাব দিয়েছিলো কুহুর সাথে বিয়ের জন্যে। রক্ষনশীল পরিবার হিসেবে প্রথমে সেই প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়। পরে জয়ের প্রবল ইচ্ছায় পরিবারের প্রথা অনুযায়ী কুলপুরোহিতের সাথে তাদের বিবাহ নিয়ে বিচার বিনিময় করা হয়। দুর্ভাগ্যবশত জয়ের কুষ্ঠিতে তার প্রথম পক্ষের স্ত্রীর মৃত্যুযোগ ধরা পড়ে। জয়-কুহু নামের জুড়িতেও দোষ খুঁজে পাওয়া যায়। সাথে কুল পুরোহিত জানায় যে এই দোষ কাটানোর কোনো উপায় নেই শাস্ত্রে। তাকে এই পরিণতি স্বীকার করতেই হবে। শাস্ত্রে বিশ্বাসী জয় সেদিন কুহুর জীবন রক্ষার তাগিদে তার ভালোবাসাকে বিসর্জন দেবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কুহুকে সেদিন সেকথা বোঝানো সম্ভব ছিল না। তাই তার প্রতি বিদ্বেষ তৈরী করার জন্যে কুহুর সাথে সে দুর্ব্যবহার করে। পরবর্তী কালে কুলের প্রদীপ রক্ষার খাতিরে সুমন্ত্রকে বাবা মা বিয়ে দেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কুলপুরোহিতের গণনা অনুযায়ী তার স্ত্রী ভাগ্যের পরিহাসের শিকার হয়, জয় শেষপর্যন্ত তার স্ত্রী কে হারায়। জয় আজ স্ত্রী বিয়োগের বেদনার মধ্যেও যেনো কুহুর জীবন রক্ষার তৃপ্তি অনুভব করে। স্ত্রীকে হারানোর ঘটনাটা সে পূর্বনির্ধারিত পরিণাম হিসেবে গ্রহণ করে নেয়। সময়ের সাথে জয়ের নতুন করে আশার সঞ্চার হয় কুহুর কাছে ফেরার। কিন্তু কুলপুরোহিতের গণনা অনুযায়ী এখনো অন্তরায় থেকে যায় তাদের 'নামের জুড়ির' দোষে। সাথে দূর করতে হবে তার প্রতি কুহুর বিদ্বেষ ভাবও। দুই সমস্যার সমাধান সুত্র বের হয় নিজের নাম পরিবর্তন করে 'সুমন্ত্র' নাম নেয়া, আর প্লাস্টিক সার্জারি করে নিজের পরিচয় পরিবর্তন করার মধ্যে। লোকসমক্ষে দুটি পরিবর্তনকে গ্রহণযোগ্য করতে জয় দুটো আলাদা গল্প তৈরী করে। এইভাবে কুহুকে নতুন করে জয় করার অভিপ্রায়ে জয় গ্রহণ করে নতুন রূপ আর নতুন নাম।।
শান্তনুর কথা শেষ হতে হতে কুহুর গলা বিষাদে শুকিয়ে আসে। ওর চোখ দুটো জলে ভারী হয়ে যায়। কন্ঠ রুদ্ধ হয়ে গিয়ে ভাষা হারিয়ে ফেলে। তারই জীবন রক্ষার তাগিদে যে জয় আজ এতো বড়ো আত্মত্যাগ করেছে সেই জয় কেই কিনা সে এতোদিন ঘৃণা করে এসেছে। সে যেনো নিজেকে আর ক্ষমা করে উঠতে পারে না। আর সময় নষ্ট না করে কুহু তৎক্ষণাৎ শান্তিনীড় উদ্দেশে রওনা হয়।।
যেতে যেতে কোনো দূর অচেনা পুরী থেকে যেনো নতুন করে জীবন গড়ার এক সুর ভেসে আসে কুহুর কানে। কুহু যেনো আরো একবার অনুভব করে দেবী কুতেতির আশীর্বাদ। শান্তিনীড়ে সুমন্ত্রর কাছে গিয়ে সে ক্ষমা প্রার্থনা করে। পুনরায় কুহুকে আসতে দেখে বিস্মিত হয় সুমন্ত্র। পরক্ষণে সে বুঝে নেয় ঘটনাক্রম। লজ্জিত হয় কুহুর কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা শুনে। যে কুহুর কাছে এতোদিন সে ছিল এক লাঞ্চনা আর ঘৃণার পাত্র আজ হঠাত করে সে শ্রদ্ধা আর সম্মানের ব্যক্তি হয়ে ওঠে। সুমন্ত্র তাকে বসার জন্যে অনুরোধ জানায়। কুহু সুমন্ত্রর চোখে চোখ রাখে, আর দুজনে মিলিয়ে যায় এক স্বপ্নের দেশে। ওদের চোখের পলক স্তব্ধ হয়ে যায়। নীরব হয়ে যায় ওদের বাক, স্তব্ধ হয়ে যায় ওদের শ্বাস। ওদের বুকে আজ অভিমান আছে কিন্তু নেই কোনো অভিযোগ। এইভাবে দীর্ঘ সময় ধরে হারিয়ে যাওয়া দিন গুলোকে নতুন ভাবে ওরা সুদে আসলে উপভোগ করে নিতে থাকে। ওরা আজ যেনো বয়সের সীমা আর জন্মের বন্ধন কে পরাস্ত করে উন্মত্ত হয়ে ওঠে অষ্টাদশের লীলায়। নতুন আলোর ছটায় যেনো আজ দিগন্ত রঙিন হয়ে গেছে। সংকল্পের পূর্ণতার ছোঁয়ায় আজ যেনো তাদের সত্তা সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। আজ এক নতুন আকাশের নীচে যেনো ওদের পুনর্জন্ম হয়েছে। চোখের ভাষাতেই আজ ওরা বাকি জীবন একসাথে কাটানোর অনুচ্চারিত সম্মতি প্রকাশ করেছে। সুমন্ত্র কুহুর পাশে বসে তার হাতদুটি ধরে। পুরোনো রঙের স্পর্শে ধন্য হয়ে যায় তাদের প্রৌঢ় প্রেম। আজ মা কুতেতিকে সাক্ষী রেখে গান্ধর্ব মতে তারা জুড়ে নেয় দুটি মন।।
কুহুর অনুরোধে কবিতাকে জীবন সঙ্গীনী বানিয়ে শান্তনু আজ সুখের সংসার বেঁধেছে আশা নিকেতনে। আর কুহু সুমন্ত্রর সাথে ফিরে গেছে তাদের স্বপ্নের রাজপ্রসাদ শান্তিনীড়ে। কবিতা আর কুহুর সুশ্রূষায় শান্তনু আর সুমন্ত্র আজ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছে। খুশী তার মা পেয়েছে, শান্তনু তার কবিতা, আর কুহু ফিরে পেয়েছে তার প্রথম প্রেম।।
-------------------------------------
শান্তনুর কথা শেষ হতে হতে কুহুর গলা বিষাদে শুকিয়ে আসে। ওর চোখ দুটো জলে ভারী হয়ে যায়। কন্ঠ রুদ্ধ হয়ে গিয়ে ভাষা হারিয়ে ফেলে। তারই জীবন রক্ষার তাগিদে যে জয় আজ এতো বড়ো আত্মত্যাগ করেছে সেই জয় কেই কিনা সে এতোদিন ঘৃণা করে এসেছে। সে যেনো নিজেকে আর ক্ষমা করে উঠতে পারে না। আর সময় নষ্ট না করে কুহু তৎক্ষণাৎ শান্তিনীড় উদ্দেশে রওনা হয়।।
যেতে যেতে কোনো দূর অচেনা পুরী থেকে যেনো নতুন করে জীবন গড়ার এক সুর ভেসে আসে কুহুর কানে। কুহু যেনো আরো একবার অনুভব করে দেবী কুতেতির আশীর্বাদ। শান্তিনীড়ে সুমন্ত্রর কাছে গিয়ে সে ক্ষমা প্রার্থনা করে। পুনরায় কুহুকে আসতে দেখে বিস্মিত হয় সুমন্ত্র। পরক্ষণে সে বুঝে নেয় ঘটনাক্রম। লজ্জিত হয় কুহুর কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা শুনে। যে কুহুর কাছে এতোদিন সে ছিল এক লাঞ্চনা আর ঘৃণার পাত্র আজ হঠাত করে সে শ্রদ্ধা আর সম্মানের ব্যক্তি হয়ে ওঠে। সুমন্ত্র তাকে বসার জন্যে অনুরোধ জানায়। কুহু সুমন্ত্রর চোখে চোখ রাখে, আর দুজনে মিলিয়ে যায় এক স্বপ্নের দেশে। ওদের চোখের পলক স্তব্ধ হয়ে যায়। নীরব হয়ে যায় ওদের বাক, স্তব্ধ হয়ে যায় ওদের শ্বাস। ওদের বুকে আজ অভিমান আছে কিন্তু নেই কোনো অভিযোগ। এইভাবে দীর্ঘ সময় ধরে হারিয়ে যাওয়া দিন গুলোকে নতুন ভাবে ওরা সুদে আসলে উপভোগ করে নিতে থাকে। ওরা আজ যেনো বয়সের সীমা আর জন্মের বন্ধন কে পরাস্ত করে উন্মত্ত হয়ে ওঠে অষ্টাদশের লীলায়। নতুন আলোর ছটায় যেনো আজ দিগন্ত রঙিন হয়ে গেছে। সংকল্পের পূর্ণতার ছোঁয়ায় আজ যেনো তাদের সত্তা সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। আজ এক নতুন আকাশের নীচে যেনো ওদের পুনর্জন্ম হয়েছে। চোখের ভাষাতেই আজ ওরা বাকি জীবন একসাথে কাটানোর অনুচ্চারিত সম্মতি প্রকাশ করেছে। সুমন্ত্র কুহুর পাশে বসে তার হাতদুটি ধরে। পুরোনো রঙের স্পর্শে ধন্য হয়ে যায় তাদের প্রৌঢ় প্রেম। আজ মা কুতেতিকে সাক্ষী রেখে গান্ধর্ব মতে তারা জুড়ে নেয় দুটি মন।।
কুহুর অনুরোধে কবিতাকে জীবন সঙ্গীনী বানিয়ে শান্তনু আজ সুখের সংসার বেঁধেছে আশা নিকেতনে। আর কুহু সুমন্ত্রর সাথে ফিরে গেছে তাদের স্বপ্নের রাজপ্রসাদ শান্তিনীড়ে। কবিতা আর কুহুর সুশ্রূষায় শান্তনু আর সুমন্ত্র আজ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছে। খুশী তার মা পেয়েছে, শান্তনু তার কবিতা, আর কুহু ফিরে পেয়েছে তার প্রথম প্রেম।।
-------------------------------------