05-09-2021, 09:49 PM
(This post was last modified: 27-10-2021, 09:09 AM by Bumba_1. Edited 4 times in total. Edited 4 times in total.)
খুব জোর বাঁচান বেঁচে গেছে সে .. আর কিছুক্ষণ দেরিতে এলে কেলেঙ্কারি হয়ে যেতো - এইসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে বেডরুমে ঢুকে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিলো নন্দিনী। বিছানার উপর বিট্টু তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
একবার নিজের সন্তানের দিকে তাকিয়ে তারপর ধীরে ধীরে নিজের পরিধেয় স্লিভলেস নাইটি উন্মোচন করে এবং নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাসটি খুলে ফেলে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে খাটের উল্টোদিকে রাখা ড্রেসিংটেবিলের আপাদমস্তক লম্বা আয়নাটির সামনে দাঁড়ালো নন্দিনী।
রাত দু'টো থেকে সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত টানা বেশ কয়েক ঘন্টা ঘুমানোর ফলে চোখে সেইরকম ভাবে ক্লান্তির ছাপ না থাকলেও গতকাল রাতে যে তার শরীরের উপর দিয়ে প্রবল ঝড় বয়ে গেছে তার ছাপ নন্দিনীর চোখেমুখে এবং সারা শরীরে স্পষ্ট।
লাল আপেলের মতো টসটসে গালদুটোতে ভবেশ কুন্ডুর দাঁত বসানোর দাগ বিদ্যমান .. ঠোঁটদুটো অপেক্ষাকৃত ফুলে রয়েছে এবং ঠোঁটের কোণার কাছটা কেটে গিয়েছে .. ঠোঁটদুটো চোষার সঙ্গে সঙ্গে মিস্টার কুন্ডু মাঝে মাঝেই পাগলের মতো কামড় বসাচ্ছিলো নন্দিনীর ওষ্ঠজোড়ায়, তারই ফলস্বরূপ এই পরিণতি .. গলায়, ঘাড়ে, তলপেটে নাভির চারপাশে, সুগঠিত দুই উরুতে সর্বত্র ভবেশ বাবুর আঁচড় এবং কামড়ের দাগ .. তবে লোকটা সব থেকে বেশি নির্দয় ছিলো নন্দিনীর দুই স্তনের প্রতি .. বড়োসড়ো বাতাবি লেবুর মতো মাইদুটো আঁচড়ে-কামড়ে একেবারে একসা করেছে .. বিট্টুর মাম্মাম লক্ষ্য করলো তার বোঁটাদুটো দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থে আগের থেকে অনেকটাই বেশি ফুলে আছে এখনো .. একবারের জন্যও তো লোকটা তার স্তনবৃন্তকে রেহাই দেয়নি .. কখনো দাঁত, কখনো নখ, আবার কখনো জিভ দিয়ে নিপীড়ন করেছে ওখানে .. ঘুম ভাঙার পর থেকে শরীরে যে পরিমাণ ব্যথা এবং জ্বালা অনুভব করছিলো সে, এখন তা কিছুটা হলেও প্রশমিত হয়েছে .. ড্রেসিং টেবিলের আয়নার দিকে পিছন করে দাঁড়িয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে নিজের তানপুরার মতো মাংসল পাছার দাবনার দিকে তাকালো নন্দিনী .. স্তনজোড়ার মতো তার নিতম্বের প্রতিও প্রবল যৌন নিপীড়নের ছাপ স্পষ্ট .. দাবনা দুটির বেশ কিছু জায়গায় কামড়ের দাগ তার সঙ্গে কামোদ্দীপক আক্রোশে চড় মারার ফলে এখনও লাল হয়ে আছে জায়গা দুটি .. শরীরের বাকি অংশের জ্বালা-যন্ত্রণা কমলেও পায়ুছিদ্রের ভিতরটা এখনো চিনচিন করছে .. যা কোনোদিন করেনি সেটাই আজ করলো নন্দিনী .. দুই হাত দিয়ে দাবনা দুটো ফাঁক করে স্পষ্টতই দেখলো ভেতরে রক্ত জমাট বাঁধা ..
এরই মধ্যে তলপেট কাঁপিয়ে তার প্রচন্ড হিসির বেগ এলো .. গতকাল রাতে আকস্মিক ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার জন্য এখনও তার শরীরে যে পাপ লেগে আছে তা দ্রুত ধুয়ে ফেলতে তাড়াতাড়ি করে বেডরুম সংলগ্ন বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো নন্দিনী।
নিজের মন এবং শরীরে লেগে থাকা কালিমা পরিষ্কার করে বাথরুম থেকে বেরিয়ে নন্দিনী দেখলো তখনও বিট্টু ঘুমোচ্ছে। "আহারে .. বেচারা রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেনি .. এখনই ডাকবো না .. আর একটু ঘুমিয়ে নিক" এইরূপ স্বগতোক্তি করে ডাইনিং রুমে এসে দেখলো তার শাশুড়ি মা মোবাইলে কার সঙ্গে যেন হেসে হেসে কথা বলছে। রান্নাঘরে গিয়ে দ্রুত দু'জনের জন্য চা বানিয়ে নিয়ে এলো নন্দিনী।
- "কি ব্যাপার বৌমা আজ এত দেরি হলো চা দিতে? তুমি তো দেখছি সাত সকালে উঠে স্নান করে নিয়েছো।"
- "রোজ তো একদম সময় ধরে সবকিছু করা যায় না মা .. আজ ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হয়েছে .. তার উপর যা গরম পড়েছে .. ভাবলাম একটু গা ধুয়ে নি .. পরে ভালো করে স্নান করবো বেলার দিকে। আপনি ফোনে কার সঙ্গে কথা বলছিলেন .. আপনার ছেলের সঙ্গে?"
- "আরে না না .. সেটা বলবো বলেই তো বসে আছি। আমার আদরের সব থেকে ছোটো ভাই রাজা ফোন করেছিলো।"
- "আপনার ছোটো ভাই? কই .. কোনোদিন তো শুনিনি তার কথা!! আপনার তো এক বড় দাদা এবং এক ছোটো বোনের কথা শুনেছি .. দুজনেই তো মারা গেছেন।"
- "শুনেছিলে হয়তো .. ভুলে গেছো এখন .. তোমার আর অর্চির বিয়েতে এসেছিলো তো .. সে অবশ্য অনেক বছর আগেকার কথা .. তারপর থেকে ওর সঙ্গে যোগাযোগ নেই .. আত্মভোলা মানুষ .. পরিবারের কারোর সঙ্গেই কোনোদিন খুব একটা সদ্ভাব নেই ওর .. তবে আমি ওকে সব থেকে বেশি ভালবাসি আর ও আমাকে খুব ভালোবাসে .. এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট এর ব্যবসা আছে .. বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়ায় .. বিগত চার পাঁচ বছর আফগানিস্তানে ছিলো .. এখন নাকি ওখানে কি সব ঝামেলা হচ্ছে তাই দেশে ফিরে এসেছে গত সপ্তাহে .. আজ সন্ধ্যেবেলায় আসবে আমাদের ফ্ল্যাটে সেটাই জানালো .. এই খবর শোনার পর থেকে খুশিতে মনটা ভরে উঠেছে আমার .. কত বছর পর ভাইকে দেখতে পাবো .."
- "আজকেই সন্ধ্যেবেলায় আসবে? রাতে থাকবে নাকি?"
- "এ আবার কেমন তর প্রশ্ন বৌমা? এত বছর পর আমার ভাই আসছে আমার কাছে .. কয়েকটা দিন তো অবশ্যই থাকবে .. তাছাড়া উনি তোমার মামাশ্বশুর হন .. এইভাবে বলাটা কি উচিত হলো!"
কথাগুলো শুনে মনে মনে কিছুটা দমে গেলো নন্দিনী। ভদ্রলোক এসে যদি রাতের বেলায় থাকতে চায় (থাকাটাই স্বাভাবিক কারণ রাতে যাবেই বা কোথায়) তাহলে থাকবে কোথায় .. ঘর তো মাত্র দুটো .. শোবেই বা কোথায়?
শাশুড়ি-বৌমার এই কথোপকথনের মাঝে নন্দিনীর সাইলেন্ট করে রাখা ফোনে কমপক্ষে অন্তত দশখানা মিসড কল এসে গেছে ভবেশ বাবুর। কাল রাতের ঘটনার পর থেকে ওই পাষণ্ডটার সঙ্গে আর কোনো রকম যোগাযোগ রাখবে না মনে মনে এক প্রকার ঠিক করে নিয়েছিলো নন্দিনী .. এর উপর হঠাৎ করে আজকেই তার মামাশ্বশুরের অস্তিত্বের কথা জানতে পারা এবং সেই ব্যক্তিটির এখানে আসার কথা শুনে নন্দিনী যারপরনাই ঘেঁটে 'ঘ' হয়েছিল .. তাই কল রিসিভ করার প্রয়োজন বোধ করলো না।
রবিবার দিন সারা সপ্তাহের জন্য মাছ-মাংস কিনে দিয়ে যায় অর্চিষ্মান বাবু। ডিপফ্রিজে মাটন ছিলোই। তাই এবেলা পাঁঠার মাংস রান্না করা হয়ে গেলো আর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো ওবেলা মাংসের সঙ্গে গরম গরম লুচি ভেজে দিলেই হবে আর বিকেলে বেরিয়ে চন্দননগরের বিখ্যাত মিষ্টি 'জলভরা সন্দেশ' আনা হবে।
সন্ধ্যে ছ'টা নাগাদ আগমন ঘটলো সুমিত্রা দেবীর ছোট ভাই রাজার। রাজশেখর গুহ .. বয়স আনুমানিক ৫৩ - ৫৪ হবে, গায়ের রঙ মোটামুটি ফর্সা দিকেই, ভালো উচ্চতার অধিকারী, স্পোর্টসম্যানদের মতো পেটানো চেহারা, কামানো মাথা, মুখে কয়েকদিনের না কাটা খোঁচাখোঁচা কাঁচাপাকা দাড়ি .. চশমা পরিহিত কটা চোখগুলোর ক্রূর চাউনির দিকে বেশীক্ষণ তাকিয়ে থাকা যায় না।
অকৃতদার রাজশেখর বাবুর ভারতবর্ষ এবং তার বাইরে কিছু জায়গায় এক্সপোর্ট-ইম্পোর্টৈর ব্যবসা আছে। তবে সেই ব্যবসা কতটা সহজ পদ্ধতিতে চলে সেই ব্যাপারে সন্দেহ আছে .. কারণ এই ক'বছরে বেশ কয়েকবার শ্রীঘরে কাটাতে হয়েছে তাকে। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কথা বলতে গেলে শুধুমাত্র একটি উদাহরণ দিলেই পুরো ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। কৈশোরকাল থেকেই উচ্ছন্নে যাওয়া রাজা যৌবনকালে পারিবারিক একটি নারীঘটিত কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে .. ফলস্বরূপ তার পিতৃদেব তাকে ত্যাজ্যপুত্র করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। সেই থেকে বাড়ি ছাড়া রাজশেখর বাবু। যদিও এই সমস্ত ব্যাপারে তার ভাইয়ের কোনোদিন কোনো দোষ দেখেননি সুমিত্রা দেবী। তার মতে তার ভাইয়ের মতো সোনার টুকরো ছেলে এই পৃথিবীতে আর দুটো নেই।
বড়লোক আত্মীয় দেশে ফিরে দেখা করতে আসছে সঙ্গে উপহার না আনলে হয়! অর্চিষ্মানের জন্য একটি ব্র্যান্ডেড ফর্মাল শার্ট এবং প্যান্ট .. আমাদের বিট্টুবাবুর জন্য ইমপোর্টেড এবং এক্সপেন্সিভ ভিডিও গেম আর তার সঙ্গে প্রচুর চকোলেটের সমাহার .. সুমিত্রা দেবীর জন্য একটি দামী গরদের শাড়ি .. কিন্তু নন্দিনীর জন্য কিছুই আনেনি রাজশেখর বাবু।
এতগুলো চকলেট একসঙ্গে দেখে এবং ভিডিও গেম উপহার পেয়ে যারপরনাই খুশি বিট্টু। সুমিত্রা দেবীও বেজায় খুশি এত দামী একটা শাড়ি উপহার হিসেবে পেয়ে। নন্দিনী মনোক্ষুন্ন না হলেও ভেতরে ভেতরে কিছুটা অবাক হলো তার মামাশ্বশুরের এইরূপ কান্ড দেখে।
বেশ কয়েক বছর পূর্বে তার ভাগ্নে অর্চিষ্মানের বিয়েতে কিছু সময়ের জন্য নববধুর সাজে নন্দিনীকে দেখে সুন্দরী মনে হলেও তার বেশি আর কিছু ঠাহর করতে পারেনি রাজশেখর বাবু। কিন্তু আজ এতো বছর পর এখানে এসে ঘরে পড়ার সাদার উপর লাল ফুল ফুল একটি অর্ডিনারি সুতির শাড়ি এবং কালো রঙের স্লিভলেস ব্লাউজ পরিহিতা তার দিদির পুত্রবধুকে দেখে রাজশেখর ওরফে রাজার একটি জলজ্যান্ত সেক্সবম্ব ছাড়া আর কিছুই মনে হলো না। কথোপকথনের ফাঁকে ফাঁকে তার মাইক্রোস্কোপিক চক্ষু (রাজার বন্ধুদের দেওয়া নাম) দিয়ে মেপে নিতে থাকলো নন্দিনীর শরীরের আনাচ-কানাচ।
কালো স্লিভলেস ব্লাউজের ভেতরে সাদা রঙের ব্রেসিয়ারের উপস্থিতি, রান্নাঘরে কাজ করার সময় বার দু'য়েক হাত তুলে চুল ঠিক করতে যাওয়ার মুহূর্তে তার কামানো ঘেমো বগল, পাখার বাতাসে বারকয়েক উড়ে যাওয়া আঁচলের তলা দিয়ে ঈষৎ চর্বিযুক্ত পেট এবং গভীর নগ্ন নাভির দর্শন .. কোনো কিছুই চোখ এড়ালো না রাজার।
লুচি, কষা মাংস আর জলভরা সন্দেশ সহযোগে রাতের খাবার সমাপ্ত হলো। রাতে বৈঠকখানার ঘরে একটি সিঙ্গেল বেড ক্যাম্প খাট পেতে শোবার ব্যবস্থা হলো রাজশেখর বাবুর। ক্যাম্প খাটে শুয়ে রান্নাঘর থেকে এক বোতল খাবার জল ভরে নিয়ে নিজের বেডরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করার আগে স্লিভলেস নাইটি পরিহিতা উর্ধাঙ্গের অন্তর্বাসহীন নন্দিনীকে এক ঝলক দেখতে পেলো রাজা। দৃশ্যটা দেখেই তার উত্থিত পুরুষাঙ্গটি একেবারে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে সপ্তসুরের শেষ স্বরে পৌঁছে গেলো। কামতাড়িত হয়ে গভীর রাতে একবার নন্দিনীর বেডরুমের দরজা বাইরে থেকে ঠেলে খোলার চেষ্টা করেছিল রাজশেখর বাবু .. কিন্তু ভেতর থেকে দরজা বন্ধ থাকায় সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি।
রাজা মনে মনে ভাবলো এইভাবে হবে না, নতুন কোনো ফন্দি আঁটতে হবে ..
- "গতকাল রাতে খেতে খেতে তোমার বৌমা বলছিলো ও টেক্সটাইল টেকনোলজির উপর কি যেন একটা এন্ট্রান্স এক্সাম দিয়েছে .. আজ রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে তার লিস্ট টাঙাবে .. চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কঠিন তাও ও একবার দেখতে যেতে চাইছিল .. তার জন্য আজ নাকি তোমার ছেলেকে ছুটি নিয়ে এখানে আসতে বলেছিল .. সে ব্যাটাছেলে তো আসতে পারবে না জানিয়ে দিয়েছে .. এখন বেচারী তোমার বৌমা কি করে একা একা গিয়ে দেখবে লিস্ট?"
- "ধুর ছাড় তো .. বুড়ো বয়সে এগুলো বৌমার আদিখ্যেতা .. ওর কোথায় কি রেজাল্ট বেরোবে তার জন্য আমার ছেলেকে ছুটি নিয়ে আসতে হবে! অর্চি আসেনি ঠিক করেছে। ওসব ছাড়, আগে বল তুই ক'দিন থাকবি তো আমার এখানে রাজা? কতদিন পর তোকে দেখলাম।"
- "এভাবে বলো না দিদি .. তোমার বৌমার শখ-আহ্লাদ বলেও তো কিছু আছে .. ওর অবশ্যই অধিকার আছে নিজের রেজাল্ট জানার .. ওরা আবার অনলাইনে কিছু জানায় না এটাই মুশকিল .. তাই যেতেই হবে .. আর তোমার ছেলে চিরকালই দাঁতক্যালানে রয়ে গেলো .. চেহারা এবং মন দুটোরই বিকাশ ঘটেনি .. যাইহোক, আমি সঙ্গে গাড়ি এনেছি তো .. আজকেই আমার চলে যাওয়ার কথা .. প্রচুর কাজ মাথায় নিয়ে এসেছি .. শিয়ালদার ওখানে একজন পরিচিত পরিবারের বাড়িতে আছি। এত কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকি তোমার বৌমার উপহার আনার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম .. ব্যাপারটা খুব খারাপ হয়েছে। আমার সঙ্গে তো গাড়ি আছে আমি বরং ওকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে রাজাবাজার সাইন্স কলেজ থেকে লিস্টটা দেখিয়ে আনি আর ওর পছন্দমত কোনো উপহার কিনে দিয়ে তারপর না হয় সন্ধ্যেবেলা ওকে ফেরত দিয়ে আবার কলকাতা ফিরে যাবো।"
- "আর দু'টো দিন থাকবি না ভাই আমার? থাকলে খুব খুশি হতাম .. তবে তুই কাজের মানুষ, তোকে তো আর আটকে রাখতে পারি না। তুই সঙ্গে করে বউমাকে নিয়ে যাবি বলছিস .. এর থেকে ভালো কথা আর কিই বা হতে পারে?"
সুমিত্রা দেবী এবং তার ভাই রাজার কথোপকথনের মধ্যেখানে প্রবেশ ঘটলো নন্দিনীর। জানে ওখানে চান্স পাওয়া সম্ভব নয় তবুও আজ তার পরীক্ষার ফলাফল বেরোবে কিন্তু সে জানতেও পারবেনা তার স্বামীর না আসার জন্য .. এটা ভেবে মনে মনে মনে মুষড়ে পড়েছিল অর্চিষ্মানের স্ত্রী।
গতকাল রাজশেখর বাবুর দৃষ্টি এবং গভীর রাতে তার বেডরুমে হানা দেওয়ার ব্যর্থ প্রচেষ্টা .. এগুলো কিছুই জানেনা নন্দিনী। তাই আপাত ভালো মানুষ মনে হওয়া তার মামাশ্বশুরের এইরূপ প্রস্তাবে মেঘ না চাইতেই জল পাওয়ার মতো অনুভূতি হলো নন্দিনীর। নিজেদের মধ্যে আরও কয়েক প্রস্থ আলোচনার পর দুপুরের খাওয়া-দাওয়া সেরে 'সন্ধ্যের মধ্যেই ফিরে আসবে, এইতো মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যাপার' - এটা মনে করে বিট্টুকে অবলম্বন হিসেবে তার শাশুড়ির কাছে গচ্ছিত রেখে খুব রুচিসম্পন্ন এবং মার্জিত ভাবে লাল রঙের একটি জর্জেটের শাড়ি ও সোনালী রঙের হাফস্লিভ ব্লাউজ পড়ে রাজশেখর বাবুর সঙ্গে কলকাতার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলো নন্দিনী।
একতলায় কমিউনিটি হলের সামনে ভবেশ কুন্ডু সঙ্গে হঠাৎ দেখা তাদের। যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয় ... গতকাল থেকে ভবেশ বাবুর একটাও কল রিসিভ না করা নন্দিনী মনেপ্রাণে avoid করতে চাইছিলো তাকে। কিন্তু প্রায় জনমানব শূন্য আবাসনে দুজনের কখনো দেখা হবে না এটাও তো একদম অসম্ভব ব্যাপার।
এদিকে গতকাল থেকে নন্দিনীকে একনাগাড়ে ফোন করে চলা ভবেশ বাবুর ক্রমশ ধৈর্যচ্যুতি ঘটছিলো। অর্চিষ্মানের স্ত্রীকে সামনে পেয়ে তার মনে হলো এখনই ওকে পাঁজাকোলা করে তুলে তার ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়। তারপর সঙ্গের ভদ্রলোকটি অর্থাৎ রাজশেখর বাবুকে দেখে কয়েক মুহূর্ত থমকে দাঁড়ালো।
দু'জন দুজনের দিকে কয়েক মুহূর্ত অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে "what a pleasant surprise.." বলে প্রথমে মিস্টার কুন্ডু কে জরিয়ে ধরলো রাজশেখর বাবু।
পরস্পরের কুশল বিনিময়ের পরে মিস্টার কুন্ডু জানতে পারলো রাজশেখর ওরফে রাজা নন্দিনীর মামাশ্বশুর .. তাকে নিয়ে কলকাতায় যাচ্ছে একটি বিশেষ কাজে। "আমি তোমাকে পরে কল করে নেবো রাজা" এই বলে মুচকি হেসে সেখান থেকে বিদায় নিলো ভবেশ বাবু।
রাস্তার মধ্যে গাড়িতে যেতে যেতে "নন্দিনীর বাপের বাড়ি কোথায় .. সেখানে কে কে আছে .. নন্দিনীরা কয় ভাই বোন .. তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি .." এইরকম কয়েকটা আপাত নিরীহ কথোপকথনের মাধ্যমে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তারা রাজাবাজার সাইন্স কলেজে পৌছে গেলো। বলাই বাহুল্য লিস্টে নন্দিনীর নাম নেই .. তার জন্য কিছুটা হলেও মনে দুঃখ হলো তার।
"দুঃখ করো না বৌমা .. এবার হয়নি পরের বার নিশ্চয়ই হবে .. কিন্তু এবার যেটা হবে সেটা একটু পরেই দেখতে পাবে .. তোমাকে নিয়ে এখন 'সেনকো গোল্ড' এ যাবো .. সেখানে নিজের মনের মতো জুয়েলারি পছন্দ করে নিও ওটাই আমার তরফ থেকে তোমার জন্য উপহার থাকবে।" কথাগুলো বলে নন্দিনীর শত আপত্তি সত্ত্বেও তাকে নিয়ে বউবাজার 'সেনকো গোল্ড' এর একটি ব্রাঞ্চে গেল রাজশেখর বাবু।
গয়না আর নারী এই দুটির পরস্পরের মধ্যে অমোঘ আকর্ষণ চিরাচরিত। তাই প্রথমে গররাজি থাকলেও পরে হলমার্ক যুক্ত একটি চব্বিশ ক্যারেটের সোনার গলার হার উপহার হিসেবে নিলো তার মামা শ্বশুরের কাছ থেকে। বলে দেওয়ার দরকার পড়ে না উপহারটি কতটা দামী। দুপুর গড়িয়ে তখন বিকেল হয়ে গিয়েছে। নন্দিনীকে সঙ্গে করে বউবাজার চত্বরেই একটা নামী রেস্তোরাঁয় ঢুকলো রাজা বাবু।
এখন সবে বিকেল .. বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতে এখনো ঢের দেরি আছে .. তাছাড়া গাড়ি করে কলকাতা থেকে চন্দননগর মাত্র ঘণ্টাখানেকের জার্নি .. তাই নন্দিনীও আর বিশেষ আপত্তি করলো না।
রেস্তোরাঁয় ঢুকেই রাজশেখর বাবু একটি কেবিন বুক করে নিলো। এই ব্যাপারে কিছুটা অবাক হলো নন্দিনী। সান্ধ্যকালীন স্নাক্স আর কোল্ড কফি অর্ডার দেওয়া হলো।
"আপনি মিটার কুন্ডুকে কিভাবে চেনেন?" জিজ্ঞাসা করলো নন্দিনী।
"ও একসময় আমার বিজনেস পার্টনার ছিলো .. তার সঙ্গে খুব ভালো বন্ধুও .. আসলে চোরে-চোরে মাসতুতো ভাই বলতে পারো .. হাহাহাহা.." ফিশফ্রাই তে কামড় বসিয়ে উত্তর করলো রাজা বাবু।
কথাটা শুনেই বুকটা ধ্বক করে উঠলো নন্দিনীর। তারপর চলতে থাকা স্বাভাবিক কথোপকথনের মধ্যে "আচ্ছা আপনি তো একজন বিত্তবান মানুষ, তাহলে আপনি বিয়ে করে সংসার করলেন না কেনো?" নন্দিনী একটি আপাত নিরীহ প্রশ্ন করে বসলো তার মামাশ্বশুর কে .. কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর যে কিরূপ হতে পারে তা আগে থেকে কল্পনাও করতে পারেনি সে।
"মানুষ বিয়ে করে কেনো? তিনটে জিনিসের জন্য। প্রথমতঃ সংসার এবং সন্তানের জন্য .. এই দুটি জিনিসের প্রতি আমার কোনো মোহ নেই বা ছিলো না কোনোদিন। দ্বিতীয়তঃ বৃদ্ধকালে একজন সুখদুঃখের সঙ্গী বা অবলম্বনের জন্য .. আমার যা টাকা পয়সা আছে তাতে একদম বৃদ্ধকালে ওল্ড এজ হোমে চলে যাবো। তৃতীয়তঃ সেক্স করার জন্য .. তোমার কাছে লুকাবো না - কৈশোরকাল থেকে যৌনসঙ্গীর অভাব ঘটে নি আমার। সহপাঠিনী থেকে শুরু করে দিদির বান্ধবী, এমনকি আমি যখন কলেজে পড়ি তখন আমার মায়ের এক খুব কাছের বান্ধবী গোপা কাকিমার বাড়িতে কয়েকদিনের জন্য ছিলাম। প্রথমে সতীপনা দেখালেও শেষে আমার কাছে ধরা দিলো কাকিমা। এরপর গোপা মাগীর এমন অবস্থা করেছিলাম যে দু'দিন ঠিক করে হাঁটতে পারে নি। তারপর সব শেষে বড় বৌদির সঙ্গে আমার একটা অবৈধ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। মাগীর পেট বাঁধিয়ে দিয়েছিলাম .. সেই জন্যই তো বাবা আমাকে ত্যাজ্যপুত্র করলো.. সেই থেকে বাড়ি ছাড়া আমি। যদিও তার পর থেকে অপর্যাপ্ত নারীর সঙ্গ পেয়েছি আমি। তবে একটা সত্যি কথা বলবো? তোমার মতো যদি কাউকে পেতাম তাহলে অবশ্যই বিয়ে করতাম।" এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে গেল রাজশেখর বাবু।
কথাগুলোর তাৎপর্য বুঝিয়ে এবং তার মামাশ্বশুরের মুখের ভাষা শুনে লজ্জায় রাঙা হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে যেতে ইচ্ছে করছিল নন্দিনীর .. সে মনে মনে ভাবছিল কি কুক্ষণে যে প্রশ্নটা করেছিল তার মামাশ্বশুর কে।
ঠিক সেই মুহুর্তে কেবিনের পর্দা সরিয়ে একটি অল্প বয়সী ছেলে ভীত-সন্ত্রস্ত মুখে হন্তদন্ত হয়ে এসে উপস্থিত হলো "স্যার .. পারলে আপনারা এখনই বেরিয়ে যান রেস্তোরাঁ থেকে। এক্ষুনি বন্ধ হয়ে যাবে এটা। রাজনৈতিক দলের একজন খুব বড় নেতা খুন হয়েছেন তাই সব জায়গায় নাকাবন্দি চলছে। আজকে কলকাতার বাইরে আপনারা যেতে পারবেন না।"
কথাগুলো শোনার পর ঠকঠক করে কাঁপতে লাগলো নন্দিনী। কম্পিত কন্ঠে বললো "হায় ভগবান এটা কি হলো .. বাড়িতে মা আর বিট্টু একা আছে। তাছাড়া কলকাতায় থাকবোই বা কোথায় আমি!"
"উপায় নেই .. শুনলেই তো কলকাতা থেকে বেরোতে পারবে না .. এখানে থাকার একটা ব্যবস্থা ঠিক হয়ে যাবে। আর ওদিকে তোমার শাশুড়ি আর তোমার ছেলের চিন্তা করো না। আবাসনের মধ্যে আছে যখন যথেষ্ট সেফ থাকবে। তাছাড়া আমি আমার বন্ধু ভবেশ কে ফোন করে বলে দেবো ওদের খেয়াল রাখবার জন্য। এখন চলো তাড়াতাড়ি এখান থেকে আমাদের বের হতে হবে। আর ভালো কথা রাস্তাঘাটে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করার দরকার নেই।" এই বলে নন্দিনীকে নিয়ে রেস্তোরাঁ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে ওই অল্পবয়সী ছেলেটাকে সাইডে ডেকে নিয়ে গিয়ে এইরকম একটা মিথ্যা খবর দেওয়ার পুরস্কার স্বরূপ তার হাতে ৫০০ টাকার চারটে নোট গুঁজে দিয়ে চোখ মেরে দিলো।
ঘটনাটা শোনার পর থেকে ভেতর ভেতর নন্দিনী এতটাই আশঙ্কিত হয়ে পড়েছিল যে গাড়িতে উঠে কোথায় যাচ্ছে সেটা জিজ্ঞাসা করার কথা ভুলেই গেলো সে। গোদের উপর বিষফোড়ার মতো গাড়িতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলো।
(ক্রমশ)
ভালো লাগলে লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন