13-08-2021, 11:00 AM
বাঙ্গালী * দের দুর্গাপূজা তে কিছু তো একটা আছেই। না হলে পূজা এখন দেরি মাস দেড়েক আর জিনিয়ার মন টা কেমন কেমন করছে, এটা হবে কেন? জন্ম থেকে এই ৩৬ টা বসন্ত দেখা জিনিয়ার একটা বছর ও পূজা তে কলকাতার বাইরে কাটে নি। নাই বা হল ও * । কিন্তু বাঙ্গালী তো বটে। আর দুর্গা পূজা বাঙ্গালির শ্রেষ্ঠ উৎসব।সেই পুজার আগে নতুন জামা কাপড় কেনা। বাঙ্গালী বন্ধুরা নতুন জামা কাপড় পড়ত সেই দেখে বাবার কাছে বায়না করে নিজের জন্য ও কিনত জিনিয়া। নতুন ফ্রক পড়ে বন্ধু দের সাথে বেরত ঠাকুর প্রতিমা দেখতে। সকাল বেলায় ওদের পার্সি মহল্লায় শিউলি ফুল পড়ে থাকত অনেক। ফুল কুড়োতে আসত সব মেয়েরা। জিনিয়া ও তুলত ফুল ওদের সাথে। যখন পূজা চলত ও নিজেই ফুল তুলে ওদের পাশেই এক বাঙ্গালী বাড়ীতে দিতে যেত। খুব ভালবাসত ওদের বাড়ীর বুড়ি মা। ও শুনেছে যে * রা অন্য জাতের ছোঁয়া ফুল নেয় না। কিন্তু অবাক হয়েছিল যখন ওই ঠাকুমা আর তার ছেলে ওকে নিয়ে গেছিল বাড়ীর অন্দর মহলে। প্রতিমার সামনে দাঁড় করিয়ে বুঝিয়েছিল এটা কার প্রতিমা। কেনই বা পূজা করেন তারা এই প্রতিমার।ভক্তি তে নয়। ভালবাসায়, উঁচু চিন্তা ধারায় ও যেন কেঁপে গেছিল। তাই কলকাতা তার সব কেড়ে নিলেও মানুষ হিসাবে তাকে এই জায়গায় কলকাতাই এনেছে। সব থেকে অবাক হত যখন ও দেখত যে ওরা অপেক্ষা করত কখন জিনিয়া ফুলের ঝুরি হাতে যাবে ওদের বাড়ি। ও সত্যি খুব মিস করছে পুজার আগের এই কলকাতা কে। ও ২০০০ কিমি দূরে এক '. লোকালিটির মাঝে দাঁড়িয়ে ও যেন দেখতে পাচ্ছে আকাশে সেই সুর বাজছে।বাঙ্গালী রা বলে আগমনী। কেমন আনমনা হয়ে যায় মন টা জিনিয়ার। নিজের মনেও টের পায় সেই আগমনীর সুর বেজে উঠেছে।একটা ঠাণ্ডা বাতাস যেন ছুয়ে গেল ওর অনাবৃত সুগোল দুটো বাহু কে। শিরশিরিয়ে উঠল ও। নিজের হাত দিয়ে নিজেকেই জড়িয়ে ধরে আবৃত করতে গেল।– আআআআহ কি ব্যাথা” নিজেই বলে উঠল নিজেকে। হাত টা ঘুরিয়ে কাঁধের ঠিক নিচের অংশ টা দেখতে গিয়ে দেখল হাতের আঙ্গুল বসে গিয়ে হালকা কালশিরা। মনে পড়ে গেল কালকে রাতের কথা। লজ্জায় লাল হয়ে উঠল ও। ওর ফর্সা মুখ খানা যেন রক্তিম হয়ে উঠল। এ এক ভারি মজা হয়েছে। না ও আর না শিবা কেউ রাতে একে অপর থেকে জড়িয়ে না ধরে থাকতে পারে না। এ মা তার মানে এই নয় যে শিবা ওকে কিছু করেছে। অতো ভাল ছেলে শিবা নয়। ম্যাম ম্যাম করে পাগল ওরে দিল। কেন নাম ধরে ডাকতে কি হয়? শিবার ঘরে ঢুকে পর্দা টা খুলে দিল। বাইরের নরম আলো ঘরে ঢুকল। শিবার মুখ টা হালকা কুঁচকে গেল। সামান্যও আলো ও বরদাস্ত করতে পারে না। মেয়ে টাও হয়েছে এক ই রকম। চোখে একটু আলো পড়লেই মুখ টা জিনিয়ার বুকে গুঁজে শোবে। যাতে চোখে আলো না লাগে। হি হি, বাপ বেটি একদম এক ই রকম। শিবা উঠে বসল। ওর ভিতরে মনে হয় কোন অ্যালার্ম আছে। না হলে ঠিক পাঁচটায় ওর ঘুম কি করে ভাঙ্গে। জিনিয়া ওকে তুলে দিয়ে রান্না ঘরে গেল চা করতে। শিবা উঠে বাথরুম এ গেল ফ্রেশ হতে। শিবা বেড়িয়ে এসে জুতো টা পড়ছে চা খেয়ে বেরবে বলে দৌড়তে ঠিক সেই সময়ে কলিং বেল টা বাজল। দুজনেই দুজনের মুখের দিকে চেয়ে রইল অবাক হয়ে, ভাব খানা এমন যে এত সকালে আবার কে এলো। শিবা কে জুতো টা পড়তে বলে চায়ের কাপ টা শিবার সামনে টেবিল এ রেখে দরজা খুলেই দেখল একজন পুরুষ আর একজন মহিলা দাঁড়িয়ে। পিছনে উসমান চাচা। ওনারা নমস্কার করে শিবার ব্যাপারে জানতে চাইতেই শিবা উঠে এসে দেখল, পুলিশ টা আর তার স্ত্রী দাঁড়িয়ে আছে। ও খুশী হয়ে ওদের কে ঘরে আসতে বলতেই ওরা ঢুকে এলো। মহিলা টি শিবার পায়ে ধরে ফেলে আরকি। জিনিয়া অবাক হয়ে গেল মহিলাটির এই রকম আচরনে। পিছনে তাকিয়ে দেখল উসমান চাচা মিটিমিটি হাসছেন।