Thread Rating:
  • 40 Vote(s) - 3.5 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
আদিম কাব্য_ শ্রী অনঙ্গদেব রসতীর্থ
#17
রাতের আহার সমাধা হইলে, আমি দালানে গামছা পাতিয়া শুইতে উদ্যত হইলাম। শৈল এই রাতেরবেলাতেও ঘাট হইতে স্নাত হইয়া আসিল। অন্ধকারে ঠাওর করিলাম, ও এখন সিক্তবসনা। উহার চিরবাসের পশ্চাতে যে উহার সিক্ত যৌবন-দেহ লেপিত হইয়া আছে, তাহাও অনুভব করিলাম। আমার চির অবাধ্য রিপু পুনরায় জাগরুক হইতে চাহিল। কিন্তু নিজের দংশিত বিবেকের শাসন দ্বারা আমি রিপুর পথ রুদ্ধ করিয়া পাশ ফিরিয়া শুইলাম।
কিন্তু অল্পক্ষণ বাদেই শৈল আসিয়া আমাকে ঠেলা দিল: “এ কী! আপনি বাইরে শোবেন নাকি! রাতে হিম পড়বে; ঠাণ্ডা লেগে যাবে যে!”

আমি উঠিয়া বসিলাম। চতুর্দশীর অস্পষ্ট আঁধারে অনুভব করিলাম, শৈল এখনও ভিজা কাপড় ছাড়ে নাই। আমি বলিলাম: “আমি ঘরে শুলে, তুমি কোথায় যাবে? তাছাড়া আমি পরপুরুষ, আর তুমি একা বিধবা। এমনিতেই এখানে রাত কাটালে, লোকে হাজার কথা বলতে পারে। আমি শেষ-রাতে, কেউ কিছু টের পাওয়ার আগেই এখান থেকে চলে যাব।…”

শৈল হঠাৎ আকাশ-বাতাশ কাঁপাইয়া আর্তনাদ করিয়া উঠিল: “চলে যাবেন! তবে এলেন কেন? আমাকে দিয়ে রাঁধিয়ে-বাড়িয়ে এতো সেবা নিলেন কীসের জন্য? সে কী ওই শেষ-রাতে পালানোর জন্য? লোক-লজ্জার জন্য? বার-বার এইভাবে দূর করে দেবেন আমায়!...”

শৈলর শেষের কথা কয়টি শুনিয়া আমার কান-মাথা ঝনঝন করিয়া উঠিল। আমি বার-বার ওকে তাড়াইয়া দিতেছি? এর আগে কবে তাড়াইলাম ওকে আমি? তবে কী সেই সাঁওতাল পরগণার অনামা ডাক-বাংলোয় এসে ওঠা সেদিনের সেই বিপন্ন, সদ্য বিধবা বধূটির মনে আমার জন্য স্থান রচনা হইয়া গিয়াছিল? সদ্য স্বামী হারাইবার দুঃখকে অতিক্রম করিয়া, কেবল আমার মতো একজন লম্পট, চরিত্রহীনের জন্যই উহার হৃদয় সেইদিন – নাহ্, এ কিছুতেই হইতে পারে না।

আমি সজোরে দুইদিকে মস্তক আন্দোলন করিলাম। শৈল ধুপধাপ করিয়া আমার সম্মুখ দিয়া অন্ধকার কুটীরে প্রবেশ করিল। কুটীরের ভীতরে কোনো আলো নাই। সে দরজার কপাট বন্ধ করিল না। গৃহ মধ্য হইতে তাহার শীর্ণ বাজুতে গহণার দ্রুত শিঞ্জিনী বাজিয়া উঠিল। মুহূর্তকাল পর, অন্ধকার ঘর হইতে একখানি সিক্ত বস্ত্রখণ্ড আমার পিঠে আসিয়া পড়িল। তৎসঙ্গে অন্ধকার হইতে অশ্রুসিক্ত কন্ঠ বলিয়া উঠিল: “ওই কাপড়খানা ছাড়া, এই মড়কের বাজারে আমার আর দ্বিতীয় কোনো গায়ে দেওয়ার কাপড় নেই। আমার কেউ নেই! কিচ্ছু নেই! সব তো খেয়ে বসে আছি আমি! আমার আর আপন কে আছে, যার বুকে পড়ে এট্টু কাঁদতে পারি আমি!...”

এরপর আর নিশ্চেষ্ট হইয়া বসিয়া থাকিতে পারিলাম না। দ্রুত অন্ধকার গর্ভগৃহে প্রবেশ করিয়া, শৈলবালাকে আঁকড়াইয়া ধরিলাম। শৈলও নিজেকে আমার আলিঙ্গনপাশে সম্পূর্ণ বিমুক্ত করিল। ক্রমশ উহার নিরাবরণ দেহের প্রতিটা উচ্চ-নীচ, খাঁজ ও ভাঁজ আমি আমার সমস্ত রোমকূপের মধ্য হইতে অনুভব করিতে পারিলাম। আমার পুরুষাঙ্গ ক্রমশ জাগ্রত, উথ্থিত হইয়া উঠিল। আমি উহার রসস্থ অধরে নিজের ওষ্ঠদ্বয়কে সমর্পণ করিলাম। দীর্ঘক্ষণ চুম্বনরত অবস্থায় আমরা যেন পরস্পরের সমস্ত ক্লেদ, দুঃখকে পরস্পরের দেহ হইতে আপনার মধ্যে টানিয়া লইতে চাইলাম। তারপর আমি শৈলর হাত ধরিয়া বাহিরের দিকে টানিলাম। ও কম্পিত হইয়া বলিল: “ছিঃ, দালানটা তো খোলা; কে-না-কে দেখতে পাবে!”
[+] 6 users Like anangadevrasatirtha's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: আদিম কাব্য_ শ্রী অনঙ্গদেব রসতীর্থ - by anangadevrasatirtha - 21-04-2019, 04:51 PM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)