Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.15 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Non-erotic সম্পর্কের আলোয় ---- কুন্তল ঘোষ
#5
একদিন কুহুর সাথে এক অদ্ভূত ঘটনা ঘটে অনতিদূরে কুতেতি দেবী মন্দিরের দেবী কুতেতি কুহুকে স্বপ্নাদেশ দিলেন তাঁর কাছে আসার জন্য কুতেতি দেবী মা দুর্গার আর এক রূপ তাই ভগবানে গভীর বিশ্বাসী কুহু প্ল্যান করে আশ্রমের সমস্ত বাচ্ছাদের নিয়ে যাবে দেবীর দর্শন করতে আর ঠিক হলো দর্শন শেষে বাচ্ছাদের নিয়ে পিকনিক করা হবে মন্দির প্রাঙ্গণে গঙ্গার তীরে অবস্থিত এই মনোরম মন্দির আশা-নিকেতন থেকে কিলোমিটার দূরে শাস্ত্রমতে দেবীর স্বপ্নাদেশে মন্দিরটি স্থাপনা করেছিলেন কোটার মহারাজার মেয়ে জামাই দেবীর এবার পুনরায় স্বপ্নাদেশ, তাই কুহু খুব উত্তেজিত আর সাথে একটু উদ্বিগ্নও কে জানে কি আশীর্বাদ দেবেন দেবী কুতেতি? আবার মনে সংশয় হয় যে দেবী কোনো কারণে তার ওপর রুষ্ট হোননি তো? এদিকে আশা-নিকেতনের ক্ষুদে অতিথিরাও সমান ভাবে উত্তেজিত আজ প্রথম সবাই মিলে পিকনিকে যাবে।।

 
পরিকল্পনা মতো সকাল সকাল বাচ্ছাদের নিয়ে কুহুরা পৌঁছে গেলো দেবীর মন্দিরে প্রথমে দেবীর কাছে কুহু সমস্ত বাচ্ছাদের মঙ্গল কামনা করল সাথে কৃতজ্ঞতা জানালো নতুন করে পথ চলার শক্তি প্রদানের তারপর কিছু একটা চাইতে গিয়েও যেনো মনের অন্তরাল থেকে থমকে গেলো কে জানে দেবী কুতেতি কুহুর না চাইতে পারা সেই প্রার্থনাটা শুনে ফেলেছেন কিনা? তারপর সকালের আরতির সময় হয়ে এসেছে শান্তিনীড় ছাড়ার পর প্রায় এক বছর হয়ে গেছে কুহু আরতি করেনি তাই 'জয় অম্বে গৌরী...' সুরের মাঝে সে আজ হারিয়ে গেছে শান্তিনীড়ের সন্ধ্যায়, তার হারিয়ে আসা অতীতের মধ্যে আরতির মাঝে সে অনুভব করলো দেবী কুতেতির আশীর্বাদ মনে হলো সাক্ষাত দেবী যেনো উপস্থিত হয়ে তাকে প্রদান করলেন হারিয়ে যাওয়া অতীতকে ফিরিয়ে দেবার প্রতিশ্রুতি।।
 
যাই হোক মন্দিরে পূজোর শেষে এবার ক্ষুদে দের নিয়ে পিকনিকের পর্ব একদিকে রান্নার জন্যে তোড়জোড় শুরু হয়েছে আশা-নিকেতন থেকে রাঁধুনিরা এসেছে রান্না করার জন্য কুহু আর কবিতাও শুরুতে একটু কাজকর্ম গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত আর ক্ষুদে গুলো সব মন্দির প্রাঙ্গণে খেলায় মত্ত একি অঘটন ঘটে গেলো হঠাত? ছোট্ট খুশী খেলতে খেলতে পাহাড়ের ধাপ থেকে নীচে পড়ে গেছে খুব জোরে মাথায় ব্যথা পেয়েছে পাথরের কোনে লেগে বেশ গভীর ভাবে মাথাটা কেটে গেছে, সেখান থেকে ঝরঝর করে রক্ত পড়ছে খুশীর এই অবস্থা দেখে কুহু কিংকর্তব্যবিমূঢ়  হয়ে গেছে কবিতা অবস্থার সামাল দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করে তারপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরকাশির জেলা হাসপাতালে তাহলে কি শেষপর্যন্ত দুঃস্বপ্ন সত্যি হলো? দেবী কুতেতি তাহলে কি রুষ্ট হয়ে কুহুকে এখানে ডেকে এনেছেন? কিছু ভেবে উঠতে পারে না কুহু শুধু দেবী কুতেতির কাছে মনে মনে প্রার্থনা করে যেনো ছোট্ট খুশীর কোনো ক্ষতি না হয় কিছুক্ষণের মধ্যে ডাক্তার এসে সিটি স্ক্যান করেন আর বলেন মাথার চোট টা বাহ্যিক, ভিতরে কোনো ক্ষতি হয়নি ঠোঁটের কোণে একটা মৃদু হাসি ফুটে ওঠে কুহুর আর পরক্ষণেই চোখ দুটো ভিজে যায় আনন্দের অশ্রু ধারায় মনে মনে কুতেতি মাতাকে জানায় শ্রদ্ধাপূর্ণ কৃতজ্ঞতা।।
 
দুইদিন হাসপাতালে থেকে খুশী আজ সুস্থ হয়ে আশ্রমে ফিরবে তার মাঝে এলো আরো এক খুশির সংবাদ খুশী হাসপাতাল থেকে বের হয়ে কুহুকে জড়িয়ে ধরে খুব আদর করছে ওর ছোটো বেলার স্মৃতি ফিরে এসেছে ওর মনে পরে গেছে ওর বাবা মা আর বাড়ির সব কথা সেই দ্বৈত খুশিতে আজ উদ্ভাসিত আশানিকেতনের আকাশ বাতাস কিন্ত কুহুর কাছে এক নতুন চ্যালেঞ্জ কিভাবে খুশীকে তার বাবা মায়ের খবরটা দেবে তবে এক আশার কিরণ যে খুশী ওর বাবাকে হয়তো একদিন খুঁজে পাবে মনে মনে কুহু আবার প্রণাম জানালো দেবী কুতেতিকে আর প্রতিজ্ঞা করলো যেমন করেই হোক খুশীকে ওর বাবার সাথে মিলিয়ে দিতে হবে।।
 
দিনের শেষে কুহু গিয়ে বসে গঙ্গার ধারের বাঁধানো বেদিতে মনটা যেনো ভোরে আছে তার আনন্দে মনের বিশ্বাস যেনো ক্রমশ দানা বাঁধছে মায়াময়ী দেবী কুতেতির অসীম দিব্যশক্তির প্রতি জীবনের চলার পথটা যেন তিনি অনেকটা সুগম করে দিয়েছেন তাহলে কি শেষে করুণাময়ী দেবী কুহুকে শাপমোচনের বরদান টাও দেবেন? দীপ্ত মন যেনো স্বপ্নের ডানা মেলে দিতে চায় তাকে ফিরে নিয়ে যেতে চায় তার ফেলে আসা অতীতে।।
 

[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সম্পর্কের আলোয় ---- কুন্তল ঘোষ - by ddey333 - 07-10-2021, 03:42 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)