21-07-2021, 12:06 PM
ভ্রামমম! ছোট্ট মোটরটির বার্স্ট হওয়ার বিকট শব্দে লাফিয়ে ওঠে নিঝুম। মা বাবা ছুটে আসেন কী হয়েছে দেখতে। নিঝুমের এক্সপেরিমেন্টের ফলাফল হিসেবে জ্বলে গেছে বাসার কিছু বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির লাইন। ব্যাপারটার ওপর একটু আলোকপাত করা যাক। কাহিনী হচ্ছে, নিবিড় আর নিঝুম বাড়িতে একই স্যারের কাছে পড়ে। ফিজিক্স বইয়ে মোটরের চ্যাপ্টার পড়ে নিঝুমের শখ হয়েছে মোটর কীভাবে কাজ করে প্র্যাকটিকালি দেখবে। নিবিড়ের কাছে অনেক খেলনা গাড়ি আছে, তাই স্যারকে বলে ওর থেকে একটা ছোট্ট মোটর আনিয়ে নিয়েছে। স্যার সুন্দর করে সব বুঝিয়ে দিয়েছেন, সমস্ত পার্টস আলাদাভাবে চিনিয়ে দিয়েছেন, সেগুলোর কাজ বুঝিয়ে দিয়েছেন, নিঝুম খুব খুশি। কিন্তু স্যার চলে যাওয়ার পর নতুন একটা প্রশ্ন আসে মাথায়, মোটরের ভোল্টেজ বেশি না, মাত্র ১.৫ ভোল্ট। আরও বেশি ভোল্টেজ এর ওপর প্রয়োগ করা হলে কী হবে? খুবই সহজ উত্তর যে কাজ করবেনা। কিন্তু রিয়াকশন কী হবে? থাক, নিজেই হাতে কলমে পরীক্ষা করে দেখে নিই, ভেবে দু প্রান্তের তার ঢুকিয়ে দেয় ২২০ ভোল্টের লাইনে। ব্যস, আর দেখতে হয় না, প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে বাড়ি। মা এসে কাণ্ড দেখে জড়িয়ে ধরে থাকেন কিছুক্ষণ, তারপর শুরু করেন বকাবকি, বলেন এরপর আর এমন বিধ্বংসী পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালালে সমস্ত এক্সপেরিমেন্টাল জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেবেন।নিঝুম ভদ্র মেয়ের মত চুপ করে সব শোনে আর মাথা নাড়ায়। কিন্তু মেয়ের মনের ভেতর কী চলছে তা জানলে মা হয়তো ওকেই বের করে দিতেন বাড়ি থেকে।
পরদিন স্যার ঢুকতে না ঢুকতে মা’র অভিযোগনামা শুরু হয়ে যায়। স্যার নিঝুমকে বকবেন না কী করবেন ভেবে পান না। পুরোটা সময় লেকচার দেন ওর সৃষ্টিছাড়া কার্যকলাপের ভয়ঙ্কর ফলাফলের ওপর। নিঝুম এবারেও চুপ। শেষে মোটরটা ফেরত চান স্যার। এবার নিঝুম প্রবল বেগে মাথা নাড়ে, সে দেবে না ফেরত। হতাশ শিক্ষক আর কী করবেন, এরপর নিবিড়ের বাসায় যান। সেখানে কী হয় জানার উপায় নিঝুমের ছিল না রাত দশটা পর্যন্ত। দশটার সময় ল্যান্ডলাইনটা বেজে ওঠে। মা ধরেন। নিঝুম পাশের রুমেই ছিল। কথাবার্তা শুনে বুঝতে পারে ফোন করেছেন নিবিড়ের মা, এবং কথার বিষয়বস্তু আর কিছু নয়, তার গতকালকের “পাগলামি”। কিছুক্ষণ পর নিঝুমকে ডাকেন মা, নিবিড় কথা বলবে। প্রমাদ গোনে নিঝুম। ফোন ধরে তার মধুরতম “হ্যালো” উপহার দেয় ওই প্রান্তের মানুষটিকে। কিন্তু ওপাশ থেকে মধুর ‘ম’ ও ঝরে না। আগ্নেয়গিরির মত অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়ে যায়-
“ফাযলেমি পেয়েছিস?? তোকে আমি মোটর দিয়েছিলাম কি বাড়িঘরে আগুন লাগানোর জন্যে???!!”
-“আগুন? কই কোথায় আগুন? আমি তো শুধু একটা এক্স…”
-“চুপ। একদম চুপ। তুই যখন ভদ্রভাবে মোটর চেয়েছিলি স্যারকে দিয়ে, আমার তখনই সন্দেহ হয়েছিল। এতো ভদ্র তো তুই নোস। আমার কাছে চাইলে যে আমি ধরে ফেলব তোর মাথায় কী সব বুদ্ধি ঘোরাফেরা করে, তাই সরাসরি আমার কাছে না চেয়ে স্যারকে দিয়ে বলিয়েছিস। তুই জানিস মা কত বকেছে আমায়?”
-“ওহ তাই বল! আনটি বকেছে তাই তোর এতো রাগ। আমি আরও ভাবলাম বুঝি আমার জন্য চিন্তা হয়েছে তোর।”, উদাস কণ্ঠে বলে নিঝুম।
-“তুই না নিঝুম……তুই আসলে কক্ষনও মানুষ হবি না!”, বলে ঠাশ করে ফোনটা রেখে দেয় নিবিড়।
নীরব হাসিতে ফেটে পড়ে এরপর নিঝুম। নিবিড়কে জ্বালাতে ভীষণ মজা পায় সে। ভাগ্যিস মা নেই এখন রুমে, তাহলে নির্ঘাত বকা খেত নিঝুম।
পরদিন স্যার ঢুকতে না ঢুকতে মা’র অভিযোগনামা শুরু হয়ে যায়। স্যার নিঝুমকে বকবেন না কী করবেন ভেবে পান না। পুরোটা সময় লেকচার দেন ওর সৃষ্টিছাড়া কার্যকলাপের ভয়ঙ্কর ফলাফলের ওপর। নিঝুম এবারেও চুপ। শেষে মোটরটা ফেরত চান স্যার। এবার নিঝুম প্রবল বেগে মাথা নাড়ে, সে দেবে না ফেরত। হতাশ শিক্ষক আর কী করবেন, এরপর নিবিড়ের বাসায় যান। সেখানে কী হয় জানার উপায় নিঝুমের ছিল না রাত দশটা পর্যন্ত। দশটার সময় ল্যান্ডলাইনটা বেজে ওঠে। মা ধরেন। নিঝুম পাশের রুমেই ছিল। কথাবার্তা শুনে বুঝতে পারে ফোন করেছেন নিবিড়ের মা, এবং কথার বিষয়বস্তু আর কিছু নয়, তার গতকালকের “পাগলামি”। কিছুক্ষণ পর নিঝুমকে ডাকেন মা, নিবিড় কথা বলবে। প্রমাদ গোনে নিঝুম। ফোন ধরে তার মধুরতম “হ্যালো” উপহার দেয় ওই প্রান্তের মানুষটিকে। কিন্তু ওপাশ থেকে মধুর ‘ম’ ও ঝরে না। আগ্নেয়গিরির মত অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়ে যায়-
“ফাযলেমি পেয়েছিস?? তোকে আমি মোটর দিয়েছিলাম কি বাড়িঘরে আগুন লাগানোর জন্যে???!!”
-“আগুন? কই কোথায় আগুন? আমি তো শুধু একটা এক্স…”
-“চুপ। একদম চুপ। তুই যখন ভদ্রভাবে মোটর চেয়েছিলি স্যারকে দিয়ে, আমার তখনই সন্দেহ হয়েছিল। এতো ভদ্র তো তুই নোস। আমার কাছে চাইলে যে আমি ধরে ফেলব তোর মাথায় কী সব বুদ্ধি ঘোরাফেরা করে, তাই সরাসরি আমার কাছে না চেয়ে স্যারকে দিয়ে বলিয়েছিস। তুই জানিস মা কত বকেছে আমায়?”
-“ওহ তাই বল! আনটি বকেছে তাই তোর এতো রাগ। আমি আরও ভাবলাম বুঝি আমার জন্য চিন্তা হয়েছে তোর।”, উদাস কণ্ঠে বলে নিঝুম।
-“তুই না নিঝুম……তুই আসলে কক্ষনও মানুষ হবি না!”, বলে ঠাশ করে ফোনটা রেখে দেয় নিবিড়।
নীরব হাসিতে ফেটে পড়ে এরপর নিঝুম। নিবিড়কে জ্বালাতে ভীষণ মজা পায় সে। ভাগ্যিস মা নেই এখন রুমে, তাহলে নির্ঘাত বকা খেত নিঝুম।