31-07-2021, 11:25 AM
পণ্চম পর্বঃ চোরাবালি
সোয়েব তার বাংলোর সামনে বাগানে পাতা চেয়ারে বসে ছিল, পাশে তার স্ত্রী। পড়ন্ত বিকেলে ঝিরিঝিরি বাতাস বইছে তার সাথে আসছে গোলাপের মিষ্টি মধুর গন্ধ, সাথে আছে ঘরে ফিরে আসা পাখিদের কিচিরমিচির ডাক। এমন একটি সময় যেকোন নবদম্পতির জন্য রোমান্টিক হতে বাধ্য। কিন্তু পাশে স্ত্রীকে পেয়েও সোয়েব মগ্ন আছে একটি ইংরেজি থ্রিলার উপন্যাস নিয়ে। সুমির খুব বিরক্ত লাগছিল, সপ্তাহে এই একটি দিনই তো একটু কাছে পায় স্বামীকে, সেই দিনও কিনা সোয়েব বসে যায় তার বইপত্র নিয়ে। পত্রিকার বিনোদন পাতায় চোখ বুলাতে বুলাতে স্বামীকে আড়চোখে দেখে সুমি। সুমি কথা বলার একটি স্কোপ খুজতে থাকে, ও মনে করে সোয়েব খুন খারাপি, রক্তারক্তি ছাড়া কোন টপিকেই ইন্টারেস্ট পায় না। অবশ্য সোয়েবের পেশাটাও তেমনই, সে পুলিশে কাজ করে, এসিসট্যান্ট সুপারিন্টেনডেন্ট অব পুলিশ।
" এই তুমি আজকের পত্রিকা পরেছ? " সুমি বলে
" হুম" বই থেকে চোখ না সরিয়েই জবাব দেয় সোয়েব
" এই খবরটা পড়েছ? এইযে ' অপহরণের উনচল্লিশ দিন পর অপহৃতা তরুণী উদ্ধার, অপহরণকারী পার্বত্য অন্চলের ত্রাস ডাকু কিবরিয়া গ্রেফতার।' একই ঘটনা প্রথম পাতায় আরেকটি কলামে এসেছে।
' কয়েকজন যুবকের বীরত্বপুর্ণ অভিযান ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে তরুণী উদ্ধার। ' এই খবরটা নিয়ে অনলাইনে খুব তোলপাড় হচ্ছে " সুমি বলে
" এরকম খবর তো হরহামেশাই আসে পত্রিকায়, এখানে ইন্টারেস্টিং কি পেলে? " সোয়েব বলে
" তুমি আসলে খবরটা পড়ই নি, তাই এরকম বলছে। আমি পড়ছি তুমি শোন। " বলে সুমি খবরটা পড়তে শুরু করে।
" গত শনিবার বান্দরবন জেলার রুমা উপজেলা থেকে সাদিয়া আক্তার নামে এক তরুণী গৃহবধূ উদ্ধার এবং অপহরনকারী কুখ্যাত ডাকু কিবরিয়া পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়। এর আগে নয়ই জুলাই কক্সবাজারে সী সেল হোটেলে হামলা চালিয়ে সাদিয়াকে অপহরণ করে নিয়ে যায় ডাকু কিবরিয়া। তবে ঘটনাটির সুত্রপাত হয় প্রায় দশ বছর আগে, যখন সাদিয়ার বাবা আমিনুজ্জামান শাহরিয়ার কবির খান নামের পনেরো বছর বয়সী এক এতিম ছেলেকে আশ্রয় দেন। কবিরের বাবা মাসুদ খান ছিলেন আমিনুজ্জামানের বন্ধু। এক কার এক্সিডেন্টে কবির তার পরিবার হারিয়েছিল। আমিনুজ্জামান ও তার স্ত্রী শিরিন বেগম কবিরকে তাদের সন্তানের সমান আদর দিয়েই লালন পালন করেন। কবির মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্টে দ্বিতীয় বর্ষে পরতো, তখন সে সাদিয়াকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। সাদিয়া তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং সজল আহমেদকে বিয়ে করেন। এতে কবির রাগে ক্ষোভে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। চট্টগ্রামে গিয়ে সে একটি ডাকাত দলে যোগ দেয় কিবরিয়া নামে, এবং এক বছরের মধ্যেই সে ডাকাত দলের দলপতিতে পরিণত হয়। কথিত আছে কবির ওরফে কিবরিয়া তার দলের দলপতি কাদেরকে একবার মৃত্যুর মুখ থেকে বাচিয়েছিল। সেই থেকে কিবরিয় তার স্নেহভাজন ছিল এবং পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে মারা যাবার আগে কাদের কিবরিয়াকে দলপতি ঘোষনা করে। এরপর আরো চারটি বছর কেটে যায়, এর মধ্যে কিবরিয়া ও তার ডাকু দল পার্বত্য চট্টগ্রামের ত্রাশে পরিণত হয়। গ্রামকে গ্রাম লুটপাট, হত্যা ;., চালায় তারা অথচ পুলিশ তাদের নাগালই পায় না। কিবরিয়া যখন জানতে পারে যে সাদিয়া তার স্বামীর সাথে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছে তখন সে তার দলবল নিয়ে হামলা চালায় তাদের হোটেলে, সজল ও তার বন্ধু সাইমন্ড রহমানকে মারধর করে গুরুতর আঘাত করে সাদিয়াকে অপহরন করে নিয়ে যায়। স্ত্রীকে হারিয়ে সজল মানষিকভাবে বিদ্ধস্ত হয়ে পরে। শুধু পুলিশের ওপর নির্ভর না থেকে সাইমন তার কিছু বন্ধুদের নিয়ে খুজতে থাকে, এবং এক মাসের নিরন্তর চেষ্টার পর খুজে পায় তারা কিবরিয়ার আস্তানা । কিন্তু তারা ধরা পরে যায় কিবরিয়ার লোকদের কাছে। পলাস হাসান ও মুহিত তালুকদার আহত অবস্থায় পালিয়ে আসতে পারলেও সাইমন ও রকিবকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে কিবরিয়া ও তার লোকেরা। এরপর ধরা পরার ভয়ে পালিয়ে যাবার সময় কিবরিয়া পুলিশের কাছে ধরা পরে। তার কাছে থেকে পুলিশ দুটি রাইফেল ও দশ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। সাদিয়া আক্তার ওরফে স্নিগ্ধা এখন এইড হসপিটালে চিকিতসারত আছেন, বিগত একটি মাস তিনি ;., এবং তুমুল শারিরীক ও মানষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ডক্টর শাহনাজ আক্তার বলেন ভিক্টিমের দেহে ;.,ের আলামত পাওয়া গেছে এবং তিনি অন্তঃসত্তা। তবে ভিক্টিমের শারিরীক অসুস্থতার চেয়ে মানসিক আঘাতটি অনেক বেশী গুরুতর।"
এই পর্যন্ত পরে সুমি থেমে যায়। তারপর বলে " আরে এই ধর্ষক ডাকাতটাকে না মিরপুর থানায় চালান করে দিয়েছে। এটা তো তোমার আওতাধিন।"
" হুম। তবে এখন পর্যন্ত ওর ফাইলটা দেখা হয় নি। । " সোয়েব বলে…
সোয়েব তার বাংলোর সামনে বাগানে পাতা চেয়ারে বসে ছিল, পাশে তার স্ত্রী। পড়ন্ত বিকেলে ঝিরিঝিরি বাতাস বইছে তার সাথে আসছে গোলাপের মিষ্টি মধুর গন্ধ, সাথে আছে ঘরে ফিরে আসা পাখিদের কিচিরমিচির ডাক। এমন একটি সময় যেকোন নবদম্পতির জন্য রোমান্টিক হতে বাধ্য। কিন্তু পাশে স্ত্রীকে পেয়েও সোয়েব মগ্ন আছে একটি ইংরেজি থ্রিলার উপন্যাস নিয়ে। সুমির খুব বিরক্ত লাগছিল, সপ্তাহে এই একটি দিনই তো একটু কাছে পায় স্বামীকে, সেই দিনও কিনা সোয়েব বসে যায় তার বইপত্র নিয়ে। পত্রিকার বিনোদন পাতায় চোখ বুলাতে বুলাতে স্বামীকে আড়চোখে দেখে সুমি। সুমি কথা বলার একটি স্কোপ খুজতে থাকে, ও মনে করে সোয়েব খুন খারাপি, রক্তারক্তি ছাড়া কোন টপিকেই ইন্টারেস্ট পায় না। অবশ্য সোয়েবের পেশাটাও তেমনই, সে পুলিশে কাজ করে, এসিসট্যান্ট সুপারিন্টেনডেন্ট অব পুলিশ।
" এই তুমি আজকের পত্রিকা পরেছ? " সুমি বলে
" হুম" বই থেকে চোখ না সরিয়েই জবাব দেয় সোয়েব
" এই খবরটা পড়েছ? এইযে ' অপহরণের উনচল্লিশ দিন পর অপহৃতা তরুণী উদ্ধার, অপহরণকারী পার্বত্য অন্চলের ত্রাস ডাকু কিবরিয়া গ্রেফতার।' একই ঘটনা প্রথম পাতায় আরেকটি কলামে এসেছে।
' কয়েকজন যুবকের বীরত্বপুর্ণ অভিযান ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে তরুণী উদ্ধার। ' এই খবরটা নিয়ে অনলাইনে খুব তোলপাড় হচ্ছে " সুমি বলে
" এরকম খবর তো হরহামেশাই আসে পত্রিকায়, এখানে ইন্টারেস্টিং কি পেলে? " সোয়েব বলে
" তুমি আসলে খবরটা পড়ই নি, তাই এরকম বলছে। আমি পড়ছি তুমি শোন। " বলে সুমি খবরটা পড়তে শুরু করে।
" গত শনিবার বান্দরবন জেলার রুমা উপজেলা থেকে সাদিয়া আক্তার নামে এক তরুণী গৃহবধূ উদ্ধার এবং অপহরনকারী কুখ্যাত ডাকু কিবরিয়া পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়। এর আগে নয়ই জুলাই কক্সবাজারে সী সেল হোটেলে হামলা চালিয়ে সাদিয়াকে অপহরণ করে নিয়ে যায় ডাকু কিবরিয়া। তবে ঘটনাটির সুত্রপাত হয় প্রায় দশ বছর আগে, যখন সাদিয়ার বাবা আমিনুজ্জামান শাহরিয়ার কবির খান নামের পনেরো বছর বয়সী এক এতিম ছেলেকে আশ্রয় দেন। কবিরের বাবা মাসুদ খান ছিলেন আমিনুজ্জামানের বন্ধু। এক কার এক্সিডেন্টে কবির তার পরিবার হারিয়েছিল। আমিনুজ্জামান ও তার স্ত্রী শিরিন বেগম কবিরকে তাদের সন্তানের সমান আদর দিয়েই লালন পালন করেন। কবির মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্টে দ্বিতীয় বর্ষে পরতো, তখন সে সাদিয়াকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। সাদিয়া তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং সজল আহমেদকে বিয়ে করেন। এতে কবির রাগে ক্ষোভে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। চট্টগ্রামে গিয়ে সে একটি ডাকাত দলে যোগ দেয় কিবরিয়া নামে, এবং এক বছরের মধ্যেই সে ডাকাত দলের দলপতিতে পরিণত হয়। কথিত আছে কবির ওরফে কিবরিয়া তার দলের দলপতি কাদেরকে একবার মৃত্যুর মুখ থেকে বাচিয়েছিল। সেই থেকে কিবরিয় তার স্নেহভাজন ছিল এবং পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে মারা যাবার আগে কাদের কিবরিয়াকে দলপতি ঘোষনা করে। এরপর আরো চারটি বছর কেটে যায়, এর মধ্যে কিবরিয়া ও তার ডাকু দল পার্বত্য চট্টগ্রামের ত্রাশে পরিণত হয়। গ্রামকে গ্রাম লুটপাট, হত্যা ;., চালায় তারা অথচ পুলিশ তাদের নাগালই পায় না। কিবরিয়া যখন জানতে পারে যে সাদিয়া তার স্বামীর সাথে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছে তখন সে তার দলবল নিয়ে হামলা চালায় তাদের হোটেলে, সজল ও তার বন্ধু সাইমন্ড রহমানকে মারধর করে গুরুতর আঘাত করে সাদিয়াকে অপহরন করে নিয়ে যায়। স্ত্রীকে হারিয়ে সজল মানষিকভাবে বিদ্ধস্ত হয়ে পরে। শুধু পুলিশের ওপর নির্ভর না থেকে সাইমন তার কিছু বন্ধুদের নিয়ে খুজতে থাকে, এবং এক মাসের নিরন্তর চেষ্টার পর খুজে পায় তারা কিবরিয়ার আস্তানা । কিন্তু তারা ধরা পরে যায় কিবরিয়ার লোকদের কাছে। পলাস হাসান ও মুহিত তালুকদার আহত অবস্থায় পালিয়ে আসতে পারলেও সাইমন ও রকিবকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে কিবরিয়া ও তার লোকেরা। এরপর ধরা পরার ভয়ে পালিয়ে যাবার সময় কিবরিয়া পুলিশের কাছে ধরা পরে। তার কাছে থেকে পুলিশ দুটি রাইফেল ও দশ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। সাদিয়া আক্তার ওরফে স্নিগ্ধা এখন এইড হসপিটালে চিকিতসারত আছেন, বিগত একটি মাস তিনি ;., এবং তুমুল শারিরীক ও মানষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ডক্টর শাহনাজ আক্তার বলেন ভিক্টিমের দেহে ;.,ের আলামত পাওয়া গেছে এবং তিনি অন্তঃসত্তা। তবে ভিক্টিমের শারিরীক অসুস্থতার চেয়ে মানসিক আঘাতটি অনেক বেশী গুরুতর।"
এই পর্যন্ত পরে সুমি থেমে যায়। তারপর বলে " আরে এই ধর্ষক ডাকাতটাকে না মিরপুর থানায় চালান করে দিয়েছে। এটা তো তোমার আওতাধিন।"
" হুম। তবে এখন পর্যন্ত ওর ফাইলটা দেখা হয় নি। । " সোয়েব বলে…