20-07-2021, 01:01 PM
(This post was last modified: 10-08-2021, 02:56 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
নীলার জন্মের পরের দিন দুটি আশ্চর্য ঘটনা ঘটল। প্রথমটা আমাদের পারিবারিক, দ্বিতীয়টা জাতীয় পর্যায়ের কিংবা আর্ন্তজাতিক পর্যায়ের ঘটনা।পারিবারিক ঘটনাটি এমন, আমাদের একটা পোষা গর্ভবতী গাভী ছিল। সে তার নির্দিষ্ট সময়ের আঠার দিন আগে বাচ্চা দিয়ে বসল। গ্রামের সবাই গভীর আগ্রহ নিয়ে দুটো বিষয় ভাবতে লাগল। কিভাবে এটা সম্ভব? আঠার দিন আগে বাচ্চা প্রসবের ঘটনা ্এই প্রথম। কেউ কেউ বলল, সঠিক হিসাব হয়ত জানে না। বাবা জোর দিয়েইবললেন, তার হিসাব ঠিক আছে। এই ঘটনাকে তারা সৌভাগ্যের লক্ষণ বলে মন্তব্য করল। একই সাথে দুটো প্রজাতির দুটো ব্চ্চাা দান। একটায় পারিবারিক প্রশান্তি।অন্যটা পুষ্টি আর আর্থিক নিশ্চয়তার প্রতীক। বাবা গ্রামের মানুষের মতামতকে অবৈজ্ঞানিক বলে
মন্তব্য করলেন।
দ্বিতীয় ঘটনা ঘটল ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে। ছাত্ররা বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দিল। পতাকা উড়িয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন ঘোষণা করল। সারা দেশে উত্তাল হাওয়া বইতে লাগল। শাসক গোষ্ঠী ভড়কে গেল। শেখ মুজিবর রহমানের সাথে ইয়াহিয়া খান টালবাহানা শুরু করে দিল। তারা পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের দাবিকে মেনে নিতে পারল না। ক্ষুব্ধ ছাত্ররা বাধ্য হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করল।নেতাদের ঘোষণার অপেক্ষা করল না। এই দুটি ঘটনা ঘটল নীলা জন্মাবার ঠিক পরের দিন। তাহলে নীলা কি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দৃষ্টা হয়ে জন্ম নিয়েছিল? তার জন্মের মধ্যেই কি সৃস্টিকর্তার কোন ইঙ্গিত ছিল?
১৯৭১ সালের ১০ই মার্চ আমার বয়স পাঁচ বছর আট মাস নয়দিন পূর্ণ হল। নিয়ম অনুসারে পাঁচ বছর বয়স হলেই কলেজে ভর্তি হবার কথা। আমি ভর্তি হতে পারিনি।সত্তরের নির্বাচন আর সাইক্লোন সমস্ত পরিকল্পনা নষ্ট করে দিল। তাই বাবার হাত ধরে আমি ১০ই মার্চ ভর্তি হতে গেলাম স্থানীয় প্রাইমারী কলেজে। এর আগে আমি যে বই পড়তে শিখিনি তা না। বাবা বাডিতে এক মাষ্টার রেখেছিলেন। তিনি আমার অক্ষর জ্ঞান শিক্ষা দিতেন। ছবির বই দেখে ছবি আঁকা শেখাতেন। ছবি সম্পর্কে হাত নেড়ে নেড়ে বিজ্ঞ পন্ডিতের মত কক্তৃতা দিতেন। পাহাড় সম্পর্কে ধারণা পেলাম সেই ছোট থেকেই। পরে জেনেছিলাম, আমার সেই শিক্ষক ছবি বিশেষজ্ঞ। এই শিক্ষকের আর একটি মুগ্ধ করার মত গুন ছিল। সেটা হল, শুর করে করে নামতা পড়ানো। বেশ ছন্দের মত মনে হত। মনে হত কোন মধু সুধা আমার শরীরে প্রবেশ করছে।আর আমি আনন্দিত হয়ে সেই মধুর স্বাধ নিচ্ছি। বাড়িতে পড়ে পড়ে আমি মোটমুটি সেই বয়সের উপযোগী হয়ে উঠলাম।
প্রথম দিন আমার সাথে যাদের পরিচয় হল, আমি শুর করে নামতা পড়ে আর ছবি,পাহাড় সম্পর্কে গল্প করে ওদের তাক লাগিয়ে দিলাম। কলেজের স্যার প্রথম দিনেই আমার নাম দিলেন লিটন পন্ডিত এ্যাবাউট ছবি এন্ড নামতা। কলেজ ছুটির আগেই বাড়ি ফিরলাম। মা যতœ করে খাওয়ালেন। বাবা জিজ্ঞাসা করলেন, কিরে সঞ্জু মিয়া, বাড়ি ফিরলি যে তাড়াতাড়ী? আমি বললাম, বাবা কলেজের চেয়ে বাড়িতে ভাল পড়তে পারব। কলেজ ঘর ভীষণ নোংড়া। বাবা বললেন ঠিক আছে, তাই হবে। আমি কলেজে যাওয়া বন্ধ করলাম।
বাড়িতে আমার পদচারনা ছিল কিছুটা নির্লুপ্ত টাইপের। নিজের ঘরে অনেক সময় বসে কটিয়ে দিতাম। ছবির বই নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে নাড়াচাড়া করতাম। নামতা লিখতাম। ছবির বইতে ছাপা পাহাড়ের ছবিটা আঁকতে চেষ্টা করতাম। ডেকে না দিলে খেতে যেতাম না। মা-বাবা ব্যস্ত থাকতেন চাচী আর নীলাকে নিয়ে। আমাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন আমার সেই ছবি বিশেষজ্ঞ শিক্ষক। চাচা সারাদিন কোথায় যেন থাকতেন চাকরীর ধান্দায়। তাকে নিয়ে বাবা মাঝে মাঝে বকাবকি করতেন।
মন্তব্য করলেন।
দ্বিতীয় ঘটনা ঘটল ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে। ছাত্ররা বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দিল। পতাকা উড়িয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন ঘোষণা করল। সারা দেশে উত্তাল হাওয়া বইতে লাগল। শাসক গোষ্ঠী ভড়কে গেল। শেখ মুজিবর রহমানের সাথে ইয়াহিয়া খান টালবাহানা শুরু করে দিল। তারা পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের দাবিকে মেনে নিতে পারল না। ক্ষুব্ধ ছাত্ররা বাধ্য হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করল।নেতাদের ঘোষণার অপেক্ষা করল না। এই দুটি ঘটনা ঘটল নীলা জন্মাবার ঠিক পরের দিন। তাহলে নীলা কি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দৃষ্টা হয়ে জন্ম নিয়েছিল? তার জন্মের মধ্যেই কি সৃস্টিকর্তার কোন ইঙ্গিত ছিল?
১৯৭১ সালের ১০ই মার্চ আমার বয়স পাঁচ বছর আট মাস নয়দিন পূর্ণ হল। নিয়ম অনুসারে পাঁচ বছর বয়স হলেই কলেজে ভর্তি হবার কথা। আমি ভর্তি হতে পারিনি।সত্তরের নির্বাচন আর সাইক্লোন সমস্ত পরিকল্পনা নষ্ট করে দিল। তাই বাবার হাত ধরে আমি ১০ই মার্চ ভর্তি হতে গেলাম স্থানীয় প্রাইমারী কলেজে। এর আগে আমি যে বই পড়তে শিখিনি তা না। বাবা বাডিতে এক মাষ্টার রেখেছিলেন। তিনি আমার অক্ষর জ্ঞান শিক্ষা দিতেন। ছবির বই দেখে ছবি আঁকা শেখাতেন। ছবি সম্পর্কে হাত নেড়ে নেড়ে বিজ্ঞ পন্ডিতের মত কক্তৃতা দিতেন। পাহাড় সম্পর্কে ধারণা পেলাম সেই ছোট থেকেই। পরে জেনেছিলাম, আমার সেই শিক্ষক ছবি বিশেষজ্ঞ। এই শিক্ষকের আর একটি মুগ্ধ করার মত গুন ছিল। সেটা হল, শুর করে করে নামতা পড়ানো। বেশ ছন্দের মত মনে হত। মনে হত কোন মধু সুধা আমার শরীরে প্রবেশ করছে।আর আমি আনন্দিত হয়ে সেই মধুর স্বাধ নিচ্ছি। বাড়িতে পড়ে পড়ে আমি মোটমুটি সেই বয়সের উপযোগী হয়ে উঠলাম।
প্রথম দিন আমার সাথে যাদের পরিচয় হল, আমি শুর করে নামতা পড়ে আর ছবি,পাহাড় সম্পর্কে গল্প করে ওদের তাক লাগিয়ে দিলাম। কলেজের স্যার প্রথম দিনেই আমার নাম দিলেন লিটন পন্ডিত এ্যাবাউট ছবি এন্ড নামতা। কলেজ ছুটির আগেই বাড়ি ফিরলাম। মা যতœ করে খাওয়ালেন। বাবা জিজ্ঞাসা করলেন, কিরে সঞ্জু মিয়া, বাড়ি ফিরলি যে তাড়াতাড়ী? আমি বললাম, বাবা কলেজের চেয়ে বাড়িতে ভাল পড়তে পারব। কলেজ ঘর ভীষণ নোংড়া। বাবা বললেন ঠিক আছে, তাই হবে। আমি কলেজে যাওয়া বন্ধ করলাম।
বাড়িতে আমার পদচারনা ছিল কিছুটা নির্লুপ্ত টাইপের। নিজের ঘরে অনেক সময় বসে কটিয়ে দিতাম। ছবির বই নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে নাড়াচাড়া করতাম। নামতা লিখতাম। ছবির বইতে ছাপা পাহাড়ের ছবিটা আঁকতে চেষ্টা করতাম। ডেকে না দিলে খেতে যেতাম না। মা-বাবা ব্যস্ত থাকতেন চাচী আর নীলাকে নিয়ে। আমাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন আমার সেই ছবি বিশেষজ্ঞ শিক্ষক। চাচা সারাদিন কোথায় যেন থাকতেন চাকরীর ধান্দায়। তাকে নিয়ে বাবা মাঝে মাঝে বকাবকি করতেন।