17-07-2021, 12:05 PM
অনন্ত নিঝুমতা – ৪
বেশ কিছুদিন পর দুজনের পরিবার থেকেই একটা ফ্যামিলি ট্যুরের উদ্যোগ নেওয়া হয়। গন্তব্য- শহরের অদূরে অবস্থিত নন্দন থিম পার্ক। যাত্রার দিন সকাল থেকেই ভীষণ উত্তেজনায় কাটে দুজনের। সময় যেন আর কাটতেই চাইছেনা। গুটি গুটি পায়ে ঘড়ির কাঁটা সময় দেখায় সকাল দশটা। খুশিতে নেচে ওঠে নিঝুমের মন। এক্ষুনি বাড়ি থেকে বের হবে তারা। তারপর নিবিড়, আনটি আর ঈশিতাকে তুলে পাড়ি জমাবে নন্দনের উদ্দেশ্যে। পেঁয়াজ রঙের সালোয়ার কামিজের সাথে হাঁটার উপযোগী ম্যাচিং স্লিপার আর ছোট্ট কানের দুলে ক্যাসুয়াল সাজে সেজেছে আজ নিঝুম। বের হওয়ার আগের মুহূর্তে কালো রঙের একটা ছোট টিপ বসিয়ে দেয় কপালে। নিবিড়ের খুব পছন্দ এই টিপ। বাসা থেকে বের হয়ে নিবিড়ের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তারা। প্রাডো গাড়ির পিছনের সীটে বসেছে সে। এই সীটটা বাড়ির বাচ্চাকাচ্চাদের জন্য রিসার্ভড।
মাঝেরটায় আপাতত মা বসেছেন, একটু পর তাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য নিবিড়ের মা-ও এসে পড়বেন। আর ড্রাইভারের পাশের সীটে বাবা। ফুরফুরে মুডে জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকতে থাকতে নিবিড়ের বাসার কাছে এসে যায় গাড়ি। সবার আগে নিবিড়দের চোখে পড়ে নিঝুমেরই। এক মুহূর্তের জন্য নিবিড়ের চোখে চোখ আটকে যায়। পর মুহূর্তেই চোখ সরিয়ে নিতে নিতে ভাবে, “মাথা খারাপ করে দেবে দেখছি ছেলেটা। এত ভাল লাগার কী দরকার ছিল? সাদা শার্টে ওকে কত ভাল লাগে ও কি জানে না? তাও যেন আমাকে পাগল করার জন্য সাদা পড়েছে আজ! জানি তো, একবার ভাল লাগছে বললেই সারা জীবনের জন্য খেপাবে আমাকে! হুহ! কিন্তু আমিও বলব না যে আজ আমি সত্যিই ওর উপর মরেছি!” একই সাথে টের পায় যে সে অন্যদিকে তাকালেও নিবিড় তার উপর থেকে চোখ সরায়নি। ওরা গাড়িতে উঠে বসে। মা নিবিড় আর ঈশিতাকে পিছনে পাঠিয়ে দেন নিঝুমের সাথে। নিঝুম আগেই ঠিক করে রেখেছিল নিবিড়ের পাশে বসবে না, কে কী সন্দেহ করে বসবে, পরে ঝামেলা হবে। তাই সীটের কোণের দিকে সরে যেতে চেষ্টা করে ঈশিতাকে মাঝে রেখে। কিন্তু তার আগেই ভাইবোন তার দুপাশে বসে পড়ে। নিঝুম প্রবল আপত্তি জানায় মাঝে বসা নিয়ে, বলে যে সে জানালার ধারে বসতে চায়। কিন্তু সামনে থেকে মা বলেন আজকের মত মাঝে বসতে একটু কষ্ট করে। আর গাড়িও চলতে শুরু করে দিয়েছে, এখন সীট চেঞ্জ করাও সম্ভব নয়। অগত্যা চুপচাপ নিবিড়ের পাশেই বসে পড়তে হয় তাকে। নিবিড় নীরবে অভিমানী চোখ নিয়ে তাকায় তার দিকে। নিঝুম বুঝতে পারে এ অভিমান কেন। প্রথমত, আজ ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে তার কোন খোঁজ ছিল না, দ্বিতীয়ত, নিবিড় ঠিকই ধরে ফেলেছে যে সে তার পাশে বসতে চায়নি। ইশ! রাগলে কী মায়া মায়া লাগে নিবিড়ের চেহারাটা। নিঝুমের ইচ্ছে হয় গালটা টিপে দেয়।
কিন্তু সবাই আছে, তাই সেই ইচ্ছে দমন করতে হয়। সেও চোখের ভাষায় বুঝিয়ে দেয়, “স্যরি!” তারপর ছোট্ট একটা হাসি দেয়, যে হাসি নিবিড়ের সমস্ত অভিমান ভুলানোর জন্য যথেষ্ট, যে হাসির জন্য নিবিড় সারা পৃথিবীর সাথে যুদ্ধ করতেও দ্বিধা করবে না। নিঝুম চোখ নামিয়ে নেয়। নিবিড় দেখতে থাকে তাকে। অস্বস্তি কাটানোর জন্য পাশে বসে থাকা ঈশিতার সাথে গল্পে মনোযোগী হয় নিঝুম। হঠাৎ ওড়নায় টান পড়ে। নিবিড় টান দিয়েছে। যার অর্থ, “আমার সাথে কথা বল। এভাবে চুপ মেরে থাকার মানে কী?” তিনজন মিলেই আড্ডা শুরু হয় এরপর। এরই মাঝে নিচুস্বরে নিবিড় জানান দেয় যে সে নিঝুমকে ভালবাসে। সরাসরি বলে না। রোমান্টিক একটা মেসেজ লিখে নিঝুমের দিকে ফোন বাড়িয়ে দিয়ে বলে দেখতে। নিঝুম দেখে ফোনটা ফেরত দিয়ে দেয়। কিছু বলেনা। তবে গালের রক্তিম আভা নিবিড়ের চোখ এড়ায় না। মনে মনে ভাবে, “বেশ লাগে লজ্জা পেলে আমার রাণীকে। ”
বেশ কিছুদিন পর দুজনের পরিবার থেকেই একটা ফ্যামিলি ট্যুরের উদ্যোগ নেওয়া হয়। গন্তব্য- শহরের অদূরে অবস্থিত নন্দন থিম পার্ক। যাত্রার দিন সকাল থেকেই ভীষণ উত্তেজনায় কাটে দুজনের। সময় যেন আর কাটতেই চাইছেনা। গুটি গুটি পায়ে ঘড়ির কাঁটা সময় দেখায় সকাল দশটা। খুশিতে নেচে ওঠে নিঝুমের মন। এক্ষুনি বাড়ি থেকে বের হবে তারা। তারপর নিবিড়, আনটি আর ঈশিতাকে তুলে পাড়ি জমাবে নন্দনের উদ্দেশ্যে। পেঁয়াজ রঙের সালোয়ার কামিজের সাথে হাঁটার উপযোগী ম্যাচিং স্লিপার আর ছোট্ট কানের দুলে ক্যাসুয়াল সাজে সেজেছে আজ নিঝুম। বের হওয়ার আগের মুহূর্তে কালো রঙের একটা ছোট টিপ বসিয়ে দেয় কপালে। নিবিড়ের খুব পছন্দ এই টিপ। বাসা থেকে বের হয়ে নিবিড়ের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তারা। প্রাডো গাড়ির পিছনের সীটে বসেছে সে। এই সীটটা বাড়ির বাচ্চাকাচ্চাদের জন্য রিসার্ভড।
মাঝেরটায় আপাতত মা বসেছেন, একটু পর তাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য নিবিড়ের মা-ও এসে পড়বেন। আর ড্রাইভারের পাশের সীটে বাবা। ফুরফুরে মুডে জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকতে থাকতে নিবিড়ের বাসার কাছে এসে যায় গাড়ি। সবার আগে নিবিড়দের চোখে পড়ে নিঝুমেরই। এক মুহূর্তের জন্য নিবিড়ের চোখে চোখ আটকে যায়। পর মুহূর্তেই চোখ সরিয়ে নিতে নিতে ভাবে, “মাথা খারাপ করে দেবে দেখছি ছেলেটা। এত ভাল লাগার কী দরকার ছিল? সাদা শার্টে ওকে কত ভাল লাগে ও কি জানে না? তাও যেন আমাকে পাগল করার জন্য সাদা পড়েছে আজ! জানি তো, একবার ভাল লাগছে বললেই সারা জীবনের জন্য খেপাবে আমাকে! হুহ! কিন্তু আমিও বলব না যে আজ আমি সত্যিই ওর উপর মরেছি!” একই সাথে টের পায় যে সে অন্যদিকে তাকালেও নিবিড় তার উপর থেকে চোখ সরায়নি। ওরা গাড়িতে উঠে বসে। মা নিবিড় আর ঈশিতাকে পিছনে পাঠিয়ে দেন নিঝুমের সাথে। নিঝুম আগেই ঠিক করে রেখেছিল নিবিড়ের পাশে বসবে না, কে কী সন্দেহ করে বসবে, পরে ঝামেলা হবে। তাই সীটের কোণের দিকে সরে যেতে চেষ্টা করে ঈশিতাকে মাঝে রেখে। কিন্তু তার আগেই ভাইবোন তার দুপাশে বসে পড়ে। নিঝুম প্রবল আপত্তি জানায় মাঝে বসা নিয়ে, বলে যে সে জানালার ধারে বসতে চায়। কিন্তু সামনে থেকে মা বলেন আজকের মত মাঝে বসতে একটু কষ্ট করে। আর গাড়িও চলতে শুরু করে দিয়েছে, এখন সীট চেঞ্জ করাও সম্ভব নয়। অগত্যা চুপচাপ নিবিড়ের পাশেই বসে পড়তে হয় তাকে। নিবিড় নীরবে অভিমানী চোখ নিয়ে তাকায় তার দিকে। নিঝুম বুঝতে পারে এ অভিমান কেন। প্রথমত, আজ ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে তার কোন খোঁজ ছিল না, দ্বিতীয়ত, নিবিড় ঠিকই ধরে ফেলেছে যে সে তার পাশে বসতে চায়নি। ইশ! রাগলে কী মায়া মায়া লাগে নিবিড়ের চেহারাটা। নিঝুমের ইচ্ছে হয় গালটা টিপে দেয়।
কিন্তু সবাই আছে, তাই সেই ইচ্ছে দমন করতে হয়। সেও চোখের ভাষায় বুঝিয়ে দেয়, “স্যরি!” তারপর ছোট্ট একটা হাসি দেয়, যে হাসি নিবিড়ের সমস্ত অভিমান ভুলানোর জন্য যথেষ্ট, যে হাসির জন্য নিবিড় সারা পৃথিবীর সাথে যুদ্ধ করতেও দ্বিধা করবে না। নিঝুম চোখ নামিয়ে নেয়। নিবিড় দেখতে থাকে তাকে। অস্বস্তি কাটানোর জন্য পাশে বসে থাকা ঈশিতার সাথে গল্পে মনোযোগী হয় নিঝুম। হঠাৎ ওড়নায় টান পড়ে। নিবিড় টান দিয়েছে। যার অর্থ, “আমার সাথে কথা বল। এভাবে চুপ মেরে থাকার মানে কী?” তিনজন মিলেই আড্ডা শুরু হয় এরপর। এরই মাঝে নিচুস্বরে নিবিড় জানান দেয় যে সে নিঝুমকে ভালবাসে। সরাসরি বলে না। রোমান্টিক একটা মেসেজ লিখে নিঝুমের দিকে ফোন বাড়িয়ে দিয়ে বলে দেখতে। নিঝুম দেখে ফোনটা ফেরত দিয়ে দেয়। কিছু বলেনা। তবে গালের রক্তিম আভা নিবিড়ের চোখ এড়ায় না। মনে মনে ভাবে, “বেশ লাগে লজ্জা পেলে আমার রাণীকে। ”