09-09-2021, 04:07 PM
রান্না ঘরের খাবার টেবিলে এক কাপ কফি করে নিয়ে চুপ করে ট্রেসি বসেছিল জানলার বাইরে রাতের কালো আকাশটার দিকে তাকিয়ে। তাকিয়ে রয়েছে, কিন্তু সেই মুহুর্তে কিছুই চোখে পড়ছে না তার। মা, মাগো, তুমি নেই? ভিতরটা গুমড়ে গুমড়ে উঠছে যেন। এইতো গতকালও মায়ের সাথে কথা হল। কই, তখন তো দিব্বি কথা বলল মা। তবে? বার বার মায়ের মুখটা ভেসে উঠছে চোখের সামনে। কি অনুনাদশীল, হাসি খুশি মানুষটা। সর্বদা যেন প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা। তার আর মায়ের মধ্যে অদ্ভুত একটা সম্পর্ক ছিল, সেটা যত না মা মেয়ের তার থেকে অনেক বেশি বন্ধুত্বের। সেই ছোট্টবেলা থেকে যা কিছু প্রবলেম, সব মায়ের কাছে এসে বলা চাই তার। তা সে কলেজে পড়া কালিন কোন ঘটনা অথবা বড় হয়ে অন্য কোন পুরুষ সম্বন্ধে। এতটুকুও দ্বিধা বোধ আসত না মায়ের কাছে কিছু বলতে। কোন কিছু গোপন ছিল না তার মায়ের কাছে। মনে আছে বাবা মারা যাবার পর কত লোকে চেয়েছিল বাবার ব্যবসাটা নেবার জন্য। মাকে প্রচুর টাকা অফার করেছিল তারা। কিন্তু মা প্রথম দিন থেকেই দৃঢ়তার সাথে সব অফার ফিরিয়ে দিয়েছে। মা বলতো, ‘তোর বাবা এত কষ্ট করে ব্যবসাটাকে দাঁড় করিয়ে গেছে, সেটা অন্য লোককে বিক্রি করে দেব? কক্ষনো না।’ নিজের হাতে ব্যবসার হাল ধরল মা। আস্তে আস্তে আরো বেশি করে উন্নতি করতে লাগল বাবার রেখে যাওয়া ব্যবসা, মায়ের হাত ধরে। আর কোনদিন চার্লসের সাথে মায়ের আলাপ করিয়ে দেওয়া হবে না। আর কোনদিন ট্রেসির সন্তান তার দিদিমার ছোয়া পাবে না। ভাবতেই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল ট্রেসি। সামনে কফিটা আস্তে আস্তে ঠান্ডা হয়ে গেছে কখন সে দিকে ট্রেসির কোন হুসই নেই। চুপ করে বসে রইল ঠান্ডা কফির কাপটা হাতে ধরে। একবার ভাবল চার্লসকে ফোন করে বললে ভালো হত? কিন্তু তারপর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে তখন রাত প্রায় সাড়ে তিনটে। নাঃ। এই সময় চার্লসকে ঘুম থেকে তুলে এই রকম একটা সংবাদ দেওয়ার কোন মানেই হয় না। বরং নিউ অর্লিন্স পৌছে একটা ফোন করে দিলেই হবে’খন। চার্লসএর কথা মনে আসতেই নিজেদের বিয়ের কথা মাথায় এল তার। বিয়ের কি হবে? পরক্ষনেই নিজের এই ধরনের ভাবনায় খারাপ লাগল তার। ছিঃ। এই সময় নিজের বিয়ের কথা মনে আসছে। ছি ছি। আচ্ছা, লেফট্যানেন্ট মিলার বলেছিলেন এয়ারপোর্টে নেবেই একটা ট্যাক্সি নিয়ে তাড়াতাড়ি পুলিশ হেড কোয়ার্টারে যেতে। কেন? পুলিশ হেড কোয়ার্টার কেন? কি ঘটেছে সেখানে?
******
******