16-08-2021, 05:22 PM
নয়-
যে পদ্ধতিটা আমার পছন্দ হল সেটা বেশ শক্ত মনে হল। ওদের আড্ডা থেকে বেরিয়ে একটা রেস্টুরেন্ট ঢুকলাম। চোখে মুখে পানি দিতে রেস্টুরেন্টের পিছনে ট্যাপে গেলাম। সামনে লূকিং গ্লাস, নিজেকে দেখলাম। না, কোন খুন খুন ভাব জেগে ওঠেনি। বেশ শান্ত-শান্ত পাগল বিরহকাতর ব্যর্থ প্রেমিকদের মতই মুখের চেহারা। এই চেহারা বজায় রাখলে একশটা খুন করলেও ধরতে পারবে না। আচ্ছা করে চোখে পানি ছিটালাম। একটা আনন্দ উত্তেজনা শুরু হল। খালি একটা চেয়ারে গা এলিয়ে বসলাম, বেয়ারার ডাকে চমকে উঠলাম। ওকে কড়া করে এককাপ কপি আর দুটা সোমাচা আনতে বললাম। এই ফাকে পাশে রাখা খবরের কাগজটা টেনে নিলাম। সমস্ত পাতা জুড়ে আলফাল খবরে ছাপা। ''., ছিনতাই, প্রতারনার খবর দিয়ে কাগজ ভরে ফেলছে।আহা যদি এমন খবর থাকত বিবাহ আইন শিথিল করা হয়েছে- এখন থেকে দশ বছরের মেয়ে পনের বছরের ছেলের মধ্যে বিয়ে আইন সিদ্ধ, তবে শর্ত থাকে যে, মেয়ের বয়স কুড়ি বছর না হলে কোন বাচ্চা নিতে পারবেনা। এই শর্ত ভঙ্গ কারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার। এ কাজ তদারকির জন্য মাঠ কর্মীদের সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালনে জোর তাগিদ দওেয়া হল। হাঁ—হাঁ —।
এমন সময় বেয়ারা কপি সোমচা নিয়ে এল। কাগজ রেখে দিলাম। কপির কাপে চুমুক লাগালাম। বেয়ারা বলল স্যার খবর শুনছেন? আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকালাম, এই বেচারা কি আমার পরিচিত? এ আমার কি খবর দেবে? তবুও বললাম, কি খবর? বলল, না মানে আপনার আমার খবর না, তবে সবাই আলোচনা করছে যে ভাবে মনে হয় খবরটা ওদের সবারই নিজের। আমার অবশ্য এই সব শুনতে ভাল লাগেনা। তবুও আপনি জানেন কিনা তাই বললাম, তা দেখছি আপনি তো এই জগতের বাসিন্দা না। হলে ওই রকম করে তাকাতেন না।
আমি বললাম কি খবর?
বেয়ারা একটু হতাশ হয়ে বলল, ঐ দেখেন আপনার কাছেই আছে । বাংলাদেশের মেয়ে জাপানে নিয়ে চিকিৎসার নামে হত্যা। ওর বাবা কিযে কান্না কাটি করতাছে। জাপান বাংলাদেশ নাম শুনে আমি চমকে উঠলাম। কান, মাথা গরম হয়ে উঠল, দ্রুত কাগজ টেনে নিলাম। সেদিন খবরের কাগজ পড়ে আমি থ হয়ে গেলাম। সাভ্যতার নামে এই কি বর্বরতা? খবরের বর্ননা এরকম- নীলা নামের একটি বাংলাদেশী মেয়ে চিকিৎসা করতে স্বামীর সাথে জাপান আসে। লোকটি কোটি কোটি টাকার মালিক। জাপানী ডাক্তারদের চিকিৎসার নামে মেয়েটিকে হত্যা করার জন্য প্রস্তাব করে। ডাক্তর পিচাশ লোকটির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। এবং বলে বাচানোই আমাদের ধর্ম, মারা নয়। তাছাড়া এটা জাপানী সভ্যতার পরিপন্থি। লোকটা মোটা অংকের ডলারের প্রস্তাব করে কিন্তু ডাক্তার তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় এবং আইনি ব্যবস্তা নেবার জন্য হুমকি দেয়।এতে লোকটা ডাক্তারের কাছে ক্ষমা চায় এবং তার কাজে লজ্জিত হয়। একসময় লোকটা স্ত্রীর সেবার নামে স্যালাইনের সাথে পয়জন ঢুকিয়ে দেয়। এতে মেয়েটির মৃত্যু ঘটে। ডাক্তারের প্রেসক্রিপসন অনুযায়ী ঔষধের কারনে মৃত্যু হবার কোন সম্ভবনা নেই। কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স, সাথে সাথে পুলিশকে খবর দিয়ে লোকটিকে গ্রেফতার করায় এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষবাদী হয়ে লোকটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাৎক্ষণাত ভাবে ব্যাবস্থা গ্রহণ করে। এক পর্যায়ে পিচাস লোকটি স্বীকার করে যে, তার স্ত্রীকে সেই হত্যা করেছে বিষ প্রয়োগ করে। জাপানী আইন অনুযায়ী লোকটির বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নেয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।সবশেষে নীচে লেখা- মেয়েটির বাব ঢাকার বাসিন্দা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ছাকিবহোসেন। জাপানী দুতাবাসে লাশ নিয়ে আসার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং মেয়ের স্বামীকে উপযুক্ত শাস্তির দাবী করে। আমার সমস্ত রক্ত সঞ্চালন মুহুর্তেই বন্ধ হয়ে গেল। মাথা এলোমেলো হয়ে গেল। মনে হল মাথার উপর একহাজারটা বাজ পড়ে পৃথিবী ধ্বংম হয়ে যাচ্ছে। সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ঘর বাড়ি, গাছ-পালা সব থর থর করে কাপছে, চারি দিকে চিৎকার চেচামেচি শুরু হয়েছে। বাচাও বাচাও আর্তনাদ ভেসে আসছে। কপি সমাচা পড়ে রইল। কিছুই খাওয়া হল না। রেস্টুরেন্টা থেকে বেরিয়ে আসলাম। বাইরে তীব্র আলো, ধুলোবালি লোকের ভিড়। কেউ আমার দিকে তাকিয়ে নেই। সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত। মনে হল আমার কাছে যদি বোমা- ছোট খাট বোমা নয়- একেবারে ভিয়েতনামীদের উপর ফেলা নাপাম বা হাইড্রোজেন বোমা কিংবা হিরোশিমো নাগাসাকীর এটম বোমা যদি থাকত। আমি এই মুহুর্তে সমস্ত পৃথিবী লন্ডভন্ড করে দিতাম, এই পৃথিবীতে আমার নীলা নেই এখানে কারোরই বেচে থাকর অধিকার নেই। কারোরই নেই- এমন কি আমারও না।
যে পদ্ধতিটা আমার পছন্দ হল সেটা বেশ শক্ত মনে হল। ওদের আড্ডা থেকে বেরিয়ে একটা রেস্টুরেন্ট ঢুকলাম। চোখে মুখে পানি দিতে রেস্টুরেন্টের পিছনে ট্যাপে গেলাম। সামনে লূকিং গ্লাস, নিজেকে দেখলাম। না, কোন খুন খুন ভাব জেগে ওঠেনি। বেশ শান্ত-শান্ত পাগল বিরহকাতর ব্যর্থ প্রেমিকদের মতই মুখের চেহারা। এই চেহারা বজায় রাখলে একশটা খুন করলেও ধরতে পারবে না। আচ্ছা করে চোখে পানি ছিটালাম। একটা আনন্দ উত্তেজনা শুরু হল। খালি একটা চেয়ারে গা এলিয়ে বসলাম, বেয়ারার ডাকে চমকে উঠলাম। ওকে কড়া করে এককাপ কপি আর দুটা সোমাচা আনতে বললাম। এই ফাকে পাশে রাখা খবরের কাগজটা টেনে নিলাম। সমস্ত পাতা জুড়ে আলফাল খবরে ছাপা। ''., ছিনতাই, প্রতারনার খবর দিয়ে কাগজ ভরে ফেলছে।আহা যদি এমন খবর থাকত বিবাহ আইন শিথিল করা হয়েছে- এখন থেকে দশ বছরের মেয়ে পনের বছরের ছেলের মধ্যে বিয়ে আইন সিদ্ধ, তবে শর্ত থাকে যে, মেয়ের বয়স কুড়ি বছর না হলে কোন বাচ্চা নিতে পারবেনা। এই শর্ত ভঙ্গ কারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার। এ কাজ তদারকির জন্য মাঠ কর্মীদের সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালনে জোর তাগিদ দওেয়া হল। হাঁ—হাঁ —।
এমন সময় বেয়ারা কপি সোমচা নিয়ে এল। কাগজ রেখে দিলাম। কপির কাপে চুমুক লাগালাম। বেয়ারা বলল স্যার খবর শুনছেন? আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকালাম, এই বেচারা কি আমার পরিচিত? এ আমার কি খবর দেবে? তবুও বললাম, কি খবর? বলল, না মানে আপনার আমার খবর না, তবে সবাই আলোচনা করছে যে ভাবে মনে হয় খবরটা ওদের সবারই নিজের। আমার অবশ্য এই সব শুনতে ভাল লাগেনা। তবুও আপনি জানেন কিনা তাই বললাম, তা দেখছি আপনি তো এই জগতের বাসিন্দা না। হলে ওই রকম করে তাকাতেন না।
আমি বললাম কি খবর?
বেয়ারা একটু হতাশ হয়ে বলল, ঐ দেখেন আপনার কাছেই আছে । বাংলাদেশের মেয়ে জাপানে নিয়ে চিকিৎসার নামে হত্যা। ওর বাবা কিযে কান্না কাটি করতাছে। জাপান বাংলাদেশ নাম শুনে আমি চমকে উঠলাম। কান, মাথা গরম হয়ে উঠল, দ্রুত কাগজ টেনে নিলাম। সেদিন খবরের কাগজ পড়ে আমি থ হয়ে গেলাম। সাভ্যতার নামে এই কি বর্বরতা? খবরের বর্ননা এরকম- নীলা নামের একটি বাংলাদেশী মেয়ে চিকিৎসা করতে স্বামীর সাথে জাপান আসে। লোকটি কোটি কোটি টাকার মালিক। জাপানী ডাক্তারদের চিকিৎসার নামে মেয়েটিকে হত্যা করার জন্য প্রস্তাব করে। ডাক্তর পিচাশ লোকটির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। এবং বলে বাচানোই আমাদের ধর্ম, মারা নয়। তাছাড়া এটা জাপানী সভ্যতার পরিপন্থি। লোকটা মোটা অংকের ডলারের প্রস্তাব করে কিন্তু ডাক্তার তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় এবং আইনি ব্যবস্তা নেবার জন্য হুমকি দেয়।এতে লোকটা ডাক্তারের কাছে ক্ষমা চায় এবং তার কাজে লজ্জিত হয়। একসময় লোকটা স্ত্রীর সেবার নামে স্যালাইনের সাথে পয়জন ঢুকিয়ে দেয়। এতে মেয়েটির মৃত্যু ঘটে। ডাক্তারের প্রেসক্রিপসন অনুযায়ী ঔষধের কারনে মৃত্যু হবার কোন সম্ভবনা নেই। কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স, সাথে সাথে পুলিশকে খবর দিয়ে লোকটিকে গ্রেফতার করায় এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষবাদী হয়ে লোকটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাৎক্ষণাত ভাবে ব্যাবস্থা গ্রহণ করে। এক পর্যায়ে পিচাস লোকটি স্বীকার করে যে, তার স্ত্রীকে সেই হত্যা করেছে বিষ প্রয়োগ করে। জাপানী আইন অনুযায়ী লোকটির বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নেয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।সবশেষে নীচে লেখা- মেয়েটির বাব ঢাকার বাসিন্দা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ছাকিবহোসেন। জাপানী দুতাবাসে লাশ নিয়ে আসার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং মেয়ের স্বামীকে উপযুক্ত শাস্তির দাবী করে। আমার সমস্ত রক্ত সঞ্চালন মুহুর্তেই বন্ধ হয়ে গেল। মাথা এলোমেলো হয়ে গেল। মনে হল মাথার উপর একহাজারটা বাজ পড়ে পৃথিবী ধ্বংম হয়ে যাচ্ছে। সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ঘর বাড়ি, গাছ-পালা সব থর থর করে কাপছে, চারি দিকে চিৎকার চেচামেচি শুরু হয়েছে। বাচাও বাচাও আর্তনাদ ভেসে আসছে। কপি সমাচা পড়ে রইল। কিছুই খাওয়া হল না। রেস্টুরেন্টা থেকে বেরিয়ে আসলাম। বাইরে তীব্র আলো, ধুলোবালি লোকের ভিড়। কেউ আমার দিকে তাকিয়ে নেই। সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত। মনে হল আমার কাছে যদি বোমা- ছোট খাট বোমা নয়- একেবারে ভিয়েতনামীদের উপর ফেলা নাপাম বা হাইড্রোজেন বোমা কিংবা হিরোশিমো নাগাসাকীর এটম বোমা যদি থাকত। আমি এই মুহুর্তে সমস্ত পৃথিবী লন্ডভন্ড করে দিতাম, এই পৃথিবীতে আমার নীলা নেই এখানে কারোরই বেচে থাকর অধিকার নেই। কারোরই নেই- এমন কি আমারও না।