18-07-2021, 07:01 PM
(This post was last modified: 18-07-2021, 07:01 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
দেখতে দেখতে গাড়ি শহর ছাড়িয়ে আসে। বাইরে ভীষণ সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য। সবাইই মুগ্ধ হয়ে দেখছে বাংলার সবুজের মেলা। কথা এখন একটু কম গাড়ির ভেতর। নিবিড় এম পি থ্রি প্লেয়ারে গান ছেড়েছে। হেডফোনের একপ্রান্ত নিজের কানে ঢুকিয়ে অপর প্রান্ত নিঝুমের কানে ঢুকিয়ে দিয়েছে। উদ্দেশ্য, নিঝুমকে আরও একটু কাছাকাছি রাখা। সুযোগ পেলেই তো সরে বসছে। নিঝুম জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকে গান শুনতে শুনতে। হাওয়ায় চুল উড়ে নিবিড়ের মুখে পড়ছে। নিবিড় বুক ভরে টেনে নিচ্ছে সেই চুলের সুঘ্রাণ। ইচ্ছে করে মেয়েটার মাথাটা চেপে ধরে রাখে বুকের মধ্যে আর চুলে নাক ডুবিয়ে রাখে। কিন্তু হায়! পরিবার যে জানেনা তাদের ভালবাসার কথা। তাই মনের ইচ্ছে মনেই চেপে রেখে দেখতে থাকে নিঝুমকে আর ভাবতে থাকে আর কতদিন পর বিয়ের বাঁধনে বাঁধতে পারবে ওকে। আর অল্প কিছুক্ষণ পরেই তারা গন্তব্যে পৌঁছে যায়। নিঝুমের এই প্রথম নন্দন আসা। নিবিড় আগেও এসেছে। তবে এখন তো সাথে আছে তার প্রানপ্রতিমা, তাই একই জায়গায় হাজারবার আসতেও তার খারাপ লাগবে না। সুবিশাল পার্কের প্রতিটা রাইড নিঝুমের পাশে বসে উপভোগ করতে চায় সে। ঈশিতাও আগে এসেছে নন্দনে। সে এবার কোন রাইডে চড়তে অসম্মতি জানায়; বলে, এত ঝাঁকি দেয় রাইডগুলো যে তার মাথা ঘোরে। তাই আর চড়তে চায় না। নিবিড় কৃতজ্ঞ চোখে তাকায় বোনের দিকে। ঈশিতা মৃদু হাসে। বড়রা কেউই রাইডে চরবেন না। সুতরাং সমস্ত রাইডে ছোটদের, মানে নিবিড় আর নিঝুমকেই চড়তে হবে। খুব মজা করে সারাদিন সবাই মিলে। হাসি ঠাট্টা, একে অপরকে খোঁচানো, দুপুরে নন্দনের ক্যাফেটেরিয়ায় লাঞ্চ, তারপর হঠাৎ নামা বৃষ্টিতে ভেজা। সময়ের কোন বাঁধাধরা নেই আজ। নেই কোন নিয়মের বেড়াজাল। একান্ত আপন কিছু সময় কাটাচ্ছে দুটি সদ্য ফোটা প্রেমের ফুল। বিধাতা অলক্ষ্যে থেকে আশীর্বাদ করেন হয়তো এই দুজনকে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বাধাকে অতিক্রম করে এরা ভালবাসতে পেরেছে, এই ভালবাসার যেন কোনদিন শেষ হবে না।
বৃষ্টিস্নাত নিঝুমকে নতুন দৃষ্টিতে দেখে আজ নিবিড়। সেই দৃষ্টিতে নেই কোন কামনা, শুধু আছে ভালবাসার উচ্ছ্বাস, আছে মুগ্ধতা, আছে নিঝুমের পবিত্রতা রক্ষার শপথ। একদম নির্জনে নিঝুমকে পেয়েও নিবিড় কোন সুযোগ নেবার চেষ্টা করেনি। নিঝুম অন্তরের অন্তস্থলে অনুভব করে, সমস্ত মহাবিশ্বে এই মানুষটির কাছেই সে নিরাপদ, এই মানুষটিকে দিয়ে তার কোন ক্ষতি হবার সম্ভাবনা নেই। এই মানুষটি জানে কীভাবে ভালবাসার গভীরে প্রবেশ করতে হয়, জানে কীভাবে ভালবাসাকে পবিত্র রাখতে হয়। আজ নিঝুম বুঝতে পারে, সে সত্যিই এই ছেলেটিকে ভালবেসে ফেলেছে। পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে মাঝে মাঝে চোখ তুলে দেখে নেয় সাথের সুঠামদেহী বলিষ্ঠ সঙ্গীটিকে, তাকে কোন জানান না দিয়েই। বলতে চায়, ভালবাসি, কিন্তু প্রবল লজ্জা এসে গ্রাস করে তাকে। তাই বলা হয়না নিঝুমের। ভাবে, ক্ষতি কী, থাক না এমন আমার নিঃশব্দ ভালোবাসা, ও তো বোঝে যে আমি ওকে ভালবাসি। নিজের অজান্তেই মনে মনে হাজারো ধন্যবাদ দেয় স্রষ্টাকে, নিবিড়কে ভালবাসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
বিকেল ঘনিয়ে আসে। সময় হয়েছে ফেরার। কারুরই ইচ্ছে নেই যাওয়ার, কিন্তু উপায় যে নেই। ফিরে যেতে হবে কর্মব্যস্ত জীবনে আবার। তাই শেষবারের মত নন্দনকে বিদায় জানিয়ে গাড়িতে ওঠে সবাই। নিবিড় আবার হেডফোন গুঁজে দেয় নিঝুমের কানে। যাওয়ার সময় একটা গান শুনছিল, আবারও সেই গানটাই প্লে করে নিবিড়।
“এক পায়ে নূপুর তোমার, অন্য পা খালি।
একপাশে সাগর, একপাশে বালি…
আমার ছোট তরী, বল, যাবে কি?
বলব না আকাশের চাঁদ এনে দেব, বলব না তুমি রাজকন্যা।
শুধু জিগ্যেস করি, দেবে কি পাড়ি হোক যত ঝড় বন্যা?
চাঁদের আলো, যদি ভাল লাগে কাল হয়ে যায় ঝাপসা।
আমার এ তরী যদি চলে যায়, ফিরে আর আসবে না।
যত ভালবাস তারে, দূরে রয়ে যাবে তা কি তুমি জান না?
আমার ছোট তরী, বল, যাবে কি?”
বৃষ্টিস্নাত নিঝুমকে নতুন দৃষ্টিতে দেখে আজ নিবিড়। সেই দৃষ্টিতে নেই কোন কামনা, শুধু আছে ভালবাসার উচ্ছ্বাস, আছে মুগ্ধতা, আছে নিঝুমের পবিত্রতা রক্ষার শপথ। একদম নির্জনে নিঝুমকে পেয়েও নিবিড় কোন সুযোগ নেবার চেষ্টা করেনি। নিঝুম অন্তরের অন্তস্থলে অনুভব করে, সমস্ত মহাবিশ্বে এই মানুষটির কাছেই সে নিরাপদ, এই মানুষটিকে দিয়ে তার কোন ক্ষতি হবার সম্ভাবনা নেই। এই মানুষটি জানে কীভাবে ভালবাসার গভীরে প্রবেশ করতে হয়, জানে কীভাবে ভালবাসাকে পবিত্র রাখতে হয়। আজ নিঝুম বুঝতে পারে, সে সত্যিই এই ছেলেটিকে ভালবেসে ফেলেছে। পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে মাঝে মাঝে চোখ তুলে দেখে নেয় সাথের সুঠামদেহী বলিষ্ঠ সঙ্গীটিকে, তাকে কোন জানান না দিয়েই। বলতে চায়, ভালবাসি, কিন্তু প্রবল লজ্জা এসে গ্রাস করে তাকে। তাই বলা হয়না নিঝুমের। ভাবে, ক্ষতি কী, থাক না এমন আমার নিঃশব্দ ভালোবাসা, ও তো বোঝে যে আমি ওকে ভালবাসি। নিজের অজান্তেই মনে মনে হাজারো ধন্যবাদ দেয় স্রষ্টাকে, নিবিড়কে ভালবাসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
বিকেল ঘনিয়ে আসে। সময় হয়েছে ফেরার। কারুরই ইচ্ছে নেই যাওয়ার, কিন্তু উপায় যে নেই। ফিরে যেতে হবে কর্মব্যস্ত জীবনে আবার। তাই শেষবারের মত নন্দনকে বিদায় জানিয়ে গাড়িতে ওঠে সবাই। নিবিড় আবার হেডফোন গুঁজে দেয় নিঝুমের কানে। যাওয়ার সময় একটা গান শুনছিল, আবারও সেই গানটাই প্লে করে নিবিড়।
“এক পায়ে নূপুর তোমার, অন্য পা খালি।
একপাশে সাগর, একপাশে বালি…
আমার ছোট তরী, বল, যাবে কি?
বলব না আকাশের চাঁদ এনে দেব, বলব না তুমি রাজকন্যা।
শুধু জিগ্যেস করি, দেবে কি পাড়ি হোক যত ঝড় বন্যা?
চাঁদের আলো, যদি ভাল লাগে কাল হয়ে যায় ঝাপসা।
আমার এ তরী যদি চলে যায়, ফিরে আর আসবে না।
যত ভালবাস তারে, দূরে রয়ে যাবে তা কি তুমি জান না?
আমার ছোট তরী, বল, যাবে কি?”