Thread Rating:
  • 27 Vote(s) - 3.26 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance জীবন যে রকম ( সম্পূর্ণ ধারাবাহিক উপন্যাস) By Lekhak
শুভেন্দু বলল, কোন সুন্দরী মেয়েকে দেখলে পুরুষরা যেমন তার প্রেমে পড়তে চায়আমার মনে হল, আমিও তো ওর প্রেমে পড়তেই পারিওকে মন প্রাণ দিয়ে ভালবাসতে পারিকিন্তু এও তো আমার কাছে এক অদ্ভূত ব্যাপারজীবনে প্রেমকে কোনদিন সেভাবে মানিনিপ্রেমের আমার কাছে কোন মূল্যই নেইঅথচ একে কি করে আমি ভালবাসতে পারব? কোন পুরুষ কোন সুন্দরী মেয়েকে কামনা করলেই ভাবে, তাকে আর বাকী জীবনে কখনও বিরক্তিকর লাগবে না কোন বাঁধা প্রতিবন্ধকতা আসবে না কিন্তু পরে দেখা যায় সবই ভুল একটার পর একটা বাঁধা অতিক্রম করতে হচ্ছে তাকে তাছাড়া কোন সুন্দরী মেয়ের সাথে জীবন কাটানোর মানে তো শুধুই জৈবিক ক্ষুধার নিবৃত্তি নয় তাকে জানতে হবে, বুঝতে হবে মন, রুচি আর প্রবনতার মিলটাকে খুঁজে বার করতে হবে
আমি বললাম, সবই তো বুঝলাম তারপর কি হল?
শুভেন্দু বলল, ভাবছি যেচে আলাপ জমাবো কিনা? কিন্তু সে সুযোগটা করে দিল শিখাই পুরীর সি বীচ দিয়ে হাঁটছি হঠাৎ সামনে দেখি শিখা একা একাই হোটেল ছেড়ে বেরিয়েছে আমি সামনে পড়তেই বলল, আপনি ওই একই হোটেলে উঠেছেন না? আপনাকে বারান্দাতে আমি দেখেছি
আমি শুভেন্দুর কথা শুনে চেঁচিয়ে উঠলামউত্তেজিত হয়ে বললাম, জিওকি শোনালি গুরুউফ কবে যে আমিও যাব পুরীতে বিদিশাকে নিয়ে
বিদিশা দেখি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে
শুভেন্দু বলতে লাগল।  মনে কর, সমুদ্রের জলে পড়েছে চাঁদের আলোপ্রেয়সীর হাত ধরে সমুদ্রের পাড় দিয়ে হাঁটছে তার প্রেমে পাগল ভালোবাসার মানুষটিরোমান্টিক রাতের আনন্দে আমি যেন তখন ভীষন ভাবে আপ্লুতআমার মনে তখন অচেনা আনন্দ বাসনা আর আকুলতার আলোড়নসেই সুন্দরী রাতে স্নিগ্ধ, প্রাণবন্ত আলোয় আমরা নীরবে হাতে হাত ধরে হেঁটে চলেছিচাঁদের স্নিগ্ধ সৌন্দর্য তখন দেহ পূর্ণ করে হৃদয় প্লাবিত করে সৌরভে আচ্ছন্ন করে ঝরে পড়ছেকেমন লাগবে তোদের এটা শুনে?
আমি বললাম, তুই কি সত্যি সত্যি শিখার হাত ধরে হেঁটেছিস?
শুভেন্দু বলল, তাহলে আর বলছি কি?
আমি বললাম, দারুন শুভেন্দুদারুনতুই করেছিস টা কি-
এতটা নস্টালজিক হয়ে আর রোমান্টিকতার সুন্দর বর্ণনা শুভেন্দুর মুখ দিয়ে এই প্রথম শুনছিতাও আবার শুদ্ধ বাংলাতে
এতক্ষণ পরে রাগটাকে ঠান্ডা করে শুক্লাও বলে উঠল, ঠিক এই মূহুর্তে শিখাকে দেখতে আমারও খুব ইচ্ছে করছে কবে রে? কবে দেখাবি ওকে? বল না? এই শুভেন্দু বল নামাঝখান থেকে রনি এবার ফোড়ণ কেটে উঠল শুক্লাকে বলল, ‘দে এবার টাকাটা দে শিখাকে দেখতে গেলে পয়সা লাগবে ওটা আমার পাওনা।’
শুক্লা এক ধ্যাতানি দিয়ে উঠলরনিকে বলল, হ্যাঁদাঁড়া তোর মজা দেখাচ্ছিতোর কি পয়সার অভাব?

রনি মুখটাকে করুন মত করে বলে উঠল, ‘আমার সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছেএই মূহূর্তে হাজার পাঁচেক টাকা পেলে তো ভালই হবেদে না দেশিগগীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে বের করতারপর শিখাকে আমি এখানে আনার ব্যবস্থা করছি।’

আমি একটা ধমক লাগিয়ে বললাম, ‘বেশ পুরীর গল্পটা শুনছিলামদিলি সব চোপাট করেএই শুভেন্দু তারপরে কি হল? বল না?’

বিদিশাও বলল, ‘হ্যাঁ, সী বীচ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তারপর তোরা কোথায় চলে গেলি? ঝাউবনের আড়ালে?’

শুভেন্দু বেশ বিজ্ঞের মতন বলে উঠল, দূর বোকা পুরীতে আবার ঝাউবন আছে নাকি? ওটা তো দীঘাতে

বিদিশা বলল, ‘হ্যাঁ হ্যাঁতাইআমারই ভুল হলতারপর কি হল?’

রনি এবার শুভেন্দুকে বাঁধা দিয়ে বলল, ‘আচ্ছা তুই আমাকে তখন বারণ করলিএদের সামনে শাসালিআর এখন ফ্রী তে এদের এত কিছু বলছিস কেন? কেউ কোন খরচা করবে নাসব কিপটের দলশিখা আর শুভেন্দুর প্রেম কাহিনী শুনবেঅতই সস্তা নাকি?’

বেশ রেগে গেছি আমিওশুক্লাও রেগেমেগে বলল, ‘এই দেবএই বেরসিকটাকে এখান থেকে ভাগা তোতখন থেকে ব্যাগড়া দিচ্ছেশুভেন্দুকে বলতে দিচ্ছে না।’

আমি বললাম, ‘হ্যাঁ রে রনিতুই তো এরকম ছিলিস নাএত আনরোমান্টিকইচ্ছে করে করছিস না ফাজলামো মারছিস?’

শুভেন্দুও রনিকে ধমক লাগাতে যাচ্ছিলমাধুরীও চটে গেছেতার আগেই রনি দাঁত কেলিয়ে বলল, একটু পরে শিখা তো এখানেই এসে পড়বেতখন কি আর পয়সা চাওয়া যাবে? তাই না একটু সুযোগ খুঁজছিলাম।’ বলে ও মাথা চুলকোতে লাগল

আমরা রনির কথা শুনে একে অপরের দিকে মুখ চাওয়া চাওয়ি করছিবিদিশা আমার দিকে তাকিয়েছেআমিও বিদিশার দিকেওদিকে শুক্লা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রনির দিকেরনি তখনও দাঁত বার করে হাসছেসবাই স্তম্ভিত, হতভম্বশিখা এ বাড়ীতে আসবে? কেউ ভাবতে পারছে না

শুভেন্দুই শেষকালে সবাইকে স্বস্তি দিয়ে বলল, ‘তা নয়, তা নয়ব্যাপারটা তা নয়শিখাকে তো আমি দেবের কথা সবসময়ই বলিদেবের অসুস্থ হবার ঘটনাটাও ওকে জানিয়েছিসকালেই আমার সাথে আসতে চাইছিলবললাম, এখন নয়আমি ফোন করলে তারপর এসোবলেছে, ডাকলেই চলে আসবেনিজেই গাড়ী ড্রাইভ করতে জানেকোন অসুবিধে নেই।’

আমি সব শুনে বললাম, ‘নিয়ে এলি না কেন? এখনই তাহলে ওকে দেখতামআলাপ পরিচয় হত।’

শুভেন্দু হেসে বলল, ওতো তোকে দেখতেই এখানে আসবে বলেছেআমি আজকেই সেটা চাইছিলাম নাপরে সময় হলে শিখার কথা তোদের সবাইকে শোনাতামএই রনিটাই তো দিল সব ফাঁস করেব্যাটা পাজীকত করে মানা করেছিলামকিছুতেই আমার কথা শুনলো না।’
রনি তখনও মজা লুটে যাচ্ছেহাসতে হাসতে আমাকে বলল, ‘আমার শালাবাবু এখন লাখোপত্তিতিনি যে শিখাকে পেয়েছেনতাই না? আর তুই তো আগেই কোরোপত্তিকারন বিদিশাকে আবার ফিরে পেয়েছিসমাঝখানে আমি হলাম গিয়ে চায়ে কা পত্তিআমার কপালে এখন কিছু নেই।’
শুক্লা রেগে গিয়ে বলল, ‘দ্যাখ দ্যাখ কি বদমাইশমাধুরী বসে আছেওর সামনেই কেমন ভাবে বলছে?’
মাধুরী চুপমুখ গম্ভীরএকটু কড়া ভাবেই বলল, ‘আমি এখন আমার স্বামীকে কিছু বলবো নাকারণ ছোড়দার এই প্রেমের খবরটা আমার কাছে ভীষন আনন্দ সংবাদএতদিন বাদে একটা দারুন খবর পেলামআগে সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাকতারপর ওর সাথে আমি বোঝাপড়া করবো
বলেই ভূরু কূঁচকে রনির দিকে তাকালো
রনি তখন বউয়ের দিকে তাকিয়ে কান মুলছে, জিভ বার করছেকত কি করছেআমি আর বিদিশা হেসেই গড়াগড়িবুঝতেই পারছি, বাড়ী ফেরার পর মাধুরী ওকে দেবে আচ্ছামতনআজ রনির কপালে বেশ বড় সড় দূঃখ আছে
সবার সামনে গলা উঁচিয়ে রনি এবার বলল, ‘যে যাই বলুকআমার বউয়ের মতন কেউ নয়আমার বউ হল সবার সেরালাখে একটা।’ বলেই বউকে একটা হাম্মি দিতে গেলমাধুরী এক ধমক লাগিয়ে বলল, ‘কি হচ্ছে টা কি? অসভ্য কোথাকারএটা কি বাড়ী পেয়েছো নাকি? ইস, ন্যাকামো দেখে আর বাঁচি না।’
রনি বউয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘রাগ করে না মেরী জানআমি তো এমনি রসিকতা করছিতোমার সাথে কারুর তুলনা হয়?’
মাধুরী বলল, ‘থাক আর আদিখ্যেতা করতে হবে না
রনির করুন মুখটা দেখে ও এবার নিজেই হেসে ফেললোআমি বিদিশার মুখের দিকে তখন তাকালামবিদিশাও আমার দিকেপৃথিবীতে প্রেম জিনিষটা কত সুন্দরপ্রেমের কত রূপপ্রেম অবিনশ্বরএই প্রেম নিয়েই জীবনের কত চাওয়া পাওয়ার কত মূহূর্ত।  একটা আশার আলোর সন্ধান পেয়েছি আমরা দুজনেইশুভেন্দু আর শিখার নতুন প্রেম কাহিনী আমাদের ফিরে পাওয়া ভালোবাসাকে আরও মজবুত করবে।  আমরা আশাবাদীআমার মুখের দিকে তাকিয়ে বিদিশা যেন সেই জিনিষটাই খুঁজে পাবার চেষ্টা করছেআমি ওকে আরো আস্বস্ত করলামঘাড় নাড়লামহাতের ওপর হাতটা রেখে ওকে বললাম, ‘আমি আছি তোমার সাথেতুমি কিছু চিন্তা কোরো না।’
শুভেন্দু আমার আর রনির দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ যা-চ্চলেএরা দেখি এখন নিজেদেরই ঘর সামলাতে  ব্যস্তএই তোদের পুরী আর ছাদের গল্পটা আর তাহলে বলছি না।’
আমি সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলাম, ‘না নাগল্প তো শুনতেই হবেতবে তুই শিখাকে এখন আসতে বলছিস তো? ফোন করএখনই ফোন করসবার সামনেআমরা শুনি।’
শুভেন্দু আনন্দে বলে উঠল, ‘ফোন করবো? আসতে বলবো? তুই বলছিস?’
আমি বললাম, ‘অফ কোর্সওয়াই নটএটাই তো উপযুক্ত সময়শালা ডুবে ডুবে জল খাচ্ছিলিসআমাদের আগে বলিস নিআজ কেমন সব ফাঁস হয়ে গেলদেখলি তো?’
 
[+] 2 users Like Lekhak is back's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:43 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:46 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:49 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:50 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:52 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:54 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:55 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:57 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 11:00 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 11:05 PM
RE: জীবন যে রকম ( সম্পূর্ণ ধারাবাহিক উপন্যাস) By Lekhak - by Lekhak is back - 09-07-2021, 03:27 PM



Users browsing this thread: 19 Guest(s)