15-07-2021, 06:07 PM
লিফট এসে থামলে ওরা লিফটে ঢুকলো. ভদ্রমহিলার পিছনে রাধা. উনি আট তলার বোতাম টিপে দিয়ে কথা চালিয়ে গেলেন, 'একটা কথা সত্যি করে বলত. সত্যি তুমি ইনোসেন্ট? ..... নাহলে তুমি আমাকে ফোন করতে না. তুমি একটা দুষ্টু হয়েছ. আমার যা করবার আমি করব. আমাদের এন জি ও এসব মহিলা এসল্ট নিয়ে কাজ করে না. পথশিশু আমাদের প্রজেক্ট. আর জানত যে তাতে কত টাকা লাগে!'
লিফট আট তলায় থামলে ওরা বেরোলো. ওই মহিলার পিছনে রাধা ওর কথা শুনতে শুনতে এগলো. উনিও সুপর্ণা দির অফিসের দিকে যাচ্ছেন.
'তোমাকে প্রটেক্ট করাটাই এই মিটিং-এর উদ্দেশ্য. ওই মেয়েটার উপকার করে আমাদের কি হবে? তার চেয়ে আমরা যাতে থ্রি স্টার হোটেলের বদলে ফাইভ স্টারে মিটিং করতে পারব সেটা বেশি ভালো না? একেবারে চিন্তা কর না. বস্তির মেয়েছেলে বস্তির মেয়েছেলেই থাকবে. আচ্ছা আমি চলে এসেছি. ছাড়লাম. বাই.'
রাধা শুনে চমকে গেল. কি ভাষা এই ভদ্রমহিলার. আর যা বুঝলো এরা ওকে কিছু সাহায্য করবেন না. এই মহিলা যদি ওদের এক্সপার্ট হয় তাহলে তো সব কিছু খনিজ জলের মত পরিস্কার.
ওই মহিলা সুপর্ণাদির অফিসে ঢুকে গেলেন. পিছন পিছন রাধা.
সুপর্ণা বলে উঠলেন, 'এইত আমাদের এক্সপার্ট, মীনাক্ষী. ও, রাধা তুমিও এসে গেছ. কাগজটা দাও, দেখি কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি আছে কিনা.'
রাধা আর এখানে থাকার মানে পায় না. সব সাজানো. ওকে ধোঁকা দেওয়ার পরিকল্পনা. যাতে ওর কোনো বিচার না হয় সেটা সুনিশ্চিত করতে এরা একত্রিত হয়েছে. এদের বিরুদ্ধে কি লড়াই করবে? এরা তো ভিতর থেকে খোকলা, খাঁজা. সব কিছু লোক দেখানো. বড় লোকের বউ বা বুড়োদের সময় কাটনোর একটা উপকরণ হতে পারে রাধা. কিন্তু সত্যিকারের কোনো সাহায্য এরা করবে না. মিটিং, মিটিং-এ গেলা, সামাজিকভাবে দুর্বলদের সেবা করবার ভান করবে, আর কিছু না. শুধু সিনেমা নয়, বাস্তবিকভাবেই এদের দেখা পেল রাধা. কত নির্মম এরা!! মানুষের ভাবাবেগ নিয়ে ব্যবসা করে. তাতে আর্থিক লাভ হয় কিনা নিশ্চিত নয়, কিন্তু ভুক্তভুগীর যন্ত্রণার কোনো লাঘব এরা করে না.
সুপর্ণা রাধাকে আবার বললেন, 'কি দাও কাগজটা.'
রাধা বলল, 'কেন?'
সবাই অবাক. মীনাক্ষী লিফটে বা তার আশে পাশে যখন রাধা ছিল তাকে লক্ষ্য করবার কষ্ট করেন নি. কেতাদুরস্ত না হলে চোখে পড়ে না. মলিন বসনা রাধা চোখে পড়ে নি.
সুপর্ণা অবাক হয়ে বললেন, 'আরে এক্সপার্ট তো এসে গেছে. ও দেখুক, তোমার কোনো সাহায্য হয় কিনা সেটা বোঝা যাবে.'
রাধা স্বাভাবিক স্বরে বলল, 'আপনাদের সাহায্যের মুখে মুতি. কোনো দরকার নেই সাহায্যের. আমি নিজেরটা নিজে বুঝে নেব. আর হ্যা বস্তির মেয়ে বলে ভাববেন না যে ইংরাজি জানি না বা তার মানে বুঝি না.' শেষের কথাগুলো সুধাকরের দিকে তাকিয়ে বলল. রাধা গটগট করে বেরিয়ে গেল.
সোমদত্তা ফোন তুলে বললেন, 'হ্যা বল কথাকলি.'
কথাবলি বললেন, 'কি ব্যাপার রে তোর, কোনো পাত্তা নেই.'
সোমদত্তা-কিছু না.
কথাবলি-তাহলে এমন গুটিয়ে আছিস কেন?
সোমদত্তা-শরীরটা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না.
কথাবলি-কি হয়েছে?
সোমদত্তা-তেমন কিছু না.
কথাবলি-তাহলে?
সোমদত্তা-কি তাহলে?
কথাবলি-শোন, আমি প্রদীপদার ব্যাপারে কথা বলতে চাই. তুই কত দিন এড়িয়ে এড়িয়ে চলবি?
সোমদত্তা-আমার ভালো লাগছে না এই ব্যাপারে কথা বলতে কলি.
কথাবলি-আমার খুব আনন্দ হচ্ছে. এই সময়ে তোকে প্রদীপদার পাশে দাঁড়াতে হবে. তুই সাথে না থাকলে ও একা হয়ে পড়বে. মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়বে.
সোমদত্তা-আমার কিছু করবার নেই. ওসব করবার আগে বাকি কিছু ভাবতে পারে নি?
কথাবলি-তুই এ কথা বলছিস? সোম তুই বলছিস? প্রদীপদাকে তুই চিনিস না? তুই বিশ্বাস করতে পারিস প্রদীপদা কোনো মেয়ের সম্মানহানি করেছে?
সোমদত্তা-আমি জানি না কলি. ও প্রমান করুক, তারপর দেখা যাবে.
লিফট আট তলায় থামলে ওরা বেরোলো. ওই মহিলার পিছনে রাধা ওর কথা শুনতে শুনতে এগলো. উনিও সুপর্ণা দির অফিসের দিকে যাচ্ছেন.
'তোমাকে প্রটেক্ট করাটাই এই মিটিং-এর উদ্দেশ্য. ওই মেয়েটার উপকার করে আমাদের কি হবে? তার চেয়ে আমরা যাতে থ্রি স্টার হোটেলের বদলে ফাইভ স্টারে মিটিং করতে পারব সেটা বেশি ভালো না? একেবারে চিন্তা কর না. বস্তির মেয়েছেলে বস্তির মেয়েছেলেই থাকবে. আচ্ছা আমি চলে এসেছি. ছাড়লাম. বাই.'
রাধা শুনে চমকে গেল. কি ভাষা এই ভদ্রমহিলার. আর যা বুঝলো এরা ওকে কিছু সাহায্য করবেন না. এই মহিলা যদি ওদের এক্সপার্ট হয় তাহলে তো সব কিছু খনিজ জলের মত পরিস্কার.
ওই মহিলা সুপর্ণাদির অফিসে ঢুকে গেলেন. পিছন পিছন রাধা.
সুপর্ণা বলে উঠলেন, 'এইত আমাদের এক্সপার্ট, মীনাক্ষী. ও, রাধা তুমিও এসে গেছ. কাগজটা দাও, দেখি কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি আছে কিনা.'
রাধা আর এখানে থাকার মানে পায় না. সব সাজানো. ওকে ধোঁকা দেওয়ার পরিকল্পনা. যাতে ওর কোনো বিচার না হয় সেটা সুনিশ্চিত করতে এরা একত্রিত হয়েছে. এদের বিরুদ্ধে কি লড়াই করবে? এরা তো ভিতর থেকে খোকলা, খাঁজা. সব কিছু লোক দেখানো. বড় লোকের বউ বা বুড়োদের সময় কাটনোর একটা উপকরণ হতে পারে রাধা. কিন্তু সত্যিকারের কোনো সাহায্য এরা করবে না. মিটিং, মিটিং-এ গেলা, সামাজিকভাবে দুর্বলদের সেবা করবার ভান করবে, আর কিছু না. শুধু সিনেমা নয়, বাস্তবিকভাবেই এদের দেখা পেল রাধা. কত নির্মম এরা!! মানুষের ভাবাবেগ নিয়ে ব্যবসা করে. তাতে আর্থিক লাভ হয় কিনা নিশ্চিত নয়, কিন্তু ভুক্তভুগীর যন্ত্রণার কোনো লাঘব এরা করে না.
সুপর্ণা রাধাকে আবার বললেন, 'কি দাও কাগজটা.'
রাধা বলল, 'কেন?'
সবাই অবাক. মীনাক্ষী লিফটে বা তার আশে পাশে যখন রাধা ছিল তাকে লক্ষ্য করবার কষ্ট করেন নি. কেতাদুরস্ত না হলে চোখে পড়ে না. মলিন বসনা রাধা চোখে পড়ে নি.
সুপর্ণা অবাক হয়ে বললেন, 'আরে এক্সপার্ট তো এসে গেছে. ও দেখুক, তোমার কোনো সাহায্য হয় কিনা সেটা বোঝা যাবে.'
রাধা স্বাভাবিক স্বরে বলল, 'আপনাদের সাহায্যের মুখে মুতি. কোনো দরকার নেই সাহায্যের. আমি নিজেরটা নিজে বুঝে নেব. আর হ্যা বস্তির মেয়ে বলে ভাববেন না যে ইংরাজি জানি না বা তার মানে বুঝি না.' শেষের কথাগুলো সুধাকরের দিকে তাকিয়ে বলল. রাধা গটগট করে বেরিয়ে গেল.
সোমদত্তা ফোন তুলে বললেন, 'হ্যা বল কথাকলি.'
কথাবলি বললেন, 'কি ব্যাপার রে তোর, কোনো পাত্তা নেই.'
সোমদত্তা-কিছু না.
কথাবলি-তাহলে এমন গুটিয়ে আছিস কেন?
সোমদত্তা-শরীরটা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না.
কথাবলি-কি হয়েছে?
সোমদত্তা-তেমন কিছু না.
কথাবলি-তাহলে?
সোমদত্তা-কি তাহলে?
কথাবলি-শোন, আমি প্রদীপদার ব্যাপারে কথা বলতে চাই. তুই কত দিন এড়িয়ে এড়িয়ে চলবি?
সোমদত্তা-আমার ভালো লাগছে না এই ব্যাপারে কথা বলতে কলি.
কথাবলি-আমার খুব আনন্দ হচ্ছে. এই সময়ে তোকে প্রদীপদার পাশে দাঁড়াতে হবে. তুই সাথে না থাকলে ও একা হয়ে পড়বে. মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়বে.
সোমদত্তা-আমার কিছু করবার নেই. ওসব করবার আগে বাকি কিছু ভাবতে পারে নি?
কথাবলি-তুই এ কথা বলছিস? সোম তুই বলছিস? প্রদীপদাকে তুই চিনিস না? তুই বিশ্বাস করতে পারিস প্রদীপদা কোনো মেয়ের সম্মানহানি করেছে?
সোমদত্তা-আমি জানি না কলি. ও প্রমান করুক, তারপর দেখা যাবে.