24-08-2021, 10:10 AM
রাতের অন্ধকারে ঘুমিয়ে থাকা পাপি কে নিজের বুকের থেকে আলাদা করে উঠে পড়ল জিনি। বিছানা থেকে উঠে আসতে গিয়ে দেখল পাপি ওর স্কার্ট এর ফুঁপি হাতে ধরে রেখে দিয়েছে। সেটা দেখে কাঁদতে গিয়েও পারল না জিনিয়া কাঁদতে। মেয়েটার হাতে ছোট্ট করে একটা চুমু খেয়ে ছাড়িয়ে নিল স্কার্ট এর ফুঁপি টা। দরজা টা খুলে বেড়িয়ে এলো বাইরে। বড় দরজা টা খুলে বাইরের বাগানে এসে দেখল সামনের গেট টা বন্ধ। পা টিপে এসে গেট টা খুলতে যাবে সেই সময়ে দেখল গেটের বাইরে শিবা দাঁড়িয়ে আছে গেটের দিকে পিছন করে দেওয়ালে হেলান দিয়ে। চমকে উঠল জিনিয়া। শিবা এখানে কেন? ও কি বুঝেইছিল যে জিনিয়া পালাবে আজকে? জিনিয়া জেনে গেল ধরা পড়ে গেছে ও। গেট টা খুলে অতো রাতে বাইরে বেড়িয়ে এলো। শিবার পাশে দাঁড়াল। শিবা জিনিয়ার উপস্থিতি নিজের পাশে টের পেয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলল খুব ভেজা কণ্ঠে, “ একটা ছোট ছেলে, মার খেয়ে বড় হয়েছে। হাতের মার ই না, পেটের মার ও তাকে সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু যখন যখন সে একজন কেও পেয়েছে যে ওকে ভালবাসে, তখন তখন ই উঠে দাঁড়িয়েছে। লড়েছে, বেঁচেছে। কিন্তু এমন এমন কেউ আছে যারা তার এই বেঁচে থাকা মেনে নিতে পারে নি। ছেড়ে চলে গেছে বড্ড অসময়ে। তার মা, তার বউ, তার প্রানের প্রিয় বন্ধু, আজকে আর ও একজন চলে যাচ্ছে যাকে অনেক অনেক ভালবেসেছিল সেই ছোট্ট থেকে বড় হয়ে যাওয়া ছেলেটা। যাক। চলে যাক সে আর দূর থেকে সেই ছেলেটার সর্বস্ব হারিয়ে আর্তনাদ শুনুক”। শিবা ধির পায়ে হাঁটতে হাঁটতে ঢুকে এলো গেট পেরিয়ে ভিতরে। হালকা হিমের হাওয়া যেন ভিতরের সর্বস্ব কে নরিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু জিনি বিশ্বাস করতে পারছে না এখন নিজের কান কে। কি বলে গেল শিবা! কি বলল? গুলিয়ে যাচ্ছে যেন? বলল যেন মনে হল যে সেই ছেলেটা যে চলে যাচ্ছে তাকে অনেক অনেক ভাল বেসেছিল!! পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখল যে শিবা ধির পায়ে চলেছে ভিতরে দিকে। যেন আর পারছে না। বড্ড ক্লান্ত ও। নিজের মুখের ওপরে দামাল হাওয়ায় আর ও দামাল হয়ে ওটা চুলের রাশি সরিয়ে শেষ বারের মতন অন্ধকার রাস্তা টা দেখে নিয়ে দৌড়ে গেটের ভিতরে ঢুকে জড়িয়ে ধরল শিবা কে পিছন থেকে। উফফফফফফ কি শান্তি!! কিন্তু ও কি স্বার্থপর হল না একটু? হলে হবে। এই টুকুর জন্যেই ও মরে যাচ্ছিল। আর কিছু চাই না। এই যে পেয়েছে এই ওর শেষ ইচ্ছে ছিল। এর পরে ও মরে গেলেও আর কোনও দুঃখ নেই ওর। জিনি এতই মশগুল ছিল শিবার শরীরের সাথে নিজেকে লেপটে নিয়ে ও বুঝতেই পারে নি শিবা ওকে কখন নিজের বুকে নিয়ে নিয়েছে। শেষ শরতের একটি রাতের শেষের সময়ে হিমেল হাওয়া মিষ্টি দংশন বড্ড ভাললাগছিল জিনির। শিবার সাথে লেপটে থেকে ভাবছিল এইটুকু উষ্ণতার জন্য তার এই ছত্রিশ টা শরত লাগলো। দলা হয়ে যে কান্না টা গত চব্বিশ ঘণ্টা বুকের মধ্যে আঁতকে ছিল সেটা বেড়িয়ে এলো বাঁধভাঙ্গা হয়ে । চোখের জল জিনির বাগ মানছিল না। শিবার বুক টা যেন ধুয়ে দিচ্ছিল। যত কষ্ট শিবার বুকে ছিল যেন জিনির চোখের জলের সাথে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যেতে লাগলো। দুজনে কেউ বুঝল না কখন যেন ভোর হয়ে গিয়েছে...............
Incomplete by author..
Incomplete by author..