18-07-2021, 08:15 PM
৪
গ্রন্থাগারের বাইরে এসে দীপঙ্কর একটা বিড়ি ধরাল । খালিপেটে বিড়ি খেতে গিয়ে তার শরীর ঘুলিয়ে উঠল । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল দুপুর প্রায় একটা ।একবার পিছনে তাকিয়ে সে দ্রুত সাইকেলে চেপে প্রাণপনে প্যাডেল করতে লাগল । তাকে তাড়াতাড়ি বাড়ী পৌঁছাতে হবে । তার এখন ছোড়দার কাছে খাওয়ার পালা। ছোটো বৌদি জয়া না খেয়ে এখনও বসে আছে ।
খুব জোড়ে সাইকেল সে চালাতে পাড়ছে না । সামনের দিক থেকে দমকা হাওয়া বইছে । অসাবধানে রাস্তার একটা উঠে থাকা পাথরের ওপর দিয়ে সাইকেল চালাতে গিয়ে ফটাস করে টিউবটা ফেটে গেল । দীপঙ্কর বুঝল আজ কপালে কষ্ট আছে । সাইকেল থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করল। পিছন থেকে রুমা সাইকেল চালাতে চালাতে কাছে এসে বলল- কি ব্যাপার হেঁটে যাচ্ছেন যে ?
-টিউব ফেটে গেছে ।
রুমা সাইকেল থেকে নামল ।
-আপনি আবার সাইকেল থেকে নামলেন কেন ? চলে যান ।
-না আপনার সঙ্গে একটু হাঁটি । আপনার অসুবিধা নেই তো ।
দীপঙ্কর রাগে গজগজ করলেও ওপরে প্রকাশ পেতে না দিয়ে বলল –
না আমার আবার অসুবিধা কি । গলাটা যতটা সম্ভব মোলায়েম করে বলল – আপনার অসুবিধা হবে বলেই বলছিলাম ।
-আমার হাঁটতে খুব ভাললাগে ।
দীপঙ্কর দেখল ওর হাত থেকে নিস্তার নেই । তাই চুপ করে গিয়ে একমনে হাঁটতে লাগল ।
কয়েক মুহূর্ত চুপচাপ দুজনে রাস্তার দিকে তাকিয়ে হাঁটার পর রুমা আড়চোখে দীপঙ্করকে একবার দেখে নিয়ে অনেকটা উপযাচক হয়ে বলল
- আপনার কথা আমি অনেক শুনেছি ।
দীপঙ্কর চমকে উঠে রুমার মুখের দিকে তাকাল ।রুমা হেসে ফেলে বলল –
মলি আপনার ভাইঝি তো ?
-হ্যাঁ , আমার বড়দার মেয়ে ।
-মলি আমার বোনঝি রম্যানির সঙ্গে হাওড়া বিজয়কৃষ্ণ গার্লস কলেজে একসঙ্গে পড়ে । আমাদের বাড়ীতে প্রায়ই আসে । আর গল্প করতে বসে আপনার কত কথা বলে ।
হ্যাঁ , মলি আমাকে খুব ভালবাসে । ছোটো থেকেই আমার খুব ন্যাওটা ।
-আচ্ছা দীপঙ্কর বাবু আমাকে এখানকার বি . এড . কলেজটা কোন দিকে একটু বলে দেবেন ।
-উত্তর দিকে ।
আমার সঙ্গে একবার যেতে পারবেন ?
দীপঙ্কর থমকে দাঁড়াল ।
-আমি তো চিনি না , তাই বলছিলাম ।
-এ্যাপ্লাই করবেন ? কি পাশ ?
-আমি ইংলিশে এম. এ. করেছি ।
কোন বিশ্ববিদ্যালয় ?
-বিশ্বভারতী।
-ওখান থেকেই তো বি. এড. করতে পারতেন ?
-বাবা এই শহরে বদলি হয়ে এল যে ।
-যাবেন?
-আমার তো সময় হবে না ।
-ওঃ !
-কিছু মনে করবেন না । দাদাদের সংসারে পড়ে আছি । দুবেলা দুমুঠো খেতে দেয় । বাকী খরচা আমাকে টিউশানি পড়িয়ে চালাতে হয় । প্রতিদিন আমাকে চার ব্যাচ টিউশানি পড়াতে হয়। বুঝতেই পারছেন।
-কিন্তু এত ভাল রেজাল্ট নিয়ে চাকরির চেষ্টা করছেন না কেন ?
কে বলছে করছি না ? আজকেই পোষ্ট অফিসে একটা কলেজের পার্ট টাইম লেকচারারের পদের জন্য এপ্লিকেশন পোস্ট করে এলাম । আসলে কি জানেন এখন পড়াশুনায় ভাল রেজাল্টটা কোনো যোগত্যা নয় । এখন চাকরি পেতে গেলে রাজনৈতিক দাদাদের সুপারিশ লাগে । আর আমি রাজনীতি করাটা মন থেকে মেনে নিতে পারি না ।
-তাহলে এইভাবেই কাটাবেন?
-না ,তা কেন?আমি নেট কোয়ালিফাই করেছি ।দেখি ভবিষ্যতে যদি কিছু হয় ।
-ঠিক আছে আমি জিজ্ঞাসা করে কলেজে চলে যাব।
-সকালে যাবেন ।
-কেন বলুন তো ?
-এখানকার বি.এড. কলেজ সকালে শুরু হয় ।
ওরা কথা বলতে বলতে চলে এল বাড়ীর সামনে।
দীপঙ্কর বলল- এসে গেছি । চলি রুমা দেবী ।
রুমা বাম দিকে ঘাড় কাত করে মুচকি হেসে দীপঙ্করকে বিদায় জানিয়ে তার বাড়ীর দিকে এগিয়ে গেল ।
গ্রন্থাগারের বাইরে এসে দীপঙ্কর একটা বিড়ি ধরাল । খালিপেটে বিড়ি খেতে গিয়ে তার শরীর ঘুলিয়ে উঠল । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল দুপুর প্রায় একটা ।একবার পিছনে তাকিয়ে সে দ্রুত সাইকেলে চেপে প্রাণপনে প্যাডেল করতে লাগল । তাকে তাড়াতাড়ি বাড়ী পৌঁছাতে হবে । তার এখন ছোড়দার কাছে খাওয়ার পালা। ছোটো বৌদি জয়া না খেয়ে এখনও বসে আছে ।
খুব জোড়ে সাইকেল সে চালাতে পাড়ছে না । সামনের দিক থেকে দমকা হাওয়া বইছে । অসাবধানে রাস্তার একটা উঠে থাকা পাথরের ওপর দিয়ে সাইকেল চালাতে গিয়ে ফটাস করে টিউবটা ফেটে গেল । দীপঙ্কর বুঝল আজ কপালে কষ্ট আছে । সাইকেল থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করল। পিছন থেকে রুমা সাইকেল চালাতে চালাতে কাছে এসে বলল- কি ব্যাপার হেঁটে যাচ্ছেন যে ?
-টিউব ফেটে গেছে ।
রুমা সাইকেল থেকে নামল ।
-আপনি আবার সাইকেল থেকে নামলেন কেন ? চলে যান ।
-না আপনার সঙ্গে একটু হাঁটি । আপনার অসুবিধা নেই তো ।
দীপঙ্কর রাগে গজগজ করলেও ওপরে প্রকাশ পেতে না দিয়ে বলল –
না আমার আবার অসুবিধা কি । গলাটা যতটা সম্ভব মোলায়েম করে বলল – আপনার অসুবিধা হবে বলেই বলছিলাম ।
-আমার হাঁটতে খুব ভাললাগে ।
দীপঙ্কর দেখল ওর হাত থেকে নিস্তার নেই । তাই চুপ করে গিয়ে একমনে হাঁটতে লাগল ।
কয়েক মুহূর্ত চুপচাপ দুজনে রাস্তার দিকে তাকিয়ে হাঁটার পর রুমা আড়চোখে দীপঙ্করকে একবার দেখে নিয়ে অনেকটা উপযাচক হয়ে বলল
- আপনার কথা আমি অনেক শুনেছি ।
দীপঙ্কর চমকে উঠে রুমার মুখের দিকে তাকাল ।রুমা হেসে ফেলে বলল –
মলি আপনার ভাইঝি তো ?
-হ্যাঁ , আমার বড়দার মেয়ে ।
-মলি আমার বোনঝি রম্যানির সঙ্গে হাওড়া বিজয়কৃষ্ণ গার্লস কলেজে একসঙ্গে পড়ে । আমাদের বাড়ীতে প্রায়ই আসে । আর গল্প করতে বসে আপনার কত কথা বলে ।
হ্যাঁ , মলি আমাকে খুব ভালবাসে । ছোটো থেকেই আমার খুব ন্যাওটা ।
-আচ্ছা দীপঙ্কর বাবু আমাকে এখানকার বি . এড . কলেজটা কোন দিকে একটু বলে দেবেন ।
-উত্তর দিকে ।
আমার সঙ্গে একবার যেতে পারবেন ?
দীপঙ্কর থমকে দাঁড়াল ।
-আমি তো চিনি না , তাই বলছিলাম ।
-এ্যাপ্লাই করবেন ? কি পাশ ?
-আমি ইংলিশে এম. এ. করেছি ।
কোন বিশ্ববিদ্যালয় ?
-বিশ্বভারতী।
-ওখান থেকেই তো বি. এড. করতে পারতেন ?
-বাবা এই শহরে বদলি হয়ে এল যে ।
-যাবেন?
-আমার তো সময় হবে না ।
-ওঃ !
-কিছু মনে করবেন না । দাদাদের সংসারে পড়ে আছি । দুবেলা দুমুঠো খেতে দেয় । বাকী খরচা আমাকে টিউশানি পড়িয়ে চালাতে হয় । প্রতিদিন আমাকে চার ব্যাচ টিউশানি পড়াতে হয়। বুঝতেই পারছেন।
-কিন্তু এত ভাল রেজাল্ট নিয়ে চাকরির চেষ্টা করছেন না কেন ?
কে বলছে করছি না ? আজকেই পোষ্ট অফিসে একটা কলেজের পার্ট টাইম লেকচারারের পদের জন্য এপ্লিকেশন পোস্ট করে এলাম । আসলে কি জানেন এখন পড়াশুনায় ভাল রেজাল্টটা কোনো যোগত্যা নয় । এখন চাকরি পেতে গেলে রাজনৈতিক দাদাদের সুপারিশ লাগে । আর আমি রাজনীতি করাটা মন থেকে মেনে নিতে পারি না ।
-তাহলে এইভাবেই কাটাবেন?
-না ,তা কেন?আমি নেট কোয়ালিফাই করেছি ।দেখি ভবিষ্যতে যদি কিছু হয় ।
-ঠিক আছে আমি জিজ্ঞাসা করে কলেজে চলে যাব।
-সকালে যাবেন ।
-কেন বলুন তো ?
-এখানকার বি.এড. কলেজ সকালে শুরু হয় ।
ওরা কথা বলতে বলতে চলে এল বাড়ীর সামনে।
দীপঙ্কর বলল- এসে গেছি । চলি রুমা দেবী ।
রুমা বাম দিকে ঘাড় কাত করে মুচকি হেসে দীপঙ্করকে বিদায় জানিয়ে তার বাড়ীর দিকে এগিয়ে গেল ।