06-07-2021, 02:22 PM
পরিশিষ্ট –
লতার বাবা মাকে আকাশের বাড়ীতে ডাকা হয়। সুনিতা ওনাদের বলে লতার ভুলের কথা। শুরুতে ওনারা খুবই রেগে গিয়েছিলেন। তারপর আকাশ বোঝানোতে শান্ত হন।
রাজনের এক বন্ধু পালঘাটের সরকারি হাসপাতালে কাজ করতো আর ওখানে কোয়ার্টারে থাকতো। লতার বাচ্চা হওয়ার আগে ওই বাড়ীতে আকাশ আর সুনিতার সাথে থাকে। রাজনের বন্ধুর কোন বাচ্চা ছিল না। ওঁরা আকাশদের বাড়ীতে এসে থাকে। লতা যে ওখানে থাকতো কেউ জানত না। এমন কি রাজনের ওই বন্ধুও জানত না। ওঁরা আটজন ছাড়া শুধু আমি জানতাম আর আজ আপনারা সব পাঠকেরা জানলেন।
লতার ঠিক সময়ে কোন সমস্যা ছাড়া একটা ছেলে হয়। সুনিতা তার নাম রাখে, যেটা আগে ঠিক করা ছিল, ‘সমুদ্র’। স্বাভাবিক ভাবেই স্মৃতি দেবী সুনিতার ছেলে হবার পরে সব কিছু মেনে নেন। উনি সুভাষ বাবুকে নিয়ে আবার পালঘাটে এসেছিলেন। সুনিতার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। সুনিতা কেঁদে ভাসিয়ে দিয়েছিল আর বলেছিল, “মা কোনদিন সন্তানের কাছে অন্যায় করে না। নিশ্চয়ই সুনিতা কোন পাপ করেছিল ভগবান তার শাস্তি দিয়েছেন। ওর প্রভুর মা কোনদিন ভুল করতে পারেন না।”
এরপরে স্মৃতি দেবীর সব অহঙ্কার ভেঙ্গে চূর্ণ হয়ে গেছে।
আরও দু বছর পড়ে ১৯৮৮ সালে রাজনের সাথে চন্দ্রিকার বিয়ে হয় – একসাথে ‘তিনবন্ধু’ পড়ার ফল। এই বিয়েতে স্মৃতি দেবী আর কোন আপত্তি করেনে নি। ওদের মেয়ে হয়েছে আর মেয়ের বয়স এখন ২২।
সমুদ্র এখন দিল্লিতে থাকে। বাবার মত ইঞ্জিনিয়ার। একটা পাঞ্জাবি মেয়েকে বিয়ে করেছে। সুখে আছে।
সুনিতা আর আকাশ এখন কোলকাতায় থাকে। বাবা মায়ের সাথেই থাকে। বাবা মায়ের বয়েস প্রায় ৭৫। সুনিতা এখনও রোজ আকাশকে ‘হে প্রভু’ বলে পুজা করে। আকাশেরও অভ্যেস হয়ে গেছে আর নিষেধ করে না।
ওহো আরেকটা কথা লিখতে ভুলেই গিয়েছি। সেই রাতে আকাশ সবার সাথে নিজেদের সন্তান ঠিক করার পরে আকাশ আর সুনিতার মধ্যে কি কথা হয়েছিল সেটা লিখিনি। সেই রাতে আকাশ বলেছিল যে ওঁরা আর কোন সন্তানের চেষ্টা করবে না। নিজেদের কোন সন্তান হলে যদি মন বদলে যায়। প্রথম সন্তানকে যদি অবহেলা করে। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত আকাশ ওর ময়ুরকে রেনকোট পড়িয়েই ক্যানালে নামায়।
সমাপ্ত