29-07-2021, 05:43 PM
ওদিকে বাইরে ক্ষীণগলায় আওয়াজ শোনা গেল, না না মাসীমা ভিক্ষে নয়, ভিক্ষে নয়।... যদি, যদি একটু খাবার জল পাওয়া যেত। গলাটা থেমে গিয়ে আবার শোনা গেল, অনুরোধ করছি মাসীমা একটু যদি জল দেন, গলাটা একদম শুকিয়ে গেছে এই রোদে ঘুরে ঘুরে।
রুবি কাতর হয়ে উঠলো ছেলেটার আর্তি শুনে। গলার কাছটা শুকিয়ে উঠলো। ধরফর করে উঠে টেবিলের উপর রাখা জলের বোতল নিয়ে সন্তর্পণে বেরিয়ে এলো দরজা খুলে, খুব আস্তে যাতে করে শ্বাশুরী না শুনতে পায়। ধীরে দরজা খুলে দেখল বছর বাইশের ছেলে করুন মুখ করে দরজার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কাঁধে একটা ঝোলা ব্যাগ, ভারী বলেই মনে হয়। রুবি বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল, এই নাও। ঠাণ্ডা জল। একটু সাবধানে খেয়, বিষম না লাগে আবার। রুবির কানে এসে শ্বাশুরীর ঝনঝনানি লাগলো, যতসব অলক্ষ্মী এসে আমার কপালেই জোটে।
জলের বোতলটা নিয়ে ছেলেটা গলায় ঢালতে শুরু করতে রুবি ভাল করে ছেলেটাকে দেখল। গায়ের রঙ ফর্সা হলেও মুখটা রোদে একদম পুরে গেছে। জামা প্যান্ট যা পরে আছে তাতে মনে হয় ভদ্রঘরের ছেলে। কিন্তু কি বিক্রি করছে ছেলেটা? ছেলেটা জল খাওয়া শেষ করে রুবিকে বলল, অসংখ্য ধন্যবাদ বৌদি। জলটা না পেলে বোধহয় অসুস্থ হয়ে পরতাম। এই জল থেকে একটু চোখে মুখে জল দেব?
রুবি ঘাড় কাত করে সায় দিল। ছেলেটা কাঁধের থেকে ব্যাগ নামিয়ে সামনের বারান্দায় রেখে চোখে মুখে ভাল করে জল দিল, জলের বোতলটা রুবিকে ফেরত দিয়ে পকেট থেকে রুমাল বার করে মুখটা মুছতেই রুবি জিজ্ঞেস করল, তোমার ব্যাগে কি আছে, খুব ভারী মনে হচ্ছে?
ছেলেটা বলল, হ্যাঁ বৌদি, ব্যাগে ধুপের প্যাকেট রয়েছে। একটু ভারী।
রুবি প্রশ্ন করল, ও তুমি বাড়ি বাড়ি ধুপ বেচো?
ছেলেটা বলল, হ্যাঁ বৌদি, এটাই আমার একমাত্র রুজি রোজগার। নেবেন একটা প্যাকেট? মাত্র দশ টাকা। আপনাদের তো ধুপ লাগে? আপনি নিলে আমার একটু উপকার হবে।
রুবি এক লহমা থেমে বলল, একটু দাঁড়াও তুমি। বলে ভিতরে ঢুকে ব্যাগের থেকে দশ টাকা নিয়ে এসে বলল, এই নাও, দাও একটা প্যাকেট। ছেলেটার মুখ খুশিতে ঝলমল করে উঠলো, যাক শেষ পর্যন্ত বিক্রি হোল তাহলে। মনটা ভাল হয়ে গেল এইভেবে যে আজকে ভালই বিক্রি হয়েছে। সম্বিত ফিরল রুবির ডাকে, রুবি ওকে বলছে, তুমি একটু দাঁড়াও, আমি আসছি। ভিতরে ঢুকে ফ্রিজ খুলে একটা ঠাণ্ডা জলের বোতল বার করে তার সাথে সাধারন জল মিশিয়ে বোতলটা নিয়ে বাইরে এসে ছেলেটাকে বলল, এই নাও। এটা রাখো। যা রোদ, তোমার কাজে লাগবে।
ছেলেটা মুখে কৃতজ্ঞতার ভাব ফুটিয়ে বলল, ‘বৌদি আপনি খুব ভাল। এইভাবে আমার সাথে কেউ ব্যবহার করে না।
রুবি হেসে জিজ্ঞেস করল, তাই? নাম কি গো তোমার?
ছেলেটা উত্তর দিল, কালী। আমার নাম কালী। রুবি একটু মজা করল ওর সাথে, কিন্তু তোমার রঙ তো ফর্সা, কালী রাখল কেন তোমার নাম? বলে মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলল রুবি। ছেলেটা লজ্জা পেয়ে বলল, তাই না বৌদি? আমি ঠিক জানি না আমার নাম কেন কালী রেখেছিল মা বাবা। ছেলেটা চলে যেতে উদ্যত হতেই রুবি বলল, এখানে আবার এলে ঘুরে যেও। কথা দিলাম ধুপ তোমার কাছ থেকেই নেব। ছেলেটা একটু নত হয়ে দুহাত জোর করে প্রনাম করল তারপর ব্যাগ কাঁধে বেরিয়ে পড়লো আবার বিক্রির উদ্দেশ্যে।
সন্ধ্যেবেলা ঘরে ধুপ জ্বালানোর কাজটা রুবিই করে। সেইদিন সে একসাথে চারটে ধুপ জ্বালাল, হুম ধূপগুলো সত্যিই খুব ভাল, ভারী সুন্দর গন্ধ। সবকটা ঘরে ধুপের গন্ধ ছড়িয়ে দিলো সে। সারা বাড়ি ধুপের গন্ধে ম ম করছে। শ্বশুরমশায় চায়ের টেবিলে বসতে বসতে বললেন, বাহ, ভারী সুন্দর গন্ধ তো। এই ধুপ তো আগে জ্বালাও নি মা। বলে রুবির দিকে প্রশ্নের চোখ তুলে দেখলেন। রুবি বলল, হ্যাঁ বাবা, আজ একটা ছেলে এসেছিল, তার কাছ থেকে ধুপটা নিয়েছি। দাম কত জানো? মাত্র দশটাকা।
রুবি কাতর হয়ে উঠলো ছেলেটার আর্তি শুনে। গলার কাছটা শুকিয়ে উঠলো। ধরফর করে উঠে টেবিলের উপর রাখা জলের বোতল নিয়ে সন্তর্পণে বেরিয়ে এলো দরজা খুলে, খুব আস্তে যাতে করে শ্বাশুরী না শুনতে পায়। ধীরে দরজা খুলে দেখল বছর বাইশের ছেলে করুন মুখ করে দরজার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কাঁধে একটা ঝোলা ব্যাগ, ভারী বলেই মনে হয়। রুবি বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল, এই নাও। ঠাণ্ডা জল। একটু সাবধানে খেয়, বিষম না লাগে আবার। রুবির কানে এসে শ্বাশুরীর ঝনঝনানি লাগলো, যতসব অলক্ষ্মী এসে আমার কপালেই জোটে।
জলের বোতলটা নিয়ে ছেলেটা গলায় ঢালতে শুরু করতে রুবি ভাল করে ছেলেটাকে দেখল। গায়ের রঙ ফর্সা হলেও মুখটা রোদে একদম পুরে গেছে। জামা প্যান্ট যা পরে আছে তাতে মনে হয় ভদ্রঘরের ছেলে। কিন্তু কি বিক্রি করছে ছেলেটা? ছেলেটা জল খাওয়া শেষ করে রুবিকে বলল, অসংখ্য ধন্যবাদ বৌদি। জলটা না পেলে বোধহয় অসুস্থ হয়ে পরতাম। এই জল থেকে একটু চোখে মুখে জল দেব?
রুবি ঘাড় কাত করে সায় দিল। ছেলেটা কাঁধের থেকে ব্যাগ নামিয়ে সামনের বারান্দায় রেখে চোখে মুখে ভাল করে জল দিল, জলের বোতলটা রুবিকে ফেরত দিয়ে পকেট থেকে রুমাল বার করে মুখটা মুছতেই রুবি জিজ্ঞেস করল, তোমার ব্যাগে কি আছে, খুব ভারী মনে হচ্ছে?
ছেলেটা বলল, হ্যাঁ বৌদি, ব্যাগে ধুপের প্যাকেট রয়েছে। একটু ভারী।
রুবি প্রশ্ন করল, ও তুমি বাড়ি বাড়ি ধুপ বেচো?
ছেলেটা বলল, হ্যাঁ বৌদি, এটাই আমার একমাত্র রুজি রোজগার। নেবেন একটা প্যাকেট? মাত্র দশ টাকা। আপনাদের তো ধুপ লাগে? আপনি নিলে আমার একটু উপকার হবে।
রুবি এক লহমা থেমে বলল, একটু দাঁড়াও তুমি। বলে ভিতরে ঢুকে ব্যাগের থেকে দশ টাকা নিয়ে এসে বলল, এই নাও, দাও একটা প্যাকেট। ছেলেটার মুখ খুশিতে ঝলমল করে উঠলো, যাক শেষ পর্যন্ত বিক্রি হোল তাহলে। মনটা ভাল হয়ে গেল এইভেবে যে আজকে ভালই বিক্রি হয়েছে। সম্বিত ফিরল রুবির ডাকে, রুবি ওকে বলছে, তুমি একটু দাঁড়াও, আমি আসছি। ভিতরে ঢুকে ফ্রিজ খুলে একটা ঠাণ্ডা জলের বোতল বার করে তার সাথে সাধারন জল মিশিয়ে বোতলটা নিয়ে বাইরে এসে ছেলেটাকে বলল, এই নাও। এটা রাখো। যা রোদ, তোমার কাজে লাগবে।
ছেলেটা মুখে কৃতজ্ঞতার ভাব ফুটিয়ে বলল, ‘বৌদি আপনি খুব ভাল। এইভাবে আমার সাথে কেউ ব্যবহার করে না।
রুবি হেসে জিজ্ঞেস করল, তাই? নাম কি গো তোমার?
ছেলেটা উত্তর দিল, কালী। আমার নাম কালী। রুবি একটু মজা করল ওর সাথে, কিন্তু তোমার রঙ তো ফর্সা, কালী রাখল কেন তোমার নাম? বলে মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলল রুবি। ছেলেটা লজ্জা পেয়ে বলল, তাই না বৌদি? আমি ঠিক জানি না আমার নাম কেন কালী রেখেছিল মা বাবা। ছেলেটা চলে যেতে উদ্যত হতেই রুবি বলল, এখানে আবার এলে ঘুরে যেও। কথা দিলাম ধুপ তোমার কাছ থেকেই নেব। ছেলেটা একটু নত হয়ে দুহাত জোর করে প্রনাম করল তারপর ব্যাগ কাঁধে বেরিয়ে পড়লো আবার বিক্রির উদ্দেশ্যে।
সন্ধ্যেবেলা ঘরে ধুপ জ্বালানোর কাজটা রুবিই করে। সেইদিন সে একসাথে চারটে ধুপ জ্বালাল, হুম ধূপগুলো সত্যিই খুব ভাল, ভারী সুন্দর গন্ধ। সবকটা ঘরে ধুপের গন্ধ ছড়িয়ে দিলো সে। সারা বাড়ি ধুপের গন্ধে ম ম করছে। শ্বশুরমশায় চায়ের টেবিলে বসতে বসতে বললেন, বাহ, ভারী সুন্দর গন্ধ তো। এই ধুপ তো আগে জ্বালাও নি মা। বলে রুবির দিকে প্রশ্নের চোখ তুলে দেখলেন। রুবি বলল, হ্যাঁ বাবা, আজ একটা ছেলে এসেছিল, তার কাছ থেকে ধুপটা নিয়েছি। দাম কত জানো? মাত্র দশটাকা।