06-07-2021, 02:16 PM
পালঘাটে আকাশ ও সুনিতা –
এর মধ্যে আরেকটা সমস্যা আসে। সেটা দিব্যাকে নিয়ে। দিব্যার বাড়ি থেকে দিব্যার বিয়ে দেবে। দিব্যা রাজনকে ছাড়া বিয়ে করবে না। রাজনের নিজের ফ্যামিলিতে কিছু সমস্যা থাকায় ও তখন বিয়ে করতে পারবে না। আর দিব্যার বাড়ি থেকে তক্ষুনি বিয়ে দেবে। দিব্যার বাবার কোন এক বন্ধুর ছেলে সাথে ওঁরা দিব্যার বিয়ে ঠিক করেছে। দক্ষিন ভারতের * সমাজ অনেক বেশী রক্ষণশীল। ওখানে ভালবেসে বিয়ে এখনও হাতে গুনে বলা যাবে। আর ১৯৮৫ সালে কেউ সেটা চিন্তাই করতো না। সুনিতার বাবা আর মা ব্যতিক্রম ছিলেন। ওনারা মেনে নিয়ে ছিলেন। তাছাড়া ওনারা একটু কম পয়সা ওয়ালা ফ্যামিলি ছিলেন, হতে পারে সেই জন্যই ওঁদের আত্মম্ভরিতা কম ছিল। আকাশকে মেনে নিয়ে ছিলেন। দিব্যার বাড়ি অপেক্ষাকৃত সচ্ছল। দিব্যার বাবা একটু নামকরা লোক। তাই উনি কেন মানবেন। দিব্যা বাবাকে বলার চেষ্টা করেছিল। ওর বাবা, মা, দাদা কেউ পাত্তাই দেননি দিব্যার ভালবাসার কথায়। মনের দুঃখে ও রাজনকে সব জানায়। রাজন মেনে নিতে বাধ্য হয়। ওর আকাশের মত সাহস ছিল না। অনেক সাদা সিধে ছেলে।
একমাস হয়ে গেছে আকাশের পালঘাটে আসা। রাজন একটা ঘর ঠিক করে দিয়েছে আকাশ আর সুনিতার জন্য। সুনিতা কলেজে যেতে শুরু করেছে। আকাশ অফিসে খুব ভালো ভাবে কাজ করছে। রাজন আর দিব্যা এক বছর পরে বিয়ে করবে। আকাশ আর সুনিতার জীবন ভালো ভাবেই চলছে। সুভাষ বাবু মাঝে মাঝে আকাশের অফিসে ফোন করে সব খবর নেন। স্মৃতি দেবী একই আছেন। সুভাষ বাবু আর চন্দ্রিকা অনেক বুঝিয়েও ওনার মাথা ঠিক করতে পারেননি।
আকাশ এখনও কোলকাতা যেতে পারেনি। ওর সুনিতাকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছাই করে না। ও আর সুনিতা রোজ রাতে ভালোবাসে। সব কিছু করে কিন্তু সুনিতার ক্যানালকে ছোঁয় না।
লতাও একই আছে। ও ওর কুড়ি বা পঁচিশটা ছেলে আর টিচারের সাথে মনের সুখে সেক্স এর খেলা চালিয়ে যাচ্ছে। সুনিতা আর দিব্যা লতাকে মাঝে মাঝেই দ্যাখে সেই জঙ্গলের পেছনে দু চারটে ছেলের সাথে যেতে। একদিন দিব্যা বলে গিয়ে দেখতে লতা কি কি করছে। সুনিতার যাবার ইচ্ছা ছিল না। দিব্যা জোর করায় গেল। গিয়ে দ্যাখে লতা সব জামা কাপড় খুলে উলঙ্গ। সাথে তিনটে ছেলেও তাই। চার জনে মিলে যা খুশী করছে। সেক্সের কিছু বাদ নেই আর। তিনটে ছেলেই পালা করে সঙ্গম করে ওর সাথে। লতাও ছেলেদের সাথে তাল মিলিয়ে সব কিছু করে গেল। সুনিতা চলে যায়। দিব্যা পেছন থেকে এসে ওকে ধরে জিজ্ঞাসা করে ওর কি হয়েছে। সুনিতা বলে লতা যা করছিল ওটা সেক্সের নামে নোংরামো। সেক্সের মত পবিত্র পুজাকে লতা আর ওর যৌনভৃত্যরা পাপের আধার করে তুলেছে। ও এই সব সহ্য করতে পারেনা। ও আর আকাশও সেক্স করে। কিন্তু ওরা দুজনেই পুজা করার মত পবিত্রতা নিয়েই করে। একদিন ভগবান লতাকে ঠিক শাস্তি দেবে। আর সেইটা ও লতার ছোটবেলার বন্ধু হিসাবে সহ্য করতে পারছে না।
সেদিন সন্ধ্যা বেলায় সুনিতা লতাকে জিজ্ঞাসা করে যে ও দুপুরে কি করছিল।
লতা – তুই আর দিব্যা তো দেখেছিস আমি কি করেছিলাম।
সুনিতা – তুই জানিস আমরা দেখছিলাম।
লতা – হ্যাঁ আমি দেখেছি যে তোরা দেখছিলি।
সুনিতা – তাও তুই ওইসব করে গেলি ?
লতা – তুই আর আকাশও তো সবার সামনে করেছিস।
সুনিতা – আমরা ভালবাসার পুজা করছিলাম। আর তোরা নোংরামো করছিলি।
লতা – বেশ বললি তো ! শালা আমি সঙ্গম করলে নোংরামো, আর তুমি করলে সেটা পুজা ? বাঃ ভালো বললি।
সুনিতা – আর আমরা বিবাহ বন্ধনে বাঁধা পড়ার পর করেছি।
লতা – বিয়ের আগেও তো করেছিস। দিব্যা আর রাজনও তো করেছে।
সুনিতা – হ্যাঁ আমরা করেছি। কিন্তু পাগলের মত উচ্ছৃঙ্খলের মত করিনি। একদিন চার জনে মিলে উচ্ছৃঙ্খলতা করতে গিয়েছিলাম আকাশ থামিয়ে দিয়ে আমাদের পাপ করা থেকে বাচিয়েছে।
লতা – আমি বুঝিনা বাবা তোদের ওইসব পাপের সঙ্গম আর পুজার সঙ্গম। আমার কাছে সঙ্গম মানে ছেলেদের ওইটা আমার যোনির মধ্যে আসবে ব্যাস। তোর পুজা ওয়ালা সঙ্গমেও তাই করিস। নাকি অন্য কিছু করিস ?
সুনিতা – তোকে বোঝানও যাবে না। যে জেগে থেকে ঘুমানোর ভান করে তার ঘুম কখনো ভাঙ্গানো যায় না। আর তুই কেন কনডম ছাড়া সঙ্গম করছিলি। যদি প্রেগন্যান্ট হয়ে যাস তখন কি হবে ?
লতা – না রে বাবা এই লতা ওত কাঁচা মেয়ে না। আমি ওদের কখনো ভেতরে ফেলতেই দেই না। আমার মাসী শিখিয়ে দিয়েছে কারো বীর্য ভেতরে চলে গেলে কি ভাবে বের করে দিতে হয়। তুই চিন্তা করিস না। আর আমার পাপ হলেও তোর কোন দায়িত্ব নেই বা আমি বিপদে পড়লেও তোকে বাঁচাতে হবে না।
সুনিতা – এইখানে তুই আরেকটা ভুল বলছিস। আমার গত ১৫ বছরের বন্ধু। তার আগেও হয়ত বন্ধু ছিলি কিন্তু সেই বয়সের কথা তো আর আমাদের কারো মনে নেই। তাই চিরদিনই তুই আমার বন্ধু থাকবি। তুই যদি কেরালার মুখ্যমন্ত্রী হোস আমার বন্ধু থাকবি, আর তুই যদি মানুষ খুন করে জেলে যাস তাও আমার বন্ধুই থাকবি।
লতা – আমি কখন বলেছি আমি তোর বন্ধু থাকব না। আর তুই বন্ধু বলেই তোর কাছে সব কিছু বলি।
সুনিতা – তবে কেন বলিছিস তোর বিপদ হলে আমার কোন দায়িত্ব নেই ?
লতা – আমি ভুল বলেছি। আর আমি সাবধানে থাকব যাতে বিপদে না পড়ি।
লতা চলে যায়। কিন্তু বদলায় না। সুনিতা আর দিব্যা একদিন ছুটির পর টিচার্স রুমের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। ভেতর থেকে লতার গলা শোনে। সুনিতা পালিয়ে যায়। দিব্যা গিয়ে দেখতে চেস্টা করে। জানালার ফাঁক দিয়ে দ্যাখে দু প্রফেসর, লতা আর একটা মেয়ে চারজনে উলঙ্গ হয়ে সেক্স করছে। দিব্যা পরে সুনিতাকে বলে। সুনিতা আর লতাকে কিছু বলে না।
রাত্রে সুনিতা মাঝে মাঝেই ‘হে প্রভু’ বলে আকাশকে পুজা করতে যায়। আকাশ অনেক বলেও বন্ধ করতে পারে না। বাড়ীতে বেশীর ভাগ সময় আকাশ আর সুনিতা ছাড়া আর কেউ থাকেনা। সুনিতা আকাশের খুশীর জন্য বাড়ীতে নগ্নই থাকে। আকাশ নগ্ন থাকতে চায় না। সুনিতা বলে, “আমি একা কেন নগ্ন থাকবো?”
আকাশ – আমি তোমাকে নগ্ন দেখতে ভালোবাসি তাই তুমি নগ্ন থাকবে।
সুনিতা – আমিও তো তোমাকে ভালোবাসি।
আকাশ – সে আমি নগ্ন থাকলেও ভালোবাসো না থাকলেও ভালোবাসো
সুনিতা – তার মানে তুমি আমাকে ভালোবাসো না, আমার নগ্নতাকে ভালোবাসো ?
আকাশ – তা নয় আমি তোমাকেই ভালোবাসি, তোমার নগ্নতাকেও ভালোবাসি।
সুনিতা – আমিও তোমার ময়ুরকে খুব ভালোবাসি।
আকাশ – সেটাই তো সমস্যা। আমার ময়ুরকে খোলা রাখলেই লাফালাফি শুরু করে দেয়। আর এখন তো ওর ক্যানাল বন্ধ। তাই ওকে বেঁধে রাখি।
সুনিতা কাঁদতে শুরু করে। ওর মন খারাপ হয়ে যায় আকাশের ময়ুরকে শান্ত করতে পারছে না বলে।
আকাশ – আবার কাঁদো কেন সোনা ?
সুনিতা – আমার জন্য তোমার কত কষ্ট। আমার জন্য তামাকে কত কিছু ত্যাগ করতে হচ্ছে। মা, বাবা, বোনকে ছেড়ে আছো। আর তোমাকে তোমার প্রয়োজনীয় দৈহিক শান্তিও আমি দিতে পারছি না।
আকাশ – আমি তোমার কাছে আছি, এটাই আমার বড়ো শান্তি। তুমি আমার চোখের সামনে ঘুরে বেরাচ্ছ সেটাই আমার শান্তি। আমি তোমার হাঁসি মুখ সবসময় দেখতে পারছি এটাই আমার শান্তি। তুমি আমাকে পেয়ে খুশী আছো এটাই আমার শান্তি। ওই একটু দৈহিক আরাম না পেলে কি আসে যায়। দেখো এই নয় যে আমার নগ্ন থাকতে খারাপ লাগে। কিন্তু আমি সাবধান থাকতে চাই। কখন বেশী উত্তেজনার বসে আবার কিছু ভুল করে ফেলব তখন তোমার যদি আরও শরীর খারাপ হয়, তখন আমি কি করবো।
সুনিতা – তাও তো আমার জন্য কত কিছু মানিয়ে নিতে হচ্ছে তোমাকে।
আকাশ – এটা কি শুধু তোমার জন্য? এটা আমার জন্যও তো বটে। তুমি ভালো থাকলে আমিও তো ভালো থাকি। তাই যা কিছু করছি শুধু তোমার বা আমার জন্য নয়। আমরা দুজনেই যা যা করছি আমাদের দুজনের ভালবাসার জন্য।
দুজনে দুজনকে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ চুপ করে বসে থাকে। তারপর দুজনেই হেঁসে ওঠে। আকাশ বলে, “আমার সোনা মেয়ে, আমার প্রানের দেবী।”
সুনিতা বলে, “আমার শিব ঠাকুর, আমার জীবনের প্রভু।”
এই ভাবেই ওদের ভালবাসা চলতে থাকে। একদিন আকাশ দোকান থেকে চারটে হাফপ্যান্ট কিনে আনে। তখনকার দিনে এখনকার মত বড়দের হাফপ্যান্ট পড়ার চল ছিল না। আকাশ স্পোর্টসের দোকান থেকে ফুটবল খেলার রেফারীদের প্যান্ট কেনে। বাড়ি এসে সুনিতাকে বলে ওরা দুজনেই বাড়ীতে হাফপ্যান্ট পরে থাকবে। তাহলেই সুনিতার মালাবুলাহ ক্যানাল আর আকাশের ময়ুর দুটোই ঢাকা থাকবে আর নিরাপদে থাকবে। মাঝে মাঝে রাজন আর দিব্যা আসে। সুনিতার মা আসেন তবে দুপুর বেলা যখন আকাশ অফিসে থাকে। কেউ আসলে সুনিতা হাফপ্যান্টের ওপর টিশার্ট বা টপস পরে নিত।
একদিন সুনিতা আকাশকে জিজ্ঞাসা করে, “আমার শরীরে কোন কোন অংশ তোমার বেশী ভালো লাগে ?”
আকাশ – আমি পরপর বলছি। একটু ভাবতে দাও।
দু মিনিট ভেবে বলে – এক নম্বর তোমার পেট আর নাভি, তারপর চোখ, তারপর মুখ আর ঠোঁট, তারপর তোমার দুই কবুতর, তারপর মালাম্বুলাহ ক্যানাল, চুল, পা, হাত ব্যাস। এবার তুমি বল আমার কি কি ভালো লাগে তোমার।
সুনিতা – এক নম্বর তোমার মন,
আকাশ – না না মন বাদ। মন শরীরের অংশ নয়। মন ধরা হলে আমারও এক নম্বর তোমার মন হত।
সুনিতা – আচ্ছা ঠিক আছে মন বাদ এই তালিকা থেকে। এক নম্বর তোমার চোখ, দুই নম্বর হল তোমার বুক, তিন নম্বর তোমার সুন্দর ময়ুর, চার নম্বর তোমার মুখ, পাঁচ নম্বর তোমার পাছা, তারপর হাত, পা এইসব।
আকাশ – আমি তোমার পাছা বলতে ভুলে গেছি। তোমার সব কিছুই এতো ভালো কোনটা ছেড়ে কোনটা বলি।
সুনিতা – আজকে আমাকে তোমার ময়ুর নিয়ে একটু খেলতে দেবে ?
আকাশ – ময়ুর জেগে উঠলে কি করবো ?
সুনিতা – হামি খেয়ে, হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেব।
আকাশ – ঠিক আছে তোমার ভালো লাগলে খেলো। আমি মানা করবো না।
সুনিতা আকাশের প্যান্ট খুলে দেয়। ময়ুরকে চুমু খায়। ময়ুর জেগে ওঠে। সুনিতা বলে, “কতদিন পরে তোমার ময়ুরকে এইভাবে দেখছি। আমার শিব ঠাকুরের শিবলিঙ্গ। আমার খুব ভালো লাগছে। ও আদর করতে থাকে আকাশের ময়ুর কে। বার বার চুমু খায়। আকাশের ময়ূরও অনেকদিনের উপোষী ছিল। বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। চরম সময় এসে যায় খুব তাড়াতাড়ি। আকাশের পেট সুনিতার হাত সব মাখামাখি হয়ে যায়। সুনিতা কিছু না বলে উঠে গিয়ে একটা টাওয়েল ভিজিয়ে এনে আকাশকে পরিষ্কার করে দেয়। তারপর জিজ্ঞাসা করে, “তোমার ভালো লেগেছে ?”
আকাশ বলে খুব ভালো লেগেছে। সুনিতা বলে, “আজ থেকে রোজ রাতে তোমাকে অন্ততঃ এই ভাবে একটু আরাম দেব। তুমি মানা করো না। আকাশ বলে সুনিতা যা চাইবে তাই হবে।
সুনিতার মা প্রায় প্রতিদিন একবার করে আসে। মেয়ের সাথে কথা বলেন। ওর যা যা দরকার করে দেন। উনি সুনিতাকে কোন ভারী কাজ করতে দেন না। সুনিতার মা আর বাবার দুঃখ যে আকাশের মা সুনিতাকে মেনে নেন নি। আবার খুশীও যে আকাশ ওঁদের মেয়েকে ছেড়ে যায়নি। বরঞ্চ আকাশ সব ছেড়ে ওঁদের মেয়ের সাথেই আছে। সুনিতার বাবার কথা, “মিয়া বিবি রাজী তো কেয়া করেগা কাজী।”
এইভাবে ওঁদের দিন কেটে যাচ্ছিল। তিন মাস পরে আকাশ সুনিতাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যায়। ডাক্তার সব USG আর অন্য কিছু পরীক্ষা করে বলেন সুনিতার ভেতরের ক্ষত শুকিয়ে গেছে ওরা নর্মাল জীবন শুরু করতে পারে। সুনিতা জিজ্ঞাসা করে ও আকাশকে পুরোপুরি ভালবাসতে পারবে কিনা। ডাক্তার মহিলা সুনিতার গাল টিপে বলেন ও ওর আকাশের সাথে সব কিছুই করতে পারবে। তারপর থেকে সুনিতা আকাশের ময়ুরকে রোজ রাত্রে মালম্বুলাহ ক্যানালে স্নান করায়। কিন্তু যা চাইছিল সেটা আর আসে না। আকাশ বলে ওরা চেস্টা করে যাবে।
আরও এক মাস কেটে যায় আকাশ আর সুনিতার। গত পাঁচ মাসে চার পাঁচ বার চন্দ্রিকা কোন টেলিফোন বুথ থেকে আকাশের সাথে অফিসে কথা বলেছে। চন্দ্রিকা ওদের মাকে অনেক বুঝিয়েছে কিন্তু মা বোঝেন নি। মাঝে দুর্গা পুজা কেটে গেছে। চিঠি দিয়ে আকাশ বাবা আর মাকে প্রনাম জানিয়েছে। বোনকে ফোনে ভালবাসা জানিয়েছে। ডিসেম্বর মাসের শেষে এক দিন আকাশ বলে ও একবার কোলকাতায় যাবে। বাড়ি থেকে ওর কিছু জিনিসপত্র আনতে হবে। আর সুনিতাকে বলে চন্দ্রিকার ইলেভেনের পরীক্ষা হয়ে গেছে তাই ও চেস্টা করবে দু মাসের জন্য যদি সুনিতাকে পালঘাটে নিয়ে আসা যায়। সুনিতা খুব খুশী বোন আসবে শুনে। কত কি জিজ্ঞাসা করে বোনকে নিয়ে। আকাশ বলে, “দাঁড়াও এখনও ঠিক হয়নি। আমি বাড়ি গিয়ে বাবাকে বলি। বাবা রাজী হলে নিয়ে আসব।”
সুনিতা বলে ও বাবাকে চেনে আর বাবা ঠিক রাজী হয়ে যাবে। আকাশ ২২শে ডিসেম্বর শনিবার কোলকাতা যায়। যাবার আগে আকাশ সুনিতা কে বলেছিল মায়ের কাছে গিয়ে থাকতে। সুনিতা রাজী হয়নি। ও আকাশের জায়গা ছেড়ে কোথাও যাবে না। ও বলে দিনের বেলা ওর মা আসেন একবার। আর রাত্রে ও দিব্যা বা লতার সাথে থেকে যাবে। আকাশ কোলকাতা পৌঁছে রাজনকে ফোন করে পৌঁছানোর খবর দেয়। আকাশ কোলকাতা যাবার চার পাঁচ দিন পরে লতা ছিল সুনিতার সাথে। রাত্রে খাবার পরে লতা বমি করতে শুরু করে।
লতার বমি করা দেখে দিব্যা ঘাবড়ে যায়। জিজ্ঞাসা করে লতা কি খেয়েছিল সেদিন। লতা বলে কিছুই খায়নি। ওর পেট ঠিক আছে কোন বদহজমের সমস্যা নেই। সুনিতা জিজ্ঞাসা করে, “তুই কি এই জন্যেই আমার সাথে কথা বলতে চাইছিলি ?”
লতা – হ্যাঁ, গত দু তিন দিন ধরে আমার বমি পাচ্ছে। আমি মাকে কিছু বলিনি।
দিব্যা – কি হয়েছে ওর ?
সুনিতা – তোর বমি পাচ্ছে আর কি হচ্ছে ?
লতা – সব সময় গা গুলাচ্ছে। মাছের গন্ধ পেলেই বমি বেশী পাচ্ছে। তুই রাতের খাবারে মাছ এনেছিস তাই আমার বমি পাচ্ছিল।
সুনিতা – এবার কি করবি তুই ? আমাদের কথা তো শুনিস নি। এবার তোকে কে বাঁচাবে ?
দিব্যা – লতার হয়েছে টা কি ?
সুনিতা – আমাদের বন্ধু মা হতে চলেছে। তোকে কতবার বলেছি নিজেকে ঠিক কর। এবার আমিই বা কি করবো!
লতা – সুনিতা, দিব্যা কিছু একটা কর আমাকে বাঁচা।
সুনিতা – মাকে বলেছিস ?
লতা – মা জানলে আমাকে কুচি কুচি করে কেটে ফেলবে।
সুনিতা – তাও উনি তোর মা। আমি যাই করিনা কেন তোর মাকে জানাতেই হবে।
লতা – এখন আমি কি করবো বল ?
সুনিতা – এখন খেয়ে নে। আমি মাছ সরিয়ে দিচ্ছি। তুই বাকি জিনিস দিয়ে খেয়ে নে। আমি তোকে আগেও বলেছি, এখনও বলছি। আমি তোর বন্ধু। আমি বন্ধুর বিপদে তাকে ছেড়ে যাব না। আমাকে চিন্তা করতে দে। কোন একটা উপায় বের করবো।
সুনিতা মাছ ছাড়া অন্য সব দিয়ে আগে লতাকে খাইয়ে দেয়। তারপর ও আর দিব্যা খায়। রাত্রে তিনবন্ধু একসাথে ঘুমায়। সারারাত সুনিতা ঘুমাতে পারে না। সকালে উঠে ও লতাকে নিয়ে ওর ডাক্তারের কাছে যায়। ডাক্তার সব শুনে কিছু পরীক্ষা করতে বলেন। বমি থামিয়ে রাখার ওষুধ দেন। বিকালে রাজন কে সব কিছু বলে। রাজন নিজে খরচ করে লতার সব পরীক্ষা করায়। দুদিন পরে সব রিপোর্ট দেবে। সেই দু দিন লতা আর বাড়ি যায় না। বাড়ীতে খবর পাঠায় যে সুনিতার শরীর খারাপ বলে ওর কাছে থাকবে।
দুদিন পড়ে ডাক্তারের কাছে গেলে উনি বলেন লতা ছয় সপ্তাহের প্রেগন্যান্ট। ও যদি বাচ্চা রাখতে চায় তবে ঠিক আছে। কিন্তু অ্যাবরসন করাতে হলে খুব বেশী হলে দশ দিনের মধ্যে করে নিতে হবে। সুনিতারা ওখান থেকে চলে আসে। বাড়ি এসে ও লতাকে বলে আকাশের ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে।
এর মধ্যে আরেকটা সমস্যা আসে। সেটা দিব্যাকে নিয়ে। দিব্যার বাড়ি থেকে দিব্যার বিয়ে দেবে। দিব্যা রাজনকে ছাড়া বিয়ে করবে না। রাজনের নিজের ফ্যামিলিতে কিছু সমস্যা থাকায় ও তখন বিয়ে করতে পারবে না। আর দিব্যার বাড়ি থেকে তক্ষুনি বিয়ে দেবে। দিব্যার বাবার কোন এক বন্ধুর ছেলে সাথে ওঁরা দিব্যার বিয়ে ঠিক করেছে। দক্ষিন ভারতের * সমাজ অনেক বেশী রক্ষণশীল। ওখানে ভালবেসে বিয়ে এখনও হাতে গুনে বলা যাবে। আর ১৯৮৫ সালে কেউ সেটা চিন্তাই করতো না। সুনিতার বাবা আর মা ব্যতিক্রম ছিলেন। ওনারা মেনে নিয়ে ছিলেন। তাছাড়া ওনারা একটু কম পয়সা ওয়ালা ফ্যামিলি ছিলেন, হতে পারে সেই জন্যই ওঁদের আত্মম্ভরিতা কম ছিল। আকাশকে মেনে নিয়ে ছিলেন। দিব্যার বাড়ি অপেক্ষাকৃত সচ্ছল। দিব্যার বাবা একটু নামকরা লোক। তাই উনি কেন মানবেন। দিব্যা বাবাকে বলার চেষ্টা করেছিল। ওর বাবা, মা, দাদা কেউ পাত্তাই দেননি দিব্যার ভালবাসার কথায়। মনের দুঃখে ও রাজনকে সব জানায়। রাজন মেনে নিতে বাধ্য হয়। ওর আকাশের মত সাহস ছিল না। অনেক সাদা সিধে ছেলে।