10-08-2021, 01:07 PM
তারপর থেকে শিবার উত্তরনের কাহিনী। সেদিন রাতে জ্যাক কে নক আউট করার পর শিবা কে থামতে হয় নি। আর টাকা!! সে বোধহয় শিবা ও কোনদিন ভাবতে পারে নি যে এত টাকা কোনদিন ও রোজগার করতে পারবে। কিন্তু সব কিছু ভালর একটা সীমা থাকা প্রয়োজন। ভগবান ওপর থেকে দেখেন আর হাসেন। বলেন “ বাবু রে আর এগোস না সামলাতে পারবি না”। হি হি কিন্তু মানুষের দুর্ভাগ্য সেটা মানুষ শুনতেও পায় না আর বুঝতেও পারে না। আর শিবা তো লেখাপড়া না শেখা একজন লড়ুয়ে মাত্র। এত টাকার হাতছানি ও উপেক্ষা করবে কি ভাবে।ছোট বেলায় মাকে খুন হতে দেখা একটা ছেলে যে তারপর থেকে দু বেলা ঠিক করে না খেতে পেয়েই বড় হয়েছে তার পক্ষে এত টাকার লোভ সামলান মুশকিল। কিন্তু বড় কঠিন এই জীবন। কখনও মনে হয় বেশ শক্ত পায়ের জমি টা। কিন্তু কোথা থেকে ভুমিকম্প এসে বুঝিয়ে দিয়ে যায় যে আসলেই নড়বড়ে সে জমি টা।অনেকেই বোঝে না সুখ দুঃখ বড়ই পাশাপাশি চলে। আর এটা নির্ভর করে সেই মানুষটার ওপরে যে সুখ দুঃখ কে এই মুহূর্তে উপলব্ধি করছে। কোথাও পাল্লা এদিক ওদিক হয় না। এ বড় হেঁয়ালি ওপরওয়ালার। যে এটা জানে না যে দুঃখ না থাকলে সুখের কোন অস্তিত্বই নেই তাকে তিনি এই উপলব্ধি টাই দেন নি বোঝার। সে সারা জীবন সুখের পিছনে ছোটে। আর যে জানে এই সত্য টা তার জীবনে দুঃখই আসে না। কারন সে তো জানে এটা ক্ষণস্থায়ী। সেটা দুঃখই বল বা সুখ। সেই মানুষ টি সুখের দিনে দুঃখের জন্য তৈরি হয় আর দুঃখের দিনে দুঃখ কে গলায় ঝুলিয়ে নিয়ে এগিয়ে চলে। কিন্তু একজন ২২ বছরের ছেলে এগুল বুঝবে কি ভাবে? আজ শিবা সামান্য সুখ পেলে তাকে বড় সমাদরে মাথার ওপরে বসায়। এখন ও জানে এর মুল্য কত টা!! কিন্তু সেইদিনের শিবা তো জানতই না দুঃখ কত ভাবে আসতে পারে জীবনে। যত জিতেছে শিবা, ততই বন্ধু বৃদ্ধির সাথে সাথে শত্রু ও বেড়েছে। গোটা দেশে শত্রু ছড়িয়ে গেছিল শিবার। তার মানে এই নয় যে শিবা সেটা জানত না। কিন্তু শিবা কোনদিন ও হারতে পারত না। সেটাই ছিল শিবার সমস্যা। বিয়ে করেছিল মিলি কে। বড্ড মিষ্টি একটা মেয়ে। ভালবেসেছে তাকে প্রান দিয়ে। মুস্তাফা দা সম্পর্ক টা করিয়েছিল। শিবা না করে নি। দেখতে হয়ত খুব ভাল ছিল না মিলি কিন্তু অম্নি মিষ্টি মেয়ে হয়ত শিবা পেত ও না। সাড়া দিনের ক্লান্তি ঘরে এসে দূর হয়ে যেত মিলির আদরে। এক বছরের মাথায় মিলির কোল আলো করে এসেছিল প্রাপ্তি। প্রাপ্তি আসার পড়ে যেন শিবার খ্যাতি বেড়ে গেছিল দশগুন। প্রাপ্তি তখন এক বছরের মেয়ে। সবে দুই একটা আধো আধো কথা বলতে শিখেছে। হাঁটতে শিখছে পড়তে পড়তে। সে এক ভারি সুন্দর সময়। এক সাথে হাসান, মুস্তাফা দা, হাস্নু , মিলির আর প্রাপ্তির সংসার। সিঙ্গাপুর এ লড়াই এর ডেট ফিক্স হল। বাড়ীর সবাই খুব খুশী। শিবা ও ভাবে নি। পেটে এক এক দিন দানা পানি না পড়া শিবা আজকে সিঙ্গাপুরে লড়তে যাচ্ছে। যেদিন সিঙ্গাপুর এ যাবে তার আগের দিন ডাক্তারের কাছে পরীক্ষা করাচ্ছিল শিবা। মুস্তাফা দা আর ও গেছিল। হাস্নু গেছিল একটু দুরেই নিজের বাপের বাড়ি তে। ডাক্তারের সাথে কথা বলে বাড়ি তে ঢোকার আগে বাড়ীর সামনে অ্যাম্বুলেন্স দেখে বাড়ি ঢুকে যা দেখেছিল শিবা তাতে চিৎকার করে কেঁদে উঠেছিল। ফুলের মতন মিষ্টি মেয়ে মিলি রক্তাক্ত হয়ে পড়েছিল মেঝেতে আর হাসান দরজার সামনে। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল চারিদিক। প্রাপ্তি হাস্নুর কোলে রক্ত মাখা অবস্থায়…………………………………………জেনেছিল কিছু লোকজন এসে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছিল বাড়ি লক্ষ্য করে। সোজাসুজি মাথায় গুলি লেগে মৃত্যু হয়েছিল মিলির। মেয়েটাকে বাঁচাতে গিয়ে গুলি খেয়েছিল হাসান পিছনের স্পাইনাল কর্ড এ। মেয়েটা বেঁচে যায় হাসানের জন্য।