12-08-2021, 05:23 PM
শিবা প্রতিজ্ঞা বদ্ধ ছিল যে কোনরকম ঝামেলায় জড়াবে না কিন্তু আজ যদি কিছু না করে আবার একটা শিবা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে। আর কে বলতে পারে শিবা না হয়ে হয়ত মহেশ তৈরি হল। এদিকে বাচ্চা মেয়েটি অনবরত শিবার প্যান্ট টা টানতে থাকল। শিবা একবার দেখেনিল পরিস্থিতি টা। পুলিশ টা কে দুটো হুমদো চেহারার লোক ধরে আছে।পুলিশ টাকে হাঁটু মুড়ে বসতে বাধ্য করেছে লোক দুটো। ওদের একজনের হাতে রিভলবার। আর একজনের হাতে একটা হকিস্টিক। মেয়েটির মা কে যে ছেলেটা চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে শ্লীলতা হানি করছে সে নিরস্ত্র।হয়ত পকেটে কিছু থাকলেও থাকতে পারে। উসমান চাচার কাছে যে আছে সে হাতে একটা বড় ভোজালি নিয়ে আছে। ও টার্গেট নিল যার হাতে রিভলবার আছে তাকে। ততক্ষনে লোক জড়ো হতে শুরু করেছে চারিদিকে। ও বাচ্চা মেয়েটি কে ওর দাদার কাছে দিয়ে এগিয়ে গেল যেন কিছুই হয় নি। রাস্তায় যেখানে মেয়েটির মা কে জড়িয়ে ধরে ছেলেটি চেষ্টা করছে মেয়েটির মায়ের ওড়না খুলে ফেলার, সেটা কে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গেল সামনে বেশ দ্রুত গতি তে। উসমান চাচা দেখছে শিবা কে সামনে বেশ দ্রুত গতি তে এগিয়ে যেতে। চাচা বুঝতে পেরেছে যে কিছু একটা করবেই শিবা। কারন মুস্তাফার কাছে শিবার ব্যাপারে শুনেছে আগেই। চাচা নিজের বাম হাত টা পিছনে বাড়িয়ে টেবিল এর উপরে রাখা কিছু একটা ভারি জিনিস হাতে নেবার চেষ্টায় ছিল। পেয়েও গেল সুপুরি গুঁড়ো করার মাঝারী হামান দিস্তা টা। কিন্তু চাচা আক্রমন করতে পারছে না সামনের উজবুক টা কে। কারন পিস্তল ধারী তখন ও হাতে পিস্তল ধরে আছে। যতক্ষণ ওটাকে শোয়ান যাবে কিচ্ছু লাভ নেই। গুলি চালিয়ে দিতে পারে দুম করে। মারামারি চাচাও করেছেন বয়েস কালে। এমনি এমনি আজকে এত বড় জায়গায় পৌঁছয় নি চাচা। ততক্ষনে শিবা অনেক টা কাছে পৌঁছে গেছে যেখানটায় পুলিশ টা কে হাঁটু মুড়ে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ওই লোক দুটো ধরে রেখেছিল।শিবা কে এগিয়ে আসতে দেখেই ওই লোকদুটোর মধ্যে একটা হালচাল শুরু হয়ে গেল। শিবা এতই দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল যে লোক দুটো একটু বিপাকেই পড়ল মনে হচ্ছে। আর শিবা এটাই চাইছিল। শিবা চাইছিল পিস্তল ধারী এগিয়ে আসুক সামনে। আর হল ও সেটাই। কারন এটা মনস্তাত্ত্বিক খেলা একটা। প্রথমত ওরা ভাবেও নি যে এই পরিস্থিতি তে কেউ এগিয়ে আসবে ঝামেলা করার জন্য। আর দ্বিতীয়ত ঝামেলায় এলে সব থেকে সোজা উপায় হল গুলি চালান। সেই ভুল টাই করল পিস্তল ধারী। যদি অন্য লোকটা এগিয়ে আসত শিবা কিছু টা হলেও ভয়ে থাকত যে গুলি চললেও চলতে পারে। কিন্তু যখন পিস্তল ধারী এগিয়ে এলো শিবা বুঝে গেল এই গুন্ডা গুলোর লেভেল। যত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল, পিস্তল ধারী পুলিশের মাথা থেকে পিস্তল সরিয়ে শিবার দিকে শিবার দিকে তাক করতে যেতেই, শিবা নিজেকে আর ও দ্রুত এগিয়ে নিয়ে গিয়ে লোকটার একদম সামনে নিজেকে দাঁড় করিয়ে দিল। তখন ও লোকটা পিস্তল টা শিবার সামনে আনতে পারে নি। শিবা সামান্য সুযোগ ও দিল না। যে হাতে পিস্তল ছিল সেই হাত টা নিজের ডান হাতে ধরে নিজের শরীর টা ঢুকিয়ে নিল সেই হাতের তলায়। পিস্তল ধরা হাত টার কবজি টা ধরে নিজেকে লোকটার শরীরের কাছে নিয়ে গিয়ে কনুই দিয়ে মারল পেট আর বুকের মাঝখানে।“ঊপ” করে একটা আওয়াজ হল। হুমদো টা আনকোরা বলেই শিবা কে সুযোগ টা দিল। এই সুযোগ শিবা পেলে প্রথমের নক আউট করে দেবে প্রতিপক্ষ কে কোন ঘুষি না মেরেই। লোকটা “ আই” বলে বসতে যেতেই শিবা লোকটার ভার টা নিজের পিঠে নিয়ে, পিস্তল ধরা হাত টা কে কব্জির কাছে ধরে, ওই হাতের কনুই টা নিজের কাঁধে রেখে নিচের দিকে ঝটকা দিতেই “করাক” করে একটা আওয়াজ পেল। হাত টা নেতিয়ে পড়ল শিবার কাঁধে। শিবা লোকটা কে ছেড়ে দিতেই ভয়ংকর যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে অন্য হাত দিয়ে ভাঙ্গা হাত টা ধরে বসে পড়ল।এতটাই জোর দিয়েছিল শিবা যে, হাড় বেড়িয়ে গেছে ভাঙ্গা হাত টার ঠিক কনুই এর কাছে। পিস্তল টা ছিটকে পড়ল একটু দূরে। ততক্ষনে পুলিশ টা বুঝে গেছে ওকে একশন এ নামতে হবে। দরকার ছিল না শিবার কাছে। কিন্তু ওর চিন্তা চাচা কি করছে।তখন তিনটে ঘটনা একসাথে ঘটল। উসমান চাচা যখন ই দেখল পিস্তল মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে ঠিক তখন ই বা হাতে ধরা হামান দিস্তা দিয়ে মারল সামনের লোকটার মুখে। ছেলেটা অন্যমনস্ক ছিল। তাকিয়ে ছিল শিবার দিকে। খটাশ করে আওয়াজ টা হতেই ছেলেটা ভোজালি টা ফেলে মুখ চিপে বসে পড়ল। আর সাথে সাথেই আর একটা আঘাত ঠিক মুখেই করল চাচা। ছেলেটা শুয়ে পড়ল চাচার রেস্টুরেন্ট এর সামনে। আর এদিকে পিস্তল টা পরে যেতেই হাত থেকে হকিস্টিক ধারী লোকটা পুলিশ টা কে ছেড়ে শিবাকে মারতে এলো। কিন্তু পুলিশ টা দেখল লোকটা এগোতে পারল না আর। কারন শিবার বাম পা টা এত সুন্দর ভাবে প্রায় ১২০ ডিগ্রি হয়ে লোকটার মুখে বসে গেল যে লোকটা ধানুর মতন খানিক শুন্যে বিচরণ করে নীচে ধপাস করে পড়ল। আর উঠল না। মাঝে যে ছেলেটি পুলিশের স্ত্রীর ওড়না খুলে সালোয়ার টা ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টায় ছিল সে হঠাৎ করে আবিস্কার করল ওর সাথে আর কেউ নেই। রক্ত মাখা হামান দিস্তা নিয়ে চাচা এগিয়ে আসছে। শিবা দ্রুত এগিয়ে আসছে ওর দিকে আর পুলিশ অফিসার টা পিস্তল টা কুড়িয়ে নিয়ে অত্যন্ত দ্রুত এগিয়ে আসছে.............................................