Thread Rating:
  • 106 Vote(s) - 2.8 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) সমাপ্ত :---
[Image: thumb.jpg]

Update 5

চৈত্র মাস । সকাল থেকেই কাঠ ফাটা রোদ । তার উপর দুপুর বেলা । কুকুরের সাথে মানুষেরও জিভ বেরিয়ে আসার উপক্রম । বীণাপাণি দেবী সকাল বেলা ছাদে একটা গামলার মতো ছোট পরিত্যক্ত পাত্রে জল রেখে এসছিলেন।  সেই জল এখন এক জোড়া শালিক খাচ্ছে। তখন ঘরে ঘরে ফ্রিজ , এসি , টিভি আসেনি। সমাজে যারা একটু বেশিই বড়ো লোক বলে পরিগণিত , শুধু তারাই এইসব অত্যাধুনিক মেশিনের সুবিধা নিতে সক্ষম হতো । আর সেইসব বড়ো লোকদের মধ্যে আকাশের বাবার নামটাও উচ্চারিত হয় । তাই তিনি গরম পড়তেই একটা 180 লিটারের one door ফ্রিজ কিনে নিলেন ।

দুপুরের খাওয়ার পর সুচেতা দেবী তার ছোট মেয়েকে নিয়ে ভাত ঘুম দিয়েছিলেন কিন্তু সুচির কোন ভাবেই ঘুম আসেনি। সে জানলা দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখছিল।

সোসাইটির বাইরের রাস্তার ফুটপাতে যে শিমুল গাছ আছে সেটার দিকে দৃষ্টি পড়তেই তার মনে পড়লো --- সেটা তে আজ সকালে একটা ইয়া বড়ো লাল ঝুটি সাদা কাকাতুয়া পাখি এসে বসেছিল । গলায় সোনালি কালারের লকেট দেখে বোঝা যাচ্ছিল ওটা কারোর পোষা । ওই বিপ্লব বিচ্ছু একটা ঢিল ছুঁড়ে উড়িয়ে দিল । ঘটনাটা মনে পড়তেই বাইরে যাওয়ার জন্য মন আনচান করে উঠলো । মায়ের হাতটা আস্তে করে নিজের পেটের উপর থেকে সরিয়ে , খাট থেকে নেমে , ছোট ছোট পা ফেলে ঘরের বাইরে চলে এলো ।

তারপর ফ্ল্যাটের বাইরে এসে সিঁড়ি দিয়ে নামতে যেতেই পিছন থেকে দিম্মার আওয়াজ পেল “ কোথায় যাচ্ছিস এই ভরদুপুরে ? „

দিম্মার কন্ঠ পেতেই সুচি পিছন ঘুরে তাকালো । দেখলো আকাশদের ফ্ল্যাটের দরজার ওইপাড়ে দিম্মা দাঁড়িয়ে আছে । সুচি পিছন ফিরতেই দিম্মা আবার বললেন “ এই ভরদুপুরে আর খেলতে হবে না । ভেতরে এসে বস। „

সুচি দিম্মার কড়া কন্ঠের আদেশ শুনে মাথা নিচু করে লিভিং রুমে এসে সোফায় বসলো । সুচির এই ভরদুপুরে বাইরে খেলতে যেতে দেখে বীণাপাণি দেবীর নিজের মেয়ের কথা মনে পড়ে গেল । তার মেয়েও গ্রীষ্মের দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পুকুরে গিয়ে ঝাপ দিত । তখন বারাসাত গ্রাম ছিল বলা যায় ।

স্নেহা দেবীও তার ছেলেকে নিয়ে ভাত ঘুম দিয়েছিলেন। কিন্তু আকাশ ঘুমাতে পারেনি। সে তাদের নতুন কেনা ফ্রিজের দরজা খুলে তার ঠান্ডা বাতাস নিজের শরীরে মাখার জন্য খাট থেকে উঠে লিভিং রুমে এসে উপস্থিত হলো। এসে দেখলো দিদিমা আর সুচি আগে থেকে সোফায় বসে গল্প করছে। আর সোফার নীচে মেঝেতে বাদশা বসে আছে। আকাশে কে দেখেই বাদশা ঘেউ ঘেউ শব্দ করে ডেকে উঠলো।

“ চুপ , মা জেগে যাবে। „ আকাশ ঠোঁটে আঙুল দিয়ে বাদশাকে চুপ করিয়ে দিল।

বাদশা ঘেউ ঘেউ বন্ধ করে লেজ গুটিয়ে আবার সুচির পায়ের কাছে গুটিয়ে বসে পড়লো । আকাশ তাদের নতুন কেনা ফ্রিজটার দরজা খুলে তার সামনে চোখ বন্ধ করে , মুখ হা করে দাঁড়িয়ে পড়লো।

“ দাদুভাই তুই না সকালেই এইজন্য বকা খেয়েছিস মায়ের কাছে । এখন আবার করছিস ! „ আকাশকে ফ্রিজ খুলে ফ্রিজের হাওয়া খেতে দেখে দিদিমা সকালের ঘটনা টেনে আনলেন। দিদিমার কথা শুনে আকাশের মনে পড়লো। হ্যাঁ সকালেই ওর মা ওকে কান মলে দিয়ে আচ্ছা করে বকেছে । দিদিমার সাবধান বাণী শুনে সে ফ্রিজ থেকে একটা ঠান্ডা বরফ জমে যাওয়া জলের বোতল বার করে সেটা খুলে জল খেতে যাচ্ছিল। দিদিমা আবার বারন করলেন “ না। বরফ জল খেতে নেই। এই গরমে সর্দি গর্মি হবে। „

পরপর দুবার দিদিমার বারন শুনে আকাশ এসে দিদিমার পাশে বসে পড়লো।

“ আইস্ক্রিম খাবি ? „ জিজ্ঞেস করলেন দিদিমা । আকাশের অবস্থা দেখে দিদিমার মায়া হলো। সত্যি খুব গরম পড়ছে আজকাল। আগে এতো পড়তো না।

আইস্ক্রিম এর নাম শুনতেই আকাশের মনটা খুশিতে নেচে উঠলো । খুব খেতে ইচ্ছা করে কিন্তু মা দেয়না খেতে । দিদিমাকে ভালো করে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো “ আমি পেপসি খাবো । „

বীণাপাণি দেবী আঁচলের গিট খুলে সুচিকে একটা দশ টাকার নোট দিয়ে বললেন “ যা রাস্তায় অনেক আইসক্রিম বিক্রি হয় ।  গিয়ে দেখ আছে কি না । থাকলে তোদের দুজনের পছন্দ মতো নিয়ে আসবি। „

সুচি টাকা নিয়ে দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে , লাফিয়ে লাফিয়ে সিড়ি ভেঙে , বিল্ডিং এর নীচে গিয়ে , পাথর বিছানো রাস্তা দিয়ে দৌড়ে সোজা সোসাইটির বড়ো দরজার সামনে গিয়ে থামলো । লোহার গেটটার ফাঁক দিয়ে দেখলো রাস্তায় কোন আইসক্রিম এর ঠেলা গাড়ি আছে কি না । না বাইরে কাক পক্ষী ও নেই ।

উত্তেজনার বসে সুচি লক্ষ্যই করেনি যে গেটটার পাশে যে দেবদারু গাছ আছে তার ছায়ায় বৃদ্ধ রহমত চাচা একটা প্লাস্টিক এর চেয়ারে বসে আছেন। সুচিকে এইভাবে দৌড়ে এসে দরজা দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে দেখে ভুরু নাচিয়ে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন “ কিরে ? এই ভরদুপুরে কোথায় যাবি ? „

সুচি হকচকিয়ে পাশে তাকিয়ে দেখলো রহমত চাচা বসে আছে তার ডিউটির নিল জামা আর কালো ফুল প্যান্ট পড়ে “ কোথাও যাবো না দাদু । আইস্ক্রিম কিনবো । কিন্তু আইস্ক্রিম কাকু তো নেই ! „

“ তুই ঘরে যা। এই রোদে থাকিস না ।  আইস্ক্রিম এলে আমি নিয়ে যাবো। যা ঘরে যা। আর দৌড়াদৌড়ি করিস না । „

“ আকাশের জন্য পেপসি.....  

“ আর তোর জন্য কুলফি তাইতো ? „ সুচিকে কথা শেষ করতে দেওয়ার আগেই রহমত চাচা সুচির অসমাপ্ত কথা বলে দিলেন।

“ তুমি জানলে কি করে ? „

“ তোর দাদু তোর প্রিয় আইস্ক্রিম জানবে না ? যা , এই রোদে থাকিস না। „ শ্যাম বর্ণ কোঁচকানো চামড়ার মুখে বড়ো বড়ো সাদা দাড়িতে হাত বোলাতে বোলাতে বললেন রহমত চাচা। দাদুর কথা শুনে সুচি উপরে চলে এলো। এবার দৌড়োয় নি। হেঁটেই এসছে ।

সুচি যখন উপরে এসে আবার দিম্মার পাশে বসলো তখন দিম্মা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন “ চলে এলি ? আইস্ক্রিম কোথায় ? „

“ রাস্তায় তো কেউ নেই ! তাই দাদু বললো চলে যেতে । আর আইস্ক্রিম কাকু এলে দাদু কিনে নিয়ে আসবে । „ সোফায় বসে বাদশার দিকে তাকিয়ে বললো সুচি।

কিছুক্ষণ পর রহমত চাচা হাতে একটা কালো পেপসি আর কুলফি নিয়ে উপরে এলেন। দরজা খোলাই ছিল তাই তিনি সোজা ভিতরে ঢুকে এলেন। দাদুর হাতে পেপেসি দেখে আকাশ সোফা থেকে উঠে দৌড়ে দাদুর হাত থেকে পেপসিটা প্রায় ছিনিয়ে নিল বলা যায়। আকাশকে পেপসি দিয়ে সুচিকে তার কুলফি দিয়ে দিলেন । আকাশকে এইভাবে পেপসি নিতে দেখে সুচি বিরক্তির দৃষ্টিতে ভুরু কুঁচকে তার দিকে তাকালো কিন্তু আকাশ তখন পেপসির মাথায় এক কোনার প্ল্যাস্টিক দাঁত দিয়ে ছিড়ে পেপসি খেতে শুরু করেছে।

“ আপনি আবার এত কষ্ট করে আনতে গেলেন কেন ? „ বলে টাকা দিতে যাচ্ছিলেন দিদিমা।

“ এদের জন্য কিছু করলে কষ্ট হয়না। মনটা শান্তি পায় । টাকা লাগবে না । „ আকাশের দিদিমা রহমত চাচার কথার কিছুই বুঝলেন না তাই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলেন । সেটা দেখে রহমত চাচা বললেন “ এদের দেখলে যে আমার নিজের নাতনির কথা মনে পড়ে যায়। „

রহমত চাচার কথাটা সাত বছরের সুচি আর তিন বছরের আকাশ বোঝেনি। কারন তাদের বোঝার বয়স হয়নি। কিন্তু বীণাপাণি দেবী বুঝলেন। এখানে এসছেন এক বছর হয়ে গেল। এই সময়ে তিনি এই বৃদ্ধ দারোয়ান এর সম্পর্কে বেশি কিছু শোনেননি। যা শুনেছিলেন তা হলো --- এনার কেউ নেই। এখানেই থাকে । রান্না করে খায়। আজ আকাশের দিদিমা আবিষ্কার করলেন এই বৃদ্ধের পরিবার ছিল।

তাই যখন বিকাল বেলা সোসাইটির সব গৃহিণী তাদের সন্তানদের নিয়ে পার্কে গেলেন হাওয়া খেতে। তখন দুর থেকে এই বৃদ্ধ কে দেখে বীণাপাণি দেবী এগিয়ে গেলেন আরো জানার জন্য ।

রহমত চাচার বয়স হয়েছে। কিন্তু কত বয়স হয়েছে সেটা কেউ জানে না। বয়সের জন্য কাঁধ বেঁকে গেছে। শ্যাম বর্ণ মুখে সাদা দাড়ির অস্তিত্ব দূর থেকেই বোঝা যায় কিন্তু মুখে গোঁফ নেই । রহমত চাচা তখন একটা চেয়ারে বসে বাইরে রাস্তার গাড়ি ঘোড়া দেখতে ব্যাস্ত। বীণাপাণি দেবী এগিয়ে গিয়ে তার কাছে যেতেই তিনি তার নিজের ভালো চেয়ারটা ছেড়ে দিলেন “ বসুন , বসুন । „

“ আরে না , না ! আপনি নিজের চেয়ার ছেড়ে দিচ্ছেন কেন ? „

“ আমি ভিতর থেকে আর একটা আনছি । „ বলে তিনি নিজের ছোট ঘুবচির মতো  ঘরে গিয়ে আর একটা চেয়ার এনে বসলেন । বসতেই তাদের মধ্যে এদিক ওদিকের কথা শুরু হলো। কিছুক্ষণ এদিক সেদিকের কথা বলার পর বীণাপাণি দেবী প্রশ্ন করলেন “ আপনি আগাগোড়া এই শহরেই আছেন ? „

“ না , আমার আদি বাড়ি বর্ধমানে। সেখানেই থাকতাম। „

“ আর ওখানে যান না ? „

“ কেউ তো নেই ওখানে। কার জন্য যাবো ? „ মাথা নিচু করে ভারাক্রান্ত মনে বললেন রহমত চাচা।

“ এখন ওখানে কেউ নেই ?

“ সবাই জান্নাতে আছে । „  একটা গভির নিশ্বাস ফেলে  কথাটা বললেন রহমত চাচা

“ কেউ বেঁচে নেই ? „

“ না কেউ নেই। এই বৃদ্ধ এখন অনাথ । „

“ কে কে ছিল আপনার পরিবারে ? সবাই মারা গেল কীভাবে ? অনাথ কথাটা শুনে আকাশের দিদিমার বুকটা ছ্যাৎ করে উঠলো ।

অনেক দিন পর কেউ তার জীবনের কথা জানতে চাইছে । তাই কিছুক্ষণ রহমত চাচা বীণাপাণি দেবীর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন “ তাহলে তো পুরোটা বলতে হয় ! „

“ বলুন না ! আমি শুনবো । „

বীণাপাণি দেবীর কথায় রহমত চাচা তার জীবনের অতীতের কথা বলতে শুরু করলেন --- আমি থাকতাম বর্ধমানে দামোদর নদীর পাড়ে। এখানে এসে জেনেছিলাম ওটা নদী না । ওটা নদ । মরশুমে দামোদরে মাছ ধরে আর ধান চাষ করে ভালোই দিন কাটছিল। আমার বিবি তো অনেক আগেই চলে গেছিল। একদিন রাতে বানের জলে আমার ছেলে বৌমা আর একমাত্র নাতনিও চলে গেল। এখনও মনে আছে সেদিনের রাতের কথা । কেত্তিক আর আমি রাতে মাছ ধরেছিলাম। বোয়াল মাছ হয়েছিল প্রচুর। নদীর জল দেখে কেত্তিক বলেছিল “ সুবিধের ঠেকছে না । „ এখানে এসে পরে জেনেছিলাম ওর নাম ছিল কার্তিক। এতদূর বলে একটু থামলেন রহমত চাচা। তারপর একটা গভীর শ্বাস নিয়ে আবার শুরু করলেন।

“ মাঝরাতের দিকে দামোদরে বান এলো । সব ডুবিয়ে নিয়ে গেল। আমার ছেলে , বৌমা , নাতনি কাউকে ছাড়ে নি। „ বলতে বলতে গলা বসে আসছে এই বৃদ্ধোর। “ আমি কোনভাবে একটা গাছের ডাল ধরে ভেসে রইলাম। যখন জল কমলো তখন কার কোথায় বাড়ি ছিল সেটাই বোঝা যাচ্ছিল না। সেই রাতে আমি আমার সবকিছু হারালাম  „  মাথা নিচু করে কথা গুলো বলছিলেন রহমত চাচা। মাটিতে টপটপ করে চোখের জল পড়ছিল সেটা বীণাপাণি দেবীর চোখ এড়ালো না । বীণাপাণি দেবীও আচল দিয়ে চোখের কোনায় লেগে থাকা জল মুছে নিলেন। “ সরকার সাহায্য করেছিল কিন্তু সেই সাহায্য নিই নি। কলকাতায় চলে এসছিলাম আঠারো উনিশ বছর আগে । ওখানে থাকলে যে আমার নুসরত এর কথা মনে পড়বে। সেই ভয়ে আর ওখানে থাকিনি। সেই থেকে আর আল্লার ইবাদত করিনি। সবকিছু কেড়ে নিয়েছিল তো। আল্লার সামনে মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলাম। শেষ বয়সে আমার মাথা নিচু করেদিল আমার নাতনিকে ফিরিয়ে দিয়ে........

“ আপনি সুচির কথা বলছেন ? „ রহমত চাচার কথার মাঝেই জিজ্ঞেস করলেন আকাশের দিদিমা।

“ হ্যাঁ সুচিত্রার কথাই বলছি। সুচি ফর্সা আমার নুসরত ছিল আমার মতোই কালো। তবে মিল একটা ছিল সুচির সাথে। সেটা হলো , গালে টোল পড়া। কথা বলার সময় ঠিক সুচির মতোই আমার নুসরতের গালে গর্ত হয়ে যেত । „ কথাটা বলতে গিয়ে রহমত চাচার ঠোঁটের কোনায় হাঁসি দেখা দিল। হয়ত তার নাতনির হাঁসি মাখা মুখ মনে পড়েছে তাই এই হাঁসি। “ শেষ জীবনে এসে আমাকে আমার হারিয়ে যাওয়া সম্পদ ফিরিয়ে দিল । যেদিন দেখলাম সুচি আমাকে দাদু বলছে। আর তার দুই গালে গর্ত হচ্ছে তখন থেকে আবার ইবাদত করি । „ কথাগুলো বলতে বলতে হেঁসে দিলেন রহমত চাচা। এই হাঁসি যেন মরেও বেঁচে থাকার হাঁসি। “ কেউ তো আছে আমার যে আমাকে দাদু বলে ডাকে। „

“ কে বলেছে আপনার শুধু সুচি আছে ? আর আপনি নিজেকে কখনো অনাথ বলবেন না। আমি আপনার বোনও তো আছি। তুমি আজ থেকে আমার দাদা। আর আমি তোমার বোন। „ ঠোঁটের কোণায় হাঁসি নিয়ে বললেন আকাশের দিদিমা। আকাশের দিদিমা হঠাৎ করে রহমত চাচাকে আপনি থেকে তুমি সম্বোধন করলেন। বীণাপাণি দেবীর কথা শুনে রহমত চাচা তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন।

এই ঘটনার পর থেকে বাড়িতে নতুন কিছু বা ভালো কিছু রান্না হলেই বীণাপাণি দেবী এই বৃদ্ধ মানুষটার জন্য আলাদা করে তুলে রাখতেন । রহমত চাচাও বীণাপাণি দেবীকে নিজের ছোট বোন ভেবে সেগুলো পরম যত্নে খেতেন। প্রথম প্রথম সোসাইটির কয়েকজন আড়চোখে তাকালেও যখন দেখলো বীণাপাণি দেবী রহমত চাচাকে দাদা বলে ডাকছেন ! তখন সবার চোখ আবার নিজের জায়গায় ফিরে এলো।
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) চলছে :--- - by Bichitro - 31-07-2021, 09:01 AM



Users browsing this thread: 159 Guest(s)