17-08-2021, 11:22 AM
ফুলশয্যা
সুধা জানে, আমি মরে ভূত হয়ে আমার ঘরের ঘুলঘুলিতে বাসা বেঁধেছি। সে আজকের কথা নয়, আজ থেকে ছ'মাস আগের ব্যাপার। অফিস থেকে আসবার সময় ভিড়ে ভর্তি বাঘমার্কা বাসে ছুটে উঠতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলাম। পিছনের চাকাটা আমার মাথাটাকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিলো। পকেটে আইডেন্টিটি কার্ড না থাকলে, লোকে বেওয়ারিশ লাশ বলে মর্গে চালান দিতো। কিন্তু তা হয়নি। রাত বারোটার সময় যখন থানার পুলিশ এসে সুধাকে খবর দিলো, তখন সুধা কাটা কলাগাছের মত লুটিয়ে পড়ল।
আমি ঘুলঘুলি থেকে সুধাকে লক্ষ্য করছিলাম আর তাজ্জব বনে যাচ্ছিলাম। আমার স্ত্রী শ্রীমতি সুধারানী দেবী যে আমাকে এতখানি ভালবাসেন, তা কে জানতো! তাহলে কোন শালা মঞ্জু অধিকারীর খপ্পরে পড়ে, ছুটে বাসে উঠতে যায়।
সেদিন সকালেও অফিস থেকে বের হবার সময় সুধা প্রিয় সম্ভাষণ করে দারুণ ঝাঁঝালো গলায় তড়পে উঠেছিলো, আজ সন্ধ্যের মধ্যে না ফিরলে, তোমার একদিন কি আমার একদিন। ছুটি হয় সেই পাঁচটায়, আর বাড়ি ঢুকতে ঢুকতে ন'টা বাজে। জানি না সেই হাড়-হাভাতে টাইপিস্ট ছুঁড়িটাই তোমার নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছে কিনা। আজ এ সিনেমা, কাল ও রেস্টুরেন্ট। বাড়িতে বিয়ে করা বউ একলা এঁদো ঘরে খাবি খাচ্ছে আর উনি কিনা একটা উটমুখো মেয়ের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। লজ্জা করেনা, কী বেহায়া মানুষ বাবা!
সুধাকে দোষ দেব না। সুধা মিথ্যে বলেনি। তবে বলার ডিগ্রিটার চাপান অনেক বেশি হয়ে গিয়েছে। মঞ্জুর চেহারায় একটা আলগা চটক আছে। ছুটির সময় মঞ্জু যখন তার রঙকরা চোখের পালক নাচিয়ে, গালে টোল ফেলে, ঠোঁটে হাসির ঝিলিক তুলে সুরেলা গলায় মিষ্টি করে ডেকে উঠতো, "দেবুদা এক মিনিট!" তখন আমার মনের রাশ আলগা হয়ে যেত। সেই একমিনিটটা যে কোথা দিয়ে দু-তিন ঘন্টা হয়ে যেত, তা ভাবনার বিষয়। অবশ্য তার জন্য আমার কিছু রেস্ত খসত। কিন্তু তার জন্য পরোয়া কে করে। হু কেয়ারস্!
সুধা জানে, আমি মরে ভূত হয়ে আমার ঘরের ঘুলঘুলিতে বাসা বেঁধেছি। সে আজকের কথা নয়, আজ থেকে ছ'মাস আগের ব্যাপার। অফিস থেকে আসবার সময় ভিড়ে ভর্তি বাঘমার্কা বাসে ছুটে উঠতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলাম। পিছনের চাকাটা আমার মাথাটাকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিলো। পকেটে আইডেন্টিটি কার্ড না থাকলে, লোকে বেওয়ারিশ লাশ বলে মর্গে চালান দিতো। কিন্তু তা হয়নি। রাত বারোটার সময় যখন থানার পুলিশ এসে সুধাকে খবর দিলো, তখন সুধা কাটা কলাগাছের মত লুটিয়ে পড়ল।
আমি ঘুলঘুলি থেকে সুধাকে লক্ষ্য করছিলাম আর তাজ্জব বনে যাচ্ছিলাম। আমার স্ত্রী শ্রীমতি সুধারানী দেবী যে আমাকে এতখানি ভালবাসেন, তা কে জানতো! তাহলে কোন শালা মঞ্জু অধিকারীর খপ্পরে পড়ে, ছুটে বাসে উঠতে যায়।
সেদিন সকালেও অফিস থেকে বের হবার সময় সুধা প্রিয় সম্ভাষণ করে দারুণ ঝাঁঝালো গলায় তড়পে উঠেছিলো, আজ সন্ধ্যের মধ্যে না ফিরলে, তোমার একদিন কি আমার একদিন। ছুটি হয় সেই পাঁচটায়, আর বাড়ি ঢুকতে ঢুকতে ন'টা বাজে। জানি না সেই হাড়-হাভাতে টাইপিস্ট ছুঁড়িটাই তোমার নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছে কিনা। আজ এ সিনেমা, কাল ও রেস্টুরেন্ট। বাড়িতে বিয়ে করা বউ একলা এঁদো ঘরে খাবি খাচ্ছে আর উনি কিনা একটা উটমুখো মেয়ের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। লজ্জা করেনা, কী বেহায়া মানুষ বাবা!
সুধাকে দোষ দেব না। সুধা মিথ্যে বলেনি। তবে বলার ডিগ্রিটার চাপান অনেক বেশি হয়ে গিয়েছে। মঞ্জুর চেহারায় একটা আলগা চটক আছে। ছুটির সময় মঞ্জু যখন তার রঙকরা চোখের পালক নাচিয়ে, গালে টোল ফেলে, ঠোঁটে হাসির ঝিলিক তুলে সুরেলা গলায় মিষ্টি করে ডেকে উঠতো, "দেবুদা এক মিনিট!" তখন আমার মনের রাশ আলগা হয়ে যেত। সেই একমিনিটটা যে কোথা দিয়ে দু-তিন ঘন্টা হয়ে যেত, তা ভাবনার বিষয়। অবশ্য তার জন্য আমার কিছু রেস্ত খসত। কিন্তু তার জন্য পরোয়া কে করে। হু কেয়ারস্!