19-08-2021, 01:55 PM
লক আউট
কয়েকদিন ধরেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু ম্যানেজমেন্ট যে এত তাড়াতাড়িই নোটিশটা দিয়ে দেবে, সেটা কেউ আশা করে নি।
রোজকার মতোই ছেলেকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে ফ্যাক্টরিতে পৌঁছিয়েছিল প্রশান্ত। এই কলেজটাতে পড়ানোর মতো সামর্থ প্রশান্তর নেই। কিন্তু তবুও অন্যান্য অনেক খরচ বাঁচিয়ে বউয়ের মুখ রাখতে এই নামী কলেজটাতে ভর্তি করেছিল ও। তার আগে অবশ্য ওকে আর মনিকা- দুজনকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে – লিখিত আর তারপর ইন্টারভিউ। ছেলেরও পরীক্ষা হয়েছে।
শেষমেশ যখন লিস্ট বেরিয়েছিল, তখন বেশ ওপরের দিকেই নাম ছিল প্রশান্তর ছেলের।
কিছুটা অফিস থেকে লোন করে, কিছুটা বন্ধুবান্ধবদের থেকে ধার করেই ভর্তি করিয়ে দিয়েছিল ছেলেকে।
অন্য অনেক শখ আহ্লাদ বাদ দিতে হয়েছে নিজেদের এই আট বছরের বিবাহিত জীবন থেকে – যেমন ও আর মনিকা ছেলে কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে সিনেমা দেখে না, বাইরে খেতে যায় না, প্রথম কবছর নিয়ম করে বাইরে ঘুরতে যেত – সে সবই এখন বন্ধ। শুধু ছেলেকে ভাল কলেজে ভর্তি করবে বলে।
বেরনোর সময়ে রোজকার মতোই মনিকা প্রশান্তর হাতে লাঞ্চ বক্স তুলে দিয়েছিল। ও জানে ভেতরে কী আছে – রোজকার মতোই কাল রাতের বেচে যাওয়া রুটি-তরকারী বা সামান্য মাখন লাগানো পাউরুটি। প্রতিদিনই এটাই খেতে হয় ওকে। ভাল না লাগলেও ছেলের পড়াশোনার খরচের কথা ভেবে এর থেকে ভাল টিফিন দেওয়া যে সম্ভব না, সেটা প্রশান্ত ভালই জানে।
ছেলের জন্য অবশ্য নিত্যনতুন টিফিন হয়!
ছেলেকে কলেজে দিয়ে বাসে আর ট্রেনে করে প্রায় যখন লিলুয়া নামবে, তখনই এক কলিগের ফোন এসেছিল।
‘প্রশান্তদা, তুমি কোথায়?’
‘এই তো লিলুয়া ঢুকছে। কেন রে?’
‘তাড়াতাড়ি এস,’ বলেই ফোনটা রেখে দিয়েছিল ওর জুনিয়ার অতনু।
স্টেশনের কাছেই ওদের ফ্যাক্টরি। আরও বেশ কয়েকজন কলিগও ট্রেন থেকে নেমেছিল।
সবাই মিলে কথা বলতে বলতে যখন ফ্যাক্টরির ঠিক আগে মোড়টা ঘুরল, ওদের চোখে একটা বড় জটলা চোখে পড়ল।
এ ওর দিকে তাকিয়ে জিগ্যেস করেছিল, কী ব্যাপার! কোনও ঝামেলা নাকি!
এক মিনিটেরও কম সময়ে ফ্যাক্টরি গেটে পৌঁছেই ওদের সবার মাথায় বাজ ভেঙ্গে পড়েছিল।
ম্যানেজমেন্ট লক আউট ঘোষণা করে দিয়েছে।
সকলেরই গলা চড়ছে! বিশেষ করে প্রশান্ত বা অতনুর মতো অল্পবয়সীদের। পুরণো কিছু স্টাফ রয়ে গেছে যারা পে রোলে আছে, কিন্তু নতুনদের সবাইকেই কন্ট্র্যাক্টে নিয়েছিল কোম্পানি। যার একটা অন্যতম শর্ত ছিল, লক আউট হয়ে গেলে কোনও বেতন পাবে না এরা। পুরণো লোকেরা অবশ্য আইন মেনে কম বেতন পাবে, কিছু সুযোগসুবিধাও বন্ধ হবে।
সেসব নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। তাই গেটে লক আউট নোটিশ কন্ট্র্যাক্টে থাকা কর্মীদের জন্য কী বার্তা বয়ে আনল, সেটা সবাই জানে!
কয়েকদিন ধরেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু ম্যানেজমেন্ট যে এত তাড়াতাড়িই নোটিশটা দিয়ে দেবে, সেটা কেউ আশা করে নি।
রোজকার মতোই ছেলেকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে ফ্যাক্টরিতে পৌঁছিয়েছিল প্রশান্ত। এই কলেজটাতে পড়ানোর মতো সামর্থ প্রশান্তর নেই। কিন্তু তবুও অন্যান্য অনেক খরচ বাঁচিয়ে বউয়ের মুখ রাখতে এই নামী কলেজটাতে ভর্তি করেছিল ও। তার আগে অবশ্য ওকে আর মনিকা- দুজনকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে – লিখিত আর তারপর ইন্টারভিউ। ছেলেরও পরীক্ষা হয়েছে।
শেষমেশ যখন লিস্ট বেরিয়েছিল, তখন বেশ ওপরের দিকেই নাম ছিল প্রশান্তর ছেলের।
কিছুটা অফিস থেকে লোন করে, কিছুটা বন্ধুবান্ধবদের থেকে ধার করেই ভর্তি করিয়ে দিয়েছিল ছেলেকে।
অন্য অনেক শখ আহ্লাদ বাদ দিতে হয়েছে নিজেদের এই আট বছরের বিবাহিত জীবন থেকে – যেমন ও আর মনিকা ছেলে কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে সিনেমা দেখে না, বাইরে খেতে যায় না, প্রথম কবছর নিয়ম করে বাইরে ঘুরতে যেত – সে সবই এখন বন্ধ। শুধু ছেলেকে ভাল কলেজে ভর্তি করবে বলে।
বেরনোর সময়ে রোজকার মতোই মনিকা প্রশান্তর হাতে লাঞ্চ বক্স তুলে দিয়েছিল। ও জানে ভেতরে কী আছে – রোজকার মতোই কাল রাতের বেচে যাওয়া রুটি-তরকারী বা সামান্য মাখন লাগানো পাউরুটি। প্রতিদিনই এটাই খেতে হয় ওকে। ভাল না লাগলেও ছেলের পড়াশোনার খরচের কথা ভেবে এর থেকে ভাল টিফিন দেওয়া যে সম্ভব না, সেটা প্রশান্ত ভালই জানে।
ছেলের জন্য অবশ্য নিত্যনতুন টিফিন হয়!
ছেলেকে কলেজে দিয়ে বাসে আর ট্রেনে করে প্রায় যখন লিলুয়া নামবে, তখনই এক কলিগের ফোন এসেছিল।
‘প্রশান্তদা, তুমি কোথায়?’
‘এই তো লিলুয়া ঢুকছে। কেন রে?’
‘তাড়াতাড়ি এস,’ বলেই ফোনটা রেখে দিয়েছিল ওর জুনিয়ার অতনু।
স্টেশনের কাছেই ওদের ফ্যাক্টরি। আরও বেশ কয়েকজন কলিগও ট্রেন থেকে নেমেছিল।
সবাই মিলে কথা বলতে বলতে যখন ফ্যাক্টরির ঠিক আগে মোড়টা ঘুরল, ওদের চোখে একটা বড় জটলা চোখে পড়ল।
এ ওর দিকে তাকিয়ে জিগ্যেস করেছিল, কী ব্যাপার! কোনও ঝামেলা নাকি!
এক মিনিটেরও কম সময়ে ফ্যাক্টরি গেটে পৌঁছেই ওদের সবার মাথায় বাজ ভেঙ্গে পড়েছিল।
ম্যানেজমেন্ট লক আউট ঘোষণা করে দিয়েছে।
সকলেরই গলা চড়ছে! বিশেষ করে প্রশান্ত বা অতনুর মতো অল্পবয়সীদের। পুরণো কিছু স্টাফ রয়ে গেছে যারা পে রোলে আছে, কিন্তু নতুনদের সবাইকেই কন্ট্র্যাক্টে নিয়েছিল কোম্পানি। যার একটা অন্যতম শর্ত ছিল, লক আউট হয়ে গেলে কোনও বেতন পাবে না এরা। পুরণো লোকেরা অবশ্য আইন মেনে কম বেতন পাবে, কিছু সুযোগসুবিধাও বন্ধ হবে।
সেসব নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। তাই গেটে লক আউট নোটিশ কন্ট্র্যাক্টে থাকা কর্মীদের জন্য কী বার্তা বয়ে আনল, সেটা সবাই জানে!