09-07-2021, 03:27 PM
শুভেন্দু বলল, কোন সুন্দরী মেয়েকে দেখলে পুরুষরা যেমন তার প্রেমে পড়তে চায়। আমার মনে হল, আমিও তো ওর প্রেমে পড়তেই পারি। ওকে মন প্রাণ দিয়ে ভালবাসতে পারি। কিন্তু এও তো আমার কাছে এক অদ্ভূত ব্যাপার। জীবনে প্রেমকে কোনদিন সেভাবে মানিনি। প্রেমের আমার কাছে কোন মূল্যই নেই। অথচ একে কি করে আমি ভালবাসতে পারব? কোন পুরুষ কোন সুন্দরী মেয়েকে কামনা করলেই ভাবে, তাকে আর বাকী জীবনে কখনও বিরক্তিকর লাগবে না। কোন বাঁধা প্রতিবন্ধকতা আসবে না। কিন্তু পরে দেখা যায় সবই ভুল। একটার পর একটা বাঁধা অতিক্রম করতে হচ্ছে তাকে। তাছাড়া কোন সুন্দরী মেয়ের সাথে জীবন কাটানোর মানে তো শুধুই জৈবিক ক্ষুধার নিবৃত্তি নয়। তাকে জানতে হবে, বুঝতে হবে। মন, রুচি আর প্রবনতার মিলটাকে খুঁজে বার করতে হবে।
আমি বললাম, সবই তো বুঝলাম। তারপর কি হল?
শুভেন্দু বলল, ভাবছি যেচে আলাপ জমাবো কিনা? কিন্তু সে সুযোগটা করে দিল শিখাই। পুরীর সি বীচ দিয়ে হাঁটছি। হঠাৎ সামনে দেখি শিখা। একা একাই হোটেল ছেড়ে বেরিয়েছে। আমি সামনে পড়তেই বলল, আপনি ওই একই হোটেলে উঠেছেন না? আপনাকে বারান্দাতে আমি দেখেছি।
আমি শুভেন্দুর কথা শুনে চেঁচিয়ে উঠলাম। উত্তেজিত হয়ে বললাম, জিও। কি শোনালি গুরু। উফ কবে যে আমিও যাব পুরীতে বিদিশাকে নিয়ে।
বিদিশা দেখি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।
শুভেন্দু বলতে লাগল। মনে কর, সমুদ্রের জলে পড়েছে চাঁদের আলো। প্রেয়সীর হাত ধরে সমুদ্রের পাড় দিয়ে হাঁটছে তার প্রেমে পাগল ভালোবাসার মানুষটি। রোমান্টিক রাতের আনন্দে আমি যেন তখন ভীষন ভাবে আপ্লুত। আমার মনে তখন অচেনা আনন্দ বাসনা আর আকুলতার আলোড়ন। সেই সুন্দরী রাতে স্নিগ্ধ, প্রাণবন্ত আলোয় আমরা নীরবে হাতে হাত ধরে হেঁটে চলেছি। চাঁদের স্নিগ্ধ সৌন্দর্য তখন দেহ পূর্ণ করে হৃদয় প্লাবিত করে সৌরভে আচ্ছন্ন করে ঝরে পড়ছে। কেমন লাগবে তোদের এটা শুনে?
আমি বললাম, তুই কি সত্যি সত্যি শিখার হাত ধরে হেঁটেছিস?
শুভেন্দু বলল, তাহলে আর বলছি কি?
আমি বললাম, দারুন শুভেন্দু। দারুন। তুই করেছিস টা কি-
এতটা নস্টালজিক হয়ে আর রোমান্টিকতার সুন্দর বর্ণনা শুভেন্দুর মুখ দিয়ে এই প্রথম শুনছি। তাও আবার শুদ্ধ বাংলাতে।
এতক্ষণ পরে রাগটাকে ঠান্ডা করে শুক্লাও বলে উঠল, ঠিক এই মূহুর্তে শিখাকে দেখতে আমারও খুব ইচ্ছে করছে। কবে রে? কবে দেখাবি ওকে? বল না? এই শুভেন্দু। বল না।মাঝখান থেকে রনি এবার ফোড়ণ কেটে উঠল। শুক্লাকে বলল, ‘দে এবার টাকাটা দে। শিখাকে দেখতে গেলে পয়সা লাগবে। ওটা আমার পাওনা।’
শুক্লা এক ধ্যাতানি দিয়ে উঠল। রনিকে বলল, হ্যাঁ। দাঁড়া তোর মজা দেখাচ্ছি। তোর কি পয়সার অভাব?
রনি মুখটাকে করুন মত করে বলে উঠল, ‘আমার সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছে। এই মূহূর্তে হাজার পাঁচেক টাকা পেলে তো ভালই হবে। দে না দে। শিগগীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে বের কর। তারপর শিখাকে আমি এখানে আনার ব্যবস্থা করছি।’
আমি একটা ধমক লাগিয়ে বললাম, ‘বেশ পুরীর গল্পটা শুনছিলাম। দিলি সব চোপাট করে। এই শুভেন্দু তারপরে কি হল? বল না?’
বিদিশাও বলল, ‘হ্যাঁ, সী বীচ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তারপর তোরা কোথায় চলে গেলি? ঝাউবনের আড়ালে?’
শুভেন্দু বেশ বিজ্ঞের মতন বলে উঠল, দূর বোকা। পুরীতে আবার ঝাউবন আছে নাকি? ওটা তো দীঘাতে।’
বিদিশা বলল, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ। তাই। আমারই ভুল হল। তারপর কি হল?’
রনি এবার শুভেন্দুকে বাঁধা দিয়ে বলল, ‘আচ্ছা তুই আমাকে তখন বারণ করলি। এদের সামনে শাসালি। আর এখন ফ্রী তে এদের এত কিছু বলছিস কেন? কেউ কোন খরচা করবে না। সব কিপটের দল। শিখা আর শুভেন্দুর প্রেম কাহিনী শুনবে। অতই সস্তা নাকি?’
বেশ রেগে গেছি আমিও। শুক্লাও রেগেমেগে বলল, ‘এই দেব। এই বেরসিকটাকে এখান থেকে ভাগা তো। তখন থেকে ব্যাগড়া দিচ্ছে। শুভেন্দুকে বলতে দিচ্ছে না।’
আমি বললাম, ‘হ্যাঁ রে রনি। তুই তো এরকম ছিলিস না। এত আনরোমান্টিক। ইচ্ছে করে করছিস না ফাজলামো মারছিস?’
শুভেন্দুও রনিকে ধমক লাগাতে যাচ্ছিল। মাধুরীও চটে গেছে। তার আগেই রনি দাঁত কেলিয়ে বলল, একটু পরে শিখা তো এখানেই এসে পড়বে। তখন কি আর পয়সা চাওয়া যাবে? তাই না একটু সুযোগ খুঁজছিলাম।’ বলে ও মাথা চুলকোতে লাগল।
আমরা রনির কথা শুনে একে অপরের দিকে মুখ চাওয়া চাওয়ি করছি। বিদিশা আমার দিকে তাকিয়েছে। আমিও বিদিশার দিকে। ওদিকে শুক্লা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রনির দিকে। রনি তখনও দাঁত বার করে হাসছে। সবাই স্তম্ভিত, হতভম্ব। শিখা এ বাড়ীতে আসবে? কেউ ভাবতে পারছে না।
শুভেন্দুই শেষকালে সবাইকে স্বস্তি দিয়ে বলল, ‘তা নয়, তা নয়। ব্যাপারটা তা নয়। শিখাকে তো আমি দেবের কথা সবসময়ই বলি। দেবের অসুস্থ হবার ঘটনাটাও ওকে জানিয়েছি। সকালেই আমার সাথে আসতে চাইছিল। বললাম, এখন নয়। আমি ফোন করলে তারপর এসো। বলেছে, ডাকলেই চলে আসবে। নিজেই গাড়ী ড্রাইভ করতে জানে। কোন অসুবিধে নেই।’
আমি সব শুনে বললাম, ‘নিয়ে এলি না কেন? এখনই তাহলে ওকে দেখতাম। আলাপ পরিচয় হত।’
শুভেন্দু হেসে বলল, ওতো তোকে দেখতেই এখানে আসবে বলেছে। আমি আজকেই সেটা চাইছিলাম না। পরে সময় হলে শিখার কথা তোদের সবাইকে শোনাতাম। এই রনিটাই তো দিল সব ফাঁস করে। ব্যাটা পাজী। কত করে মানা করেছিলাম। কিছুতেই আমার কথা শুনলো না।’
রনি তখনও মজা লুটে যাচ্ছে। হাসতে হাসতে আমাকে বলল, ‘আমার শালাবাবু এখন লাখোপত্তি। তিনি যে শিখাকে পেয়েছেন। তাই না? আর তুই তো আগেই কোরোপত্তি। কারন বিদিশাকে আবার ফিরে পেয়েছিস। মাঝখানে আমি হলাম গিয়ে চায়ে কা পত্তি। আমার কপালে এখন কিছু নেই।’
শুক্লা রেগে গিয়ে বলল, ‘দ্যাখ দ্যাখ কি বদমাইশ। মাধুরী বসে আছে। ওর সামনেই কেমন ভাবে বলছে?’
মাধুরী চুপ। মুখ গম্ভীর। একটু কড়া ভাবেই বলল, ‘আমি এখন আমার স্বামীকে কিছু বলবো না। কারণ ছোড়দার এই প্রেমের খবরটা আমার কাছে ভীষন আনন্দ সংবাদ। এতদিন বাদে একটা দারুন খবর পেলাম। আগে সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাক। তারপর ওর সাথে আমি বোঝাপড়া করবো।’
বলেই ভূরু কূঁচকে রনির দিকে তাকালো।
রনি তখন বউয়ের দিকে তাকিয়ে কান মুলছে, জিভ বার করছে। কত কি করছে। আমি আর বিদিশা হেসেই গড়াগড়ি। বুঝতেই পারছি, বাড়ী ফেরার পর মাধুরী ওকে দেবে আচ্ছামতন। আজ রনির কপালে বেশ বড় সড় দূঃখ আছে।
সবার সামনে গলা উঁচিয়ে রনি এবার বলল, ‘যে যাই বলুক। আমার বউয়ের মতন কেউ নয়। আমার বউ হল সবার সেরা। লাখে একটা।’ বলেই বউকে একটা হাম্মি দিতে গেল। মাধুরী এক ধমক লাগিয়ে বলল, ‘কি হচ্ছে টা কি? অসভ্য কোথাকার। এটা কি বাড়ী পেয়েছো নাকি? ইস, ন্যাকামো দেখে আর বাঁচি না।’
রনি বউয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘রাগ করে না মেরী জান। আমি তো এমনি রসিকতা করছি। তোমার সাথে কারুর তুলনা হয়?’
মাধুরী বলল, ‘থাক আর আদিখ্যেতা করতে হবে না।
রনির করুন মুখটা দেখে ও এবার নিজেই হেসে ফেললো। আমি বিদিশার মুখের দিকে তখন তাকালাম। বিদিশাও আমার দিকে। পৃথিবীতে প্রেম জিনিষটা কত সুন্দর। প্রেমের কত রূপ। প্রেম অবিনশ্বর। এই প্রেম নিয়েই জীবনের কত চাওয়া পাওয়ার কত মূহূর্ত। একটা আশার আলোর সন্ধান পেয়েছি আমরা দুজনেই। শুভেন্দু আর শিখার নতুন প্রেম কাহিনী আমাদের ফিরে পাওয়া ভালোবাসাকে আরও মজবুত করবে। আমরা আশাবাদী। আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বিদিশা যেন সেই জিনিষটাই খুঁজে পাবার চেষ্টা করছে। আমি ওকে আরো আস্বস্ত করলাম। ঘাড় নাড়লাম। হাতের ওপর হাতটা রেখে ওকে বললাম, ‘আমি আছি তোমার সাথে। তুমি কিছু চিন্তা কোরো না।’
শুভেন্দু আমার আর রনির দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ যা-চ্চলে। এরা দেখি এখন নিজেদেরই ঘর সামলাতে ব্যস্ত। এই তোদের পুরী আর ছাদের গল্পটা আর তাহলে বলছি না।’
আমি সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলাম, ‘না না। গল্প তো শুনতেই হবে। তবে তুই শিখাকে এখন আসতে বলছিস তো? ফোন কর। এখনই ফোন কর। সবার সামনে। আমরা শুনি।’
শুভেন্দু আনন্দে বলে উঠল, ‘ফোন করবো? আসতে বলবো? তুই বলছিস?’
আমি বললাম, ‘অফ কোর্স। ওয়াই নট। এটাই তো উপযুক্ত সময়। শালা ডুবে ডুবে জল খাচ্ছিলিস। আমাদের আগে বলিস নি। আজ কেমন সব ফাঁস হয়ে গেল। দেখলি তো?’
রনি মুখটাকে করুন মত করে বলে উঠল, ‘আমার সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছে। এই মূহূর্তে হাজার পাঁচেক টাকা পেলে তো ভালই হবে। দে না দে। শিগগীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে বের কর। তারপর শিখাকে আমি এখানে আনার ব্যবস্থা করছি।’
আমি একটা ধমক লাগিয়ে বললাম, ‘বেশ পুরীর গল্পটা শুনছিলাম। দিলি সব চোপাট করে। এই শুভেন্দু তারপরে কি হল? বল না?’
বিদিশাও বলল, ‘হ্যাঁ, সী বীচ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তারপর তোরা কোথায় চলে গেলি? ঝাউবনের আড়ালে?’
শুভেন্দু বেশ বিজ্ঞের মতন বলে উঠল, দূর বোকা। পুরীতে আবার ঝাউবন আছে নাকি? ওটা তো দীঘাতে।’
বিদিশা বলল, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ। তাই। আমারই ভুল হল। তারপর কি হল?’
রনি এবার শুভেন্দুকে বাঁধা দিয়ে বলল, ‘আচ্ছা তুই আমাকে তখন বারণ করলি। এদের সামনে শাসালি। আর এখন ফ্রী তে এদের এত কিছু বলছিস কেন? কেউ কোন খরচা করবে না। সব কিপটের দল। শিখা আর শুভেন্দুর প্রেম কাহিনী শুনবে। অতই সস্তা নাকি?’
বেশ রেগে গেছি আমিও। শুক্লাও রেগেমেগে বলল, ‘এই দেব। এই বেরসিকটাকে এখান থেকে ভাগা তো। তখন থেকে ব্যাগড়া দিচ্ছে। শুভেন্দুকে বলতে দিচ্ছে না।’
আমি বললাম, ‘হ্যাঁ রে রনি। তুই তো এরকম ছিলিস না। এত আনরোমান্টিক। ইচ্ছে করে করছিস না ফাজলামো মারছিস?’
শুভেন্দুও রনিকে ধমক লাগাতে যাচ্ছিল। মাধুরীও চটে গেছে। তার আগেই রনি দাঁত কেলিয়ে বলল, একটু পরে শিখা তো এখানেই এসে পড়বে। তখন কি আর পয়সা চাওয়া যাবে? তাই না একটু সুযোগ খুঁজছিলাম।’ বলে ও মাথা চুলকোতে লাগল।
আমরা রনির কথা শুনে একে অপরের দিকে মুখ চাওয়া চাওয়ি করছি। বিদিশা আমার দিকে তাকিয়েছে। আমিও বিদিশার দিকে। ওদিকে শুক্লা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রনির দিকে। রনি তখনও দাঁত বার করে হাসছে। সবাই স্তম্ভিত, হতভম্ব। শিখা এ বাড়ীতে আসবে? কেউ ভাবতে পারছে না।
শুভেন্দুই শেষকালে সবাইকে স্বস্তি দিয়ে বলল, ‘তা নয়, তা নয়। ব্যাপারটা তা নয়। শিখাকে তো আমি দেবের কথা সবসময়ই বলি। দেবের অসুস্থ হবার ঘটনাটাও ওকে জানিয়েছি। সকালেই আমার সাথে আসতে চাইছিল। বললাম, এখন নয়। আমি ফোন করলে তারপর এসো। বলেছে, ডাকলেই চলে আসবে। নিজেই গাড়ী ড্রাইভ করতে জানে। কোন অসুবিধে নেই।’
আমি সব শুনে বললাম, ‘নিয়ে এলি না কেন? এখনই তাহলে ওকে দেখতাম। আলাপ পরিচয় হত।’
শুভেন্দু হেসে বলল, ওতো তোকে দেখতেই এখানে আসবে বলেছে। আমি আজকেই সেটা চাইছিলাম না। পরে সময় হলে শিখার কথা তোদের সবাইকে শোনাতাম। এই রনিটাই তো দিল সব ফাঁস করে। ব্যাটা পাজী। কত করে মানা করেছিলাম। কিছুতেই আমার কথা শুনলো না।’
রনি তখনও মজা লুটে যাচ্ছে। হাসতে হাসতে আমাকে বলল, ‘আমার শালাবাবু এখন লাখোপত্তি। তিনি যে শিখাকে পেয়েছেন। তাই না? আর তুই তো আগেই কোরোপত্তি। কারন বিদিশাকে আবার ফিরে পেয়েছিস। মাঝখানে আমি হলাম গিয়ে চায়ে কা পত্তি। আমার কপালে এখন কিছু নেই।’
শুক্লা রেগে গিয়ে বলল, ‘দ্যাখ দ্যাখ কি বদমাইশ। মাধুরী বসে আছে। ওর সামনেই কেমন ভাবে বলছে?’
মাধুরী চুপ। মুখ গম্ভীর। একটু কড়া ভাবেই বলল, ‘আমি এখন আমার স্বামীকে কিছু বলবো না। কারণ ছোড়দার এই প্রেমের খবরটা আমার কাছে ভীষন আনন্দ সংবাদ। এতদিন বাদে একটা দারুন খবর পেলাম। আগে সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাক। তারপর ওর সাথে আমি বোঝাপড়া করবো।’
বলেই ভূরু কূঁচকে রনির দিকে তাকালো।
রনি তখন বউয়ের দিকে তাকিয়ে কান মুলছে, জিভ বার করছে। কত কি করছে। আমি আর বিদিশা হেসেই গড়াগড়ি। বুঝতেই পারছি, বাড়ী ফেরার পর মাধুরী ওকে দেবে আচ্ছামতন। আজ রনির কপালে বেশ বড় সড় দূঃখ আছে।
সবার সামনে গলা উঁচিয়ে রনি এবার বলল, ‘যে যাই বলুক। আমার বউয়ের মতন কেউ নয়। আমার বউ হল সবার সেরা। লাখে একটা।’ বলেই বউকে একটা হাম্মি দিতে গেল। মাধুরী এক ধমক লাগিয়ে বলল, ‘কি হচ্ছে টা কি? অসভ্য কোথাকার। এটা কি বাড়ী পেয়েছো নাকি? ইস, ন্যাকামো দেখে আর বাঁচি না।’
রনি বউয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘রাগ করে না মেরী জান। আমি তো এমনি রসিকতা করছি। তোমার সাথে কারুর তুলনা হয়?’
মাধুরী বলল, ‘থাক আর আদিখ্যেতা করতে হবে না।
রনির করুন মুখটা দেখে ও এবার নিজেই হেসে ফেললো। আমি বিদিশার মুখের দিকে তখন তাকালাম। বিদিশাও আমার দিকে। পৃথিবীতে প্রেম জিনিষটা কত সুন্দর। প্রেমের কত রূপ। প্রেম অবিনশ্বর। এই প্রেম নিয়েই জীবনের কত চাওয়া পাওয়ার কত মূহূর্ত। একটা আশার আলোর সন্ধান পেয়েছি আমরা দুজনেই। শুভেন্দু আর শিখার নতুন প্রেম কাহিনী আমাদের ফিরে পাওয়া ভালোবাসাকে আরও মজবুত করবে। আমরা আশাবাদী। আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বিদিশা যেন সেই জিনিষটাই খুঁজে পাবার চেষ্টা করছে। আমি ওকে আরো আস্বস্ত করলাম। ঘাড় নাড়লাম। হাতের ওপর হাতটা রেখে ওকে বললাম, ‘আমি আছি তোমার সাথে। তুমি কিছু চিন্তা কোরো না।’
শুভেন্দু আমার আর রনির দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ যা-চ্চলে। এরা দেখি এখন নিজেদেরই ঘর সামলাতে ব্যস্ত। এই তোদের পুরী আর ছাদের গল্পটা আর তাহলে বলছি না।’
আমি সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলাম, ‘না না। গল্প তো শুনতেই হবে। তবে তুই শিখাকে এখন আসতে বলছিস তো? ফোন কর। এখনই ফোন কর। সবার সামনে। আমরা শুনি।’
শুভেন্দু আনন্দে বলে উঠল, ‘ফোন করবো? আসতে বলবো? তুই বলছিস?’
আমি বললাম, ‘অফ কোর্স। ওয়াই নট। এটাই তো উপযুক্ত সময়। শালা ডুবে ডুবে জল খাচ্ছিলিস। আমাদের আগে বলিস নি। আজ কেমন সব ফাঁস হয়ে গেল। দেখলি তো?’