08-07-2021, 01:56 PM
আমি শুয়ে আছি বিছানায়। আমার দিকে তাকিয়ে রনি বলল, দিলি তো শরীরটাকে বারোটা বাজিয়ে? আমরা ভাবলাম, তোকে আর বিদিশাকে নিয়ে আজ একটু আনন্দ করব। সেটা আর হল না।
শুভেন্দু বলল, আনন্দ করা কি পালিয়ে যাচ্ছে? ব্যাচারাকে সুস্থ হতে দে।
আমি বললাম, তোরা আনন্দ কর না। কে মানা করেছে? আমি শুয়ে শুয়েই তোদের সাথে আনন্দ করি।
মাধুরী এগিয়ে এসেছে আমার দিকে। বাচ্চাটাকে কোলে নিয়েই আমার দিকে ঝুঁকে পড়ে বলল, ‘ও তোমার গালে একটা কিস করবে। তাহলেই তুমি ভাল হয়ে যাবে।’
বাচ্চাটা মাধুরীর কোলে থেকেই আমার গালে ঠোঁট ছোঁয়ালো। শুভেন্দু সঙ্গে সঙ্গে ফোড়ণ কেটে বিদিশাকে বলল, নে তুইও একটা দেবের গালে কিস করে দে। তাহলে ও এখুনি ভালো হয়ে যাবে।
আমিও মনে মনে বললাম, করো না একটা কিস। কতদিন তোমার কিস খাইনি।
বিদিশা যেন বুঝতে পেরেছে। আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাচ্ছে। মাধুরী সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল। হ্যাঁ করেছে করেছে পরশুদিন আমাদের বাড়ীর ছাদে। আমি দেখে ফেলেছি।
শুভেন্দু ধমক দিয়ে বলল, দেখেছিস তো কি হয়েছে? কিস খাওয়ার কথা সবার সামনে বলতে আছে?
মাধুরী বলল, যাবাব্বা। তুই নিজেই তো একটু আগে বললি। আর আমি বললেই দোষ?
রনিও সঙ্গে সঙ্গে বউয়ের হয়ে কথা বলল। হেসে বলল, কিস খাওয়াটা এখন জলভাত। মাঠে ঘাটে যেখানে সেখানে কিস হচ্ছে। সবসময় সেন্সর লাগালে চলে নাকি? আমি তো যখন তখন কিস খাই।’
শুক্লা হেসে বলল, কাকে?
রনি বলল, এই যে আমার বউকে। তুই কার কথা ভেবেছিস?
শুক্লা চুপ করে গেছে। মাধুরী ধমক দিয়ে রনিকে বলল, এই তুমি আর ছোড়দাটা ভীষন অসভ্য। যখন তখন সবার সামনে লজ্জ্বায় ফেলে দাও।
শুভেন্দু নিজের বোনকে সান্তনা দিল। ওকে বলল, লজ্জ্বার কিছু নেই। লজ্জ্বার কিছু নেই। এখানে সবাই ম্যাচুয়োর্ড। তোকে রনি ভালবাসে। ভালবাসলে বউকে যখন তখন চুমু খাওয়া যায়। এতে লজ্জ্বা পাওয়ার কি আছে?
আমিও বললাম, অত লজ্জ্বা পায় না। মাধুরী। আমরা সবাই তোমার দাদার মতন। দাদাকে সব কথা খুলে বলা যায়।
শুভেন্দু টিপ্পনি কেটে বলল, তুই আর কথা বলিস না। ছাদে লুকিয়ে লুকিয়ে বিদিশাকে চুমু খাচ্ছিলিস। ইস তখন যদি জানতাম।
রনি বলল, দিলে তো সব ফাঁস করে। দেব এখন টেনশনে পড়ে গেছে।
আমি শুয়ে শুয়ে বললাম, এতে টেনশনের কি আছে? ও তো পালটি খাচ্ছে এখন। বিদিশাকে যাতে ভালভাবে চুমুটা খেতে পারি, তারজন্যই তো ও আমাদের ছাদে পাঠিয়েছিল। আগেই বলেছে এই কথা। এখন আবার কথা ঘোরাচ্ছে কেন?
মা ঢুকেছে ঘরে। রনির দিকে তাকিয়ে বলল, কেমন আছো তোমরা?
রনি বলল, ভালো। মাধুরী সঙ্গে সঙ্গে মাকে ঢিপ করে একটা প্রনাম করল। -মাসীমা আপনি কেমন আছেন?মা বলল, ভালো। বাহ্ তোমার ছেলেটা তো খুব সুন্দর হয়েছে।
মাধুরী বলল, ‘হ্যাঁ ওর নাম দিয়েছি কি জানেন? দেবদার নামকে মনে করে।
মা বলল, তাই বুঝি? কি নাম?
মাধুরী বলল, দেবমাল্য। এই নামটাই সবার পছন্দ হল।
মা বলল, দেবের ভাল নাম হল দেবাশিস। দেবমাল্য আর দেবাশিস। খুব সুন্দর।
রনি বলল, দেবাশিস মানে হল, দেবতার আশীর্ব্বাদ। তাই না?
মা বলল, হ্যাঁ। ওর দাদু এই নামটা রেখেছিলেন।
বিদিশা এতক্ষণ চুপচাপ বসেছিল। মা’কে দেখে ও উঠে দাঁড়িয়েছে। মা চলে যাবার পর শুভেন্দু বলল, এই তোরা সবাই দেবের কথা বলছিস। বিদিশার কথা তো কিছু বলছিস না?
রনি বলল, আমি তো ছাদের গল্পটা বলতেই যাচ্ছিলাম। তোরাই তো বলতে দিলি না। মাঝখান থেকে মাধুরী আবার নিজেদের বাড়ীর ছাদের গল্প বলতে শুরু করে দিল।
মাধুরী বলল, তোমার আবার কোন ছাদের গল্প? যতসব গুলগল্প। ছাড়ো তো সব গ্যাঁজাখুড়ি কথা।
রনি বলল, যাবাব্বা। যা সত্যি তাই তো বলব। গুলগল্প কেন হবে?
আমরা কেউই এখন বুঝতে পারছি না। রনি কোন ছাদের গল্প শোনাতে চায়। এক কলেজ ছাড়া বিদিশাকে নিয়ে আমি আর কোন ছাদে গেছি, আমার তো মনে পড়ে না।
রনি বলল, মনে নেই? বলেই আমার দিকে তাকিয়ে চোখ মারছে। আমি তখন শুয়ে শুয়ে হাসছি। বিদিশা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি হাসছো কেন? আবার কবে কোন ছাদে উঠেছো তুমি? আমি ছাড়া অন্য কোন মেয়ে ছিল নাকি তোমার সঙ্গে?
আমি সেই মূহূর্তে হাসবো না কাঁদবো। বুঝতে পারছি না। রনি একটু পরেই আর একজনের পোল খুলতে চলেছে। ব্যাপারটা যদি এখুনি ফাস করে দেয় রনি। শুভেন্দু খুব বিপদে পড়ে যাবে।
শুভেন্দু পেছন থেকে রনিকে চমকানো শুরু করেছে।- এই রনি। বলবি না বলছি। খবরদার। তাহলে কিন্তু খুব খারাপ হবে।
এমন ভাবে ওয়ার্নিং দিচ্ছিল। রনি বলতে গিয়েও থেমে গেল। শুক্লা ব্যাপারটাকে আঁচ করেছে। রনিকে বলল, কার কথা বলছিস তুই? শুভেন্দুর কথা? ও বুঝি কারুর সাথে লাইন মারছিল? শুভেন্দু কোন মেয়েকে নিয়ে ছাদে? তুই কি এটাই বোঝাতে চাইছিস। কিন্তু ও তো ব্রহ্মচারী। মুনি ঋষিরা যেমন ভাবে তপস্যা করে। শুভেন্দুও তাই। কে ওর ধ্যান ভাঙাতে গেল। তাও আবার ছাদে?
শুভেন্দু শেষবারের মতন ধমক লাগালো। এই রনি ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।
রনি বলতে গিয়েও শেষ মূহূর্তে চেপে গেল। দুটো কান ধরে বলল, না, আমার বস আমাকে মানা করে দিয়েছে। সুতরাং আমি আর বলব না। এই তোরা কিছু শুনিস নি। ওসব ছাদের গল্প হল বানানো গল্প।
শেষ মূহূর্তে রহস্যটা রহস্যই রয়ে গেল। শুভেন্দুর ধ্যানভাঙার গল্প আর শোনা হল না।
শুক্লা একটু আপসেট হয়ে পড়েছে। রনিকে ধমক দিয়ে বলল, এই তোরা দুই মক্কেল। তোদের পীড়িত এবার আমি বার করছি। বল শীগগীর। না হলে কিন্তু ভাল হবে না বলে দিচ্ছি। ব্যাটা শুভেন্দু সবাইকে গুল মেরে বেড়ায়, প্রেম নিয়ে উপদেশ দিয়ে বেড়ায়, ওর গুলবাজী এবার আমি বার করছি। বলেই শুভেন্দুর দিকে তাকালো শুক্লা। -আজ তোমার মজা আমি বার করছি। রনির পেট দিয়ে কথাটা বার করি। তারপর দেখ তোর আমি কি করি?
শুভেন্দু বলল, তুই আমার কিছুই করতে পারবি না। রনি যতক্ষণ আমার কাছ থেকে গ্রীন সিগন্যাল না পাবে, ও কিছুই বলবে না।
শুক্লা রনিকে বলল, তোকে ঘুষ দেবে বলেছে শুভেন্দু? কত টাকা দেবে? বল আমিও দিচ্ছি। বলেই নিজের ভ্যানিটি ব্যাগটা খুলে ফেললো। ভেতরে কড়কড় করছে পাঁচশটাকার একগাদা নোট। রনি মুখ বাড়িয়ে উঁকি মেরে শুক্লার ব্যাগের দিকে দেখছে।
-উরিব্বাস। কত নোট রে। আমি তো এত টাকা একসাথে চোখেই দেখিনি।
শুক্লা বলল, এতে পাঁচহাজার আছে। বল। তাহলে পুরোটাই তোকে দিয়ে দেবো। শুভেন্দু নিশ্চই এর থেকে তোকে বেশি দেবে না।’
রনি বলল, টাকাটা আগে দে। তারপর বলছি।
শুক্লাও নাছোড়বান্দা। রনিকে বলল, ওটি হবে না। খুব চালাক না তুমি ? আগে বলো। তারপরে পাবে।’
রনি এদিক ওদিক সবার দিকেই একবার করে তাকাচ্ছে। আর মাথা চুলকোচ্ছে। তারপর দাঁত মুখ খিচিয়ে বলল, যাক শালা, বলেই দিই। তারপর যা হয় দেখা যাবে।’
আমরা সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি রনির দিকে। রনি একবার শুধু তাকালো শুভেন্দুর দিকে। ওকে বলল, ডোন্ট মাইন্ড ইয়ার। তাহলে বলেই দিচ্ছি। আর তুইও বা কতদিন চেপে রাখবি। একদিন না একদিন তো ব্যাপারটা ঠিকই জানাজানি হবে।’
আমি লক্ষ্য করলাম, শুভেন্দু পালাবার পথ খুঁজে পাচ্ছে না। রনি সেই মাথা চুলকোতে চুলকোতেই বলল, আসলে আমার এই শ্যালক বাবু না। একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে গেছে। আমি তার কথাই বলতে যাচ্ছিলাম। বলেই আরো বেশি করে মাথা চুলকোতে শুরু করল রনি।
আমি, শুক্লা, আর বিদিশা আমরা তিনজনে প্রায় একসঙ্গেই বলে উঠলাম। শুভেন্দু? প্রেম? বলিস কি?
রনি মাথা চুলকোতে চুলকোতে বলল, হ্যাঁ শুভেন্দুর সাথে সেই মেয়েটার ছাদে প্রেম। ওটাই না বলতে যাচ্ছিলাম।
শুভেন্দু বলল, তুই আমার কিছুই করতে পারবি না। রনি যতক্ষণ আমার কাছ থেকে গ্রীন সিগন্যাল না পাবে, ও কিছুই বলবে না।
শুক্লা রনিকে বলল, তোকে ঘুষ দেবে বলেছে শুভেন্দু? কত টাকা দেবে? বল আমিও দিচ্ছি। বলেই নিজের ভ্যানিটি ব্যাগটা খুলে ফেললো। ভেতরে কড়কড় করছে পাঁচশটাকার একগাদা নোট। রনি মুখ বাড়িয়ে উঁকি মেরে শুক্লার ব্যাগের দিকে দেখছে।
-উরিব্বাস। কত নোট রে। আমি তো এত টাকা একসাথে চোখেই দেখিনি।
শুক্লা বলল, এতে পাঁচহাজার আছে। বল। তাহলে পুরোটাই তোকে দিয়ে দেবো। শুভেন্দু নিশ্চই এর থেকে তোকে বেশি দেবে না।’
রনি বলল, টাকাটা আগে দে। তারপর বলছি।
শুক্লাও নাছোড়বান্দা। রনিকে বলল, ওটি হবে না। খুব চালাক না তুমি ? আগে বলো। তারপরে পাবে।’
রনি এদিক ওদিক সবার দিকেই একবার করে তাকাচ্ছে। আর মাথা চুলকোচ্ছে। তারপর দাঁত মুখ খিচিয়ে বলল, যাক শালা, বলেই দিই। তারপর যা হয় দেখা যাবে।’
আমরা সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি রনির দিকে। রনি একবার শুধু তাকালো শুভেন্দুর দিকে। ওকে বলল, ডোন্ট মাইন্ড ইয়ার। তাহলে বলেই দিচ্ছি। আর তুইও বা কতদিন চেপে রাখবি। একদিন না একদিন তো ব্যাপারটা ঠিকই জানাজানি হবে।’
আমি লক্ষ্য করলাম, শুভেন্দু পালাবার পথ খুঁজে পাচ্ছে না। রনি সেই মাথা চুলকোতে চুলকোতেই বলল, আসলে আমার এই শ্যালক বাবু না। একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে গেছে। আমি তার কথাই বলতে যাচ্ছিলাম। বলেই আরো বেশি করে মাথা চুলকোতে শুরু করল রনি।
আমি, শুক্লা, আর বিদিশা আমরা তিনজনে প্রায় একসঙ্গেই বলে উঠলাম। শুভেন্দু? প্রেম? বলিস কি?
রনি মাথা চুলকোতে চুলকোতে বলল, হ্যাঁ শুভেন্দুর সাথে সেই মেয়েটার ছাদে প্রেম। ওটাই না বলতে যাচ্ছিলাম।