Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.17 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller । রক্ত গোলাপ। by chakraabhijit
#14
আরেকটা ভোর এল সিমরনের জীবনে জানলার পরদা সরিয়ে দিতে দিতে যেন ক্লান্ত হয়ে যেতে হয় জানলার সামনে দারিয়ে বারির সামনে বিরাট গাছগাছালি ভরা উদ্যানের দিকে তাকিয়ে মনে হয় এই জীবন কি সুন্দর ঘুরে ঘুমিয়ে থাকা রাজের মুখের দিকে তাকায়, চোখে আলো পরাতে বাবুর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে মাথার না কাটা চুল, অন্য সময় যেটা খোঁপা করে শিখ বাচ্চাদের মত বাঁধা থাকে সেটা খুলে চারিদিকে অবিন্যস্ত হয়ে আছে দেখতে যেন একটা দেবশিশুর মত লাগছে একটু পরেই মাকে পাসে না পেয়ে ঘুম ভেঙ্গে যাবে আর হাউ মাউ করে কাঁদতে শুরু করবে সিমরনের খুব ভালো লাগে ওর চোখে মায়ের জন্যে আকুলিবিকুলি দেখতে ওকে টেনে কোলে তুলে নিয়ে খুব আদর করে রোজ এই সময়টাতে সবাই বলে যে নাকি বয়সের তুলনায় মোটা, সিমরনের কখোনো তা মনে হয়না, আরে বাবা এইটুকু বাচ্চার হাইটটা তো দেখেতে হবে! ঘুম চোখে রাজও মার বুকে মুখ গুজে আদর খায় সত্যি তো এই মুহূর্তে ছাড়া কে আছে আপনজন ওর বাবা তো সারাদিন নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ত ছেলেটার দিকে ঘুরেও তাকায়না সিমরন তো বহুদুর

শেষ কবে কাছে এসেছিলো স্বামি আর স্ত্রী, প্রায় ভুলে গেছে ওরা তবুও এই লোকটা তার ভগবান. মনে মনে ওকে পুজো করে সিমরন. যে নরক থেকে সূর্য ওকে তুলে এনেছে, তাতে ওকে ওর বাড়ির কাজের লোক বানিয়ে রাখলেও অনেক সন্মান দেওয়া হতো. সিমরন বা ওর পরিবার সত্যি কোনদিন ভাবেনি যে এরকম কেউ ওকে বিয়ে করবে.
ঠিক করে খেতে পেতনা ওরা. বাবার ঠিক মতো চাষ হতোনা. বছর বছর ধারের বোঝা বেড়ে চলতো, আর সাথে জমিদারের অত্যাচার. রাতের বেলা ঘরে আগুন দিয়ে দেওয়া থেকে মেয়েদের সন্মানহানি, এসব সহ্য করা ওদের জলভাত ছিলো. সিমরনের শত্রু ছিলো ওর রূপ আর উঠতি যৌবন. ভগবান ওকে অনেক সময় নিয়ে বানিয়েছে, কিন্তু ঠিক মানুষটাকে ভুল জায়গায় পাঠিয়েছিলো. যৌবনের মৌচাকের মধু খেতে ভ্রমর তো আসবেই. সেই রকম রাস্তাঘাট, বাজার, দোকান, কলেজ, সব জায়গায় ওর পিছনে পিছনে ওর যৌবনের প্রসাদ পেতে সবাই ঘুর ঘুর করতো.
কেউ একটু আধটু সাহসী হয়ে শরীরের বিশেষ বিশেষ জায়গাতে হাত পর্যন্ত দিয়ে দিতো. কলেজ যাতায়াতও ওর কাছে বিভীষিকা হয়ে উঠেছিলো হবেনাই বা কেন, যে যৌবনের জীবন্ত মূর্তি ছিলো. যেমন রূপ তেমন রং তেমন শরীরের গড়ন. যেন পাথর কুদে মূর্তি তৈরী করা, সব কিছু একদম সঠিক মাপে মাপে তৈরী.
প্রতিভা যেমন লুকিয়ে থাকেনা রূপ যৌবনও লুকিয়ে রাখতে পারেনা কেউ. হতদরিদ্র চাষীর ঘরে এমন রূপ আর যৌবন, এটা যেন সমাজের দন্ডমুন্ডের কর্তারা ঠিক মন থেকে মেনে নিতে পারছিলনা. তাই উপরে ফেলতে চাইছিল এই গোলাপটা. গরিবের আবার কিসের বাগান রে? আবার তাতে এত ভালো ফুল ফুটিয়েছে. তাই রাত বিরেতে সিমরনের যৌবন ভোগ করতে যৌন ক্ষুদার্ত সেই দন্ডমুন্ডের কর্তারা তাদের পোষা কুকুরগুলোকে ছেড়ে দিতো, যা তুলে আন বলে. রাতের পর রাত আখের খেতের মধ্যে ইদুর, সাপ, খোপ এদের সঙ্গী করে জেগে বসে থাকত সেই মেয়েটি আর মেয়েটির মা.
এরকম একবার দুদল একসাথে এসে গেল সিমরনকে তুলে নিয়ে যেতে, আর তাদের সংঘর্ষ বাধলো, লক্ষ্য সিমরন হলেও সেটা জমি দখলের লড়াই হিসেবে পরিচিত হলো পরবর্তী কালে. দুটো গ্রামের রাস্তা ঘাটে কুকুর ছাগলের মতো মানুষের মৃতদেহ পরে থাকলো.
সেই সময় সূর্যর সেখানে প্রবেশ, একটা রাজনৈতিক দলের হয়ে শন্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে সে সেখানে প্রচুর মিটিং মিছিল করলো. সেই সময় এক মিটিং চলাকালীন সিমরনের মা বাবা সিমরন কে নিয়ে তার সাথে দেখা করে সব খুলে বলে. সেই তাদের দু চোখ এক হলো. এতদিন সিমরন দেখেছে যে পুরুষ মানুষের বিকৃত কামনালোলুপ দৃষ্টি, এই প্রথম কোনো পুরুষ তাকে সন্মানের সাথে দেখলো. কি নজর তার, যেন মনের ভিতর কি হচ্ছে সেটা পরে ফেলবে, এত তীক্ষ্ণ তার চাহুনি. মনে মনে ভালো লেগে গেলেও সাহস করে চোখ দিয়ে তা প্রকাশ করতে পারেনি সিমরন. তাই যখন সবার সামনে সূর্য ঘোষণা করলো যে সিমরনকে বিয়ে করতে চায় , সিমরন যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলনা.
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: । রক্ত গোলাপ। by chakraabhijit - by ddey333 - 16-08-2021, 04:07 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)