19-07-2021, 06:30 PM
(This post was last modified: 10-08-2021, 02:54 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
আমার জন্ম সাতক্ষীরা জেলায়। উনিশত পয়ষট্রিতে। পহেলা জুলাই। আমার বাবা ছিলেন একজন কলেজ মাষ্টার এবং আদর্শ কৃষক। দরিদ্র পিড়ীত বাংলাদেশের একটি গ্রামে একজন কলেজ মাষ্টার আধুনির্ক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতেন, চমৎকার ফসল ফলাতেন। অশিক্ষিত কৃষকদের মাঝে কৃষি বিষয়ে জ্ঞান দিতেন। বাবা কৃষি কাজে সফলতা পেয়েছিলেন বেশ ক’বার। শ্রেষ্ট আদর্শ কৃষক হবার গৌরব অর্জন করেন এবং কয়েকটা সোনার মডেলও পান। মাঝে মাঝে সে গুলো বাক্স থেকে বের করে মা-বাবা দেখতেন আর আমার দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসতেন, বলতেন তোমাকেও কোন না কোন বিষয়ে মেডেল পেতেই হবে। তোমাকেও কোন না কোন বিষয়ে শ্রেষ্ট হতেই হবে। বাবা, আমি কি প্রেমের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ট হয়নি? আদর্শ প্রেমিকের গৌরব কি আর্জন করতে পারিনি? আমি শ্রেষ্ট প্রেমিক হিসেবে কি একটা মেডেল পেতে পারি না? বাবাএই প্রশ্নের উত্তর আজ কে দেবে?
বাবার নাম ছিল মোহাম্মদ আজারউদ্দীন বি,এ,বি,টি। আমার ছোট চাচার নাম ছিল মোহাম্মদ আবিদ হোসেন বি,এ। যতদূর পরে জেনেছি তিনি ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বেকার ছিলেন এবং বেকার অবস্থায় বিয়ে করেন। তার বিয়েতে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা আমার জানা নেই। এই বেকার দম্পতির ঘরেই ১৯৭১ সালে নীলার জন্ম হয়। আমার আবছা মনে আছে সামান্য কিছু ঘটনা। চাচীর প্রচণ্ড ব্যাথা শুরু হল। চার দিক ছোটা ছুটি শুরু করছে সবাই। একজন মহিলা সম্ভবত ধাই তিনি বার বার পান মুখে দিয়ে পানের চিপ ফেলতে আসছেন বাইরে। আমি বারান্দার এক কোনে দাড়িয়ে লোকজনের ছোটা ছুটি দেখছি। মাঝে মাঝে চাচীর গোঙ্গানীর শব্দ ভেসে আসছে কানে। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। বাবা বাড়ি ছিলেন না, কিছু পরে আসলেন। সাথে সাথে আমি বাবার কাছে গেলাম। বললাম, চাচী কাদছে ভীষণ। সবাই ঘরে নিয়ে গেছে। বাবা বললেন, তুমি চুপ কর। আমি চুপ করলাম। বাবা জামা গায়ে দিয়েই ডাক্তার বাড়িতে ছুটলেন।ডাক্তার এলেন তখন বিকাল প্রায় চারটা। সামন্য ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে।সন্ধার দিকে ডাক্তার বেরিয়ে এলেন চাচীর ঘর থেকে। একটা বাচ্চার কান্না ভেসে এল সবার কানে। কান্নাও যে আনন্দ ও স্বস্তি বয়ে আনতে পারে সেই ছোট অবস্থায় বুঝলাম।
নীলার জন্মের পর পরই পৃথিবীতে শান্তির পরশ বুলিয়ে দিয়েছিল বাতাস। সেই হালকা শীতের মধ্যেও গাছের পাতা একটু নড়ে উঠেছিল। কিছু পরে বাড়ির ছাদের উপর দিয়ে একঝাক পাখি উড়ে গিয়েছিল উত্তর দিকে। বয়স্ক মহিলারা এসব দেখে মন্তব্য করেছিল, শুভ লক্ষণ। মেয়েটি হবে লক্ষী, জগৎ শ্রেষ্ঠা, যেমন রুপবতী তেমন গুনবতী ও সৌভাগ্যবর্তী হবে। শুনে বাবা হাসলেন। আমাকে বললেন, যা চাচীকে দেখেআয়। তোর মাকে আমার কাছে আসতে বল। আমি তাই করলাম।
বাবার নাম ছিল মোহাম্মদ আজারউদ্দীন বি,এ,বি,টি। আমার ছোট চাচার নাম ছিল মোহাম্মদ আবিদ হোসেন বি,এ। যতদূর পরে জেনেছি তিনি ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বেকার ছিলেন এবং বেকার অবস্থায় বিয়ে করেন। তার বিয়েতে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা আমার জানা নেই। এই বেকার দম্পতির ঘরেই ১৯৭১ সালে নীলার জন্ম হয়। আমার আবছা মনে আছে সামান্য কিছু ঘটনা। চাচীর প্রচণ্ড ব্যাথা শুরু হল। চার দিক ছোটা ছুটি শুরু করছে সবাই। একজন মহিলা সম্ভবত ধাই তিনি বার বার পান মুখে দিয়ে পানের চিপ ফেলতে আসছেন বাইরে। আমি বারান্দার এক কোনে দাড়িয়ে লোকজনের ছোটা ছুটি দেখছি। মাঝে মাঝে চাচীর গোঙ্গানীর শব্দ ভেসে আসছে কানে। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। বাবা বাড়ি ছিলেন না, কিছু পরে আসলেন। সাথে সাথে আমি বাবার কাছে গেলাম। বললাম, চাচী কাদছে ভীষণ। সবাই ঘরে নিয়ে গেছে। বাবা বললেন, তুমি চুপ কর। আমি চুপ করলাম। বাবা জামা গায়ে দিয়েই ডাক্তার বাড়িতে ছুটলেন।ডাক্তার এলেন তখন বিকাল প্রায় চারটা। সামন্য ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে।সন্ধার দিকে ডাক্তার বেরিয়ে এলেন চাচীর ঘর থেকে। একটা বাচ্চার কান্না ভেসে এল সবার কানে। কান্নাও যে আনন্দ ও স্বস্তি বয়ে আনতে পারে সেই ছোট অবস্থায় বুঝলাম।
নীলার জন্মের পর পরই পৃথিবীতে শান্তির পরশ বুলিয়ে দিয়েছিল বাতাস। সেই হালকা শীতের মধ্যেও গাছের পাতা একটু নড়ে উঠেছিল। কিছু পরে বাড়ির ছাদের উপর দিয়ে একঝাক পাখি উড়ে গিয়েছিল উত্তর দিকে। বয়স্ক মহিলারা এসব দেখে মন্তব্য করেছিল, শুভ লক্ষণ। মেয়েটি হবে লক্ষী, জগৎ শ্রেষ্ঠা, যেমন রুপবতী তেমন গুনবতী ও সৌভাগ্যবর্তী হবে। শুনে বাবা হাসলেন। আমাকে বললেন, যা চাচীকে দেখেআয়। তোর মাকে আমার কাছে আসতে বল। আমি তাই করলাম।