Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance আমি সীমাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারলাম না by monirul
#7
সীমা বলছেঃ

মা আমাকে পরামর্শ দিলো, এসএসসি টা দিয়ে নার্সিং ট্রেনিং করার মেয়েটা বড় হয়ে উঠছে, ওকে মানুষ করতে হবে মা আর কয়দিন, আমাকেই তো সবটা পথ পাড়ি দিতে হবে কিন্তু তোমার সাহায্য ছাড়া এতোটা পথ আমি একা চলতে পারবো না তোমাকে আঘাত করেছিলাম, কিন্তু ভিতর থেকে বুঝতে পারছিলাম, আমি তোমাকেই ভালবাসি, নাহলে দুনিয়ায় এতো মানুষ থাকতে আমার সকল সত্ত্বা জুড়ে শুধু তুমিই থাকবে কেন? তোমাকে খুঁজছিলাম, তোমাদের পুরানো বাড়িতে গিয়েছিলাম, তোমরা নতুন বাড়ি করেছ, সেখানেও গিয়েছিলাম কিন্তু ঢুকতে সাহস হয়নি হঠাৎ একদিন সন্ধ্যেবেলা তোমাকে যেতে দেখলাম এই দিক দিয়ে সেদিন থেকে রোজ আমি বিকেল থেকে বারান্দায় বসে থাকি তুমি আবার কবে আসবে এই আশায় আজ তোমাকে দুর থেকে দেখেই মৌকে পাঠিয়েছিলাম, তোমাকে ধরে আনার জন্য জানতাম, ঠিক পারবে, কারন ওর ঠিকানা তো ওকেই খুঁজে নিতে হবে

 
 
এতক্ষণ ধরে একাগ্রচিত্তে আমি সীমার কষ্টের কাহিনী শুনছিলাম ওর কষ্টের কথা শুনে আমার চোখও ভিজে উঠছিল সীমা করুণভাবে বললো, “মনি-দা, তুমি কি পেরেছ আমাকে ক্ষমা করতে? আমি কি তোমার ক্ষমা পাওয়ার অধিকারটুকুও হারিয়ে ফেলেছি?” সীমা হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো আমি বললাম, “সীমা, প্লিজ কেঁদোনা, লক্ষ্মীটি আর কেঁদোনা, অনেক কেঁদেছ জীবনে আর নয়, আর আমি তোমাকে কাঁদতে দেবো না সীমা বললো, “আমি জানতাম, তোমার মতো বড় মনের মানুষ দুনিয়ায় খুব কম আছে, তুমি তোমার সীমাকে অবজ্ঞা করতে পারবে না, আমার বিশ্বাস ছিল, আমার প্রতি তোমার ভালবাসা এখনো অটুট আছে আমার মেয়েটাকে একটু দেখো, আর ওকে সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর মতো মর্যাদাটুকু দাও, জীবনে আমার আর কিছু চাইনে তবুও আমি কঠিনভাবেই বললাম, “ঠিক আছে সীমা তুমি যা চাইবে তাই হবে কিন্তু মনে রেখ এর কোন কিছুই তোমার জন্য নয়, আমি করবো তোমার চাঁদের মতো ফুটফুটে মেয়েটার জন্য, যদিও একটা সীমারের ঔরসে জন্মেছে, কিন্তু তোমার গর্ভ তো ওর ঠিকানা

সীমা মৃদু হেসে বললো, “ঠিক আছে, তাতেই চলবে, তুমি বস, একটু চা খেয়ে যেও সীমা মৃত্তিকাকে ডেকে দিয়ে চলে গেল আমি মৃত্তিকার সাথে গল্প করতে করতে সীমা চা করে নিয়ে এলে আমি চা খেয়ে সেদিনের মতো বিদায় নিলাম দিন পর আমি আবার সীমার কাছে গেলাম সেদিন মমতা মাসী বাসায় ছিলেন, তিনিও আমাকে সীমাকে ক্ষমা করে দিয়ে ওকে সাহায্য করতে অনুরোধ করলেন মৃত্তিকা আমাকে পেয়ে খুব খুশী, আমি ওর জন্যে কিছু চকলেট নিয়ে গিয়েছিলাম, সেগুলি পেয়ে আনন্দে লাফাতে লাগলো, ওর ওরকম বাধভাঙা আনন্দ দেখে আমার চোখে পানি এসে গেল কী দুঃখী মেয়েটা, জীবনে বাবার আদর পেল না মনে মনে সংকল্প করলাম, যতদিন পারি আমিই ওকে বাবার আদর দেবো

সবকিছু খুব তাড়াতাড়ি মিটে গেল, আমি সীমাকে পড়ানো শুরু করলাম এই একটা ঘটনায় পুরো পরিবার যেন আবার জেগে উঠলো অশোক অষ্ট্রেলিয়াতে সেটেল করেছে, বিয়েও করেছে, আর দেশে আসবে না বলে জানিয়েছে, অপদার্থ! এরই মধ্যে সীমার রেজিষ্ট্রেশন, কলেজে ভর্তি এবং সেইসাথে নিয়মিত পড়ানো, এভাবে এক মাসের মধ্যেই আমার আর সীমার মাঝে যে জড়তাটুকু ছিল তা কেটে গিয়ে আমরা আবার ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠলাম মাঝে মাঝে সীমা সব ভুলে আমার মুখের দিকে নিবিষ্ট মনে তাকিয়ে থাকতো, আমি ডাকলে প্রথমে সাড়া পেতাম না, পরে ওকে ধাক্কা দিয়ে ডাকলে যেন হঠাৎ সম্বিৎ ফিরে পেয়েছে এমনভাবে নড়েচড়ে বসতো, কেন যে এতো উদাস হতো বুঝতাম না তবে আমার নৈকট্য পাওয়া এবং আমাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য সবসময় উম্মুখ হয়ে থাকতো
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: আমি সীমাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারলাম না by monirul - by ddey333 - 16-07-2021, 11:31 AM



Users browsing this thread: