16-09-2021, 10:39 AM
(05-09-2021, 01:16 AM)dimpuch Wrote: অসীমের ‘হাতী’ ভ্যান এ রায়চকের কাছে বাগানবাড়িতে নেমে প্রথম শব্দ ফাগুর মুখে এল “চমৎকার”। গঙ্গা সামনে, পার থেকে রাস্তা গেছে বাগানবাড়ির ভিতর অবধি।
ভ্যান নিয়ে একেবারে বাড়ির পিছন দিকে রাখল অসীম। অসীমের লোকজন খাবার সহ মাল পত্র নামাচ্ছে, এই সুযোগে ফাগু হাঁটতে লাগলো গঙ্গা ধার দিয়ে। বেশ কিছু দূর গিয়ে চোখে পরল নদীর বিস্তার আরও চওড়া। নৌকা ঘুরে বেড়াচ্ছে দু একটি। মানব সভ্যতা গড়ে উঠেছিল নদীর ধারে। সমগ্র মানব ইতিহাস জুড়ে আছে তার কাহিনি।এখনও নদীর পাশে দাড়ালে মন অন্যরকম হয়।ফাগু কিছু ব্যাতিক্রম না।গাড়ির শব্দে মুখ ঘোরাতে চোখে পড়ল এক লাক্সারি বাস ঢুকছে বাগান বাড়িতে। ফাগু একটি মাঝারি সাইজের বাবলা গাছের তলায় দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো নদীর বুকে ভেসে চলা নৌকা দু একটি যাত্রী বাহি লঞ্চ। বেশ লাগছে ফাগুর এই সকাল তবে মিস করছে নতুন বউকে। কাটিয়ে দিল কিছু সময় ওই গঙ্গার ধারে।
বাগানবাড়িতে ফিরেই মুখোমুখি রোমের। আকাশী রঙের স্কিন টাইট এক জিন্স আর টপ পরে রোম
……কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছ হে লেডি কিলার?
……… সম্বোধনের আর কিছু পেলেন না? চৌরঙ্গীর ফুটপাত থেকে ৩০০ টাকায় কেনা এই ফাটা প্যান্ট আর ৩ বছরের পুরানো সস্তার গেরুয়া পাঞ্জাবি। হয়ে গেলাম লেডি কিলার?
………ভিতরে ঢুকে মেয়েদের দিকে তাকালে বুঝবে তুমি কি! এসো ভিতরে………সঙ্গে করে নিয়ে আলাপ করিয়ে দিলেন কয়েকজনের সাথে। ফাগু আজ চান করার সময় পায়নি। না কাঁটা দাড়ি গালে। ২ মাস আকাটা চুল নেমে এসেছে কপালে আর ঘাড়ের গোরায়। এই আগোছাল চেহারা ভীষণ আকর্ষণ করে মেয়েদের যদি নাক চোখ মুখ ভালো হয়। ফাগুর হয়েছে ঠিক তাই। মহিলা আর মেয়েদের চোখে ফাগু দেখতে পেল মুগ্ধতা অপার।
………আমি রান্না ঘরে দেখি কি করছে সবাই……পাস কাটিয়ে গেল ফাগু। অসীম আর তার রাধুনি বেশ কাজের। মাছ কেটে হলুদ আর নুন মাখিয়ে রেখেছে।বাকি গুলো কলা পাতা মোরা, মাথা গুলো দিয়ে চচ্চড়ি রাধবে বলে আসার সময় আমতলা থেকে নিয়ে এসেছে পুঁই কুমড়ো ঝিঙ্গে পটল লঙ্কা। এক বিরাট গামলায় অসীম ভাঁজা মুড়ি আর সিদ্ধ ছোলা মাখছে অল্প তেল আর একটা মশলা দিয়ে। ফাগুর ভালো লাগলো দেখে যে রান্না ঘরে সবাই মাথায় আর হাতে মাস্ক পরে।
………বুঝলি ফাগু সকালে কিছু ভারি খাবার রাখিনি। তাহলে দুপুরে খেতে পারবে না। মশলা দিয়ে এই মাখা, কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ভালো লাগে। তিন চারটে বড় বাটিতে ঢেলে দিচ্ছি তুই দে ওনাদের …… ২০ জনের দল নিয়ে এসেছে রোম। ফাগু ৪ টে বড় বাটিতে ওই মাখা এনে
………রোম, সকালে ভারি কিছু খেলে, বরবাদ হয়ে যাবে ইলিশ উৎসব। পারবেন না খেতে, খেয়ে দেখুন ভালো লাগবে এই মাখা……রোম চোখ সরু করে দেখে এক মুঠো তুলে মুখে দিয়ে
……অহাহ, দারুন, এই সবাই খেয়ে দেখ কি ডেলিসাস………ফাগু একবার বাগানে একবার রান্না ঘরে ঘুরে ঘুরে দেখছে। অল্প বয়েসের কয়েকটি মেয়ে এসেছে। তার ভিতর একজন অপরুপা।সফট ড্রিঙ্ক হাতে হাতে ধরিয়ে দিল ফাগু সবার এমনকি সেই অপরুপার ও। ফাগু মেয়েটিকে খুঁটিয়ে দেখছে, চমক ভাংল গাড়ির হর্নে। অডি গাড়ি থেকে নামল রোহিত, ধনু আর অপরিচিত একজন। রোহিত ফাগুকে দেখে চোখ কপালে তুল
………তুমি এখানে, কি ব্যাপার ভুলে গেলে আমাদের?
………কি বলছ রোহিত, তোমাদের কি করে ভুলবো। আমার অনেক উপকার করেছ তুমি এক সময়। তুমি আর ফোন করো না, তাই এই সব টুক টাক কাজ করে পেট চালাচ্ছি। তোমার ধান্দা কি একেবারে বন্ধ? আমরা যে মরছি………কষ্টের হাসি হেঁসে রোহিত
………তোমাকে দরকার ফাগু। ফোন করব তোমায় খুব তাড়াতাড়ি……ধনু এগিয়ে এসে আলতো করে জড়িয়ে নিল
………বন্ধু কেমন আছিস?
……তুই বল কেমন আছিস?......।।ধনু একটু রোহিত কে দেখে নিল। এগিয়ে গেছে রোহিত অন্য লোকের সাথে
………ভুলে যা ফাগু । এই লাইন ভুলে ষা………বলেই কেটে পড়ল
ফাগু রান্না ঘরে এসে অসীমকে
………অসীম, তুই বাইরে বেরবি না। খাবার পরিবেষণ পার্টির সাথে কথা সব চালাব আমি। রোহিত এসেছে। ওকে জানাতে চাই না তোর সাথে আমার সম্পর্কর ।আমি দেখতে পাচ্ছি সামনে আসছে বিশাল এক কালো মেঘ……
অসীমের থেকে মাথা আর হাতের মাস্ক পরে লেগে পড়ল ফাগু। সবাই এমনকি রোহিত পর্যন্ত সুখ্যাতি করলো রান্নার। সবার খাওয়া শেষ বাগানে এক গাছের তলায় সিগারেট ধরিয়েছে, ধনু দাঁড়াল এসে
………ফাগু, আমার সাথে অভিনয় করে হেঁসে হেঁসে, অল্প করে পেটে ঘুসি, কাঁধ জড়িয়ে কথা চালা , কেননা রোহিত লক্ষ করছে তোকে। সকালে আমাদের দুজনের সাথে আর একজন এসেছে, দেখেছিস?
………হ্যাঁ দেখলাম তো, কালো করে বেশ ভালো স্বাস্থ………ফাগু হেঁসে হেঁসে বলছে
………৩ ভাইকে রোহিত নিয়ে এসেছে বিহার থেকে, শ্যাম, কালিয়া আর বাসদেও । এইটি বাসদেও। তিন ভাই নাকি অবিনাশ বর্মা র খাস লোক। কত কেস আছে জানে না কেউ।তিন জনেরই কেষ্টর নামে নাম। তোকে রোহিত অনেকদিন খুঁজছে। ওর ধারনা তুই পুলিশের খোঁচর ।সেই জন্য পাখি দলুই এর ঘটনায় ৩ জন মারা গেছে কিন্তু পুলিশ কিছু করে নি। তুই বেরিয়ে আসার পর ওর আমদানি দু একটা এসেছে কিন্তু পুলিশ ধরতে পারেনি। তাই ওর ধারনা তুই খোঁচর। তোর ফটো তুলেছে আজ, সাবধান।
……বাল ছিঁড়বে, ছাড় তুই। সব বোকাচোদার মতো কথা। শুধু বেইমানি করিস না তুই ব্যাস, বাকি আমি দেখে নেব। এখন তুই আমায় বল ওই নিস্পাপ অপরুপা মেয়েটির সাথে রোহিত অনেকক্ষণ ধরে কি মতলবে ঘুরছে
………তোর কি ওই মেয়েটাকে দেখে কারো কথা মনে পড়ছে?
………হ্যাঁ পড়ছে, তোর পড়ছে না বোকাচোদা?
……মনে পড়ছে রে ফাগু ভীষণ ভাবে মনে পড়ছে। মেয়েটির নাম মীনাক্ষী, ডাক নাম তিতলি। আমার পিছনে যে মহিলা সম্পূর্ণ চিকনের কাজ করা গোলাপি সালওয়ার কামিজ পরে আছেন ওর মেয়ে । মহিলার নাম জোনাকি কাশ্যপ, কোটি কোটি পতি, তবুও কি যে আকর্ষণ সিনেমা জগতের প্রতি। সিনেমায় নামাবে মেয়েকে, তাই ঘুরছে রোহিত এর পিছনে।
………ধনু, তুই আর আমি কি একই কথা ভাবছি?
……বোধ হয় ফাগু। কি করে বাঁচান যায় বলতো
………জানিনা। তবে জানতে পারলে ওই রঙ্গিন প্রজাপতিকে বাঁচাবো, যান কবুল গুরু………হাত বাড়িয়ে দিল ধনু
………ওয়াদা গুরু। যান কবুল। অন্তত একটি মেয়েকে বাচাই…… হাত হাত দিয়ে ধরল ধনু
………আচ্ছা ভাই, আপনারা কি কিছু বললেন ?.........চমকে ঘুরে দুই বন্ধু দেখে জোনাকি কাশ্যপ
………না না ম্যাডাম, আপনাকে কিছু বলি নি
………আমারই ভুল। যাই, একজন কে খুজছি সব যায়গায়…খুজি ……ইশারায় ধনুকে দাড়াতে বলে ফাগু রান্না ঘরে গিয়ে
………অসীম আমাকে ২-৪ পিস মাছ দিতে পারবি, বেঁচেছে কিছু
………কি বলছিস গুরু, এই দ্যাখ………থারমোকল এর বাক্সের ঢাকনা খুলে দেখাল গুড়োগুড়ো বরফ আর কিছুর ওপর শুয়ে একটি অন্তত দেড় কেজির ওজনের ইলিশ।
………এইটি তুই নিয়ে যা। …ঘাড় নারাল ফাগু
………ফাগু তুই বিয়ে করেছিস আর আমাকে বললি না?......মুখ চেপে ধরে ফাগু
………গুরু প্লিস, চুপ কর। হ্যাঁ করেছি। তুই কি করে বুঝলি?
………যতবার তোকে খাবার প্যাক করে দিয়েছি, তুই নিস নি, আর আজ নিজের থেকে চাইছিস, তাই………এক গাল হাসি অসীমের
…………ঠিকই ধরেছিস। আমার মতন অভাগা একটি মেয়ে, নার্সিং হোমে আয়ার কাজ করে বাবাকে নিয়ে থাকে। এই যে তার ফটো……পকেট থেকে মানি ব্যাগ বার করে কুন্তির ফটো দেখাল ফাগু
………সুন্দরী রে ফাগু। সুন্দর দেখতে, একদিন নিয়ে আয় বাড়িতে
………কিছুদিন যেতে দে, নিয়ে আসব , থাকব তোর বাড়িতে। বলিস না কাউকে
………বলব না। মাছ আর সাথে ভাত দিয়ে দেব। বাসমতী চালের ভাত, খারাপ লাগে ফেলতে।চচ্চড়ি ও দিয়ে দেব, নিবি?.........ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ করলো ফাগু। বাইরে এসে দেখে ধনু যাবার জন্য তোড়জোড় করছে, ফাগু এগিয়ে গেল অডি গাড়ির কাছে
………রোহিত। ফোন করো তাহলে, অপেক্ষায় রইলাম আমি………কিন্তু চোখ নিবদ্ধ বাসদেও ওপর, মাথায় গেথে নিচ্ছে ফাগু।
ধনু চলে যেতে ফাগু একা সিগারেট ধরাবে, রোম
………রাজু একটু চলো তো আমার সাথে নদীর ধারে, দেখব শুধু। তুমি সাথে থাকলে নিশ্চিন্ত একেবারে……… রোমের সাথে আর একজন মহিলা। বয়েসে রোমের থেকে বড়ই মনে হয়। ভারি চেহারা। তবে যৌবনে যে অনেকের মাথা ঘুরিয়েছেন তা দেখলে বোঝা যায়। রোম আলাপ করিয়ে দিল “ রাজু এ আমার বন্ধু সুরভী” হাত জড় করে হেঁসে নমস্কার করলো ফাগু। মিনিট ৫ হয়ে গেছে হাঁটতে হাঁটতে , রোম কিছু গোপন আলোচনা করছে সুরভীর সাথে , ফাগু একটু পিছনে ওদের। মনে পরে যাচ্ছে রাজমহিষীকে বার বার। “ তোমাকে নিয়ে এই সব যায়গায় আসব কুন্তি, দেব আমার ক্ষমতার ভিতর সব কিছু। “ । হঠাৎ পিছন থেকে “মা মা “ ৩ জনে ঘুরে দেখে একটি বছর ২৪-২৫ এর জিন্স আর সার্ট পরা মেয়ে ডাকছে সুরভী কে। দ্রুত পায়ে চলে গেল সুরভী একটি হাসি ছুড়ে ফাগুকে। রোম এগিয়ে এসে
………রাজু সুরভী কে কি রকম লাগলো?
……ভালই। কেন এই রকম প্রশ্ন?
………সুরভীর স্বামী মারা গেছে যখন তখন ওর বয়েস মাত্র ২৯। বড় করে তুলেছে সব ত্যাগ করে, মেয়েকে। মেয়ে বিরাট চাকরি করে এখন, আর সুরভী স্বামীর অগাধ সম্পত্তি বেঁচে দিয়ে গোল পার্কের কাছে এক বিরাট ফ্লাট নিয়েছে সেখানে থাকে মা আর মেয়ে। ব্যাঙ্কে যে কত টাকা নিজেই জানে না। কিন্তু গোলমাল দেখা যাচ্ছে ইদানীং ব্যাবহারে। মেয়ে জোর করে সাইক্রিয়াটিস্ত দেখায়। ৩-৪ দিন সিটিং দেবার পর সেই মনোবিদ বলেছেন যে অবদমিত যৌন আখাঙ্কার কারনে এই সব। ওষুধে কাজ হবে না, বিয়ে করুন বা সঙ্গী খুঁজে নিন। সুরভী আর ওর মেয়ে এশা আমাকে বলেছিল।আজ তোমাকে দেখেছে আর দুজনেরই পছন্দ তোমাকে । তোমায় ডাক্তারি করতে হবে……লাফ দিয়ে পিছিয়ে গেল ফাগু
……রোম আপনি জানেন আমি গিগোলো নই। আপনার সাথে সম্পর্ক সম্পূর্ণ অন্যরকম অন্য ব্যাপার। এ হয় না
………কেন রাজু? সুরভী অসুস্থ। ওর মেয়ে কথা বলেছে দেখেছে দু একজন কে ইনটারনেট এ । একেবারে লোফার। তাই, প্লিস ………সমানে মাথা নেড়ে যাচ্ছে ফাগু। একটু বিরক্ত বটে
……রোম আপনার আর আমার সম্পর্কে কাউকে জড়াবেন না। এ হয় না
………না কেন? তোমার কোন স্থির আয় নেই,গান গেয়ে আর যোগ শিখিয়ে কত আয় হয় আবার এদিকে বিয়ে করেছ, সংসার চালাতে তো পয়সা লাগবে। ১০০০০ দেবে সুরভী। খুব ভালো মেয়ে
………আপনাকে কে বলল আমি বিয়ে করেছি……মুচকি হেঁসে রোম
………ক্যাটারারের ছেলেটি তোমার জন্য ওতো মাছ ভাত তরকারি কিসের জন্য দিচ্ছে রাজু? তুমি তো একা মানুষ জানতাম রাজু……দুষ্টুমির হাসি মুখে
………উফফ, ঠিক লক্ষ করছেন, পারা যায়না আপনাকে নিয়ে। বলবেন না দয়া করে কাউকে। আমি জানাতাম আপনাকে । শুনুন রোম আমি গিগোলো নই, আপনি কেন এইটা মনে রাখছেন না
……সুরভী প্রথম আর শেষ। কথা দিলাম, তোমাকে পেশাদার দেখতে আমার খুব খারাপ লাগবে রাজু। এই টুকু বিশ্বাস করতে পার।
………ফোন নম্বর দিন। আমি সামনের বুধবার ওনাকে ফোন করব………হেসে এগিয়ে এল রোম
………তুমি ছাড়া আমার কোন বন্ধু নেই রাজু, কিছুতেই চাই না হারাতে তোমাকে, ভুলে ষেও না আমাকে ……বা হাতে ফাগুর ডান হাত একটু চাপ দিয়ে ঘুরে হাঁটতে শুরু করে
…… তোমার স্ত্রী কে দেখাবে না? অবশ্য কি বলেই বা পরিচয় করাবে
………আমি কিছু লুকাইনি কুন্তির কাছে। কুন্তিকে বলেছি আপনার কথা, ও বলেছে বেইমানি না করতে………অবাক চোখে রোম
………অবাক কথা শোনালে রাজু। স্ত্রী স্বামীর অন্য নারীর সাথে সম্পর্ক নিয়ে কিছু না বলা আমার ভাবনার বাইরে
……আমাদের দুজনেরই আক্ষরিক অর্থে কেউ নেই। আমাদের পরিচয়ের আগে মৃত্যুতে চোখের জল ফেলার একজনও ছিল না।আপনি আমাদের একমাত্র শুভাকাঙ্খি, একজন অন্তত বন্ধু থাকুক ………
………কোন অবস্থাতেই আমি তোমার বন্ধুত্ব হারাতে চাইনা রাজু। সুরভীর ব্যাপারে আমার আন্তরিক অনুরোধ , কিন্তু শেষ বিচারের ভার তোমার আর তোমার স্ত্রীর ওপর। তোমার বন্ধুত্ব আমার চাই, আমাকে ভুলে যেতে দেব না তোমায় রাজু……
এই মহিলা কি সত্যি আমার ভালো চান না কি আমি এনার খেলনা?” হেটে যাওয়া রোমের দিকে তাকিয়ে নিজের মনে বলে উঠলো ফাগু।
শিয়ালদহ ষ্টেশনে থেকে ফোন করলো কুন্তিকে
……কুন্তি এখনি চলে এসো। অসীম মাছ দিয়েছে, চলে এসো আজ খাবো
……এখন কি করে যাব, এখনও দেড় ঘণ্টা ডিউটি
………না তুমি এখনি চলে এসো। আমি নিয়ে এসেছি তোমার জন্য
………এখন কি করে আসব ফাগু? পাগলামি করছ
……না তুমি এসো ইলিশ রান্না করবে
………ইলিশ মাছ? ……খুশি ধরা পড়ছে কুন্তির
……হ্যাঁ, বলছি কি
………এক ঘণ্টা পর আসছি
……না এখনি, তুমি রান্না করবে আমরা খাবো
……তুমি খাওনি ইলিশ দুপুরে……চুপ ফাগু “ ফাগু?”
……না খাইনি। এক সাথে খাবো ………চুপ কুন্তির ফোন
……এখুনি আসছি ফাগু এখুনি……যতো খানি সম্ভব নরম স্বর কুন্তির।
প্রিয়তমার অমৃত সমান রান্না তৃপ্তি করে খেয়েছে ফাগু। কুন্তি একটি মাছ কাঁটা বেঁছে বাবাকে হাতে করে খাইয়ে দিয়েছে। শুধু মশলা আর দামি মাছ দিলেই ভালো রান্না হয়না যদি না তাতে ভালোবাসা জড়িয়ে থাকে। “আমার রান্না আমার প্রিয়জনেরা খাবে তৃপ্তি করে” এই ভালোবাসা না থাকলে রান্না উচ্চতায় পৌছায়না। আজ প্রান ভরে রেঁধেছে কুন্তি বহু দিন পর। তার মনের মানুষ যে না খেয়ে এনেছে শুধু তার কথা মনে করে
!
শ্রাবণের পূর্ণিমার রাত। জ্যোৎস্নার প্লাবন এসেছে চরাচরে। মায়াবী স্নিগ্ধ আলোয় জড়িয়ে আছে পুকুর, ধানের ক্ষেত, গাছ, রাতজাগা পাখি, গভীর ঘুমে মগ্ন ঘরছাড়া মানুষ।গাছের পাতা ধুইয়ে পিছলে পড়ছে স্নিগ্ধ আলো।
ভাঙা টালির ফাঁকে আসা মায়াবী আলো আজ ভাসিয়ে দিয়েছে মিলনে মগ্ন, নগ্ন কুন্তি ফাগু আর সেই রাজপ্রসাদসম ছোট ঘর। দুজন আঁকড়ে ধরে আছে অপরজনকে।
“ এই নারী আমার। যতবার খুশি এ নিজেকে ভাঙ্গুক, এ আমার। না থাকুক এর চুলে তেল, কোন প্রসাধন, এ আমার। এর রক্তে নাচে প্রেম শুধু আমার জন্য। ধমনিতে বয়ে চলে আমার ভালোবাসা, সমস্ত শরীরে অনুভব করে আমার অস্তিত্ব।কোন ভূষণ এর জন্য যথেষ্ট নয় আমি ছাড়া। এ আমার নারী এ আমার প্রেম। এ কুন্তি”
“ এই পুরুষ আমার। যতো নারী সঙ্গ করুক যখন খুশি করুক এর মিলন শুধু আমার সাথে। এর হৃদয়ে ‘লাব ডুপ’ নয় শুধু বাজে ‘কুন্তি কুন্তি’ এ আমার” । দুজনে আজ নিঃশব্দে নিজেকে মিশিয়ে দিতে চাইছে অন্যের সাথে। কুন্তির নখ বসে যাচ্ছে ফাগুর পিঠে। টালির ভাঙা ঘরেও জ্যোৎস্নার প্লাবনের ঢেউ লেগেছে। “ গ্রহন করো কুন্তি, আমাকে গ্রহন করো” । “দাও প্রিয় দাও আমাকে”। উজাড় করে দিল ফাগু নিজেকে কুন্তিতে, শুরু হোল সব চাইতে দ্রুত দৌড় কোটি কোটি ক্রমজমের, কে আগে পৌঁছাবে গ্রহনের জন্য উন্মুখ কুন্তির সৃষ্ট ডিম্বানুতে, নতুন প্রানের জন্ম হবে যে!
This story belongs to a different class. Awesome. Loving it.