07-10-2021, 03:39 PM
দ্বিতীয় ভাগ
নতুন করে জীবন সাজানোর প্রচেষ্টায় কুহু সিদ্ধান্ত নিল নিজের তত্ত্বাবধানে একটা অনাথ আশ্রম তৈরী করবে। সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে ঠিক হলো আশ্রম তৈরী করবে বাংলা থেকে সহস্র কিলোমিটার দূরে উত্তরকাশিতে, গঙ্গার তীরে। কুহু ভুলে যেতে চায় তার কৃত ভুল আর সাথে মনের গ্লানি। তাই থাকতে চায় না সেই এক আকাশের নীচে, সেই চেনা বাতাসের সংস্পর্শে। আজ ও খুব উদাস, কিন্ত ততোই উদ্দীপ্ত নূতন করে মাথা তোলার অদম্য ইচ্ছায়। তৈরী হলো 'আশানিকেতন' - কুহুর আশা আর ভালোবাসার নতুন ঠিকানা।।
ছোটোবেলার অবাঙ্গালী অন্তরঙ্গ প্রতিবেশীর মেয়ে কবিতা, ঠিককরে জীবন টাকে গুছিয়ে উঠতে পারেনি। ওর মায়ের সঙ্গতেই কুহুর ছোটোবেলায় হিন্দী শেখা। অনেক কষ্টের পরিবারের কবিতা নার্সিং কোর্সে ভর্তি হয়েও শেষ পর্যন্ত পয়সার অভাবে কোর্স সম্পূর্ন করতে পারেনি। অনেক ঘাত প্রতিঘাতের শেষে আজ সেও একা। তাই বিদেশ ভূমিতে সন্তান তুল্য কবিতাকে বেছে নিয়েছে কুহু তার আশানিকেতনের সাথী হিসেবে।।
হিমালয়ের কোলে অদ্ভুত সুন্দর জায়গা এই উত্তরকাশি। ছোটোবেলায় বাবা থাকতে একবার পরিবার সমেত কুহু বেড়াতে এসেছিল গাড়োয়ালের এই মহান সাধনা ভূমিতে। আর তখনই ভালো লাগা এই জায়গার প্রতি। এটি হিমালয়ের একটি অত্যন্ত প্রাচীন তীর্থক্ষেত্র। চারধাম যাত্রায় গঙ্গোত্রী যাবার পথে এটি এক উল্লেখযোগ্য জায়গা। বৈদিক যুগ থেকে অসংখ্য ঋষি মহাঋষি এখানে বিমুক্তকামী হয়ে সাধনা করেছিলেন। পবিত্র এই তীর্থক্ষেত্রকে অর্ধচন্দ্রাকারে বেষ্টন করে বয়ে চলেছে উত্তরবাহিনী গঙ্গা, ভাগীরথী নামে। এই উত্তরকাশীতে জ্যোতির্ধামের রাজাকে বৈদিক ধর্ম পুনস্থাপনের কাজে আত্মনিয়োগ করার উপদেশ দিয়ে বিদায় নিয়েছিলেন আচার্য শঙ্কর।হিমালয়ের কোলে পরিবেশটা এখানে 'শান্তিনীড়' থেকে অনেক বেশী মনোরম। আর তার সাথে কুহু কোনো চেষ্টার ত্রুটি করেনি তাকে আরো অপরূপ করে তুলতে। আশ্রমের ভিতর নদী মুখো এক বিশাল বাগান। নানান ফুলের রাশি দিয়ে কুহু তাকে ইতিমধ্যে সাজিয়ে ফেলেছে। সে ভোলেনি তার 'শান্তিনীড়ে' ফেলে আসা মাধবীলতা আর অপরাজিতাদের। ওদের জন্য আজও কুহুর মন কাঁদে। তার ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে তারা সবাই আজ আশা নিকেতনের বাগানেও স্থান পেয়েছে। তার সাথে আশ্রমের দেয়াল ঘেঁষে পাইন গাছের বেড়া যা কুহুর মতোই মাথা উঁচু করে সারি সারি দাঁড়িয়ে। বাগানের মাঝখানে আশ্রমের বাচ্ছাদের জন্যে খেলার বিভিন্ন সরঞ্জাম। ক্ষুদে অতিথিদের মনোরঞ্জনের জন্য কোনো আয়োজনই ছাড়া হয়নি। আশ্রমের গেট দিয়ে ঢুকেই সামনে আশা-নিকেতনের অফিস ঘর। আর সেই রাস্তা ধরে একটু এগিয়ে গিয়ে সামনে হস্টেল যেখানে সব মিলিয়ে তিরিশ জন ক্ষুদে অতিথির থাকার উপযুক্ত ব্যবস্থা আছে। আশা-নিকেতনের গঠনশৈলীতে যেনো এক অদ্ভুত সামঞ্জস্য আছে কুহুর পুরোনো স্বপ্নের প্রাসাদ 'শান্তিনীড়ের' সাথে। তবে সামনে বরফে ঢাকা হিমালয়ের বেষ্টনি, আর পাশ দিয়ে গঙ্গার খরতর কল্লোল আশা-নিকেতনের পরিবেশকে যেনো আরো মাধুর্য মন্ডিত করে তুলেছে। পূর্ব দিকে নদীর গা ঘেঁষে একটা বাঁধানো বেদি কুহুর বসার জন্য। এখানে বসেই কুহু এখনো ওর স্বপ্নের প্রাসাদ তৈরী করে। কুহু মন থেকে হয়তো আজ সুমন্ত্রকে মুছে ফেলেছে, কিন্তু রয়ে গেছে এক অতৃপ্ত প্রেমিক মন যে আনমনা হয়ে স্বপ্নের ডানা মেলে বারবার উড়ে যায় এক অজানা পুরীর উদ্দেশে। কে যেনো ওকে বারবার পিছু ডাকে ফিরে দেখার।।
নতুন করে জীবন সাজানোর প্রচেষ্টায় কুহু সিদ্ধান্ত নিল নিজের তত্ত্বাবধানে একটা অনাথ আশ্রম তৈরী করবে। সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে ঠিক হলো আশ্রম তৈরী করবে বাংলা থেকে সহস্র কিলোমিটার দূরে উত্তরকাশিতে, গঙ্গার তীরে। কুহু ভুলে যেতে চায় তার কৃত ভুল আর সাথে মনের গ্লানি। তাই থাকতে চায় না সেই এক আকাশের নীচে, সেই চেনা বাতাসের সংস্পর্শে। আজ ও খুব উদাস, কিন্ত ততোই উদ্দীপ্ত নূতন করে মাথা তোলার অদম্য ইচ্ছায়। তৈরী হলো 'আশানিকেতন' - কুহুর আশা আর ভালোবাসার নতুন ঠিকানা।।
ছোটোবেলার অবাঙ্গালী অন্তরঙ্গ প্রতিবেশীর মেয়ে কবিতা, ঠিককরে জীবন টাকে গুছিয়ে উঠতে পারেনি। ওর মায়ের সঙ্গতেই কুহুর ছোটোবেলায় হিন্দী শেখা। অনেক কষ্টের পরিবারের কবিতা নার্সিং কোর্সে ভর্তি হয়েও শেষ পর্যন্ত পয়সার অভাবে কোর্স সম্পূর্ন করতে পারেনি। অনেক ঘাত প্রতিঘাতের শেষে আজ সেও একা। তাই বিদেশ ভূমিতে সন্তান তুল্য কবিতাকে বেছে নিয়েছে কুহু তার আশানিকেতনের সাথী হিসেবে।।
হিমালয়ের কোলে অদ্ভুত সুন্দর জায়গা এই উত্তরকাশি। ছোটোবেলায় বাবা থাকতে একবার পরিবার সমেত কুহু বেড়াতে এসেছিল গাড়োয়ালের এই মহান সাধনা ভূমিতে। আর তখনই ভালো লাগা এই জায়গার প্রতি। এটি হিমালয়ের একটি অত্যন্ত প্রাচীন তীর্থক্ষেত্র। চারধাম যাত্রায় গঙ্গোত্রী যাবার পথে এটি এক উল্লেখযোগ্য জায়গা। বৈদিক যুগ থেকে অসংখ্য ঋষি মহাঋষি এখানে বিমুক্তকামী হয়ে সাধনা করেছিলেন। পবিত্র এই তীর্থক্ষেত্রকে অর্ধচন্দ্রাকারে বেষ্টন করে বয়ে চলেছে উত্তরবাহিনী গঙ্গা, ভাগীরথী নামে। এই উত্তরকাশীতে জ্যোতির্ধামের রাজাকে বৈদিক ধর্ম পুনস্থাপনের কাজে আত্মনিয়োগ করার উপদেশ দিয়ে বিদায় নিয়েছিলেন আচার্য শঙ্কর।হিমালয়ের কোলে পরিবেশটা এখানে 'শান্তিনীড়' থেকে অনেক বেশী মনোরম। আর তার সাথে কুহু কোনো চেষ্টার ত্রুটি করেনি তাকে আরো অপরূপ করে তুলতে। আশ্রমের ভিতর নদী মুখো এক বিশাল বাগান। নানান ফুলের রাশি দিয়ে কুহু তাকে ইতিমধ্যে সাজিয়ে ফেলেছে। সে ভোলেনি তার 'শান্তিনীড়ে' ফেলে আসা মাধবীলতা আর অপরাজিতাদের। ওদের জন্য আজও কুহুর মন কাঁদে। তার ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে তারা সবাই আজ আশা নিকেতনের বাগানেও স্থান পেয়েছে। তার সাথে আশ্রমের দেয়াল ঘেঁষে পাইন গাছের বেড়া যা কুহুর মতোই মাথা উঁচু করে সারি সারি দাঁড়িয়ে। বাগানের মাঝখানে আশ্রমের বাচ্ছাদের জন্যে খেলার বিভিন্ন সরঞ্জাম। ক্ষুদে অতিথিদের মনোরঞ্জনের জন্য কোনো আয়োজনই ছাড়া হয়নি। আশ্রমের গেট দিয়ে ঢুকেই সামনে আশা-নিকেতনের অফিস ঘর। আর সেই রাস্তা ধরে একটু এগিয়ে গিয়ে সামনে হস্টেল যেখানে সব মিলিয়ে তিরিশ জন ক্ষুদে অতিথির থাকার উপযুক্ত ব্যবস্থা আছে। আশা-নিকেতনের গঠনশৈলীতে যেনো এক অদ্ভুত সামঞ্জস্য আছে কুহুর পুরোনো স্বপ্নের প্রাসাদ 'শান্তিনীড়ের' সাথে। তবে সামনে বরফে ঢাকা হিমালয়ের বেষ্টনি, আর পাশ দিয়ে গঙ্গার খরতর কল্লোল আশা-নিকেতনের পরিবেশকে যেনো আরো মাধুর্য মন্ডিত করে তুলেছে। পূর্ব দিকে নদীর গা ঘেঁষে একটা বাঁধানো বেদি কুহুর বসার জন্য। এখানে বসেই কুহু এখনো ওর স্বপ্নের প্রাসাদ তৈরী করে। কুহু মন থেকে হয়তো আজ সুমন্ত্রকে মুছে ফেলেছে, কিন্তু রয়ে গেছে এক অতৃপ্ত প্রেমিক মন যে আনমনা হয়ে স্বপ্নের ডানা মেলে বারবার উড়ে যায় এক অজানা পুরীর উদ্দেশে। কে যেনো ওকে বারবার পিছু ডাকে ফিরে দেখার।।