20-07-2021, 04:22 PM
(ছয়)
আজ ওদের ফুলশয্যা;খাটটা খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে আর তার আরো শোভা বাড়িয়েছে আমাদের তুলি রানী। আকাশী বেনারসীতে আজ ওকে সত্যিই কোন পরীর থেকে কম লাগছে না।
কিন্তু সেই চঞ্চল ছটফটে মেয়েটা হঠাৎ করে এত চুপ হয়ে গেল কেন ? সেটাই ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।
বিছানায় বসে অনেকক্ষণ ধরে এক ভাবে ওকে দেখে চলেছে ওর বর। মেয়েটা ঘুমিয়ে পড়লো না তো ?মুখ নামিয়ে কখন থেকে বসেই আছে।
হটাৎ করে বরটা বিনা ভূমিকায় বলে উঠলো
-'তুলি, তুই মাধ্যমিকে বাংলায় কত পেয়েছিলিস রে ?'
কথাটা শুনে তুলি এমন ভাবে চমকে উঠলো যেন মনে হলো ভূত,পেত্নী,ব্রহ্মদৈত সবাইকে একসাথে দেখে ফেলেছে ও।
-'মা...মা... মানে ?'
-'মানে মাধ্যমিকে বাংলা নামের যে সাবজেক্টটা থাকে,তাতে কত পেয়েছিলিস তুই ?'
-'দুটো মিলিয়ে একশো তিরিশ।'
-'হুম....তা তুই এত নাম্বার পেলি কি করে ? টুকলি করেছিলি নাকি রে ?'
-'না, মোটেও না। আমি ওসব করিনা। তুমি একদম বাজে কথা বলবে না বাবাই দাদা,আমি কিন্তু তাহলে মনি মাকে বলে দেবো।'
-'প্রথম কথা,তুই আমাকে দাদা ভাবলেও ঠিক এই মুহূর্তে আমি তোকে বনু ভাবতে পারছি না সরি।
দ্বিতীয় কথা,আজ রাত্রে আমি তোকে ঠিক কি কি বলেছি বা কি কি করেছি কাল সকালে সেগুলো যদি তুই মাকে শোনাতে যাসও আমি লিখে দিতে পারি মা সেটা শুনতে চাইবে না।
তাই তুই আমার সাথে কোন ভাবেও পেরে উঠবি না,তার চেয়ে এ দিকে আয় তোকে একটা জিনিস দেখাই। কি বলতো এটা ?'
-'একটা কাগজ তো।'
-'এই নে,হাতে নে;নিয়ে ভালো করে দ্যাখ দেখি চিনতে পারিস কিনা ?'
-'এটা তো.......'
-'মনে পড়েছে ?'
-'হুম, কিন্তু এতে এরকম লাল কালির দাগ দিয়ে আন্ডারলাইন করা আবার নাম্বার দেওয়া কেন ?'
-'এই চিঠিটা তুই অনেক ছোট্ট বেলায় আমাকে দিয়েছিলি,তখন তুই এতটাই ছোট ছিলি যে ভালোবাসা কাকে বলে সেটা বোঝার ক্ষমতা তোর ছিল না। তাই আমি তোকে সেদিন ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।
সঠিক সময়ে আবার নিজের কাছে ফিরিয়ে নেবো বলে।
অনেক গুলো বছর অপেক্ষা করেছি তোর জন্য,প্রতিটা পদক্ষেপে নজর রেখে ছিলাম তোর ওপর যেখানেই ভুল পথে এগিয়েছিলিস আমি তোকে থামিয়ে দিয়ে ছিলাম;
হ্যাঁ এটা ঠিক তোকে কোনো দিনও বুঝতে দিইনি। কারণ আমি চাইনি তোর লেখাপড়ায় এর প্রভাব পড়ুক।'
-'আগে বলো তো,আমার যে অন্য কোথাও বিয়ে..অন্য কোথাও দেখতে আসা..এসব কি ছিল ?'
-'সবটা আমাদের দুই বাড়ির প্ল্যানিং ছিল বলতে পারিস। সবাই সব জানতো..তুই ছাড়া। তুই সত্যিই খুব বোকা!নইলে পাত্র পক্ষের দেখতে আসার দিন হুট করে এলাম আমরা আর পাত্র পক্ষ ও কি এক বিশেষ কারণে না এসেই বিয়ের দিন পাকা করে ফেললো....এ ব্যাপারে তোর মনে কোন সন্দেহই এলো না..অদ্ভুত!'
-'হুম আমি তো বোকা!তাই সবাই মিলে এই রকম ভাবে আমাকে বোকা বানালে'..
-'দূর পাগলী...'
-'আচ্ছা তুমি আমাকে সত্যিই এতটা ভালোবাসো ?'
-'হ্যাঁ, বাসি তো। আর বাসি বলেই তো সেদিন চিঠিটা তোকে ফেরত না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলাম।
একটা ঠিকঠাক সময় দেখে এই চিঠিটা তোর হাতে তুলে দেবো বলে..আর আজ সেই ঠিকঠাক সময়'....বাবাই,নতুন বউ তুলিকে কাছে টেনে নেয়।
এরপর বাকিটা বরং ওদের ব্যাক্তিগতই থাক।
আমরা বরং ওদেরকে নতুন জীবনের শুভেচ্ছা জানিয়ে যে যার কাজে মন দিই......
-সমাপ্ত-
______________________________
আজ ওদের ফুলশয্যা;খাটটা খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে আর তার আরো শোভা বাড়িয়েছে আমাদের তুলি রানী। আকাশী বেনারসীতে আজ ওকে সত্যিই কোন পরীর থেকে কম লাগছে না।
কিন্তু সেই চঞ্চল ছটফটে মেয়েটা হঠাৎ করে এত চুপ হয়ে গেল কেন ? সেটাই ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।
বিছানায় বসে অনেকক্ষণ ধরে এক ভাবে ওকে দেখে চলেছে ওর বর। মেয়েটা ঘুমিয়ে পড়লো না তো ?মুখ নামিয়ে কখন থেকে বসেই আছে।
হটাৎ করে বরটা বিনা ভূমিকায় বলে উঠলো
-'তুলি, তুই মাধ্যমিকে বাংলায় কত পেয়েছিলিস রে ?'
কথাটা শুনে তুলি এমন ভাবে চমকে উঠলো যেন মনে হলো ভূত,পেত্নী,ব্রহ্মদৈত সবাইকে একসাথে দেখে ফেলেছে ও।
-'মা...মা... মানে ?'
-'মানে মাধ্যমিকে বাংলা নামের যে সাবজেক্টটা থাকে,তাতে কত পেয়েছিলিস তুই ?'
-'দুটো মিলিয়ে একশো তিরিশ।'
-'হুম....তা তুই এত নাম্বার পেলি কি করে ? টুকলি করেছিলি নাকি রে ?'
-'না, মোটেও না। আমি ওসব করিনা। তুমি একদম বাজে কথা বলবে না বাবাই দাদা,আমি কিন্তু তাহলে মনি মাকে বলে দেবো।'
-'প্রথম কথা,তুই আমাকে দাদা ভাবলেও ঠিক এই মুহূর্তে আমি তোকে বনু ভাবতে পারছি না সরি।
দ্বিতীয় কথা,আজ রাত্রে আমি তোকে ঠিক কি কি বলেছি বা কি কি করেছি কাল সকালে সেগুলো যদি তুই মাকে শোনাতে যাসও আমি লিখে দিতে পারি মা সেটা শুনতে চাইবে না।
তাই তুই আমার সাথে কোন ভাবেও পেরে উঠবি না,তার চেয়ে এ দিকে আয় তোকে একটা জিনিস দেখাই। কি বলতো এটা ?'
-'একটা কাগজ তো।'
-'এই নে,হাতে নে;নিয়ে ভালো করে দ্যাখ দেখি চিনতে পারিস কিনা ?'
-'এটা তো.......'
-'মনে পড়েছে ?'
-'হুম, কিন্তু এতে এরকম লাল কালির দাগ দিয়ে আন্ডারলাইন করা আবার নাম্বার দেওয়া কেন ?'
-'এই চিঠিটা তুই অনেক ছোট্ট বেলায় আমাকে দিয়েছিলি,তখন তুই এতটাই ছোট ছিলি যে ভালোবাসা কাকে বলে সেটা বোঝার ক্ষমতা তোর ছিল না। তাই আমি তোকে সেদিন ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।
সঠিক সময়ে আবার নিজের কাছে ফিরিয়ে নেবো বলে।
অনেক গুলো বছর অপেক্ষা করেছি তোর জন্য,প্রতিটা পদক্ষেপে নজর রেখে ছিলাম তোর ওপর যেখানেই ভুল পথে এগিয়েছিলিস আমি তোকে থামিয়ে দিয়ে ছিলাম;
হ্যাঁ এটা ঠিক তোকে কোনো দিনও বুঝতে দিইনি। কারণ আমি চাইনি তোর লেখাপড়ায় এর প্রভাব পড়ুক।'
-'আগে বলো তো,আমার যে অন্য কোথাও বিয়ে..অন্য কোথাও দেখতে আসা..এসব কি ছিল ?'
-'সবটা আমাদের দুই বাড়ির প্ল্যানিং ছিল বলতে পারিস। সবাই সব জানতো..তুই ছাড়া। তুই সত্যিই খুব বোকা!নইলে পাত্র পক্ষের দেখতে আসার দিন হুট করে এলাম আমরা আর পাত্র পক্ষ ও কি এক বিশেষ কারণে না এসেই বিয়ের দিন পাকা করে ফেললো....এ ব্যাপারে তোর মনে কোন সন্দেহই এলো না..অদ্ভুত!'
-'হুম আমি তো বোকা!তাই সবাই মিলে এই রকম ভাবে আমাকে বোকা বানালে'..
-'দূর পাগলী...'
-'আচ্ছা তুমি আমাকে সত্যিই এতটা ভালোবাসো ?'
-'হ্যাঁ, বাসি তো। আর বাসি বলেই তো সেদিন চিঠিটা তোকে ফেরত না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলাম।
একটা ঠিকঠাক সময় দেখে এই চিঠিটা তোর হাতে তুলে দেবো বলে..আর আজ সেই ঠিকঠাক সময়'....বাবাই,নতুন বউ তুলিকে কাছে টেনে নেয়।
এরপর বাকিটা বরং ওদের ব্যাক্তিগতই থাক।
আমরা বরং ওদেরকে নতুন জীবনের শুভেচ্ছা জানিয়ে যে যার কাজে মন দিই......
-সমাপ্ত-
______________________________