16-07-2021, 01:18 PM
ওরা অফিসে চলে গেলন. কথাকলি আর প্রশান্ত নিজেদের বাড়ি ফিরলেন.
প্রদীপ যখন বাড়ি ফিরলেন তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে. অন্যদিনের তুলনায় সামান্য তাড়াতাড়ি ফিরেছেন. গুমোট সরে যেতেই উজ্জ্বল সন্ধ্যায় সোমদত্তা প্রদীপের জন্যে নিজের বহুপুরনো রুটিনে ফিরে এসেছেন. প্রদীপের জন্যে আজ স্পেশ্যাল জলখাবার বানিয়েছেন. লুচি আলুর দম. প্রদীপ খুব ভালবাসেন. প্রদীপ ফিরতেই ওর কাছে থেকে ওর ব্যাগ, জামা, জুতো সব নিয়ে জায়গাতে রাখলেন. আগের দিনগুলোর বিষন্নতা মনের কোনো কোণাতেও জমা নেই. সব পরিস্কার হয়ে গেছে. প্রদীপ কোনো ভুল করে নি. ওকে দুর্নাম করার ভয় দেখিয়ে চাকরি বাগাবার তালে ছিল মেয়েটা. মেয়েটার মায়ের সাক্ষী প্রদীপকে জিতিয়ে দিয়েছে. ওই মহিলাকে যা টাকা দিতে হয়েছে সেটা নিয়ে সোমদত্তা মোটেও চিন্তিত নয়. মেয়েটাই নিত, নাহয় এবারে মেয়েটার মা নিল. ব্যাপার তো একই. পরিবারের সবাই মিলে এই নোংরা খেলায় জড়িত. ভাবলেও সোমদত্তার মন কলুষিত হয়. স্নান করতে ইচ্ছা করে.
প্রদীপ বাথরুম থেকে ফিরলে সোমদত্তা আলুর দম আর গরম লুচি দিলেন. প্রদীপ খাওয়া শেষ করলে আরও কয়েকটা সদ্য ভাজা লুচি দিলেন. জোর করে বেশি করে খাওয়ালেন. যেন এইকয় দিন প্রদীপের সাথে কথাবলা বন্ধ করে ওকে যে শাস্তি দিয়েছিলেন, যে ভুল করেছিলেন তা শোধরাবার একটা চেষ্টা করলেন. প্রদীপ স্বাভাবিকভাবে সাংসারিক কথা শুরু করলেও সোমদত্তা সহসা সহজ হতে পারলেন না. নিজের মধ্যে একটা অপরাধবোধ কাজ করতে লাগলো. ভাগ্যিস কলি ছিল. কলি না থাকলে এই মামলায় ওর যে সামান্য ভূমিকা ছিল সেটাও থাকত না. ওই সামান্য ভূমিকা পালন করতে পেরেছেন বলে গ্লানিবোধ কম হচ্ছে. একেবারে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে আজকের দিনে প্রদীপের সামনে মুখ দেখাতে পারতেন না.
টিভি দেখতে দেখতে সোমদত্তা নিজের মনের কথা প্রদীপকে বললেন. ক্ষমা চেয়ে নিলেন ওকে অবিশ্বাস করবার জন্যে, ভুল বুঝবার জন্যে. প্রদীপ ওকে কাছে টেনে নিলেন. কপালে একটা ছোট্ট চুমু এঁকে বোঝালেন সব ঠিক আছে. নিউজ চ্যানেলে প্রদীপের মামলা জিতে যাবার খবর দিচ্ছে. সেখানে সোমদত্তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা গুরুত্বের সাথে প্রচার করা হচ্ছে. ওদের দেখতে ভালো লাগছিল খবরটা.
প্রদীপ বললেন, 'সোম তোমার কাছে আমি কৃতজ্ঞ. তুমি না থাকলে কি হত জানি না.'
সোমদত্তা বললেন, 'ছিঃ ওসব কথা বলতে নেই. তুমি যদি দোষ না করেই থাক তাহলে সাজা পাবে কেন? ওপরওয়ালা আছেন. উনি সব দেখছেন.'
প্রদীপ বললেন, 'ওপরওয়ালার ভরসায় সব সময় থাকা যায় না. কত নির্দোষ লোক সাজা পাচ্ছে আবার দোষী লোকের সাজা হচ্ছে না. তুমি যা করেছ তা আমার কাছে অনেক.'
সোমদত্তা বললেন, 'আমি জানতাম তুমি নির্দোষ. শুধু প্রমান হতে যা দেরী হলো.'
ডিনার শেষ হলে ওরা টিভি দেখছিলেন. সোমদত্তা নিজের পছন্দের সিরিয়াল আজ দেখছেন না. রিমোট প্রদীপের হাতে. খেলা দেখছে. দেখুক. আজ বড় আনন্দের দিন. সোমদত্তা আজ শুধু প্রদীপকেই দেখবেন. অনেক কষ্ট দিয়েছেন এবং পেয়েছেন. একই ঘরে আলাদা থাকা আলাদা ঘরে আলাদা থাকার চেয়ে অনেক বেশি কষ্টের.
প্রদীপ বললেন, 'কথাকলি কি বলছিল?'
সোমদত্তা জিজ্ঞাসা করলেন, 'কখন?'
প্রদীপ বললেন, 'আজ নাকি আমি একটা রোমান্টিক রাত পাব?'
সোমদত্তা বললেন, 'ও একটা অসভ্য!'
প্রদীপ জিজ্ঞাসা করলেন, 'পাব না?'
সোমদত্তা বললেন, 'তুমি বিছানায় যাও. আমি একটু বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসছি.'
ওরা বেডরুমে গেলে প্রদীপ বিছানায় উঠ বসলেন. অনেক দিন বাদে নিজের পুরনো বিছানায় বসে নিজেকে ফিরে পাচ্ছিলেন. রাধা জীবনটা নরক করে ফেলেছিল. প্রদীপ দেখলেন সোমদত্তা ওয়ারড্রব থেকে একটা সেক্সি নাইটি বের করলেন. বিশেষ রোমান্টিক দিনগুলোতে সোমদত্তা ওটা পরেন. অন্য দিন ওকে অনুরোধ করলেও পরেন না. আজ সেই বিশেষ দিনগুলোর একটা. প্রদীপের মনের ময়ুর নেচে উঠলো.
সোমদত্তা বাথরুমে ঢুকতেই স্মার্টফোন থেকে নিজের ই-মেইল দেখলেন. রাধা একটা মেইল পাঠিয়েছে.
"কোর্টের রায়ে আমার সর্বস্ব দিয়ে লড়েও হেরে গেছি. আর লড়ার ক্ষমতা আমার নেই. কিন্তু তার মানে এই নয় যে ঘটনাটা ঘটে নি. জগতের অন্তত তিনজন সত্যি ঘটনা জানে. আপনি, আমি আর ঈশ্বর. কোর্টের রায়ে সত্যি জেতে নি. কিন্তু আপনি নিজের নজরে কি নিজের কাছে একটুও পরে যান নি? যদি না যান তাহলে আপনার মধ্যে মানুষের গুন একটাও বাকি নেই. একটা অমানুষ, লুজ ক্যারেক্টার!"
প্রদীপ দেখলেন বিপজ্জনক মেইল. এটা সোমদত্তার গোচরে এলে সব কিছু চিরতরে হারাবেন. কোর্টের রায় ওকে জেতাতে পারে, কিন্তু জীবনসংসারে ও হেরে যাবেন. যখন মেইলটা ডিলিট করলেন তখন সোমদত্তা বাথরুম থেকে হাসি মুখে ঘরে এলেন.
সমাপ্তি
প্রদীপ যখন বাড়ি ফিরলেন তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে. অন্যদিনের তুলনায় সামান্য তাড়াতাড়ি ফিরেছেন. গুমোট সরে যেতেই উজ্জ্বল সন্ধ্যায় সোমদত্তা প্রদীপের জন্যে নিজের বহুপুরনো রুটিনে ফিরে এসেছেন. প্রদীপের জন্যে আজ স্পেশ্যাল জলখাবার বানিয়েছেন. লুচি আলুর দম. প্রদীপ খুব ভালবাসেন. প্রদীপ ফিরতেই ওর কাছে থেকে ওর ব্যাগ, জামা, জুতো সব নিয়ে জায়গাতে রাখলেন. আগের দিনগুলোর বিষন্নতা মনের কোনো কোণাতেও জমা নেই. সব পরিস্কার হয়ে গেছে. প্রদীপ কোনো ভুল করে নি. ওকে দুর্নাম করার ভয় দেখিয়ে চাকরি বাগাবার তালে ছিল মেয়েটা. মেয়েটার মায়ের সাক্ষী প্রদীপকে জিতিয়ে দিয়েছে. ওই মহিলাকে যা টাকা দিতে হয়েছে সেটা নিয়ে সোমদত্তা মোটেও চিন্তিত নয়. মেয়েটাই নিত, নাহয় এবারে মেয়েটার মা নিল. ব্যাপার তো একই. পরিবারের সবাই মিলে এই নোংরা খেলায় জড়িত. ভাবলেও সোমদত্তার মন কলুষিত হয়. স্নান করতে ইচ্ছা করে.
প্রদীপ বাথরুম থেকে ফিরলে সোমদত্তা আলুর দম আর গরম লুচি দিলেন. প্রদীপ খাওয়া শেষ করলে আরও কয়েকটা সদ্য ভাজা লুচি দিলেন. জোর করে বেশি করে খাওয়ালেন. যেন এইকয় দিন প্রদীপের সাথে কথাবলা বন্ধ করে ওকে যে শাস্তি দিয়েছিলেন, যে ভুল করেছিলেন তা শোধরাবার একটা চেষ্টা করলেন. প্রদীপ স্বাভাবিকভাবে সাংসারিক কথা শুরু করলেও সোমদত্তা সহসা সহজ হতে পারলেন না. নিজের মধ্যে একটা অপরাধবোধ কাজ করতে লাগলো. ভাগ্যিস কলি ছিল. কলি না থাকলে এই মামলায় ওর যে সামান্য ভূমিকা ছিল সেটাও থাকত না. ওই সামান্য ভূমিকা পালন করতে পেরেছেন বলে গ্লানিবোধ কম হচ্ছে. একেবারে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে আজকের দিনে প্রদীপের সামনে মুখ দেখাতে পারতেন না.
টিভি দেখতে দেখতে সোমদত্তা নিজের মনের কথা প্রদীপকে বললেন. ক্ষমা চেয়ে নিলেন ওকে অবিশ্বাস করবার জন্যে, ভুল বুঝবার জন্যে. প্রদীপ ওকে কাছে টেনে নিলেন. কপালে একটা ছোট্ট চুমু এঁকে বোঝালেন সব ঠিক আছে. নিউজ চ্যানেলে প্রদীপের মামলা জিতে যাবার খবর দিচ্ছে. সেখানে সোমদত্তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা গুরুত্বের সাথে প্রচার করা হচ্ছে. ওদের দেখতে ভালো লাগছিল খবরটা.
প্রদীপ বললেন, 'সোম তোমার কাছে আমি কৃতজ্ঞ. তুমি না থাকলে কি হত জানি না.'
সোমদত্তা বললেন, 'ছিঃ ওসব কথা বলতে নেই. তুমি যদি দোষ না করেই থাক তাহলে সাজা পাবে কেন? ওপরওয়ালা আছেন. উনি সব দেখছেন.'
প্রদীপ বললেন, 'ওপরওয়ালার ভরসায় সব সময় থাকা যায় না. কত নির্দোষ লোক সাজা পাচ্ছে আবার দোষী লোকের সাজা হচ্ছে না. তুমি যা করেছ তা আমার কাছে অনেক.'
সোমদত্তা বললেন, 'আমি জানতাম তুমি নির্দোষ. শুধু প্রমান হতে যা দেরী হলো.'
ডিনার শেষ হলে ওরা টিভি দেখছিলেন. সোমদত্তা নিজের পছন্দের সিরিয়াল আজ দেখছেন না. রিমোট প্রদীপের হাতে. খেলা দেখছে. দেখুক. আজ বড় আনন্দের দিন. সোমদত্তা আজ শুধু প্রদীপকেই দেখবেন. অনেক কষ্ট দিয়েছেন এবং পেয়েছেন. একই ঘরে আলাদা থাকা আলাদা ঘরে আলাদা থাকার চেয়ে অনেক বেশি কষ্টের.
প্রদীপ বললেন, 'কথাকলি কি বলছিল?'
সোমদত্তা জিজ্ঞাসা করলেন, 'কখন?'
প্রদীপ বললেন, 'আজ নাকি আমি একটা রোমান্টিক রাত পাব?'
সোমদত্তা বললেন, 'ও একটা অসভ্য!'
প্রদীপ জিজ্ঞাসা করলেন, 'পাব না?'
সোমদত্তা বললেন, 'তুমি বিছানায় যাও. আমি একটু বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসছি.'
ওরা বেডরুমে গেলে প্রদীপ বিছানায় উঠ বসলেন. অনেক দিন বাদে নিজের পুরনো বিছানায় বসে নিজেকে ফিরে পাচ্ছিলেন. রাধা জীবনটা নরক করে ফেলেছিল. প্রদীপ দেখলেন সোমদত্তা ওয়ারড্রব থেকে একটা সেক্সি নাইটি বের করলেন. বিশেষ রোমান্টিক দিনগুলোতে সোমদত্তা ওটা পরেন. অন্য দিন ওকে অনুরোধ করলেও পরেন না. আজ সেই বিশেষ দিনগুলোর একটা. প্রদীপের মনের ময়ুর নেচে উঠলো.
সোমদত্তা বাথরুমে ঢুকতেই স্মার্টফোন থেকে নিজের ই-মেইল দেখলেন. রাধা একটা মেইল পাঠিয়েছে.
"কোর্টের রায়ে আমার সর্বস্ব দিয়ে লড়েও হেরে গেছি. আর লড়ার ক্ষমতা আমার নেই. কিন্তু তার মানে এই নয় যে ঘটনাটা ঘটে নি. জগতের অন্তত তিনজন সত্যি ঘটনা জানে. আপনি, আমি আর ঈশ্বর. কোর্টের রায়ে সত্যি জেতে নি. কিন্তু আপনি নিজের নজরে কি নিজের কাছে একটুও পরে যান নি? যদি না যান তাহলে আপনার মধ্যে মানুষের গুন একটাও বাকি নেই. একটা অমানুষ, লুজ ক্যারেক্টার!"
প্রদীপ দেখলেন বিপজ্জনক মেইল. এটা সোমদত্তার গোচরে এলে সব কিছু চিরতরে হারাবেন. কোর্টের রায় ওকে জেতাতে পারে, কিন্তু জীবনসংসারে ও হেরে যাবেন. যখন মেইলটা ডিলিট করলেন তখন সোমদত্তা বাথরুম থেকে হাসি মুখে ঘরে এলেন.
সমাপ্তি