09-09-2021, 04:08 PM
ভীড়ে ঠাসা নিউ অর্লিন্স এয়ারপোর্টে দাড়িয়ে সুটকেসে জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে যে ভাবে লোকের গোঁতা খেতে হচ্ছে, তাতে ট্রেসির মনে হতে লাগল এই রকম ভীড়ে যেন দম বন্ধ হয়ে যাবে তার। সকলেই ব্যস্ত। যে যেরকম খুশি থাক্কা মেরে চলে যাচ্ছে। অনেক করে সে চেষ্টা করছে ব্যাগেজ ক্যারাসোলের দিকে এগিয়ে যেতে, কিন্তু সামনের লোকগুলো যেন পণ করেছে তাকে আগে না যেতে দেবার। কি অদ্ভুত মানুষগুলো। সত্যি বলতে কি আর কিছুক্ষন পর কি দেখতে চলেছে, ভাবতেই মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে বেচারার। মাথার মধ্যে শুধু ওই কথাগুলো বার বার করে বাজছে... ‘এটা দুঃসংবাদ ছিল আপনার জন্য... তিনি আর বেঁচে নেই, মিস হুইটনি... আমার খুব খারাপ লাগছে খবরটা দিতে...’ অবশেষে সে তার সুটকেসটাকে কোন রকম করায়ত্ত করতে পেরে তাড়াতাড়ি বাইরে বেরিয়ে একটা ট্যাক্সি ডেকে নিল। ড্রাইভারকে ভালো করে ঠিকানাটা বুঝিয়ে দিল, যেটা লেফট্যানেন্ট তাকে দিয়েছিল... সাতশ পনেরো সাউথ ব্রড স্ট্রিট।
ট্যাক্সিতে ওঠার পর ট্রেসিকে রিয়ার ভিউ মিরর দিয়ে দেখতে দেখতে ড্রাইভার প্রশ্ন করল, ‘এখানে যে খুব বড় শো হবার আছে, সেটা দেখতে এসেছেন, মিস?’
ড্রাইভার কোন ব্যাপারে জানতে চাইছে তা বুঝতে পারল না সে। কিন্তু মনে মনে বললো, ‘না, আমি এখানে মৃত্যু দেখতে এসেছি...’ ড্রাইভার বকেই চলেছে সমানে গাড়ি চালাতে চালাতে, কিন্তু তার একটা কথাও শোনার মানসিক অবস্থায় ট্রেসি নেই। সেই সাথে দূর থেকে একটা দুম দুম করে নাগাড়ে বাজনার শব্দ ভেসে আসছে। তারা যত ফ্রেঞ্চ কোয়ার্টারের দিকে এগিয়ে যেতে থাকল, ততই যেন সেই বাজনার শব্দ আসতে আসতে বাড়তে লাগল। আর সেই সাথে অনেক মানুষের সম্মিলিত চিৎকার। মনে হচ্ছে যেন বিশাল একটা মানুষের মিছিল আসছে, যেখানে সবাই উন্মাদ হয়ে গিয়েছে। তারঃস্বরে চিৎকার করে চলেছে।
খানিকটা গিয়ে ড্রাইভার গাড়ি দাঁড় করিয়ে দিল। ‘আর এগুনো সম্ভব নয় আমার পক্ষে, মিস...’
ট্রেসির ট্যাক্সির সামনের উন্ডস্ক্রিনের মধ্যে দিয়ে তাকাতেই পরিষ্কার হয়ে গেল। হাজার হাজার মানুষ নাচতে নাচতে আর সেই সাথে পাগলের মত চিৎকার করতে করতে এগিয়ে আসছে মিছিল নিয়ে। কারুর মুখে মুখোস, কেউ সেজেছে ড্রাগন বা বিশাল কুমীর তা নয় তো প্যাগান গড। সারাটা রাস্তা ফুটপাত জুড়ে মিছিল এগিয়ে আসছে। আর সেই সাথে উচ্চস্বরে বাজছে ড্রাম, বিউগল। পুরো ব্যাপারটা যেন উন্মত্ততার বিস্ফোরণ... মারদি গ্রাস... নিউ অর্লিন্সের এক বিশেষ কার্নিভাল, যেটা সাধারনতঃ ক্রিশ্চানরা পালন করে থাকে ফ্রেব্রুয়ারী মাসের এই সময়টায়। সারা শহর এই সময় লেন্ট উৎসব শুরুর আগে মারদি গ্রাস কার্নিভাল উদযাপন করে থাকে।
ড্রাইভার সসব্যস্ত হয়ে বলে উঠল, ‘মিস, আপনি বরং তাড়াতাড়ি আমার গাড়ি থেকে নেমে যান। ওরা এসে পৌছানোর আগেই আমি গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে চলে যাই, নয়তো এ যা পরিস্থিতি, তাতে আমার গাড়ী যদি উল্টে দেয়, আমার বলার কিছু থাকবে না।’
ট্রেসি তড়িঘড়ি ট্যাক্সি থেকে সুটকেস নিয়ে নেবে রাস্তার একধারে চুপ করে দাঁড়িয়ে পড়ল। ততক্ষনে উন্মত্ত মিছিল এসে পড়েছে প্রায় ঘাড়ের ওপর। কিছু বোঝার আগেই ট্রেসিকে যেন ভাসিয়ে নিয়ে চলল সেই নাচতে নাচতে চিল চিৎকার করে চলা উন্মাদ মানুষের মিছিলটা। নিমেশে ট্রেসির হাত থেকে তার সুটকেসটা ছিটকে বেরিয়ে কোথায় হারিয়ে গেল। ততক্ষনে তাকে শয়তানের মুখোস পরা একটা মোটা লোক জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে শুরু করেছে। একটা হরিণ এসে তার নরম স্তনটাকে টিপে ধরল। একটা বিশাল পান্ডা পেছন থেকে এসে প্রায় শূন্যে তুলে নিল তাকে। সে আপ্রাণ চেষ্টা করতে লাগল এই উন্মাদগুলোর হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে, কিন্তু অলিক সে প্রচেষ্টা। তাকে সেই ভাবেই ওই উন্মত্ত জনতা ভাসিয়ে নিয়ে যেতে থাকল তাদের মিছিলের সাথে সাথে। যেন পালাবার কোন পথ নেই এর থেকে। অবশেষে যখন সে নিজেকে কোনরকমে ছাড়িয়ে একটা ফাঁকা রাস্তায় পালাতে সক্ষম হল, তখন তার প্রায় পাগলের মত অবস্থা। অনেকক্ষন চুপ করে দাড়িয়ে রইল সেখানে একটা ল্যাম্পপোস্টে হেলান দিয়ে, বড় বড় শ্বাস নিতে নিতে। আস্তে আস্তে যখন সে একটু সামলে নিয়েছে বুঝল, সে রওনা হল পুলিশ স্টেশনের দিকে ধীর পায়ে।
******
ট্যাক্সিতে ওঠার পর ট্রেসিকে রিয়ার ভিউ মিরর দিয়ে দেখতে দেখতে ড্রাইভার প্রশ্ন করল, ‘এখানে যে খুব বড় শো হবার আছে, সেটা দেখতে এসেছেন, মিস?’
ড্রাইভার কোন ব্যাপারে জানতে চাইছে তা বুঝতে পারল না সে। কিন্তু মনে মনে বললো, ‘না, আমি এখানে মৃত্যু দেখতে এসেছি...’ ড্রাইভার বকেই চলেছে সমানে গাড়ি চালাতে চালাতে, কিন্তু তার একটা কথাও শোনার মানসিক অবস্থায় ট্রেসি নেই। সেই সাথে দূর থেকে একটা দুম দুম করে নাগাড়ে বাজনার শব্দ ভেসে আসছে। তারা যত ফ্রেঞ্চ কোয়ার্টারের দিকে এগিয়ে যেতে থাকল, ততই যেন সেই বাজনার শব্দ আসতে আসতে বাড়তে লাগল। আর সেই সাথে অনেক মানুষের সম্মিলিত চিৎকার। মনে হচ্ছে যেন বিশাল একটা মানুষের মিছিল আসছে, যেখানে সবাই উন্মাদ হয়ে গিয়েছে। তারঃস্বরে চিৎকার করে চলেছে।
খানিকটা গিয়ে ড্রাইভার গাড়ি দাঁড় করিয়ে দিল। ‘আর এগুনো সম্ভব নয় আমার পক্ষে, মিস...’
ট্রেসির ট্যাক্সির সামনের উন্ডস্ক্রিনের মধ্যে দিয়ে তাকাতেই পরিষ্কার হয়ে গেল। হাজার হাজার মানুষ নাচতে নাচতে আর সেই সাথে পাগলের মত চিৎকার করতে করতে এগিয়ে আসছে মিছিল নিয়ে। কারুর মুখে মুখোস, কেউ সেজেছে ড্রাগন বা বিশাল কুমীর তা নয় তো প্যাগান গড। সারাটা রাস্তা ফুটপাত জুড়ে মিছিল এগিয়ে আসছে। আর সেই সাথে উচ্চস্বরে বাজছে ড্রাম, বিউগল। পুরো ব্যাপারটা যেন উন্মত্ততার বিস্ফোরণ... মারদি গ্রাস... নিউ অর্লিন্সের এক বিশেষ কার্নিভাল, যেটা সাধারনতঃ ক্রিশ্চানরা পালন করে থাকে ফ্রেব্রুয়ারী মাসের এই সময়টায়। সারা শহর এই সময় লেন্ট উৎসব শুরুর আগে মারদি গ্রাস কার্নিভাল উদযাপন করে থাকে।
ড্রাইভার সসব্যস্ত হয়ে বলে উঠল, ‘মিস, আপনি বরং তাড়াতাড়ি আমার গাড়ি থেকে নেমে যান। ওরা এসে পৌছানোর আগেই আমি গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে চলে যাই, নয়তো এ যা পরিস্থিতি, তাতে আমার গাড়ী যদি উল্টে দেয়, আমার বলার কিছু থাকবে না।’
ট্রেসি তড়িঘড়ি ট্যাক্সি থেকে সুটকেস নিয়ে নেবে রাস্তার একধারে চুপ করে দাঁড়িয়ে পড়ল। ততক্ষনে উন্মত্ত মিছিল এসে পড়েছে প্রায় ঘাড়ের ওপর। কিছু বোঝার আগেই ট্রেসিকে যেন ভাসিয়ে নিয়ে চলল সেই নাচতে নাচতে চিল চিৎকার করে চলা উন্মাদ মানুষের মিছিলটা। নিমেশে ট্রেসির হাত থেকে তার সুটকেসটা ছিটকে বেরিয়ে কোথায় হারিয়ে গেল। ততক্ষনে তাকে শয়তানের মুখোস পরা একটা মোটা লোক জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে শুরু করেছে। একটা হরিণ এসে তার নরম স্তনটাকে টিপে ধরল। একটা বিশাল পান্ডা পেছন থেকে এসে প্রায় শূন্যে তুলে নিল তাকে। সে আপ্রাণ চেষ্টা করতে লাগল এই উন্মাদগুলোর হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে, কিন্তু অলিক সে প্রচেষ্টা। তাকে সেই ভাবেই ওই উন্মত্ত জনতা ভাসিয়ে নিয়ে যেতে থাকল তাদের মিছিলের সাথে সাথে। যেন পালাবার কোন পথ নেই এর থেকে। অবশেষে যখন সে নিজেকে কোনরকমে ছাড়িয়ে একটা ফাঁকা রাস্তায় পালাতে সক্ষম হল, তখন তার প্রায় পাগলের মত অবস্থা। অনেকক্ষন চুপ করে দাড়িয়ে রইল সেখানে একটা ল্যাম্পপোস্টে হেলান দিয়ে, বড় বড় শ্বাস নিতে নিতে। আস্তে আস্তে যখন সে একটু সামলে নিয়েছে বুঝল, সে রওনা হল পুলিশ স্টেশনের দিকে ধীর পায়ে।
******