19-08-2021, 11:52 AM
(This post was last modified: 19-08-2021, 11:53 AM by Baban. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(19-08-2021, 10:53 AM)ddey333 Wrote: #অণুগল্প
আজ সক্কাল সক্কাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছে পিকু। ঝটপট ওকে একটা হোম ওয়ার্ক করে ফেলতে হবে, নইলে বাবা মায়ের কাছে মেইল করে বলে দেবেন কলেজের ম্যাম যে ও 'ক্রিয়েটিভ রাইটিং' করে নি। মা আবার "পিকু, আমি তো ভেবেছিলাম তুমি রাইটার হতে চাও? আর তুমিই লিখলে না?" বলে খুব দুঃখ দুঃখ করে তাকাবেন ওর দিকে... ওর কান্না পাবে তখন!
তাড়াতাড়ি উঠে, ব্রাশ করতে করতে নিজেকেই দোষ দিচ্ছিল পিকু। ইস! মাঝে শনিবার, রবিবার - দু দু'টো দিন গেল, তবুও কেন কাজ টা করল না ও? তাহলে তো এই সমস্যা হতো না! কিন্তু কি আর করা যাবে! লিখতে তো হবেই! তাই, মুখটা ধুয়ে ঘরে এসে বসল পিকু। আর, খাতাটা টেনে নিল।
নিজের মনে পেনটা মুখে দিয়ে কি লেখা যায় ভাবছিল পিকু। হঠাৎ কানে এলো কয়েকটি কথা। মায়ের গলা "হ্যাঁ গো, আমাদের একতলার নতুন ভাড়াটে মেয়েটি কবে আসবে? পরের সপ্তাহে?"
ওদের একতলার আঙ্কেল আন্টিরা মাসখানেক আগেই চলে গেছেন। এবার তাহলে নতুন কেউ আসবেন! ইয়েএএ! কী মজা! নইলে বাড়িটা ফাঁকা লাগে খুব! যদি ওর একটা ফ্রেন্ড পাওয়া যায়, আরও ভাল হবে...
ভাবার মাঝেই বাবার গলা কানে এলো পিকুর "না, উনি আসবেন না। অন্য ভাড়াটে দেখতে হবে.."
"সেকি! কেন? সেদিন তো ভদ্রমহিলা বললেন ওনার খুব পছন্দ হয়েছে... এরমধ্যেই শিফট করতে চান?" বেশ অবাক হয়ে বললেন মা।
"হ্যাঁ, ওনার কোনো সমস্যা নেই। আমি এই পরশুই জানতে পারলাম যে উনি একা থাকেন! ডিভোর্সি। সাথে বাবা - মা কেউ থাকবেন না। তাই ওনাকে ভাড়া দেব না।... দেখি, অন্য কাউকে খুঁজতে হবে।"
বড়দের কথায় আর মন দেবে না ভেবে খাতা খুলল পিকু। এমন একটা টপিক নিয়ে লেখা...মাথায় কিছু আসছেও না যে... ইস! ম্যাম কি তাহলে মায়ের কাছে নালিশ করে দেবেন?
"ডিভোর্সি বলে ভাড়া দেবে না? কেন?"
"কী যে বলো না রুমা! একা মেয়ে... কবে কী হয়ে যায়! হয়ত পাড়ার কেউ ডিস্টার্ব করা শুরু করল! না না, দরকার নেই বাবা!"
"সেই! ডিভোর্সি বলে কথা... বাড়ি ভাড়া দেবার দরকার নেই। স্বাধীনতা দিবস তো চলে গেছে... আজ থেকে আবার যে ই কে সেই! 'নারী স্বাধীনতা', কোনো মেয়ের নিজের মতো করে বাঁচতে চাইবার অধিকার, বা একা থাকার ইচ্ছে... সেসব আবার কি বস্তু, তাই না? আর, পাড়ার কেউ বিরক্ত করলেও তারা খারাপ মানুষ হবেন, যার দায় শুধুই তাদের। তেমন হলে আইন আছে... আমরাও পাশে থাকতে পারি" খুব ঠান্ডা গলায় বললেন মা।
একটু চুপ করে রইলেন বাবা। তারপর বললেন "আই অ্যাম স্যরি রুমা। আমি এক্ষুণি ওঁকে ফোন করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি... উনি শিফট করতে চাইলে আমি সাহায্য ও করব..."।
মুখে হাসি ফুটে উঠল পিকুর ও। তারপরই ওর মাথায় আইডিয়া এলো।
'বর্তমান সময়ে তোমার প্রেরণা' এই বিষয়ে কি লিখবে বুঝে গেছে পিকু।
মোড়ের মাথার বাড়ির দিদা, যিনি ওদের করোনা যখন হয়েছিল, তখন ওদের দুবেলা খাবার পাঠিয়েছিলেন। খোঁজ নিয়েছিলেন। ওনাকে দেখেই তো পিকু ভেবেছে ও বড় হয়ে লেখক হবে আর সমাজসেবা করবে!
নিজের মনের কথা লিখতে শুরু করে দিয়েছিল পিকু। নইলে, খেয়াল করলে দেখতে পেত ওর খাতার প্রথম পাতায় আঁকা আমাদের জাতীয় পতাকার রং যেন তখন উজ্জ্বলতর হয়ে গেছে...
অসাধারণ ❤ এইটুকুর মধ্যেই কতকি বলে ফেলা সম্ভব তাইনা?
অবিশ্বাস ও ষড়যন্ত্রে ঘেরা সমাজের মধ্যেও অনেক ভালো মানুষের খোঁজ মেলে যারা সত্যিই মানুষ কারণ তাদের মান ও হুশ দুই আছে. আর আছে বিশ্বাস, ভালোবাসা, সম্মান শ্রদ্ধা, ভক্তি ও মানবিকতা ❤