06-08-2021, 04:31 PM
সমাজসেবী
[মাঝে কিছুদিন চ্যাট সাইটে ঘোরাঘুরি করছিলাম লেখার রসদ সংগ্রহ করার জন্য। সেখানেই এক অদ্ভূত ক্যারেক্টারের (চরিত্র নয়, ক্যারেক্টার!! ) সঙ্গে আলাপ। তার বলা কিছু কিছু কথার সঙ্গে আমার কল্পনা মিশিয়ে এই গল্প।]
ছুটির দিন, হাতে বিশেষ কোনও কাজ নেই। যা গরম পড়েছে, তাতে যে বাইরে বেরিয়ে আড্ডা মারব, সেই ইচ্ছেটাও হচ্ছে না। হঠাৎই মনে হল, বহু বছর চ্যাট করা হয় নি! এখন এত চ্যাট সাইট রয়েছে, কোনটায় ঢুকব, সেটা প্রথমে ঠিক করে উঠতে পারছিলাম না। সার্চ করে বেশ কয়েকটা দেশী বিদেশী চ্যাট সাইটে ঘোরাঘুরি করে অবশেষে একটাতে থিতু হলাম।
একটা বাঙলা নাম দেওয়া রুম আছে দেখে সেটাতে ঢুকলাম। যাক চ্যাটরুমে বাংলায় আড্ডা দেওয়া যাবে!
দুজন আরও ছিল ওই রুমে তখন। দুজনেই আমাকে ওয়েলকাম করল, নিয়ম মতো এ এস এল জানতে চাইল।
একজন চুপ করে গেল – তার বোধহয় পছন্দ হল না আমাকে। আর অন্যজনের ইউজার নেমটা একটা নজরকাড়া – সমাজসেবী।
টুকটাক কথার পরে তাকে জিগ্যেস করলাম – ভাই তুমি কী করো? জবাব এল, ওই যে লেখা আছে – সমাজসেবী!
আমি লিখেছিলাম, বাহ.. কোনও এন জি ও-র সঙ্গে যুক্ত নাকি?
‘আরে না না.. আমি একাই সমাজসেবা করি’
‘ও.. ভাল তো! কিন্তু একা একা কী সমাজসেবা কর?’
‘আছে কিছু কাজ বস, সবটা খুলে বলা যাবে না।‘
‘আচ্ছা, তা চ্যাটরুমেও সমাজসেবী নাম রেখেছ কেন? এখানেও সমাজসেবা? হাহাহাহা’
উত্তর এল, ‘আমার সমাজসেবার কাজটা এই চ্যাটরুমেই!’
একটা লম্বা করে ‘এএএএএ??? চ্যাটরুমে সমাজসেবা!!!!!’
এতক্ষণ এমনিই সময় কাটানোর জন্য খেজুর করছিলাম, কিন্তু এবার সত্যিই অবাক হওয়ার পালা..
সে জবাব দিল, ‘হুম’
‘কেসটা কি বলতো গুরু?’
একটু চুপ থেকে সমাজসেবী বলল, যাই বস। একটু কাজ আছে। পরে একদিন কথা হবে – তখন বলব।
চ্যাটরুমে কী ধরণের সমাজসেবা হতে পারে সেটা ভাবছিলাম – গুগল সার্চও করলাম ! নাহ: কোথাও কিছু নেই।
একবার মনে হল হ্যাকার নাকি? না কি টেররিস্ট?
অনেক সময়ে পুলিশের লোকজনও চ্যাটরুমে থাকে শুনেছি পেডোফিল খোঁজার জন্য – সেরকম কিছু কি?
আরও কিছুক্ষণ এদিক ওদিক ঘুরে আড্ডা দেওয়ার মতো কাউকে খুব একটা না খুঁজে পেয়ে শাট ডাউন করে স্নান খাওয়া সেরে নিলাম। কী মনে হল, খাওয়ার পরে একটা সিগারেট ধরিয়ে আবারও কম্পিউটারটা চালু করলাম।
ওই রুমে গিয়ে দেখি আবারও সেই ‘সমাজসেবী’।
আমি আগেরবার যে ইউজার নেম নিয়ে ঢুকেছিলাম, এবারও সেই নামেই গেলাম, সে নিজেই লিখল, ‘ওয়েলকাম ব্রো’
চ্যাটারদের লিস্টে বেশ কিছু ছেলেদের অদ্ভূত অদ্ভূত নাম ছাড়াও চোখে পড়ল দুটো মেয়েও আছে। বেশ খুশি হয়ে গেল মনটা।
সমাজসেবীকে জবাব দিলাম, ‘হাই.. এখনও আছ?’
‘ছিলাম না। একটু আগে এলাম।’
‘তা তোমার সমাজসেবা হচ্ছে? J’ লিখলাম আমি।
‘তোমার খুব চুলকোচ্ছে নাকি বলতো আমার সমাজসেবা নিয়ে?’
যাহ শালা, রেগে গেল নাকি? মনে মনেবললাম আমি।
‘সরি ভাই, রাগার মতো কিছু বলি নি। তবে তোমার এই চ্যাটরুমে সমাজসেবা ব্যাপারটা আমার খুব ইন্টরেস্টিং লাগছে, তাই জিগ্যেস করছিলাম। যে ঠিক কী কাজটা কর তুমি।‘
একটু পরে উত্তর এল, ‘খেঁচাই!’
ছোট্ট তিন অক্ষরের শব্দ – কিন্তু সেটা স্ক্রীণে ভেসে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় চেয়ার থেকে পড়ে যাচ্ছিলাম!
একটু ধাতস্থ হয়ে জিগ্যেস করলাম, ‘কী কর?’
‘লিখলাম তো – খেঁচাই’
আবারও আমার ভিরমি খাওয়ার পালা। বলে কী – খেঁচানোটা আবার কীধরণের সমাজসেবা!
লিখেই ফেললাম কথাটা।
[মাঝে কিছুদিন চ্যাট সাইটে ঘোরাঘুরি করছিলাম লেখার রসদ সংগ্রহ করার জন্য। সেখানেই এক অদ্ভূত ক্যারেক্টারের (চরিত্র নয়, ক্যারেক্টার!! ) সঙ্গে আলাপ। তার বলা কিছু কিছু কথার সঙ্গে আমার কল্পনা মিশিয়ে এই গল্প।]
ছুটির দিন, হাতে বিশেষ কোনও কাজ নেই। যা গরম পড়েছে, তাতে যে বাইরে বেরিয়ে আড্ডা মারব, সেই ইচ্ছেটাও হচ্ছে না। হঠাৎই মনে হল, বহু বছর চ্যাট করা হয় নি! এখন এত চ্যাট সাইট রয়েছে, কোনটায় ঢুকব, সেটা প্রথমে ঠিক করে উঠতে পারছিলাম না। সার্চ করে বেশ কয়েকটা দেশী বিদেশী চ্যাট সাইটে ঘোরাঘুরি করে অবশেষে একটাতে থিতু হলাম।
একটা বাঙলা নাম দেওয়া রুম আছে দেখে সেটাতে ঢুকলাম। যাক চ্যাটরুমে বাংলায় আড্ডা দেওয়া যাবে!
দুজন আরও ছিল ওই রুমে তখন। দুজনেই আমাকে ওয়েলকাম করল, নিয়ম মতো এ এস এল জানতে চাইল।
একজন চুপ করে গেল – তার বোধহয় পছন্দ হল না আমাকে। আর অন্যজনের ইউজার নেমটা একটা নজরকাড়া – সমাজসেবী।
টুকটাক কথার পরে তাকে জিগ্যেস করলাম – ভাই তুমি কী করো? জবাব এল, ওই যে লেখা আছে – সমাজসেবী!
আমি লিখেছিলাম, বাহ.. কোনও এন জি ও-র সঙ্গে যুক্ত নাকি?
‘আরে না না.. আমি একাই সমাজসেবা করি’
‘ও.. ভাল তো! কিন্তু একা একা কী সমাজসেবা কর?’
‘আছে কিছু কাজ বস, সবটা খুলে বলা যাবে না।‘
‘আচ্ছা, তা চ্যাটরুমেও সমাজসেবী নাম রেখেছ কেন? এখানেও সমাজসেবা? হাহাহাহা’
উত্তর এল, ‘আমার সমাজসেবার কাজটা এই চ্যাটরুমেই!’
একটা লম্বা করে ‘এএএএএ??? চ্যাটরুমে সমাজসেবা!!!!!’
এতক্ষণ এমনিই সময় কাটানোর জন্য খেজুর করছিলাম, কিন্তু এবার সত্যিই অবাক হওয়ার পালা..
সে জবাব দিল, ‘হুম’
‘কেসটা কি বলতো গুরু?’
একটু চুপ থেকে সমাজসেবী বলল, যাই বস। একটু কাজ আছে। পরে একদিন কথা হবে – তখন বলব।
চ্যাটরুমে কী ধরণের সমাজসেবা হতে পারে সেটা ভাবছিলাম – গুগল সার্চও করলাম ! নাহ: কোথাও কিছু নেই।
একবার মনে হল হ্যাকার নাকি? না কি টেররিস্ট?
অনেক সময়ে পুলিশের লোকজনও চ্যাটরুমে থাকে শুনেছি পেডোফিল খোঁজার জন্য – সেরকম কিছু কি?
আরও কিছুক্ষণ এদিক ওদিক ঘুরে আড্ডা দেওয়ার মতো কাউকে খুব একটা না খুঁজে পেয়ে শাট ডাউন করে স্নান খাওয়া সেরে নিলাম। কী মনে হল, খাওয়ার পরে একটা সিগারেট ধরিয়ে আবারও কম্পিউটারটা চালু করলাম।
ওই রুমে গিয়ে দেখি আবারও সেই ‘সমাজসেবী’।
আমি আগেরবার যে ইউজার নেম নিয়ে ঢুকেছিলাম, এবারও সেই নামেই গেলাম, সে নিজেই লিখল, ‘ওয়েলকাম ব্রো’
চ্যাটারদের লিস্টে বেশ কিছু ছেলেদের অদ্ভূত অদ্ভূত নাম ছাড়াও চোখে পড়ল দুটো মেয়েও আছে। বেশ খুশি হয়ে গেল মনটা।
সমাজসেবীকে জবাব দিলাম, ‘হাই.. এখনও আছ?’
‘ছিলাম না। একটু আগে এলাম।’
‘তা তোমার সমাজসেবা হচ্ছে? J’ লিখলাম আমি।
‘তোমার খুব চুলকোচ্ছে নাকি বলতো আমার সমাজসেবা নিয়ে?’
যাহ শালা, রেগে গেল নাকি? মনে মনেবললাম আমি।
‘সরি ভাই, রাগার মতো কিছু বলি নি। তবে তোমার এই চ্যাটরুমে সমাজসেবা ব্যাপারটা আমার খুব ইন্টরেস্টিং লাগছে, তাই জিগ্যেস করছিলাম। যে ঠিক কী কাজটা কর তুমি।‘
একটু পরে উত্তর এল, ‘খেঁচাই!’
ছোট্ট তিন অক্ষরের শব্দ – কিন্তু সেটা স্ক্রীণে ভেসে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় চেয়ার থেকে পড়ে যাচ্ছিলাম!
একটু ধাতস্থ হয়ে জিগ্যেস করলাম, ‘কী কর?’
‘লিখলাম তো – খেঁচাই’
আবারও আমার ভিরমি খাওয়ার পালা। বলে কী – খেঁচানোটা আবার কীধরণের সমাজসেবা!
লিখেই ফেললাম কথাটা।