07-09-2021, 12:00 AM
===4====
মল দে গোয়া তে পৌছে ত্রিমূর্তি পার্কিং করে গাড়ি - ভ্যালেট পার্কিং । বিশাল গাড়ির চাবিটা ছুঁড়ে দেয় ভ্যালেট এর দিকে ।
দরজা দিয়ে ঢুকেই - প্রচুর দোকান - আর ছুটির দিনে ভরা পুরো ।
অবনীর মনে হয় বেকার কাবাব মে হাড্ডি হচ্ছে - ওর মার শপিং পছন্দ - আর বিশাল আজ দোকান দেখার মুডএই আছে ।
তাই না এলেই বোধহয় ভালো হতো ।
মাঝে মাঝে বনানী একেকটা দোকানের কাছের দেয়ালে উঁকি মেরে দেখে - পারফেক্ট উইন্ডো শপিং - যাকে বলে ।
বিশাল জিজ্ঞেস করে - ভেতরে চলো - বাইরে থেকে দেখার কিছু নেই এতো ।
সব সময়েই বনানী মাথা নেড়ে আবার হাঁটা দেয় ।
অবনী এটা জানে - ওর মা যত বেশি দেখবে এতটা কিনবেই না ।
নিজেদের মধ্যবিত্ত ঘরানা - সেটা বনানীর থেকে বেশি কেউ জানে না ।
হটাৎ করে বনানীর চোখ আটকে যায় আর একটা বুটিক এর মতন দোকানে ।
তাতে অনেক রকম পাথরের গয়না - আর ডিসাইনার পোশাক ভরা আছে । বনানী চোখ মেলে ভালো করে সেখানে তাকিয়ে থাকে ।
অবনী জানে - বনানী কিছুতে ঢুকবে না - তাই সে চুপ করে থাকে ।
বিশাল বলে ওঠে :
"ঢুকে পড়ো । কাঁহাতক স্রেফ চোখ দিয়ে গিলবে?"
বনানীর কোমরে ধাক্কা দিয়েই এক রকম বিশাল দরজা খুলে ঢুকিয়ে দেয় -- বনানী হেসে বলে ওঠে :
"বেশ বাবা - যাচ্ছি যাচ্ছি - ওরকম ধাক্কা মেরো না তা বলে!"
অবনীর মাথায় কিছু ঢোকে না । ওর মা কখনোই কারোর কোথায় এই রকম দোকানে ঢুকবে না ।
কিন্তু বিশাল বললো আর ওর মা ঢুকে গেলো ।
বিশাল বাইরে দাঁড়িয়ে আর একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে থাকে - আর দেখতে থাকে ভেতরে কি সার্কাস চলছে ।
প্রায় ১০ মিনিট বাদে অবনী বেরিয়ে আসে - আর বলে ওঠে - "অসম্ভব । এ জিনিস সহ্য করা যাচ্ছে - মা স্রেফ দেখেই চলেছে দেখেই চলেছে ।
মাথা খারাপ হয়ে যাবে ।"
"ধুর বাল । তুই থাক এখানে" বলে বিশাল দোকানে ঢোকে ।
এমনটা অবনী আশা করেনি - বিশালের কোনোকালে কোনো দোকানে ঢোকার কোনো ইচ্ছেই ছিল না - দোকান কেনার ইচ্ছে আলাদা ।
ওটাই ওর ব্যবসা ।
বিশাল চোখের সানগ্লাস বুক পকেটে রেখে - বনানীর পাশে দাঁড়ায় ।
বনানী বিশালকে একটা ডিসাইনার সালোয়ার স্যুট দেখায় - ফুটকি দেয়া - সবুজের উপর সাদা ।
"এটা কি রকম?" বনানী জিজ্ঞেস করে ।
"বলা মুশকিল - তবে তুমি পড়লে সেক্সি লাগবে ।" বিশাল ড্রেস দেখতে দেখতে মন্তব্য করে ।
বনানী বলে ওঠে - "হুম হয়তো"
"তোমার বরটি কিন্তু পছন্দ করবে না - এই সব পরলে ।" বিশাল যোগ করে দেয় ।
"আমাকে মায়ের কাছে মাসির গপ্পো করছো?" বনানী বলে ওঠে - "প্রথমেই জিজ্ঞেস করবে - কেন কিনলে? কত টাকা দাম? এ সব কেন লাগে?"
"গাড়োল এক নম্বর এর দেখছি " বিশাল বলে "ভালো দেখতে লাগবে - এটা বোঝা এতো কঠিন কেন এই লোকগুলোর কাছে?"
"হ্যাঁ - আর কতদিন হলো কিছু ভাল জিনিস নিজের জন্যে কিনিনি - আর লাগেই বা কেন - কোনো কারণ তো সত্যি নেই " বনানী আফসোস করে ।
"বনানী, মাঝে মাঝে নিজেকে একটু ট্রিট দিতে হয় - দিয়ে দাও ।"
বনানী এ সব কথার ফাঁকে ড্রেস তা নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে আয়নায় দেখে - সত্যি দারুন দেখতে - ভালো মানাচ্ছেও
হয়তো সত্যি সেক্সি দেখাচ্ছে যেমন বিশাল বললো - কত যুগ হয়ে গ্যাছে যখন "সেক্সি" বলেছে কেউ বনানীকে ।
ফোঁস করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বনানী ড্রেসকে আবার স্পিনিং রাক এ রেখে দেয় : "নাহঃ। .. কেনা উচিত হবে না" ।
তার পর বনানী পাথরের গয়নার সেকশন এ পৌঁছয় - কাঁচের কেস এ রাখা রয়াল ব্লু রঙের একটা হার্ট এর মতন দেখতে পেন্ডেন্ট - দেখেই বনানী বলে ওঠে
"কি সুন্দর! দুর্দান্ত!" চুপ করে বনানী দাঁড়িয়ে দেখে - মন্ত্রমুগ্ধের মতন !
বিশাল বনানীর কোমরে আলতো করে হাত রাখে ।
"বিশাল. .. এটা আমার পক্ষে সম্ভব না ... " বনানী বলে ওঠে ।
"কোনটা সম্ভব না?" - বিশাল এর হাত এখন বনানীর পাছার উপর - হালকা করে হাত বোলাচ্ছে - বোলাতে বলতেই হাসি মুখে জিজ্ঞেস করে ওঠে ।
"ওই হারটা" বনানী বলে ওঠে ।
বিশাল তুড়ি মেরে আটটেনড্যান্ট কে ডাকে - "ম্যাডাম এই হারটা একটু ট্রাই করে দেখবেন - খুলে আনুন জলদি ।"
হারটা খুলে আনার সময় বনানী প্রতিবাদ জানাতে থাকে - "কি দরকার - কি হবে.." কিন্তু সত্যি বলতে কি বনানীর চোখ আটকে গেছিলো
হারের দিকে - আর মাথার মধ্যে ঘুরছিলো বিশালের হাতের স্পর্শ - যেটা কিনা ওর পাছার উপর নড়ে চড়ে বেড়াচ্ছে আর মাঝে মাঝে টিপে টেপে ধরছে ।
হার আসার পর বিশাল বনানীর পাছা ছেড়ে হারটা হাতে নেয় - মন্ত্রমুগ্ধের মতন বনানী সালোয়ার এর ওড়না খুলে চুলটা উপরে তোলে দুই হাত দিয়ে ।
বিশাল চট করে হারটা বনানীর গলায় পরিয়ে দেয় - বনানী স্পষ্টতই দারুন মেজাজে - আর বিশাল হারটা লক আটকে দেয় ।
নীল রঙের হার্ট একদম বনানীর বুকের ঠিক মাঝে এসে ফিট হয় ।
বনানী সামনের আয়নাতে ভালো করে হারটা দেখতে থাকে - হাত দিয়ে পাথরটার উপর হাত বোলাতে থাকে ।
হারটা সত্যি দারুন আর বনানীর দারুন পছন্দ হয়েছে - পেছনে বিশাল দাঁড়িয়ে - বনানী সেটাও দেখতে পায় - দুজনকে এক আয়না তে দেখা যাচ্ছে ।
বিশালের বাঁ হাত আবার বনানীর পাছার উপর ফেরত যায় - আবার বোলাতে থাকে । বনানী বুঝতে পারে - কিন্তু কিছুই বলে না ।
হারটা অনেক বেশি জরুরি ।
"দলগুলো আনুন - এতো দেরি কেন?" বিশাল বলে ওঠে ।
সাথে সাথে পুরো কেস এসে যায় - মিনিট দুয়েকের মধ্যেই বনানী কানে পরে নেয় - আর নিজেকে আয়নাতে দেখতে থাকে ।
"দুর্দান্ত লাগছে তোমাকে এতে" বিশাল বনানীর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বলে - বিশালের হাত এখন দু পাছার ফাঁকে ধীরে ধীরে ঢুকছে ।
"দারুন না? আমি জানি !" বনানী বলে ওঠে ।
এক মিনিট যাবার পর বিশাল বনানীর পাছায় হালকা করে একটা চাঁটি মারে - বলে ওঠে
"ম্যাডাম পুরো সেটটা নেবেন - বিল করুন এখুনি"
বনানী কিছু বলার আগেই বিশাল নিজের ক্রেডিট কার্ড ধরিয়ে দেয় সেই মহিলা আটটেনড্যান্ট এর হাতে ।
যাবার আগে সেই মহিলার চোখ চলে যায় বিশালের বাম হাতের দিকে - যেটা তখন বনানীর পাছা টিপে চলেছিল - আর ডান হাতের দিকে - যাতে ধরা ছিল
ডায়মন্ড ক্রেডিট কার্ড - খুব কম লোকেই ব্যবহার করে । ইনভিটেশন অনলি ।
দাম মেটানোর পর - বিশাল বলে ওঠে - "হারটা প্যাক করে ফেলো - দুলগুলো পরে ফেলো ।"
বনানী হেসে ওঠে "যা বলবে বস!" ।
বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা অবনী এসব কিছুই দেখতে আর বুঝতে পারে না । বিশাল ওর মাকে নিয়ে কেনই বা চিন্তিত তার কোনো মাথা মুন্ডু নেই ।
এদিকে ওর মা বিশাল বিশাল করে ক্লান্ত প্রায় - যা বলছে সবেতেই হা ওরে যাচ্ছে ।
ফেরত আসার সময় দেখতে পায় বিশাল ওর মায়ের কোমর ধরে নিয়ে আসছে - অবনীর একদমই পছন্দ হয় না - এটা নীতিগত ভাবে অনুচিত ।
অবনী সেই মহিলা আটটেনড্যান্ট এর মুখ দেখে ধরতে পারে - কিছু একটা হচ্ছে - যেটা একদমই ঠিক না - কিন্তু না অবনী না সেই মহিলা কিছু বলে আর কিছু করে । চুপ থাকায় সমীচীন ধরে নেয় ।
অবনী চুপ করে থাকে কারণ বহুদিন বাদে মাকে দিলখোলা আনন্দে দেখতে পাচ্ছিলো ।
হেঁটে যখন ওরা বেরিয়ে গেলো অবনী বিশাল আর বনানীর পেছন পেছন হাঁটতে থাকে - সত্যি কাবাব মে হাড্ডি ।
খানিক বাদে চলমান সিঁড়ি র সামনে একটা বসার জায়গায় বিশাল আর বনানী বসে পড়ে ।
"আইস ক্রিম খাবে?" বিশাল জিজ্ঞেস করে বনানীকে ।
"খেলেই হয় !" বনানী হাসতে হাসতে বলে ।
"তোর মায়ের আইস ক্রিম খাবার শখ হয়েছে - তুই টুক করে কিনে আনতো দেখি সামনে থেকে ?" এই বলতে বলতে
বিশাল নিজের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে দেয় অবনীকে ।
"কি আপদ! লাইন দেখছিস সামনে? এখন গেলে অন্তত ২০ মিনিট এর ধাক্কা ! লাইন দরজার বাইরে অব্দি চলে এসেছে !" অবনী আপত্তি জানায় ।
বিশাল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ।
"যেমন বাবা - তেমনি ছেলে । ছাড় তুই যখন যাবি না - আমিই যাই.." বলে উঠে পড়ে ।
অবনীর মাথা গরম হয়ে যায়! তবে রে! আমি ই যাবো বলে অবনী রেডি হয়ে ওঠে ।
"আমিই যাচ্ছি । কি খাবে তোমরা? কোন? বোল? জেলাটো ? কি ফ্লেভার?"
বনানী বলে ওঠে - "চকলেট আমার জন্যে!"
বিশাল যোগ দেয় : "আমার জন্যে ম্যাংগো আনিস " একটু বাদে যোগ করে : "নিজের জন্যেও কিছু একটা আনিস" ।
অবনীর মাথা আরো গরম হয় : "আবাল! নিজের জন্যেও আনিস!"
তবুও মায়ের সামনে মাথা গরম না করে - ধীরে ধীরে আইস ক্রিম আনতে চলে ।
সত্যি দারুন দোকান - অনেকবার বিশাল খাইয়েছে এখানে - তাই প্রচুর ভিড় হয় আর দামও মারাত্মক বেশি ।
বিশাল দেখতে থাকে অবনী ভিড়ের মধ্যে মিলিয়ে যাচ্ছে - মিলিয়ে যাবার পর এদিক ওদিক দেখতে থাকে ।
বনানী জিজ্ঞেস করে - "ও গেলো তাহলে?"
বিশাল মাথা নাড়ে ।
"জায়গাটা খুব সুন্দর । আমার খুব ভালো লাগছে ।"
"তুমি বাইরে বেরোও না, না? ওই আবাল বরের জন্যে, তাই না?"
বনানী হেসে ওঠে - খানিকটা কান্তি কে আবাল বলার জন্যে আর খানিকটা অদ্ভুত ভাবে বিশালের কথার ধারণ শুনে ।
"তোমার এরকম মনে হলো কেন?"
"মনে হয়, তাই মনে হয় ।" বিশাল গম্ভীর ।
"সত্যি তাই বলা যায় - এখানে নিয়ে আসার জন্যেও আমাকে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়েছে । ভাব দেখি? নিজের ছেলে গোয়া থাকে ঘোরা - ছেলের সাথে থাকা একসাথে হবে তাতেও ভাবনা ।" বনানী বলে ওঠে ।
"যন্ত্রনা বলা যেতে পারে - ছাঃ " - বিশাল যোগ করে ।
"আমি তো জানিই না - কান্তি অবনীর সাথে দেখা করতে চায় কিনা । কান্তি কোথাও যাবে না । যেতেও চায় না । ওর ভালো লাগে না ।" বনানী বলতে থাকে।
বলতে বলতে দেখতে থাকে একটা ফিরিঙ্গি বর বৌ হাত ধরাধরি করে সামনে দিয়ে যাচ্ছে ।
"এ রকম ছিল না ।" বনানী বলতে থাকে
"আগে অনেক জায়গায় যেতাম - আলাদা সময় - ঘুরতাম - পার্টিতেও যেতাম ওর অফিস পার্টি তে ।
বড় কিছু না - কিন্তু দারুন ভালো লাগতো । অনেক লোক । নতুন লোক । এখন তো কফি খেতেও বাইরে বেরোয় না ।"
"হুম । তাহলে তুমি জানো কি ঘটেছে ?" বিশাল জিজ্ঞেস করে ।
"হাঁ " বনানী বলে - "আমাদের বয়স বেড়ে গেছে ।"
বিশাল হা হা করে হেসে ওঠে "দূর । কান্তি আবালে পরিণত হয়েছে - এমন গাড়োল যে নিজের দারুন বৌ কে কফি খেতে নিয়ে যায় না ।"
বনানী বলতে থাকে : "শুরু হয়েছিল যখন থেকে - অবনী হোস্টেল এ পড়তে গেলো - তুমি ভাববে ওটাই ঠিক টাইম ছিল - কিন্তু না ।
আরো বোরিং হতে শুরু হলো - আরো চুপচাপ ।"
বনানী চুপ করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে - বলতে থাকে : "ঠিক আছে - অবনীকে মানুষ করেছি । ভালো ছেলে - ভালো চাকরি করে । আমরা কিছু ঠিক করেছি অন্তত ।"
"সত্যি সব ঠিক আছে - না নিজেকে এইসব বলে প্রবোধ দাও?" বিশাল জিজ্ঞেস করে ।
"আমি.. আমি জানি না । কি বলতে চাও তুমি?" বনানী জিজ্ঞেস করে ওঠে ।
"তুমি জানো আমি কি ভাবি - যখন আমি তোমাকে দেখি?"
বনানী মাথা নাড়ে ।
"তুমি দারুন হট । ফাকিং হট যাকে বলে ।"
"ওহ!" বনানী নারভাস হাসার চেষ্টা করে - বনানীকে এর আগে এরকম কেউ বলে নি ।
বনানী একটু সরে নিজের পা দুটোকে জড়িয়ে বসে ।
বিশাল বনানীর থাইতে হাত রাখে - থাইয়ের উপর ধীরে ধীরে হাত বোলাতে থাকে ।
"হ্যাঁ - আর তোমার দিকে চাইলেই আমিও গরম হয়ে উঠি - এখন যেমন হচ্ছি ।"
বনানী জিজ্ঞেস করে.. "সত্যি?"
"তোমায় কেউ এটা বলেনি আজ অব্দি না?" - বিশাল জিজ্ঞেস করে - বনানীর মনের কথা পড়ে ফেলে ।
"না সত্যি কেউ না..."
"নিজে ভেবে দেখো -- আর ভাবারই বা কি আছে - আমি জানি তুমি নিজের জীবন বেকার নষ্ট করেছো ।"
"আমি করেছি ?"
"নিশ্চই । তুমি এই বোরিং মধ্যবিত্ত ঘরোয়া বৌ এর থেকে অনেক বেশি কিছু হতে পারতে - চাই কি এখনো পারো ।"
মল দে গোয়া তে পৌছে ত্রিমূর্তি পার্কিং করে গাড়ি - ভ্যালেট পার্কিং । বিশাল গাড়ির চাবিটা ছুঁড়ে দেয় ভ্যালেট এর দিকে ।
দরজা দিয়ে ঢুকেই - প্রচুর দোকান - আর ছুটির দিনে ভরা পুরো ।
অবনীর মনে হয় বেকার কাবাব মে হাড্ডি হচ্ছে - ওর মার শপিং পছন্দ - আর বিশাল আজ দোকান দেখার মুডএই আছে ।
তাই না এলেই বোধহয় ভালো হতো ।
মাঝে মাঝে বনানী একেকটা দোকানের কাছের দেয়ালে উঁকি মেরে দেখে - পারফেক্ট উইন্ডো শপিং - যাকে বলে ।
বিশাল জিজ্ঞেস করে - ভেতরে চলো - বাইরে থেকে দেখার কিছু নেই এতো ।
সব সময়েই বনানী মাথা নেড়ে আবার হাঁটা দেয় ।
অবনী এটা জানে - ওর মা যত বেশি দেখবে এতটা কিনবেই না ।
নিজেদের মধ্যবিত্ত ঘরানা - সেটা বনানীর থেকে বেশি কেউ জানে না ।
হটাৎ করে বনানীর চোখ আটকে যায় আর একটা বুটিক এর মতন দোকানে ।
তাতে অনেক রকম পাথরের গয়না - আর ডিসাইনার পোশাক ভরা আছে । বনানী চোখ মেলে ভালো করে সেখানে তাকিয়ে থাকে ।
অবনী জানে - বনানী কিছুতে ঢুকবে না - তাই সে চুপ করে থাকে ।
বিশাল বলে ওঠে :
"ঢুকে পড়ো । কাঁহাতক স্রেফ চোখ দিয়ে গিলবে?"
বনানীর কোমরে ধাক্কা দিয়েই এক রকম বিশাল দরজা খুলে ঢুকিয়ে দেয় -- বনানী হেসে বলে ওঠে :
"বেশ বাবা - যাচ্ছি যাচ্ছি - ওরকম ধাক্কা মেরো না তা বলে!"
অবনীর মাথায় কিছু ঢোকে না । ওর মা কখনোই কারোর কোথায় এই রকম দোকানে ঢুকবে না ।
কিন্তু বিশাল বললো আর ওর মা ঢুকে গেলো ।
বিশাল বাইরে দাঁড়িয়ে আর একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে থাকে - আর দেখতে থাকে ভেতরে কি সার্কাস চলছে ।
প্রায় ১০ মিনিট বাদে অবনী বেরিয়ে আসে - আর বলে ওঠে - "অসম্ভব । এ জিনিস সহ্য করা যাচ্ছে - মা স্রেফ দেখেই চলেছে দেখেই চলেছে ।
মাথা খারাপ হয়ে যাবে ।"
"ধুর বাল । তুই থাক এখানে" বলে বিশাল দোকানে ঢোকে ।
এমনটা অবনী আশা করেনি - বিশালের কোনোকালে কোনো দোকানে ঢোকার কোনো ইচ্ছেই ছিল না - দোকান কেনার ইচ্ছে আলাদা ।
ওটাই ওর ব্যবসা ।
বিশাল চোখের সানগ্লাস বুক পকেটে রেখে - বনানীর পাশে দাঁড়ায় ।
বনানী বিশালকে একটা ডিসাইনার সালোয়ার স্যুট দেখায় - ফুটকি দেয়া - সবুজের উপর সাদা ।
"এটা কি রকম?" বনানী জিজ্ঞেস করে ।
"বলা মুশকিল - তবে তুমি পড়লে সেক্সি লাগবে ।" বিশাল ড্রেস দেখতে দেখতে মন্তব্য করে ।
বনানী বলে ওঠে - "হুম হয়তো"
"তোমার বরটি কিন্তু পছন্দ করবে না - এই সব পরলে ।" বিশাল যোগ করে দেয় ।
"আমাকে মায়ের কাছে মাসির গপ্পো করছো?" বনানী বলে ওঠে - "প্রথমেই জিজ্ঞেস করবে - কেন কিনলে? কত টাকা দাম? এ সব কেন লাগে?"
"গাড়োল এক নম্বর এর দেখছি " বিশাল বলে "ভালো দেখতে লাগবে - এটা বোঝা এতো কঠিন কেন এই লোকগুলোর কাছে?"
"হ্যাঁ - আর কতদিন হলো কিছু ভাল জিনিস নিজের জন্যে কিনিনি - আর লাগেই বা কেন - কোনো কারণ তো সত্যি নেই " বনানী আফসোস করে ।
"বনানী, মাঝে মাঝে নিজেকে একটু ট্রিট দিতে হয় - দিয়ে দাও ।"
বনানী এ সব কথার ফাঁকে ড্রেস তা নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে আয়নায় দেখে - সত্যি দারুন দেখতে - ভালো মানাচ্ছেও
হয়তো সত্যি সেক্সি দেখাচ্ছে যেমন বিশাল বললো - কত যুগ হয়ে গ্যাছে যখন "সেক্সি" বলেছে কেউ বনানীকে ।
ফোঁস করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বনানী ড্রেসকে আবার স্পিনিং রাক এ রেখে দেয় : "নাহঃ। .. কেনা উচিত হবে না" ।
তার পর বনানী পাথরের গয়নার সেকশন এ পৌঁছয় - কাঁচের কেস এ রাখা রয়াল ব্লু রঙের একটা হার্ট এর মতন দেখতে পেন্ডেন্ট - দেখেই বনানী বলে ওঠে
"কি সুন্দর! দুর্দান্ত!" চুপ করে বনানী দাঁড়িয়ে দেখে - মন্ত্রমুগ্ধের মতন !
বিশাল বনানীর কোমরে আলতো করে হাত রাখে ।
"বিশাল. .. এটা আমার পক্ষে সম্ভব না ... " বনানী বলে ওঠে ।
"কোনটা সম্ভব না?" - বিশাল এর হাত এখন বনানীর পাছার উপর - হালকা করে হাত বোলাচ্ছে - বোলাতে বলতেই হাসি মুখে জিজ্ঞেস করে ওঠে ।
"ওই হারটা" বনানী বলে ওঠে ।
বিশাল তুড়ি মেরে আটটেনড্যান্ট কে ডাকে - "ম্যাডাম এই হারটা একটু ট্রাই করে দেখবেন - খুলে আনুন জলদি ।"
হারটা খুলে আনার সময় বনানী প্রতিবাদ জানাতে থাকে - "কি দরকার - কি হবে.." কিন্তু সত্যি বলতে কি বনানীর চোখ আটকে গেছিলো
হারের দিকে - আর মাথার মধ্যে ঘুরছিলো বিশালের হাতের স্পর্শ - যেটা কিনা ওর পাছার উপর নড়ে চড়ে বেড়াচ্ছে আর মাঝে মাঝে টিপে টেপে ধরছে ।
হার আসার পর বিশাল বনানীর পাছা ছেড়ে হারটা হাতে নেয় - মন্ত্রমুগ্ধের মতন বনানী সালোয়ার এর ওড়না খুলে চুলটা উপরে তোলে দুই হাত দিয়ে ।
বিশাল চট করে হারটা বনানীর গলায় পরিয়ে দেয় - বনানী স্পষ্টতই দারুন মেজাজে - আর বিশাল হারটা লক আটকে দেয় ।
নীল রঙের হার্ট একদম বনানীর বুকের ঠিক মাঝে এসে ফিট হয় ।
বনানী সামনের আয়নাতে ভালো করে হারটা দেখতে থাকে - হাত দিয়ে পাথরটার উপর হাত বোলাতে থাকে ।
হারটা সত্যি দারুন আর বনানীর দারুন পছন্দ হয়েছে - পেছনে বিশাল দাঁড়িয়ে - বনানী সেটাও দেখতে পায় - দুজনকে এক আয়না তে দেখা যাচ্ছে ।
বিশালের বাঁ হাত আবার বনানীর পাছার উপর ফেরত যায় - আবার বোলাতে থাকে । বনানী বুঝতে পারে - কিন্তু কিছুই বলে না ।
হারটা অনেক বেশি জরুরি ।
"দলগুলো আনুন - এতো দেরি কেন?" বিশাল বলে ওঠে ।
সাথে সাথে পুরো কেস এসে যায় - মিনিট দুয়েকের মধ্যেই বনানী কানে পরে নেয় - আর নিজেকে আয়নাতে দেখতে থাকে ।
"দুর্দান্ত লাগছে তোমাকে এতে" বিশাল বনানীর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বলে - বিশালের হাত এখন দু পাছার ফাঁকে ধীরে ধীরে ঢুকছে ।
"দারুন না? আমি জানি !" বনানী বলে ওঠে ।
এক মিনিট যাবার পর বিশাল বনানীর পাছায় হালকা করে একটা চাঁটি মারে - বলে ওঠে
"ম্যাডাম পুরো সেটটা নেবেন - বিল করুন এখুনি"
বনানী কিছু বলার আগেই বিশাল নিজের ক্রেডিট কার্ড ধরিয়ে দেয় সেই মহিলা আটটেনড্যান্ট এর হাতে ।
যাবার আগে সেই মহিলার চোখ চলে যায় বিশালের বাম হাতের দিকে - যেটা তখন বনানীর পাছা টিপে চলেছিল - আর ডান হাতের দিকে - যাতে ধরা ছিল
ডায়মন্ড ক্রেডিট কার্ড - খুব কম লোকেই ব্যবহার করে । ইনভিটেশন অনলি ।
দাম মেটানোর পর - বিশাল বলে ওঠে - "হারটা প্যাক করে ফেলো - দুলগুলো পরে ফেলো ।"
বনানী হেসে ওঠে "যা বলবে বস!" ।
বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা অবনী এসব কিছুই দেখতে আর বুঝতে পারে না । বিশাল ওর মাকে নিয়ে কেনই বা চিন্তিত তার কোনো মাথা মুন্ডু নেই ।
এদিকে ওর মা বিশাল বিশাল করে ক্লান্ত প্রায় - যা বলছে সবেতেই হা ওরে যাচ্ছে ।
ফেরত আসার সময় দেখতে পায় বিশাল ওর মায়ের কোমর ধরে নিয়ে আসছে - অবনীর একদমই পছন্দ হয় না - এটা নীতিগত ভাবে অনুচিত ।
অবনী সেই মহিলা আটটেনড্যান্ট এর মুখ দেখে ধরতে পারে - কিছু একটা হচ্ছে - যেটা একদমই ঠিক না - কিন্তু না অবনী না সেই মহিলা কিছু বলে আর কিছু করে । চুপ থাকায় সমীচীন ধরে নেয় ।
অবনী চুপ করে থাকে কারণ বহুদিন বাদে মাকে দিলখোলা আনন্দে দেখতে পাচ্ছিলো ।
হেঁটে যখন ওরা বেরিয়ে গেলো অবনী বিশাল আর বনানীর পেছন পেছন হাঁটতে থাকে - সত্যি কাবাব মে হাড্ডি ।
খানিক বাদে চলমান সিঁড়ি র সামনে একটা বসার জায়গায় বিশাল আর বনানী বসে পড়ে ।
"আইস ক্রিম খাবে?" বিশাল জিজ্ঞেস করে বনানীকে ।
"খেলেই হয় !" বনানী হাসতে হাসতে বলে ।
"তোর মায়ের আইস ক্রিম খাবার শখ হয়েছে - তুই টুক করে কিনে আনতো দেখি সামনে থেকে ?" এই বলতে বলতে
বিশাল নিজের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে দেয় অবনীকে ।
"কি আপদ! লাইন দেখছিস সামনে? এখন গেলে অন্তত ২০ মিনিট এর ধাক্কা ! লাইন দরজার বাইরে অব্দি চলে এসেছে !" অবনী আপত্তি জানায় ।
বিশাল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ।
"যেমন বাবা - তেমনি ছেলে । ছাড় তুই যখন যাবি না - আমিই যাই.." বলে উঠে পড়ে ।
অবনীর মাথা গরম হয়ে যায়! তবে রে! আমি ই যাবো বলে অবনী রেডি হয়ে ওঠে ।
"আমিই যাচ্ছি । কি খাবে তোমরা? কোন? বোল? জেলাটো ? কি ফ্লেভার?"
বনানী বলে ওঠে - "চকলেট আমার জন্যে!"
বিশাল যোগ দেয় : "আমার জন্যে ম্যাংগো আনিস " একটু বাদে যোগ করে : "নিজের জন্যেও কিছু একটা আনিস" ।
অবনীর মাথা আরো গরম হয় : "আবাল! নিজের জন্যেও আনিস!"
তবুও মায়ের সামনে মাথা গরম না করে - ধীরে ধীরে আইস ক্রিম আনতে চলে ।
সত্যি দারুন দোকান - অনেকবার বিশাল খাইয়েছে এখানে - তাই প্রচুর ভিড় হয় আর দামও মারাত্মক বেশি ।
বিশাল দেখতে থাকে অবনী ভিড়ের মধ্যে মিলিয়ে যাচ্ছে - মিলিয়ে যাবার পর এদিক ওদিক দেখতে থাকে ।
বনানী জিজ্ঞেস করে - "ও গেলো তাহলে?"
বিশাল মাথা নাড়ে ।
"জায়গাটা খুব সুন্দর । আমার খুব ভালো লাগছে ।"
"তুমি বাইরে বেরোও না, না? ওই আবাল বরের জন্যে, তাই না?"
বনানী হেসে ওঠে - খানিকটা কান্তি কে আবাল বলার জন্যে আর খানিকটা অদ্ভুত ভাবে বিশালের কথার ধারণ শুনে ।
"তোমার এরকম মনে হলো কেন?"
"মনে হয়, তাই মনে হয় ।" বিশাল গম্ভীর ।
"সত্যি তাই বলা যায় - এখানে নিয়ে আসার জন্যেও আমাকে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়েছে । ভাব দেখি? নিজের ছেলে গোয়া থাকে ঘোরা - ছেলের সাথে থাকা একসাথে হবে তাতেও ভাবনা ।" বনানী বলে ওঠে ।
"যন্ত্রনা বলা যেতে পারে - ছাঃ " - বিশাল যোগ করে ।
"আমি তো জানিই না - কান্তি অবনীর সাথে দেখা করতে চায় কিনা । কান্তি কোথাও যাবে না । যেতেও চায় না । ওর ভালো লাগে না ।" বনানী বলতে থাকে।
বলতে বলতে দেখতে থাকে একটা ফিরিঙ্গি বর বৌ হাত ধরাধরি করে সামনে দিয়ে যাচ্ছে ।
"এ রকম ছিল না ।" বনানী বলতে থাকে
"আগে অনেক জায়গায় যেতাম - আলাদা সময় - ঘুরতাম - পার্টিতেও যেতাম ওর অফিস পার্টি তে ।
বড় কিছু না - কিন্তু দারুন ভালো লাগতো । অনেক লোক । নতুন লোক । এখন তো কফি খেতেও বাইরে বেরোয় না ।"
"হুম । তাহলে তুমি জানো কি ঘটেছে ?" বিশাল জিজ্ঞেস করে ।
"হাঁ " বনানী বলে - "আমাদের বয়স বেড়ে গেছে ।"
বিশাল হা হা করে হেসে ওঠে "দূর । কান্তি আবালে পরিণত হয়েছে - এমন গাড়োল যে নিজের দারুন বৌ কে কফি খেতে নিয়ে যায় না ।"
বনানী বলতে থাকে : "শুরু হয়েছিল যখন থেকে - অবনী হোস্টেল এ পড়তে গেলো - তুমি ভাববে ওটাই ঠিক টাইম ছিল - কিন্তু না ।
আরো বোরিং হতে শুরু হলো - আরো চুপচাপ ।"
বনানী চুপ করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে - বলতে থাকে : "ঠিক আছে - অবনীকে মানুষ করেছি । ভালো ছেলে - ভালো চাকরি করে । আমরা কিছু ঠিক করেছি অন্তত ।"
"সত্যি সব ঠিক আছে - না নিজেকে এইসব বলে প্রবোধ দাও?" বিশাল জিজ্ঞেস করে ।
"আমি.. আমি জানি না । কি বলতে চাও তুমি?" বনানী জিজ্ঞেস করে ওঠে ।
"তুমি জানো আমি কি ভাবি - যখন আমি তোমাকে দেখি?"
বনানী মাথা নাড়ে ।
"তুমি দারুন হট । ফাকিং হট যাকে বলে ।"
"ওহ!" বনানী নারভাস হাসার চেষ্টা করে - বনানীকে এর আগে এরকম কেউ বলে নি ।
বনানী একটু সরে নিজের পা দুটোকে জড়িয়ে বসে ।
বিশাল বনানীর থাইতে হাত রাখে - থাইয়ের উপর ধীরে ধীরে হাত বোলাতে থাকে ।
"হ্যাঁ - আর তোমার দিকে চাইলেই আমিও গরম হয়ে উঠি - এখন যেমন হচ্ছি ।"
বনানী জিজ্ঞেস করে.. "সত্যি?"
"তোমায় কেউ এটা বলেনি আজ অব্দি না?" - বিশাল জিজ্ঞেস করে - বনানীর মনের কথা পড়ে ফেলে ।
"না সত্যি কেউ না..."
"নিজে ভেবে দেখো -- আর ভাবারই বা কি আছে - আমি জানি তুমি নিজের জীবন বেকার নষ্ট করেছো ।"
"আমি করেছি ?"
"নিশ্চই । তুমি এই বোরিং মধ্যবিত্ত ঘরোয়া বৌ এর থেকে অনেক বেশি কিছু হতে পারতে - চাই কি এখনো পারো ।"