11-08-2021, 05:52 PM
কথায় আছে না যে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে! সেটা বোধহয় শত প্রতি শত সত্যি কথা। না হলে শিবা এই জায়গায় এসেও জড়িয়ে পড়বে কেন সেই এক ই ব্যাপারে। আসলে দোষ টা শিবার না। দোষ টা ভগবানের। মুম্বাই শহরে কম করে হাজার পাঁচেক রেস্টুরেন্ট আছে আর তাতে আছে হাজার তিরিশ কুক। তার মধ্যে শিবাই বা কেন থাকবে? হি হি মাঝে মাঝে ভাবি কেউ কেউ অদ্ভুত রকমের কপাল নিয়ে আসে। কিম্বা অদ্ভুত রকমের মানসিকতা। এই পুলিশ অফিসার টা রোজ ই আসে এখানে খেতে। দুপুরের খাবার টা এখানেই খায়। আর সেটা শিবার জন্যেই খায়। যবে থেকে শিবা এই রেস্টুরেন্ট এ ননভেজ এর দায়িত্ব টা নিয়েছে, তবে থেকে ননভেজ এর কাস্টমার বেড়ে গেছে উসমান চাচার। আর ওই পুলিশ টা ও এখানেই খায় দুপুরে। মাঝে মাঝে ছেলে মেয়ে বউ কে নিয়ে আসে রাতে খেতে। আর শিবার ও ভাল লাগে এই রকম ভাল কাস্টমার কে আর ও ভাল করে রেঁধে খাওয়াতে। ভদ্রলোকের নাম মঙ্গেশ হাল্বে। ওনার মেয়েটি একদম পাপির বয়সী। আর অমনি চঞ্চল। উসমান চাচা মঙ্গেশের কথায় শিবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। সেই থেকে ভালই পরিচয় আর কথাবার্তা ও হয় প্রায় ই। মোদ্দা কথা শিবার বেশ ভাল লেগেছে পুলিশ টা কে। ও দেখে এসেছে পুলিশ মানেই বিনা পয়সায় খাবার চিন্তা। কিন্তু এই লোকটি আলাদা। একাই খেয়ে যাক বা ফ্যামিলি নিয়ে আসুক ঠিক ততটাই পেমেন্ট করে যতটা উসমান চাচা বিল করেন। তবে এমন কাস্টমার তো পাওয়া যায় না খুব বেশি তাই উসমান চাচা অনেক কম ই নেন। যাই হোক এই কথা গুলো বলা উদ্দেশ্য নয় আমার। যেটা বলার কথা পুলিশ টা একজন সৎ মানুষ। আর যেহেতু সৎ তাই তাদের জীবন অনেক টা ই অনিশ্চয়তায় মোড়া।তাই শিবার একটা সফট কর্নার হয়ে গেছিল পুলিশ টার ওপরে। আর সেটা হয়ত পুলিশ আর তার সাথে সৎ হবার অসাধারন কম্বিনেশন এর জন্যই। আজকে শিবা একটু তাড়াতাড়ি চলে যাবে। সকালে ম্যাম বারাবার বলে দিয়েছেন যে আজকে ফিরতেই হবে তাড়াতাড়ি।উসমান চাচা কে বলতেই চাচা এক কথায় রাজি। শিবা ও হেঁসেল গুটিয়ে বেরিয়েই পড়েছিল। কিন্তু বেড়িয়ে এসেই বাইরে একটা দৃশ্য দেখে দাঁড়িয়ে পড়ল। দেখল একজন মহিলার চুলের মুঠি ধরে একটা অল্প বয়সী ছেলে রাস্তার মাঝে নিয়ে আসছে। আর রাস্তার ওদিকে দুটো ছেলে সেই পুলিশ টার মাথায় একটা পিস্তল রেখে ধরে রয়েছে। উসমান চাচা ভিতর থেকে বাইরে এসে দেখেই পরিস্থিতি আঁচ করে ভিতরে ঢুকে ফোন করে পাড়ার ছেলেদের ডাকার চেষ্টায় ভিতরে যাবার চেষ্টা করতেই আরেক টা ছেলে কোথা থেকে এসে চাচার গলায় একটা বড় ছুরি ধরে সোজা সাপটা ভাবে বলল – এ বুডঢে, হামে আপনা কাম কারনে দে, কাম খতম হনে কে বাদ জিসকো চাহে বুলা লেনা, উস পোলিশ ওয়ালে আজ মরনা হি হ্যায়। সালে নে বহত তাং কিয়া আপনে কো”। চাচা কিছু করতে না পেরে চুপ মেরে গেল যেন। ওদিকে বাচ্চা মেয়েটা ছুটে এসে সোজা শিবার হাঁটু জড়িয়ে ধরল। শিবা তাকিয়ে দেখল মেয়েটির চোখে জল। যেন মিনতি করছে কাকু বাবাকে আর মা কে বাঁচাও।