16-08-2021, 05:26 PM
এগার-
ঢাকা শহরে কিছু দিন উদ্দেশ্য হিন ভাবে ঘুরে বাতাসে নীলার শরীরের গন্ধ শুকে বেড়ালাম। পুলিশ দেখলে ড্যাম কেয়ার ভঙ্গিতে সিগারেট টানতে টানতে হেটে যেতাম। দাঁত বের করে স্থায়ী ঢাকাইয়াদের মত হাসতাম। ভিক্ষুকদের পয়সা দিতাম।ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে চা কপি খেতাম। পয়সা দিতাম বেশি।
ঢাকা শহরে আর বেশী দিন থাকতে পারলাম না। যে বাতাসে নীলার গন্ধ শুকে বেড়াতাম, সেই বাতাসই দু’দিনে অসহ্য হয়ে উঠল। রঙ্গিন মধুর স্মৃতি গুলো বারবার সামনে হাজির হতে লাগল। ভাবলাম- এইভাবে আমার মৃত লাশকে টেনে বেড়ানোর কোনমানে হয় না। হয় এই জীবনের অবসান করি, নতুবা ভালভাবে বাচি। সবাই চলে গেছে-এখন আমি স্বাধীন। উপদেশ দেবার, শাসন করবার কেউ নেই। হাতে প্রচুর টাকা আছে।যেমন ইচ্ছা খরচ করতে পারি। কিছু দিন অজথা খরচ করলাম। দান খয়রাত করলাম। একসময় ক্লান্ত হয়ে পড়লাম- ভাবলাম- আর না- আমাকে বাঁচতে হবে। নীলা নেই তো কি হয়েছে? শারীরিক নীলা নেই, কিন্ত নীলা আমার অন্তরে, নিশ্বাসে, রক্তে, ধমনি শিরায় মিশে আছে। এই স্মৃতি নিয়ে আমি বেচে থাকব। নীলাকে আরও নীলাময় করে তুলব। নীলার নামে কলেজ, হাসপাতাল গড়ে দেব। এসব চিন্তায় মন কিছুটা নরম হয়ে এল। ফিরে আসলাম হোস্টেলে। কিছু দিন শান্ত ভাবে থাকার চেষ্টা করলাম। নীলা গ্রহ্নগারে বই পড়ে সময় কাটালাম। ভাবলাম- এলোমেলো ভাবনা গুলো কোন দাম নেই।আমাকে হারিয়ে যেতে হবে একটা নির্দিষ্ট ভাবনার মধ্যে। কোন ভাবনায় নিজেকে ব্যস্ত রাখব? অনেক ভাবনা মাথার মধ্যে আসতে লাগল। শেষে ঠিক করলাম- আমি পর্বত্য এলাকায় যাব। ওই এলাকার উপজাতীয়দের মধ্যে নিজকে বিলিয়ে দেব। ওরা অশিক্ষিত, দরিদ্র, অসহায় ও সুবিধা বঞ্চিত। এ ব্যাপারে প্রচুর লেখাপড়া করলাম। পড়ে পড়ে যা জানলাম তা হল- ওদের হাতে এখন অস্ত্র। অধিকার প্রতিষ্ঠায় ওরা আনাড়ি ভাবে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে। বিশ্বের এক শ্রেণীর মানুষ তাদের অস্ত্র সরবরাহ করে যাচ্ছে। ওদেরকে ধ্বংশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমি ঠিক করলাম- আর দেরি নয়। আমার মত নিঃস্ব মানুষকে ওদের মাঝে বিলিয়ে দিতে হবে।ওদের হাতের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে কলম তুলে দিতে হবে। ওদের বোঝাতে হবে- জীবন মানে কি? জীবনের অর্থ কি? দেশ কি? বলতে হবে- এদেশ ভাই তোমাদেরও। কেন ভাই হয়ে ভায়ের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিচ্ছ? কেন তোমরা নিজেদেরকে অন্যের মস্তিস্ক দিয়ে পরিচালিত করছ? মুক্তি যুদ্ধে কি তোমরা অংশ গ্রহণ করনি? তাহলে- তাহলে কেন বাংলাদেশকে জাফনা বানাবার আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের মারবেল হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছ? বেশ কিছু দিন এই বিষয়ে ভাবলাম- কি ভাবে এই সব বাস্তবায়ন করা যায়? এসময় নিজের মধ্যে খুন খুন অপরাধ বোধটা কেটে গেল। ঠিক করলাম এই ভাবে বললে পার্বত্য এলাকার মানুষের হাতে কলম তুলে দিতে পারব না।আগে ওদের মাঝে যেতে হবে। ওদের একজন হতে হবে। কলেজ গড়ে দিতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা দিতে হবে। উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখাতে হবে। নীলার মত ভালবাসার বাধনে বাধবার মন্ত্র ওদের শেখাতে হবে। আমার সোনা রানীকে ওদের মাঝে শ্রেষ্টত্বের আসনে বসাতে হবে। পাহাড়ের চুড়া, সবুজ গাছ পালা, ঝর্ণাকে নীল ভালবাসায় নীলাময় করে তুলতে হবে। অশিক্ষিত, অসহায় দরিদ্র উপজাতীদের মধ্যে হতে হাজার হাজার লক্ষ কোটি ছোট নীলা পরি সোনার জন্ম দিতে হবে। ওরা হাসবে, গাইবে, ঝর্ণায় স্নান করবে আমি দেখব- শুধু দেখব- ওদের মধ্যে আমি নীলাকে খুজে পাব। নীলার জন্ম মৃত্যু দিবস পালন করব। ওই দুই দিন নীলাকে নিয়ে কবিতা, গল্প লিখতে বলব।পুরুস্কার দিব। আমি পার্বত্য এলাকায় যাবার জন্য তৈরী হলাম। প্রয়োজনীয় বইপত্র, জামা কাপড়, ঔষধ পত্র কিনলাম। এত ব্যস্ত থেকেছি তবুও এর ফাকে আমি নীলার বিরহে গলে গলে পড়তে লাগলাম। ভাবলাম- চলে তো যাব বাংলাদেশের এই অংশে আর কোন দিনও ফিরে আসবো না। চিরকালের মত বিদায়। শেষটাই এই জন্ম ভূমির জন্য মনটা একটু ভারি হয়ে উঠল। ঠিক করলাম আরও দুদিন থেকে যায়। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেল গোয়েন্দা পুলিশের আনা গোনা।
ঢাকা শহরে কিছু দিন উদ্দেশ্য হিন ভাবে ঘুরে বাতাসে নীলার শরীরের গন্ধ শুকে বেড়ালাম। পুলিশ দেখলে ড্যাম কেয়ার ভঙ্গিতে সিগারেট টানতে টানতে হেটে যেতাম। দাঁত বের করে স্থায়ী ঢাকাইয়াদের মত হাসতাম। ভিক্ষুকদের পয়সা দিতাম।ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে চা কপি খেতাম। পয়সা দিতাম বেশি।
ঢাকা শহরে আর বেশী দিন থাকতে পারলাম না। যে বাতাসে নীলার গন্ধ শুকে বেড়াতাম, সেই বাতাসই দু’দিনে অসহ্য হয়ে উঠল। রঙ্গিন মধুর স্মৃতি গুলো বারবার সামনে হাজির হতে লাগল। ভাবলাম- এইভাবে আমার মৃত লাশকে টেনে বেড়ানোর কোনমানে হয় না। হয় এই জীবনের অবসান করি, নতুবা ভালভাবে বাচি। সবাই চলে গেছে-এখন আমি স্বাধীন। উপদেশ দেবার, শাসন করবার কেউ নেই। হাতে প্রচুর টাকা আছে।যেমন ইচ্ছা খরচ করতে পারি। কিছু দিন অজথা খরচ করলাম। দান খয়রাত করলাম। একসময় ক্লান্ত হয়ে পড়লাম- ভাবলাম- আর না- আমাকে বাঁচতে হবে। নীলা নেই তো কি হয়েছে? শারীরিক নীলা নেই, কিন্ত নীলা আমার অন্তরে, নিশ্বাসে, রক্তে, ধমনি শিরায় মিশে আছে। এই স্মৃতি নিয়ে আমি বেচে থাকব। নীলাকে আরও নীলাময় করে তুলব। নীলার নামে কলেজ, হাসপাতাল গড়ে দেব। এসব চিন্তায় মন কিছুটা নরম হয়ে এল। ফিরে আসলাম হোস্টেলে। কিছু দিন শান্ত ভাবে থাকার চেষ্টা করলাম। নীলা গ্রহ্নগারে বই পড়ে সময় কাটালাম। ভাবলাম- এলোমেলো ভাবনা গুলো কোন দাম নেই।আমাকে হারিয়ে যেতে হবে একটা নির্দিষ্ট ভাবনার মধ্যে। কোন ভাবনায় নিজেকে ব্যস্ত রাখব? অনেক ভাবনা মাথার মধ্যে আসতে লাগল। শেষে ঠিক করলাম- আমি পর্বত্য এলাকায় যাব। ওই এলাকার উপজাতীয়দের মধ্যে নিজকে বিলিয়ে দেব। ওরা অশিক্ষিত, দরিদ্র, অসহায় ও সুবিধা বঞ্চিত। এ ব্যাপারে প্রচুর লেখাপড়া করলাম। পড়ে পড়ে যা জানলাম তা হল- ওদের হাতে এখন অস্ত্র। অধিকার প্রতিষ্ঠায় ওরা আনাড়ি ভাবে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে। বিশ্বের এক শ্রেণীর মানুষ তাদের অস্ত্র সরবরাহ করে যাচ্ছে। ওদেরকে ধ্বংশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমি ঠিক করলাম- আর দেরি নয়। আমার মত নিঃস্ব মানুষকে ওদের মাঝে বিলিয়ে দিতে হবে।ওদের হাতের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে কলম তুলে দিতে হবে। ওদের বোঝাতে হবে- জীবন মানে কি? জীবনের অর্থ কি? দেশ কি? বলতে হবে- এদেশ ভাই তোমাদেরও। কেন ভাই হয়ে ভায়ের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিচ্ছ? কেন তোমরা নিজেদেরকে অন্যের মস্তিস্ক দিয়ে পরিচালিত করছ? মুক্তি যুদ্ধে কি তোমরা অংশ গ্রহণ করনি? তাহলে- তাহলে কেন বাংলাদেশকে জাফনা বানাবার আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের মারবেল হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছ? বেশ কিছু দিন এই বিষয়ে ভাবলাম- কি ভাবে এই সব বাস্তবায়ন করা যায়? এসময় নিজের মধ্যে খুন খুন অপরাধ বোধটা কেটে গেল। ঠিক করলাম এই ভাবে বললে পার্বত্য এলাকার মানুষের হাতে কলম তুলে দিতে পারব না।আগে ওদের মাঝে যেতে হবে। ওদের একজন হতে হবে। কলেজ গড়ে দিতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা দিতে হবে। উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখাতে হবে। নীলার মত ভালবাসার বাধনে বাধবার মন্ত্র ওদের শেখাতে হবে। আমার সোনা রানীকে ওদের মাঝে শ্রেষ্টত্বের আসনে বসাতে হবে। পাহাড়ের চুড়া, সবুজ গাছ পালা, ঝর্ণাকে নীল ভালবাসায় নীলাময় করে তুলতে হবে। অশিক্ষিত, অসহায় দরিদ্র উপজাতীদের মধ্যে হতে হাজার হাজার লক্ষ কোটি ছোট নীলা পরি সোনার জন্ম দিতে হবে। ওরা হাসবে, গাইবে, ঝর্ণায় স্নান করবে আমি দেখব- শুধু দেখব- ওদের মধ্যে আমি নীলাকে খুজে পাব। নীলার জন্ম মৃত্যু দিবস পালন করব। ওই দুই দিন নীলাকে নিয়ে কবিতা, গল্প লিখতে বলব।পুরুস্কার দিব। আমি পার্বত্য এলাকায় যাবার জন্য তৈরী হলাম। প্রয়োজনীয় বইপত্র, জামা কাপড়, ঔষধ পত্র কিনলাম। এত ব্যস্ত থেকেছি তবুও এর ফাকে আমি নীলার বিরহে গলে গলে পড়তে লাগলাম। ভাবলাম- চলে তো যাব বাংলাদেশের এই অংশে আর কোন দিনও ফিরে আসবো না। চিরকালের মত বিদায়। শেষটাই এই জন্ম ভূমির জন্য মনটা একটু ভারি হয়ে উঠল। ঠিক করলাম আরও দুদিন থেকে যায়। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেল গোয়েন্দা পুলিশের আনা গোনা।