11-07-2021, 12:38 PM
সতেরো
মা’র কাছ থেকে শিখার আগমনের খবর পেয়ে শুভেন্দু এমন করতে লাগল, যেন এখুনি শিখাকে গিয়ে ওই নিয়ে আসে একতলা থেকে।
-কই দেখি দেখি, বলে ও বারান্দার দিকে ছুট লাগালো। আমি বিছানায় বসে বিদিশাকে বলছি, ‘যাও বিদিশা, শিখাকে তুমিই ভেতরে নিয়ে এসো। মা’ও ততক্ষণে বুঝতে পেরে গেছে ব্যাপারটা কি ঘটতে চলেছে। আমাকে ইশারা করে মা বলল, ‘এটা কি শুভেন্দুর প্রেমিকা?
আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, ওর নাম শিখা। আমাকে দেখতে ও এখানে এসেছে।’
বলতে বলতেই কলিংবেলের আওয়াজ হল। শুভেন্দু আর বিদিশা দুজনেই এগিয়ে গেল। মা বলল, ‘আজ শুভেন্দুর জন্য আমারও বড় ভালো লাগছে। দেখি মেয়েটাকে। কেমন দেখতে? বলে নিজেও দরজার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো মা।
শিখা ঢুকেছে ঘরে। শুভেন্দু মা’র সাথে শিখার আলাপ করিয়ে দিচ্ছে। ঢপ করে শিখা একটা প্রনাম করল বিদিশারই মতন। পাশে দাঁড়িয়ে বিদিশা। শুভেন্দু শিখাকে বলল, ‘এটা কে জানোতো? এ হল বিদিশা। আমার কাছে তুমি যা, দেবের কাছে বিদিশাও তাই। অনেক দিনের প্রেম। আজ বিদিশাও এসেছে এখানে। একটু আগেই তোমার কথা হচ্ছিল। সবাই তোমাকে দেখার জন্য উদগ্রীব। চলো চলো ভেতরে চলো। ঘরে রনি আর মাধুরী রয়েছে। দেব তো আছেই, এছাড়া শুক্লাও রয়েছে।
দূর থেকে দেখলাম, শিখার মুখে যেন অমায়িক একটা হাসি সর্বদা লেগেই রয়েছে। ঘরে ঢুকে ও প্রথম আমার দিকেই তাকালো। শুভেন্দু বলল, ‘এই হল ‘দেব’। এ ম্যান উইথ এ গোল্ডেন ভয়েজ, সফ্ট মাইন্ডেড, অ্যান্ড এ রিয়েল লাভার। পৃথিবীতে একমাত্র সৎপ্রেমিক। ভালোবাসার মধ্যে একটুকু কোন খাদ নেই। কোথাও, কেউ কষ্ট করে খুঁজলেও কোনদিন পাবে না।’
আমার সামনে দাঁড়িয়েই রয়েছে, সুন্দর মিষ্টি অনেকটা বিদিশার মতনই দেখতে মেয়েটি। মুখে সেই অমায়িক হাসিটা রেখেই বলল, ‘কেমন আছেন? খুব তো শরীর খারাপ হয়েছিল শুনলাম। এখন ভালো তো?’
আমি অবাক হয়ে দেখছি শিখাকে। মা ধমক দিয়ে বলল, কি রে দেব? ওকে বসতে বল। ও তো ঠায় দাঁড়িয়েই আছে দেখছি।’
একটা চেয়ার ঠেলে এগিয়ে দিল রনি। দেখলাম শিখা মুচকি মুচকি হাসছে রনির দিকে তাকিয়ে। তারমানে ওকে ভাল করেই চেনে। আমি বললাম, দাঁড়িয়ে আছেন কেন? বসুন। ওই চেয়ারটায় বসুন।’
শিখা বলল, না না, অত ব্যস্ত হতে হবে না। সবাই এখানে দাঁড়িয়ে আছে, আমি একা কেন বসবো? এই তো আমি ঠিক আছি।’
এগিয়ে এল বিদিশা। শিখাকে জোর করলো। ওকে হাত ধরে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে বলল, ‘না, না, আপনি বসুন। আমরা সবাই বসছি। কেউ এখানে দাঁড়িয়ে থাকবে না। মা’কে বলল, মা’ ভেতরের ঘরে আরও চেয়ার আছে না? মা বলল, হ্যাঁ। বিদিশা নিজেই উদ্যোগ নিল। বলল, আচ্ছা আমিই নিয়ে আসছি।’
আমার মুখের দিকে শিখা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। যেন কিছু বলবে বলবে ভাবছে। উল্টোদিকে একটা চেয়ারে বসে শুক্লা হাঁ করে দেখছে শিখাকে। যেন সেই ঘোরটা তখনও কাটেনি ওর। শিখাকে ছাপা একটা শাড়ীতে খুব সুন্দর লাগছে। গায়ের রংটা উজ্জ্বল। মুখটা পানপাতার মতন। গলায় ঝুলছে একটা সরু সোনার চেন। সাজ গোছ তেমন নেই, অথচ বিনা সাজেই কত সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে। ভালো করে দেখলেই বোঝা যায়, যেন একটা আভিজাত্য ছড়িয়ে রয়েছে ওর সারা দেহে। সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে, শুভেন্দু একটু আগে যা বলেছে শিখার সন্মন্ধে একেবারে হুবহু তাই মিলে যাচ্ছে।
চেয়ারে বসে শিখা বলল, ‘আমি কিন্তু আপনার খুব ফ্যান। যার কাছে আপনার সন্মন্ধে শুনেছি, জানি সে মিথ্যে কথা আমাকে কখনও বলবে না।’
দেখলাম, ওর মুখে তখনও সেই অমায়িক হাসি। আমি বললাম, আমার তো কোন গুন নেই। আপনি কি করে আমার ফ্যান হলেন? শুভেন্দু নিশ্চই বাড়িয়ে বলেছে।’
শুভেন্দু দেখলাম পাশে দাঁড়িয়ে শিখাকে কিছু বলার চেষ্টা করছে, আর ঠিক তখুনি রনি একটা গান ধরলো, ‘আমার নাম এন্টনী, কাজের কিছুই শিখিনি, ডারলিং কিংবা পেইন্টিং অর সিংগিং। আমি আজকের দুনিয়াতে গুড ফর নাথিং।
শুক্লা সঙ্গে সঙ্গে একটা ধমক লাগালো রনিকে। ‘এই তুই চুপ কর। দেব হল এক্সেপসনাল। কি উল্টোপাল্টা গাইছিস ওর সন্মন্ধে?’
ধমক খেয়ে রনি চুপ করে গেল। আমি শিখাকে বললাম, ‘এর সাথে আপনার আলাপ করিয়ে দিই। এ হল শুক্লা। আমরা সবাই কলেজে একসাথে পড়েছি। সবাই কলেজের বন্ধু।’
মাধুরী ওর বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে আদর করছে। শিখাকে মাধুরীর দিকেও একবার মুখ ঘোরাতে বললাম, ‘আর ওটা কে জানেন তো? ও হল মাধুরী। আমাদের সবার প্রিয় ছোট্ট বোন। ভারী মিষ্টি আর সুন্দর।’
মাধুরী ওর বাচ্চাটাকে আদর করতে করতেই শিখাকে বলল, ‘আর এটা হল আমার ছেলে। আমিও দেবদার খুব ভক্ত। তাই দেবদার নামে এর নাম রেখেছি, দেবমাল্য।
বাচ্চাটা শিখার দিকে তাকিয়ে প্রাণখুলে হাসছে। শিখাও হাতটা বাড়িয়ে দিল। অদ্ভূত কান্ড মাধুরীর কোল ছেড়ে বাচ্চাটা শিখার কোলে চলে গেল।
ওর গালে বারকতক চুমু খেলে শিখা। বাচ্চাটাও শিখাকে পেয়ে যেন একেবারে গদগদ। শুক্লা বলল, ‘দেখ, অত ছোট হলে কি হবে? ওরা কিন্তু সব বুঝতে পারে।’
আমি বললাম, ‘কি?’
শুক্লা বলল, ‘ওর কাছে শিখা চেনা লোক। আবার কি? ও ঠিকই বুঝতে পারছে।
আমি শুভেন্দুকে বললাম, ‘তুই তো ওর মামা হোস, তাই না রে শুভেন্দু?’
শুভেন্দু বলল, হ্যাঁ।
আমি হাসতে হাসতে বললাম, ‘আর এটা যে ওর নতুন মামী, ও ভালমতনই বুঝতে পারছে। নতুন মামীর আদর খাচ্ছে, শিখার কোলে বসে বসে।
ঘরের মধ্যে একটা হাসির রোল উঠল। আমার কথা শুনে সবাই হো হো করে হাসতে লাগল। শিখাও তাই। হেসে বলল, আমি, এঘরে যারা বসে আছে, সবার কথাই আগে শুনেছি। তবে একটু বেশি শুনেছি, আপনার কথা। আপনার আর বিদিশার কথা। আপনার বন্ধু শুভেন্দুই আমাকে সব বলেছে।
বলতে বলতে বিদিশাও তখন চেয়ার নিয়ে ঢুকেছে ঘরে। শুভেন্দু আড়চোখে তাকাচ্ছে শিখার দিকে। চেয়ারটা ঠেলে শুভেন্দুকেও বসতে বলে বিদিশা বলল, ‘আজ কিন্তু নতুন আমরা এমন একজনকে পেয়েছি, যার গানের গলা শুনেছি, খুব সুন্দর। আজ আমরা সবাই কিন্তু তার গান শুনবো। কি তোমরা সবাই রাজী আছো তো?
সবাই একবাক্যে বলে উঠল, হ্যাঁ। অতি অবশ্যই, অতি অবশ্যই।
শিখা একটু লজ্জ্বা পেয়ে বলল, ও মা। আমি গাইতে পারি, এটা আবার কে বলল? এ নিশ্চই ওর কারসাজি। বলেই একটু কটমট করে তাকালো শুভেন্দুর দিকে। শুভেন্দুর মুখ তখন কাচুমচু। আর আমি হাসতে লাগলাম, ঠিক সেই সময় শুভেন্দুর ওই রকমটা দেখে।
চেয়ারে বসে শিখা বলল, ‘আমি কিন্তু আপনার খুব ফ্যান। যার কাছে আপনার সন্মন্ধে শুনেছি, জানি সে মিথ্যে কথা আমাকে কখনও বলবে না।’
দেখলাম, ওর মুখে তখনও সেই অমায়িক হাসি। আমি বললাম, আমার তো কোন গুন নেই। আপনি কি করে আমার ফ্যান হলেন? শুভেন্দু নিশ্চই বাড়িয়ে বলেছে।’
শুভেন্দু দেখলাম পাশে দাঁড়িয়ে শিখাকে কিছু বলার চেষ্টা করছে, আর ঠিক তখুনি রনি একটা গান ধরলো, ‘আমার নাম এন্টনী, কাজের কিছুই শিখিনি, ডারলিং কিংবা পেইন্টিং অর সিংগিং। আমি আজকের দুনিয়াতে গুড ফর নাথিং।
শুক্লা সঙ্গে সঙ্গে একটা ধমক লাগালো রনিকে। ‘এই তুই চুপ কর। দেব হল এক্সেপসনাল। কি উল্টোপাল্টা গাইছিস ওর সন্মন্ধে?’
ধমক খেয়ে রনি চুপ করে গেল। আমি শিখাকে বললাম, ‘এর সাথে আপনার আলাপ করিয়ে দিই। এ হল শুক্লা। আমরা সবাই কলেজে একসাথে পড়েছি। সবাই কলেজের বন্ধু।’
মাধুরী ওর বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে আদর করছে। শিখাকে মাধুরীর দিকেও একবার মুখ ঘোরাতে বললাম, ‘আর ওটা কে জানেন তো? ও হল মাধুরী। আমাদের সবার প্রিয় ছোট্ট বোন। ভারী মিষ্টি আর সুন্দর।’
মাধুরী ওর বাচ্চাটাকে আদর করতে করতেই শিখাকে বলল, ‘আর এটা হল আমার ছেলে। আমিও দেবদার খুব ভক্ত। তাই দেবদার নামে এর নাম রেখেছি, দেবমাল্য।
বাচ্চাটা শিখার দিকে তাকিয়ে প্রাণখুলে হাসছে। শিখাও হাতটা বাড়িয়ে দিল। অদ্ভূত কান্ড মাধুরীর কোল ছেড়ে বাচ্চাটা শিখার কোলে চলে গেল।
ওর গালে বারকতক চুমু খেলে শিখা। বাচ্চাটাও শিখাকে পেয়ে যেন একেবারে গদগদ। শুক্লা বলল, ‘দেখ, অত ছোট হলে কি হবে? ওরা কিন্তু সব বুঝতে পারে।’
আমি বললাম, ‘কি?’
শুক্লা বলল, ‘ওর কাছে শিখা চেনা লোক। আবার কি? ও ঠিকই বুঝতে পারছে।
আমি শুভেন্দুকে বললাম, ‘তুই তো ওর মামা হোস, তাই না রে শুভেন্দু?’
শুভেন্দু বলল, হ্যাঁ।
আমি হাসতে হাসতে বললাম, ‘আর এটা যে ওর নতুন মামী, ও ভালমতনই বুঝতে পারছে। নতুন মামীর আদর খাচ্ছে, শিখার কোলে বসে বসে।
ঘরের মধ্যে একটা হাসির রোল উঠল। আমার কথা শুনে সবাই হো হো করে হাসতে লাগল। শিখাও তাই। হেসে বলল, আমি, এঘরে যারা বসে আছে, সবার কথাই আগে শুনেছি। তবে একটু বেশি শুনেছি, আপনার কথা। আপনার আর বিদিশার কথা। আপনার বন্ধু শুভেন্দুই আমাকে সব বলেছে।
বলতে বলতে বিদিশাও তখন চেয়ার নিয়ে ঢুকেছে ঘরে। শুভেন্দু আড়চোখে তাকাচ্ছে শিখার দিকে। চেয়ারটা ঠেলে শুভেন্দুকেও বসতে বলে বিদিশা বলল, ‘আজ কিন্তু নতুন আমরা এমন একজনকে পেয়েছি, যার গানের গলা শুনেছি, খুব সুন্দর। আজ আমরা সবাই কিন্তু তার গান শুনবো। কি তোমরা সবাই রাজী আছো তো?
সবাই একবাক্যে বলে উঠল, হ্যাঁ। অতি অবশ্যই, অতি অবশ্যই।
শিখা একটু লজ্জ্বা পেয়ে বলল, ও মা। আমি গাইতে পারি, এটা আবার কে বলল? এ নিশ্চই ওর কারসাজি। বলেই একটু কটমট করে তাকালো শুভেন্দুর দিকে। শুভেন্দুর মুখ তখন কাচুমচু। আর আমি হাসতে লাগলাম, ঠিক সেই সময় শুভেন্দুর ওই রকমটা দেখে।