18-07-2021, 09:36 PM
রাহুল শিশুর মত সুদীপ্তার স্তনের বোঁটা চুষতে চুষতে বলল, ‘শুধু তোমার মধ্যেই ঝড় এল। আর আমার মধ্যে যেটা এল সেটা বললে না?’
সুদীপ্তা বলল, কি?
রাহুল বলল, ‘একটা মেয়েকে আমি জাপটে ধরলাম, তার বুক থেকে শুধু অমৃতই পান করে যাচ্ছি। আদরের পর, আদর। পা থেকে মা অবধি শুধুই আদর। শিহরণের পর শিহরণ। ‘সুদীপ্তা’ তোমার মধ্যে কি আছে তুমি নিজেই জানো না। আমাকে মুগ্ধ করে দিয়েছ তুমি। তোমাকে ছাড়া জীবনের কোন স্বপ্নই আর দেখছি না আমি।’
সুদীপ্তা বলল, ‘রিয়েলি?’
রাহুল বলল, ‘আই সোয়্যার সুদীপ্তা। আই সোয়্যার।’
গ্লাসে একটা চুমুক দিয়ে সুদীপ্তার দিকে বাড়িয়ে দিল গ্লাসটা। - ‘খাও?’
সুদীপ্তা এঁটো গ্লাসে চুমুক দিয়ে ওটাকে আবার প্রসাদ করে দিল। রাহুল বলল, ‘ভাবছি মনডে ফ্লাইটের টিকিটটা করে নেব। সকাল বেলার ফ্লাইট ধরলে, দু ঘন্টার মধ্যে মুম্বাইতে।’
- ‘মুম্বাই যাবে?’
- ‘হ্যাঁ, ওখানে সিনহা আছে। ও হচ্ছে আমার একজন ক্লায়েন্ট। এবারে একটু দরাদরি শুরু করেছে। দু কোটি টাকার অর্ডার নিয়ে হাতে বসে আছে। আমি না যাওয়া পর্যন্ত এগ্রিমেন্ট কিছুতেই সাইন হবে না। আন্ডারকাটিং এ মাল চায়। আমি বলেছিলাম দিতে পারব না। আমাকে বলল, চ্যাটার্জ্জী সাব, প্রতি মাসে দুকোটি টাকার কনসাইনমেন্ট। ভেবে দেখুন, এত বড় বিজনেসম্যান হয়ে আপনি কি অর্ডারটা হাতছাড়া করবেন? চলে আসুন মুম্বাই। আমি আপনাকে হোটেলে দুরাত রেখে দিচ্ছি। খাবেন, দাবেন, প্রোজেক্টে ঘুরবেন। আপনি কিন্তু হ্যাঁ বললেই সোনা আপনার হাতে। এরা আপনার মাল দেখেছে, দারুন পছন্দ। শুধু বলেছে, উনি একটু রেটটা কমালেই কাজ নাকি হয়ে যাবে।’
সুদীপ্তা হাঁ করে শুনছে। বলল, ‘দুকোটি টাকার প্রতিমাসের রিপিট অর্ডার?’
রাহুল বলল, ‘হ্যা,এ তো কিছুই নয় ডারলিং। একটা প্রোজেক্টে কত মাল লাগে তুমি জানো? হিউজ কোয়ান্টিটি। এইজন্যই তো আমাকে যেতে হচ্ছে। আর সাথে এবারে তুমি।’
ওর গালে গাল ঘসছিল, সুদীপ্তার হাতে জ্বলন্ত নিকোটিনটা পুড়ছে। রাহুল বলল, কি হল? স্মোক করছ না যে? করো।’
সুদীপ্তা সিগারেটের শেষ টানটা দিয়ে সিগারেটটা অ্যাস্ট্রে তে গুঁজল। রাহুলের মাথাটা বুকে ধরে বলল, ‘ব্যবসাটা তুমি একাই বড় করেছ না?’রাহুল বলল, ‘ঠিক তা নয়। বাবারও এতে হাত ছিল প্রচুর। প্রথম দিকে বাবাই ব্যবসাটাকে নিজের হাতে গড়েছিলেন। আমাকে লেখাপড়াও শিখিয়েছিলেন, ছোটবেলা থেকেই ব্যবসায় বসাতেন। বাবার কাছে থেকে থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি।’
সুদীপ্তা বলল, ‘তোমাকে এত কিউট দেখতে। তোমার বাবা বুঝি খুব সুন্দর ছিলেন?’
রাহুল বলল, ‘না আমার মা খুব সুন্দরী ছিলেন। আমি কিছুটা মায়ের আদলই পেয়েছি। ঠিক তোমাকে যেমন সুন্দর দেখতে। আমার মাকেও ওরকম সুন্দর দেখতে ছিল।’
সুদীপ্তার গালে এবার টোল পড়ল। রাহুলকে বলল, মা, বাবা কেউ এখন বেঁচে নেই?’
রাহুল বলল, ‘বাবা তো বেঁচে নেই। কিন্তু মা কোথায় আছে আমি জানি না।’
সুদীপ্তা বলল, মা বেঁচে আছেন?
রাহুল বলল, ‘হ্যাঁ। কিন্তু মা নিরুদ্দেশ। অনেক ছোটবেলায় বাবাকে ছেড়ে মা চলে যায়। তারপরে আর তার কোন খোঁজ পাওয়া যায় নি।’
সুদীপ্তা বেশ অবাক হল। বলল, ‘স্ট্রেঞ্জ। কাগজে বিজ্ঞাপন দাও নি? বা থানায় কোন ডায়েরী।
রাহুল বলল, ‘সব করেছি, অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু কিছুতেই মা’র কোন হদিশ পাওয়া যায় নি। কেন জানি না, মা হঠাৎ বাবাকে ছেড়ে চলে গেল। কলেজ থেকে ফিরে এসে দেখি মা ঘরে নেই। বাবার সাথে অশান্তি করে কোথায় যেন চলে গেছে। পরে বাবাও বেশ দিশাহারা হয়ে পড়লেন। মায়ের অবর্তমানে বাবা একেবারে ভেঙে পড়লেন। একমাত্র ব্যবসাকে বড় করা, ছেলেকে বড় করা এই ছিল, যার ধ্যান জ্ঞান। শেষকালে হতাশায় জর্জরিত হয়ে তিনি ঠিক করলেন আবার একটা বিয়ে করবেন।’
সুদীপ্তা বেশ অবাক হয়ে গেছে। রাহুলকে বলল, তারপর?
রাহুল বলল, ‘আমি হতে দিই নি ব্যাপারটা। কলেজে তখন ভর্তি হয়েছি। বাবাকে আমি না করলাম। বিরোধিতা করলাম। বাবা আমার অমতে বিয়েটা আর করলেন না।’
- ‘কিন্তু তোমার মা?’
- ‘জানি না সুদীপ্তা। আই ফিল ভেরী আপসেট। মাঝে মাঝে মায়ের ওপর ভীষন রাগ হয়। অভিমান হয়। মা অন্তত আমার কথাটাও চিন্তা করতে পারত।’
সুদীপ্তা বলল, ‘আই অ্যাম এক্স্ট্রীমলি সরি। তোমার মুডটাকে আমি খারাপ করে দিলাম।’রাহুল বলল, ‘ইটস্ ওকে। এবার তোমার কথা একটু বলো।’
সুদীপ্তা বলল, ‘আমার পাস্ট লাইফে কোন স্যাড স্টোরী নেই। তোমার মত বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে আমি। তবে পড়াশুনার পাশাপাশি ভালবাসাবাসিটা কারুর সাথেই করে উঠতে পারিনি, ম্যাথ আর ইংলিসে তুখোর ছিলাম। ছোটবেলা থেকেই বাবা একটা জিনিষ শিখিয়েছিল, যেটা তোর ভাল লাগে মন দিয়ে করবি। হান্ড্রেড পার্সেন্ট ডেডিকেসন। তাহলেই জীবনে সাকশেস আসবে। আমি চাই আমার বস আমার দায়িত্বশীলতায় খুশি থাক। আমার জীবনে আরো উন্নতি হোক। তবে কিছু কিছু স্মৃতি, মনের অ্যালবাম তো সহজে মুছে ফেলা যায় না। মানুষ শত চেষ্টা করেও তার ছোটবেলার কোন ঘটনার কথা কখনও ভুলতে পারেনা। আমারও জীবনে এমন একটা কিছু ঘটেছিল, তবে তারজন্য কোন দূঃখ নেই। একটু রোমাঞ্চনা অনুভব করি মাঝে মাঝে।’
সুদীপ্তা এটা বলেই হেসে ফেলল।
রাহুল বলল, তুমি হাসছ? ব্যাপারটা কি আমাকে একটু বলা যাবে?
সুদীপ্তা তখনো হাসছে। রাহুল বলল, ইউ আর লাফিং সো মাচ। কি কোন অ্যাফেয়ার? সেক্সুয়াল রিলেশন?’
সুদীপ্তা হাসতে হাসতে বলল, ‘না না। বলেই রাহুলের সিগারেটের প্যাকেট থেকে আর একটা সিগারেট বার করতে যাচ্ছিল। রাহুল হাসতে হাসতে বলল, ‘আই নো, ইউ হ্যাভ এ স্মোকিং হ্যাভিট অলসো।’
সুদীপ্তা বলল, ‘খাই। তবে এই ব্র্যান্ডটা যেন দারুন লাগছে। স্মেলটাই যেন বড় অদ্ভূত।’
ওর মুখে আবার লাইটার ধরিয়ে রাহুল বলল, ‘কি বলছিলে একটা। বললে না?’
সুদীপ্তা বলল, ‘কি বলব বলতো? তোমার হাসি পাবে না কান্না পাবে। বুঝতে তো পারছি না।’
রাহুল বলল, ‘তুমি যখন আগে থেকেই এত হাসতে শুরু করে দিয়েছ। আমার তাহলে কান্না পাবে কেন? স্পীক আউট।’
সুদীপ্তা সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বলল, ‘আসলে আমার যত কিছুর মূলে এই বুক। এই বুকই সবাইকে পাগল করায়। সবাই বলত, বন্ধুরাই বেশি বেশি করে, সুদীপ্তা, তোকে দেখে হিংসে হয়। আমরা প্যাড লাগালেও আমাদেরটা এত বেশি বেশি করে উঁচু দেখাবে না।’