15-07-2021, 11:59 AM
আমি জঙ্গলের সেই মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। অন্ধকারের লেশ মাত্র কোথাও নেই। জায়গাটা আলোতে সেজে উঠেছে যেন। মন্দিরের সামনে দাদু দাঁড়িয়ে, হ্যাঁ আমার দাদু সেই ছোটবেলায় যেমনটা দেখেছিলাম ঠিক তেমনটা। আলোর ছটা বেরোচ্ছে ওনার শরীর থেকে। সাদা আলখাল্লায় দাদুকে মায়াবী মনে হচ্ছে।এক মুখ সাদা দাড়িতে মুখে একটা সরলতার হাসি লেগে রয়েছে। আমি কিছু বলতে গেলাম পারলাম না। আমি কাছে এগিয়ে যেতেই উনি শিবলিঙ্গ ও তীরশূলের সেই বেদীর কাছে উপস্থিত হলেন। হাতটা উপরে তুলে শূন্যে একবার নাড়িয়ে দিলেন বেদী আপনা থেকেই ঘুরতে শুরু করলো। আপনা থেকেই একবার সামনে একবার পিছনে আবার একবার সামনে ঘুরে থামার সঙ্গে সঙ্গে কুঁয়োর ভিতর ঘর ঘর শব্দে হতে লাগলো। ঠিক যেমন সাদা মেঘ ভেসে চলে সেইভাবে ভেসে চললেন দাদু সাথে আমিও ওনার পিছু পিছু ভেসে চলেছি। মাটিতে পা নেই তবু সিঁড়ি দিয়ে নামছি। শেষ ধাপে পৌছে আবার হাতটা তুলে ধরলো দাদু, দশ নম্বর পাথরটা আপনা থেকে ঢুকে গিয়ে যাওয়ার রাস্তা খুলে গেলো। মাথা নীচু করতে হলোনা সোজা ভাবে ভেসে ভেসেই ভিতরে প্রবেশ করলাম। অবাক হলাম একটা বিষয়ে কোথাও এতটুকু অন্ধকারের লেশমাত্র নেই, সবদিকেই সাদা স্নিগ্ধ আলোতে ছেয়ে আছে। নিলা যে ফোকরটায় ছিলো সেখানে এগিয়ে গেলো দাদু। ফোকরের মুখে গোল হয়ে যে লেখাটা পাথরের ওপর খোদাই করা ছিলো সেটা দেখলাম এখন বেশ উজ্জ্বল আলোতে ভরে উঠেছে। দাদু সেই লেখার দিকেই নির্দেশ করলো। লেখার দিকে দেখতে দেখতে কেমন মায়াচ্ছন্ন হয়ে গেলাম লেখার সাদা আলোয় ডুবে গেলাম আমি।
ভাস্কো ভাস্কো ভাস্কো ভাস্কো...... একটানা একটা কন্ঠস্বর কানের কাছে বেজে চলেছে। আস্তে আস্তে চোখটা খুললাম। মাথাটা এখনও ঝিমঝিম করছে। আমি এখন কোথায়? কীভাবে এখানে এলাম? প্রথমটা কিছুই মনে করতে পারলাম না। শরীরটাকে একটু নারাবার চেষ্টা করলাম, পারলাম না। মেঝেতে হুমড়ি খেয়ে পরে আছি হাতটা পিছন থেকে বাঁধা, পাটাও বাঁধা।
একে একে সব কথা মনে পড়তে লাগলো নিলা পাওয়া, রবীনরা আমাদের ওপর হামলা করা। আমি বুঝতেই পারছিনা ওই জায়গার হদিশ ওরা পেলো কি করে, যে জায়গার কথা মাত্র দুজন জানতো ঠাকুমা আর মোক্তার। এদের মধ্যেই কেউ কি কখনো কাউকে বলেছে কিন্তু ঠাকুমার পক্ষে বলাটা ত সম্ভব নয়।তবে কি মোক্তার? না, এ হতে পারেনা।
তারপর একটা তীরের মত জিনিস দিয়ে মারা। ওই বাক্সটা, ওটা এখন কোথায়? মশালের আলোতে ঠিকমত দেখা হয়ে ওঠেনি নিলাটাকে। আর আর দাদুকে দেখলাম, তবে কি সেটা স্বপ্ন?
কতক্ষন এভাবে পরেছিলাম জানিনা। হঠাৎ দরজার কাছে খুট করে একটা শব্দ হতে বুঝলাম কেউ দরজার তালা খুলছে। দরজা খুলে যে দুজন ঢুকলো তাদের দেখে অবাক হয়ে গেলাম। আমি কোনদিন কল্পনাও করিনি এদের দুজনকে কোনদিন একসাথে দেখতে পাবো।
একজন আমার শয়তান কাকা অন্যজন মুক্তর মা। সত্যি বলতে হতভম্ব হয়ে গেলাম প্রথমটায়।
-- কি খুব অবাক হচ্ছো তাইনা একে দেখে। আসলে কি জানো তুমি এখনো বাচ্চা আছো। এই নাটকটা যখন শুরু হয় তখন তুমি নিতান্তই শিশু। আর আজ, হ্যাঁ আজ, আমার এত দিনের প্রতিক্ষার পরে আজ আমি এই পুরো নাটকটা শেষ করবো। কতদিন যে এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করেছি তা তোমার ভাবনাতেই নেই।
আমি একদৃষ্টে মুক্তর মায়ের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। ইনি কি ধরনের মহিলা। আমি কোনদিন ভাবতেও পারিনি, শেষমেষ ইনি। কেন করলেন এসব? একটা কথা না জিজ্ঞেস করে পারলাম না -- নিলা ত পেয়ে গেছেন তাহলে আমায় ধরে রেখেছেন কেন।
-- শুধু নিলা পেলেই ত আমার চলবেনা ছোকরা। সাথে যে আরো কিছু চাই। হ্যাঁ, আর সেটা শুধু তুমি দিতে পারবে। কি জানো ? তোমার রক্ত তোমার জীবন। তুমি কি ভেবেছো আমি নিলার আসল শক্তির কথা জানিনা।
-- মানে?
-- মানে ত এখানে পরিষ্কারই। আচ্ছা শোন তবে। বাবা মারা যাবার দিন লুকিয়ে আমি কিছু কথা শুনে অবাক হই, ওই নিলা। বাবা আমার নামে যতটুকু সম্পত্তি রেখে গেলো তাতে আমার মন ভরলোনা। শেষমেষ নিলাটার জন্য উঠে পড়ে লাগলাম। কিন্তু তাতেও ব্যার্থ। শেষে কিছু প্ল্যান করলাম। এই পৃথিবীতে দুটো লোক নিলার খবর জানতো এক আমার মা অন্যজন মোক্তার। মাকে জিজ্ঞেস করতে গেলাম বললোনা উপরন্তু অপমান করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে চাইলো। আমারই ভুলে মা মারা গেলো। আমি সত্যি বলতে মাকে আঘাত করতে চাইনি কিন্তু কি করে যে কি হয়ে গেলো। যাকগে যা বলছিলাম ওখানে ব্যার্থ হওয়ার পর আমি মোক্তারের কাছ থেকে জানবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু ও যে কতবড় প্রভুভক্ত তা আর বলার নয়। জান দিয়ে দেবে তবু আমার কাছে মুখ খুলতে রাজি নয়। অবশ্য জান ওকে দিতেই হলো সেই। বুড়ো বহুত জালিয়েছে আমায়। তারপর মাস্টার স্ট্রোক দিয়ে আমি এখানেই বাজি মাত করলাম। একে পাঠালাম তখন মোক্তারের কাছে, এ আমারই স্ত্রী রুক্মীনি। ও আস্তে আস্তে সব খবর বার করে দিলো আমায়। বুড়ো, বউয়ের ভালোবাসার জালে জড়িয়ে সব কথা উগড়ে দিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তোমাদের হারিয়ে ফেললাম, বাধ্য হয়ে আমি মায়ানমার চলে গেলাম নিলার সম্বন্ধে আরো কিছু খোঁজ করতে। ওখানে এক সাধুর কাছ থেকে ওই নিলার সম্বন্ধে একটা অদ্ভুত কথা শুনলাম। বর্তমান মালিকের রক্তে নিলাকে স্নান করিয়ে তাকে হত্যা করলে হত্যাকারীকে নিলা মালিক রুপে স্বীকার করবে।আমি সেই শক্তির অধিকারী হতে চাই। তাতে আমায় যা করতে হয় করবো। রবীনকে কাজে লাগালাম তোমায় খুঁজে বার করতে পৃথিবীর সব জায়গায় তোমাদের খুঁজতে লাগলাম।শেষে দিল্লিতে দেখা পেলাম। লুকিয়ে সব খোঁজখবর নিয়ে নিলাম তোমার। শুধু একটু সুযোগ খুঁজছিলাম। পেয়েও গেলাম, বিরাতে লোক পাঠিয়ে তোমায় তুলে নিয়ে এসেছিলাম। তারপর আশাকরি সবটাই জানো।
এখন নিলা আমার হাতে কাল সকালেই এখান থেকে রওনা হব। আমি দুঃখিত যে তোমায় মরতে হবে তবে কি আর করার।
ঘর কাঁপিয়ে একটা অট্টহাসি হেঁসে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো ওরা।
ভাস্কো ভাস্কো ভাস্কো ভাস্কো...... একটানা একটা কন্ঠস্বর কানের কাছে বেজে চলেছে। আস্তে আস্তে চোখটা খুললাম। মাথাটা এখনও ঝিমঝিম করছে। আমি এখন কোথায়? কীভাবে এখানে এলাম? প্রথমটা কিছুই মনে করতে পারলাম না। শরীরটাকে একটু নারাবার চেষ্টা করলাম, পারলাম না। মেঝেতে হুমড়ি খেয়ে পরে আছি হাতটা পিছন থেকে বাঁধা, পাটাও বাঁধা।
একে একে সব কথা মনে পড়তে লাগলো নিলা পাওয়া, রবীনরা আমাদের ওপর হামলা করা। আমি বুঝতেই পারছিনা ওই জায়গার হদিশ ওরা পেলো কি করে, যে জায়গার কথা মাত্র দুজন জানতো ঠাকুমা আর মোক্তার। এদের মধ্যেই কেউ কি কখনো কাউকে বলেছে কিন্তু ঠাকুমার পক্ষে বলাটা ত সম্ভব নয়।তবে কি মোক্তার? না, এ হতে পারেনা।
তারপর একটা তীরের মত জিনিস দিয়ে মারা। ওই বাক্সটা, ওটা এখন কোথায়? মশালের আলোতে ঠিকমত দেখা হয়ে ওঠেনি নিলাটাকে। আর আর দাদুকে দেখলাম, তবে কি সেটা স্বপ্ন?
কতক্ষন এভাবে পরেছিলাম জানিনা। হঠাৎ দরজার কাছে খুট করে একটা শব্দ হতে বুঝলাম কেউ দরজার তালা খুলছে। দরজা খুলে যে দুজন ঢুকলো তাদের দেখে অবাক হয়ে গেলাম। আমি কোনদিন কল্পনাও করিনি এদের দুজনকে কোনদিন একসাথে দেখতে পাবো।
একজন আমার শয়তান কাকা অন্যজন মুক্তর মা। সত্যি বলতে হতভম্ব হয়ে গেলাম প্রথমটায়।
-- কি খুব অবাক হচ্ছো তাইনা একে দেখে। আসলে কি জানো তুমি এখনো বাচ্চা আছো। এই নাটকটা যখন শুরু হয় তখন তুমি নিতান্তই শিশু। আর আজ, হ্যাঁ আজ, আমার এত দিনের প্রতিক্ষার পরে আজ আমি এই পুরো নাটকটা শেষ করবো। কতদিন যে এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করেছি তা তোমার ভাবনাতেই নেই।
আমি একদৃষ্টে মুক্তর মায়ের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। ইনি কি ধরনের মহিলা। আমি কোনদিন ভাবতেও পারিনি, শেষমেষ ইনি। কেন করলেন এসব? একটা কথা না জিজ্ঞেস করে পারলাম না -- নিলা ত পেয়ে গেছেন তাহলে আমায় ধরে রেখেছেন কেন।
-- শুধু নিলা পেলেই ত আমার চলবেনা ছোকরা। সাথে যে আরো কিছু চাই। হ্যাঁ, আর সেটা শুধু তুমি দিতে পারবে। কি জানো ? তোমার রক্ত তোমার জীবন। তুমি কি ভেবেছো আমি নিলার আসল শক্তির কথা জানিনা।
-- মানে?
-- মানে ত এখানে পরিষ্কারই। আচ্ছা শোন তবে। বাবা মারা যাবার দিন লুকিয়ে আমি কিছু কথা শুনে অবাক হই, ওই নিলা। বাবা আমার নামে যতটুকু সম্পত্তি রেখে গেলো তাতে আমার মন ভরলোনা। শেষমেষ নিলাটার জন্য উঠে পড়ে লাগলাম। কিন্তু তাতেও ব্যার্থ। শেষে কিছু প্ল্যান করলাম। এই পৃথিবীতে দুটো লোক নিলার খবর জানতো এক আমার মা অন্যজন মোক্তার। মাকে জিজ্ঞেস করতে গেলাম বললোনা উপরন্তু অপমান করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে চাইলো। আমারই ভুলে মা মারা গেলো। আমি সত্যি বলতে মাকে আঘাত করতে চাইনি কিন্তু কি করে যে কি হয়ে গেলো। যাকগে যা বলছিলাম ওখানে ব্যার্থ হওয়ার পর আমি মোক্তারের কাছ থেকে জানবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু ও যে কতবড় প্রভুভক্ত তা আর বলার নয়। জান দিয়ে দেবে তবু আমার কাছে মুখ খুলতে রাজি নয়। অবশ্য জান ওকে দিতেই হলো সেই। বুড়ো বহুত জালিয়েছে আমায়। তারপর মাস্টার স্ট্রোক দিয়ে আমি এখানেই বাজি মাত করলাম। একে পাঠালাম তখন মোক্তারের কাছে, এ আমারই স্ত্রী রুক্মীনি। ও আস্তে আস্তে সব খবর বার করে দিলো আমায়। বুড়ো, বউয়ের ভালোবাসার জালে জড়িয়ে সব কথা উগড়ে দিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তোমাদের হারিয়ে ফেললাম, বাধ্য হয়ে আমি মায়ানমার চলে গেলাম নিলার সম্বন্ধে আরো কিছু খোঁজ করতে। ওখানে এক সাধুর কাছ থেকে ওই নিলার সম্বন্ধে একটা অদ্ভুত কথা শুনলাম। বর্তমান মালিকের রক্তে নিলাকে স্নান করিয়ে তাকে হত্যা করলে হত্যাকারীকে নিলা মালিক রুপে স্বীকার করবে।আমি সেই শক্তির অধিকারী হতে চাই। তাতে আমায় যা করতে হয় করবো। রবীনকে কাজে লাগালাম তোমায় খুঁজে বার করতে পৃথিবীর সব জায়গায় তোমাদের খুঁজতে লাগলাম।শেষে দিল্লিতে দেখা পেলাম। লুকিয়ে সব খোঁজখবর নিয়ে নিলাম তোমার। শুধু একটু সুযোগ খুঁজছিলাম। পেয়েও গেলাম, বিরাতে লোক পাঠিয়ে তোমায় তুলে নিয়ে এসেছিলাম। তারপর আশাকরি সবটাই জানো।
এখন নিলা আমার হাতে কাল সকালেই এখান থেকে রওনা হব। আমি দুঃখিত যে তোমায় মরতে হবে তবে কি আর করার।
ঘর কাঁপিয়ে একটা অট্টহাসি হেঁসে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো ওরা।