19-07-2021, 05:38 PM
তাহলে আমাদের এখানকারই মেয়ে।
সেদিন খুব ফুর্তি নিয়ে কেমিস্ট্রি ল্যাবে গেলাম। পরদিন ক্লাশ বাদ দিয়ে একটা বাজার আগে থেকেই মোহাম্মাদপুর রুটের বাসের সামনে ক্যাম্পিং
করলাম। একজন দুজন করে অনেক ছেলেমেয়ে বাসে উঠলো। দুটার সময় বাসটা ছেড়েও গেল। কিন্তু তার দেখা নেই। হয়তো ওর সেশনাল আছে।
পুরো দুই সপ্তাহ খোঁজাখুঁজি চললো। এত অল্প কিছু ছাত্রছাত্রীর মধ্যে কিভাবে লুকিয়ে আছে ভেবে পাই না। আবারও একদিন ক্লাশ ফাঁকি দিয়ে
খুঁজছি, গেটের দিকে চোখ পড়তে গলা শুকিয়ে গেল। বুকে হাত বেধে সে তখন হেঁটে আসছে। সরাসরি আমার দিকেই মনে হয়। কোত্থেকে উদয় হয়
কে জানে। আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। কান মাথা গরম হয়ে কি করবো বুঝতে পারছি না। আমিও উঠে দাঁড়ালাম।
- ক্লাশ ফাঁকি দিয়ে আমাকে খুঁজে লাভ নেই।
আমি ঢোক গিলে বললাম, উ।
- যাও, ক্লাশে যাও।
তারপর যেভাবে এসেছিল সেভাবে হেঁটে গেটের বাইরে গিয়ে একটা রিকশায় উঠলো। আমি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করলাম এগুলো সবই সত্যি ঘটলো
কি না। আমাদের ব্যাচের মিতু আমাকে দেখে বললো, কি রে রিমি আপু তোকে কি বললো?
- রিমি আপু?
- হু, চিনিস না? আমাদের ডিপার্টমেন্টের, এবার পাশ করে যাবে। সবাই যমের মত ভয় পায়।
- ও!
এই নাটালী পোর্টম্যান তাহলে এখানে রিমি নামে চলছে। কিভাবে ওর নাগাল পাওয়া যায় ভেবে কোন কুল কিনারা পাচ্ছিলাম না। ফ্রেশম্যান স্টুডেন্ট আমি, রিমির কাছে অফার করার মত তেমন কিছু নেই। একমাত্র সম্পদ ইয়ুথফুল এনথুসিয়াজম। সেটাও রিমির লিস্টে কতটা উপরে আছে সন্দেহ।
ভেবে ভেবে তবু হাল ছাড়তে মন চায় না। এর মধ্যে আরো কয়েকবার ওদের ডিপার্টমেন্টে ল্যাবে গিয়ে দেখে এসেছি। এখানে সহজে পাওয়া যায়।
রিমিও আড়চোখে দেখেছে, কিছু বলে নি। কনফ্রন্ট করতে হবে। মনোভাবটা জানা দরকার। সোনালী ব্যাংকের চিপা গেট দিয়ে ঢুকতে গিয়ে সে
সুযোগ হয়ে গেল।
- রিমি?
- রিমি?
ও আবার সেই হাসিটা ঝুলিয়ে তাকালো, কি? তোমাকে কি বলেছি আমি?
- সেটা জানি। তারপরও একটা সুযোগ চাই, একবার শুধু?
- কি রকম?
- এমনি। এক ঘন্টার জন্য লাঞ্চ বা ডিনার, আর কোন ঝামেলা করবো না।
রিমি গায়ে মাখলো না। অনেক অনুরোধের পর আমার সেলফোন নাম্বারটা কাগজে লিখে দিলাম। যাই ঘটুক, আমি বেশ ভালো বোধ করা শুরু
করেছি তখন। অন্তত সামনাসামনি বলতে পেরেছি। সপ্তাহ মাস ঘুরে টার্ম ফাইনাল চলে এলো। এর মধ্যে অনেকবার ডিপার্টমেন্টে গিয়ে ঘুরে আসা
হয়েছে। কথা হয় নি আর। আমি তাকাই, ও আড়চোখে দেখে, কিছু বলে না। শেষ পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় অচেনা নাম্বার থেকে একটা
কল এলো। বিরক্ত হয়ে ধরলাম।
- তোমার পরীক্ষা শেষ কবে?
- কে বলছেন?
- কে বলছি? রিমি … রিমি…
তাড়াতাড়ি বারান্দায় চলে গেলাম ফোন নিয়ে, অল ইম্পরট্যান্ট কলটা তাহলে এলো।
- কালকে বিকালে শেষ।
- ওহ বিকালে আবার। ঠিক আছে তাহলে ডিনারই হোক।
পরীক্ষা শেষ করলাম কোনমতে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা না দিয়ে উত্তরায় বাসায় চলে এলাম। চামড়া তুলে গোসল করে, চুলে জেল মেখে আবার
ধানমন্ডি। সময়ের আধা ঘন্টা আগে থেকে হাজির। মেয়েরা দেরী করে আসে সেটা জানি। প্রথমদিনই টের পেলাম রিমির ব্যাপারটা আলাদা। সে
আটটা বাজার পাঁচ মিনিট আগে রিকশা থেকে নামল।
- তুমি আমার আগেই চলে এসেছ দেখছি?
তিন মাস পর ডেটিংয়ে এসেছি। ফারিয়ার চেয়ে একশগুন দামী মেয়ে। অবশ্য নাগালে আছে কি না সেটা জানি না। ওয়েটার পিছনের দিকে বসিয়ে
দিল।
- তোমার নামটা কিন্তু জানা হয় নি?
- তানিম।
ইউনি লাইফ কেমন যাচ্ছে, পড়াশোনা নিয়ে কথার পর রিমি বললো।
- এখন বলো, কি খুঁজছো আমার কাছে?
- আমি জানি না। আপনাকে জব ফেয়ারে দেখার পর আমার মাথা ওলট পালট হয়ে আছে, এটুকু বলতে পারি।
- রিয়েলী?
- ভেরী রিয়েল।
- কারন?
- নিজেও জানি না। ভেবে দেখি নি।
- এখন ভাবো? বের করো, কারন জানা দরকার।
রিমি প্রায় ঘন্টাখানেক জেরা করে বের করতে চাইলো আমার আগ্রহের কারন কোনটা। সত্যি বলতে কি আমি নিজেও নিজেকে এসব প্রশ্ন করে দেখি নি। রিমি খুব মেথডিকাল।
- লোকে বলে মেয়েদের মন বোঝা কষ্ট। অনেস্টলী ২৩ বছর হয়ে গেল অথচ আমি ছেলেদের মন পড়তে পারি না। কি চাও তোমরা?
- স্পেল বাউন্ড মেই বি…
- নো সাচ থিং, আস্ক ইয়োরসেল্ফ, তারপর আমাকে জানিও।
লেভেল টুতে বসে তার রিলেশনশীপ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে সে একাই আছে। খুবই ভাল খবর আমার জন্য। রিমি আমার চেয়ে শার্প সন্দেহ নেই।
তার চিন্তাভাবনার পদ্ধতি আলাদা, ভীষন কৌতুহলী। সবকিছু ভেঙেচুরে দেখতে হবে তাকে।
- তোমার একটা ভালো গুন বলো তো।
- আমি শান্ত এবং এডভেঞ্চারাস, যেমন প্রয়োজন হলে অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে পারি।
রিমি জোর করে খাওয়ার বিল দিল।
সেদিন খুব ফুর্তি নিয়ে কেমিস্ট্রি ল্যাবে গেলাম। পরদিন ক্লাশ বাদ দিয়ে একটা বাজার আগে থেকেই মোহাম্মাদপুর রুটের বাসের সামনে ক্যাম্পিং
করলাম। একজন দুজন করে অনেক ছেলেমেয়ে বাসে উঠলো। দুটার সময় বাসটা ছেড়েও গেল। কিন্তু তার দেখা নেই। হয়তো ওর সেশনাল আছে।
পুরো দুই সপ্তাহ খোঁজাখুঁজি চললো। এত অল্প কিছু ছাত্রছাত্রীর মধ্যে কিভাবে লুকিয়ে আছে ভেবে পাই না। আবারও একদিন ক্লাশ ফাঁকি দিয়ে
খুঁজছি, গেটের দিকে চোখ পড়তে গলা শুকিয়ে গেল। বুকে হাত বেধে সে তখন হেঁটে আসছে। সরাসরি আমার দিকেই মনে হয়। কোত্থেকে উদয় হয়
কে জানে। আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। কান মাথা গরম হয়ে কি করবো বুঝতে পারছি না। আমিও উঠে দাঁড়ালাম।
- ক্লাশ ফাঁকি দিয়ে আমাকে খুঁজে লাভ নেই।
আমি ঢোক গিলে বললাম, উ।
- যাও, ক্লাশে যাও।
তারপর যেভাবে এসেছিল সেভাবে হেঁটে গেটের বাইরে গিয়ে একটা রিকশায় উঠলো। আমি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করলাম এগুলো সবই সত্যি ঘটলো
কি না। আমাদের ব্যাচের মিতু আমাকে দেখে বললো, কি রে রিমি আপু তোকে কি বললো?
- রিমি আপু?
- হু, চিনিস না? আমাদের ডিপার্টমেন্টের, এবার পাশ করে যাবে। সবাই যমের মত ভয় পায়।
- ও!
এই নাটালী পোর্টম্যান তাহলে এখানে রিমি নামে চলছে। কিভাবে ওর নাগাল পাওয়া যায় ভেবে কোন কুল কিনারা পাচ্ছিলাম না। ফ্রেশম্যান স্টুডেন্ট আমি, রিমির কাছে অফার করার মত তেমন কিছু নেই। একমাত্র সম্পদ ইয়ুথফুল এনথুসিয়াজম। সেটাও রিমির লিস্টে কতটা উপরে আছে সন্দেহ।
ভেবে ভেবে তবু হাল ছাড়তে মন চায় না। এর মধ্যে আরো কয়েকবার ওদের ডিপার্টমেন্টে ল্যাবে গিয়ে দেখে এসেছি। এখানে সহজে পাওয়া যায়।
রিমিও আড়চোখে দেখেছে, কিছু বলে নি। কনফ্রন্ট করতে হবে। মনোভাবটা জানা দরকার। সোনালী ব্যাংকের চিপা গেট দিয়ে ঢুকতে গিয়ে সে
সুযোগ হয়ে গেল।
- রিমি?
- রিমি?
ও আবার সেই হাসিটা ঝুলিয়ে তাকালো, কি? তোমাকে কি বলেছি আমি?
- সেটা জানি। তারপরও একটা সুযোগ চাই, একবার শুধু?
- কি রকম?
- এমনি। এক ঘন্টার জন্য লাঞ্চ বা ডিনার, আর কোন ঝামেলা করবো না।
রিমি গায়ে মাখলো না। অনেক অনুরোধের পর আমার সেলফোন নাম্বারটা কাগজে লিখে দিলাম। যাই ঘটুক, আমি বেশ ভালো বোধ করা শুরু
করেছি তখন। অন্তত সামনাসামনি বলতে পেরেছি। সপ্তাহ মাস ঘুরে টার্ম ফাইনাল চলে এলো। এর মধ্যে অনেকবার ডিপার্টমেন্টে গিয়ে ঘুরে আসা
হয়েছে। কথা হয় নি আর। আমি তাকাই, ও আড়চোখে দেখে, কিছু বলে না। শেষ পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় অচেনা নাম্বার থেকে একটা
কল এলো। বিরক্ত হয়ে ধরলাম।
- তোমার পরীক্ষা শেষ কবে?
- কে বলছেন?
- কে বলছি? রিমি … রিমি…
তাড়াতাড়ি বারান্দায় চলে গেলাম ফোন নিয়ে, অল ইম্পরট্যান্ট কলটা তাহলে এলো।
- কালকে বিকালে শেষ।
- ওহ বিকালে আবার। ঠিক আছে তাহলে ডিনারই হোক।
পরীক্ষা শেষ করলাম কোনমতে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা না দিয়ে উত্তরায় বাসায় চলে এলাম। চামড়া তুলে গোসল করে, চুলে জেল মেখে আবার
ধানমন্ডি। সময়ের আধা ঘন্টা আগে থেকে হাজির। মেয়েরা দেরী করে আসে সেটা জানি। প্রথমদিনই টের পেলাম রিমির ব্যাপারটা আলাদা। সে
আটটা বাজার পাঁচ মিনিট আগে রিকশা থেকে নামল।
- তুমি আমার আগেই চলে এসেছ দেখছি?
তিন মাস পর ডেটিংয়ে এসেছি। ফারিয়ার চেয়ে একশগুন দামী মেয়ে। অবশ্য নাগালে আছে কি না সেটা জানি না। ওয়েটার পিছনের দিকে বসিয়ে
দিল।
- তোমার নামটা কিন্তু জানা হয় নি?
- তানিম।
ইউনি লাইফ কেমন যাচ্ছে, পড়াশোনা নিয়ে কথার পর রিমি বললো।
- এখন বলো, কি খুঁজছো আমার কাছে?
- আমি জানি না। আপনাকে জব ফেয়ারে দেখার পর আমার মাথা ওলট পালট হয়ে আছে, এটুকু বলতে পারি।
- রিয়েলী?
- ভেরী রিয়েল।
- কারন?
- নিজেও জানি না। ভেবে দেখি নি।
- এখন ভাবো? বের করো, কারন জানা দরকার।
রিমি প্রায় ঘন্টাখানেক জেরা করে বের করতে চাইলো আমার আগ্রহের কারন কোনটা। সত্যি বলতে কি আমি নিজেও নিজেকে এসব প্রশ্ন করে দেখি নি। রিমি খুব মেথডিকাল।
- লোকে বলে মেয়েদের মন বোঝা কষ্ট। অনেস্টলী ২৩ বছর হয়ে গেল অথচ আমি ছেলেদের মন পড়তে পারি না। কি চাও তোমরা?
- স্পেল বাউন্ড মেই বি…
- নো সাচ থিং, আস্ক ইয়োরসেল্ফ, তারপর আমাকে জানিও।
লেভেল টুতে বসে তার রিলেশনশীপ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে সে একাই আছে। খুবই ভাল খবর আমার জন্য। রিমি আমার চেয়ে শার্প সন্দেহ নেই।
তার চিন্তাভাবনার পদ্ধতি আলাদা, ভীষন কৌতুহলী। সবকিছু ভেঙেচুরে দেখতে হবে তাকে।
- তোমার একটা ভালো গুন বলো তো।
- আমি শান্ত এবং এডভেঞ্চারাস, যেমন প্রয়োজন হলে অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে পারি।
রিমি জোর করে খাওয়ার বিল দিল।