05-07-2021, 11:37 AM
অনন্ত নিঝুমতা – ৩
বাসায় এসে নিবিড়কে ফোন করে। সৌভাগ্যক্রমে মা বাইরে গিয়েছেন নিঝুমকে বাসায় ড্রপ করেই। তাই বাসায় ঢুকেই ফোন দিতে পারে। নিবিড় একটু গম্ভীর হয়েই ফোনে কথা বলে নিঝুমের সাথে। নিঝুম অনেক বোঝায়, অসংখ্য রিকোয়েস্ট করে উল্টোপাল্টা কিছু না করার জন্য। বলে যে আকাশ যাই বলুক, তার কাছে তো নিবিড় তার সবচেয়ে ভাল বন্ধু। অবশেষে শান্ত হয় নিবিড়। ভালভাবে কথা বলে নিঝুমের সাথে। তবে নিঝুম ঘুণাক্ষরেও বলেনা অনন্যা আজ তার সাথে কী ব্যবহার করেছে। নিবিড় ওর গলা শুনে মন খারাপ বুঝতে পারলেও হাজার চাপাচাপিতেও কিছু বলেনা। শুধু বলে যে টায়ার্ড লাগছে খুব। এরপর অল্প কথায়ই ফোন রেখে দেয়।
এতক্ষণে নিজের সাথে একা হওয়ার সুযোগ পায় নিঝুম। সমস্ত আবেগের আগল খুলে যায়। চোখ বেয়ে ঝরতে থাকে অজস্র বারি। কিন্তু কোন প্রশ্নেরই কোন জবাব দিতে পারেনা সে নিজেকে। অবুঝের মত কাঁদতে থাকে শুধু একা একা। তার এই কষ্ট কাউকে বলার নয়। এর ভাগীদার সে একলাই। আগে নিবিড় ছিল, যাকে সবকিছু সে মন উজাড় করে বলতে পারত। কিন্তু এখন সেই নিবিড়ই…
আরেকটা কর্তব্য বাকি থেকে যায় তখনও। তবে সেটাও সে তাড়াতাড়িই করে ফেলে। তা হল, আকাশকে সাবধান করে দেওয়া। সেইদিন রাতেই সে আকাশকে একটা লম্বা মেসেজ পাঠায় কঠোর ভাষা প্রয়োগ করে। বলে দেয়, নিবিড় তার “আর সবার মত কেবল একটি বন্ধু” নয়, সে তার সারা জীবনের বন্ধু। বরং আকাশকেই তার শুধুই একজন বন্ধু বলা যেতে পারে। সাথে এটাও বলে দেয় যে এরপর নিবিড়ের আর একটা অপমানও সে সহ্য করবেনা। এর আগেও মানা করেছে আকাশকে, এবার শেষবারের মত সাবধান করছে। আরও বলে, “তুই যে আমার সাথে ফোনে কথা বলতে মানা করেছে বলে নিবিড়কে এত কথা শুনিয়েছিস তা আমি খুব ভালমত জানি। কিন্তু একটা কথা তোকে বলে দিই, আমার নিজেরও ইচ্ছা নেই তোর সাথে ফোনে কথা বলার। তোর যদি আমার সাথে কথা বলতেই হয়, নিবিড়কে ভালভাবে রাজি করা, দরকার হলে ওকে ‘প্লিস’ও বলতে হবে তোকে। ও যদি মানে তাহলেই আমি কথা বলব, নাহলে না। তবে এটা মনে রাখবি, আমার ব্যক্তিগত আগ্রহ থেকে তোর সাথে কথা আমি বলবনা। আর হ্যাঁ, শেষ একটা কথা বলে রাখি। আমার এই মেসেজের কোন উল্টোপাল্টা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা তুই করবিনা। আমাকেও না, আর নিবিড়কে তো না-ই। কারণ তুই নিজেও জানিস যা করেছিস খুব ভুল করেছিস। সুতরাং উত্তর দিতে চাইলে ভালভাবে দিবি। একটা উল্টোপাল্টা কাজ করবি তো কাল তোর সাথে যে কোন উপায়ে দেখা করে এমন মার মারব, কোন ছেলেও এত মারতে পারবেনা কোনদিন তোকে। জানিস যে এটা আমি পারি। নিঝুমকে এতদিনে ভালভাবেই চিনে গেছিস আশা করি। বাই।” একটা নিঃশ্বাস ফেলে আকাশের নাম্বারটা বের করে মেসেজটা সেন্ড করে দেয় নিঝুম। এসব কী হচ্ছে তার জীবনে? ছোটবেলা থেকে ভাইদের মধ্যে বড় হওয়ার কারণেই হোক, আর বিভিন্ন স্পোর্টসে পারদর্শী হওয়ার কারণেই হোক, ছেলেদের সে ভয় করতে শেখেনি কখনও। বরং এটা খুব ভালভাবেই বোঝে যে ছেলেরা তাকে সমীহ করে চলে। কিন্তু কোন ছেলেকে পিটুনি দেওয়ার হুমকি দেওয়া এই প্রথম। নিজের মনেই একটু হেসে ফেলে সে। তার স্বচ্ছ,কোমল অথচ দৃঢ় প্রকৃতির কারণেই কোন ছেলে আজ পর্যন্ত তাকে কোন ফালতু কথা বলতে সাহস পায়নি। শুধুমাত্র নিবিড় তার ভেতরের আসল নিঝুমকে চেনে, বোঝে। নিবিড়ের নামটা মনে আসতেই একটা বিদ্রূপাত্মক হাসিতে ঠোঁটের কোণ বেঁকে যায় নিঝুমের। এ বিদ্রুপ আর কাউকে নয়। এ বিদ্রুপ নিজেকে। নিবিড়! হাহ!
বাসায় এসে নিবিড়কে ফোন করে। সৌভাগ্যক্রমে মা বাইরে গিয়েছেন নিঝুমকে বাসায় ড্রপ করেই। তাই বাসায় ঢুকেই ফোন দিতে পারে। নিবিড় একটু গম্ভীর হয়েই ফোনে কথা বলে নিঝুমের সাথে। নিঝুম অনেক বোঝায়, অসংখ্য রিকোয়েস্ট করে উল্টোপাল্টা কিছু না করার জন্য। বলে যে আকাশ যাই বলুক, তার কাছে তো নিবিড় তার সবচেয়ে ভাল বন্ধু। অবশেষে শান্ত হয় নিবিড়। ভালভাবে কথা বলে নিঝুমের সাথে। তবে নিঝুম ঘুণাক্ষরেও বলেনা অনন্যা আজ তার সাথে কী ব্যবহার করেছে। নিবিড় ওর গলা শুনে মন খারাপ বুঝতে পারলেও হাজার চাপাচাপিতেও কিছু বলেনা। শুধু বলে যে টায়ার্ড লাগছে খুব। এরপর অল্প কথায়ই ফোন রেখে দেয়।
এতক্ষণে নিজের সাথে একা হওয়ার সুযোগ পায় নিঝুম। সমস্ত আবেগের আগল খুলে যায়। চোখ বেয়ে ঝরতে থাকে অজস্র বারি। কিন্তু কোন প্রশ্নেরই কোন জবাব দিতে পারেনা সে নিজেকে। অবুঝের মত কাঁদতে থাকে শুধু একা একা। তার এই কষ্ট কাউকে বলার নয়। এর ভাগীদার সে একলাই। আগে নিবিড় ছিল, যাকে সবকিছু সে মন উজাড় করে বলতে পারত। কিন্তু এখন সেই নিবিড়ই…
আরেকটা কর্তব্য বাকি থেকে যায় তখনও। তবে সেটাও সে তাড়াতাড়িই করে ফেলে। তা হল, আকাশকে সাবধান করে দেওয়া। সেইদিন রাতেই সে আকাশকে একটা লম্বা মেসেজ পাঠায় কঠোর ভাষা প্রয়োগ করে। বলে দেয়, নিবিড় তার “আর সবার মত কেবল একটি বন্ধু” নয়, সে তার সারা জীবনের বন্ধু। বরং আকাশকেই তার শুধুই একজন বন্ধু বলা যেতে পারে। সাথে এটাও বলে দেয় যে এরপর নিবিড়ের আর একটা অপমানও সে সহ্য করবেনা। এর আগেও মানা করেছে আকাশকে, এবার শেষবারের মত সাবধান করছে। আরও বলে, “তুই যে আমার সাথে ফোনে কথা বলতে মানা করেছে বলে নিবিড়কে এত কথা শুনিয়েছিস তা আমি খুব ভালমত জানি। কিন্তু একটা কথা তোকে বলে দিই, আমার নিজেরও ইচ্ছা নেই তোর সাথে ফোনে কথা বলার। তোর যদি আমার সাথে কথা বলতেই হয়, নিবিড়কে ভালভাবে রাজি করা, দরকার হলে ওকে ‘প্লিস’ও বলতে হবে তোকে। ও যদি মানে তাহলেই আমি কথা বলব, নাহলে না। তবে এটা মনে রাখবি, আমার ব্যক্তিগত আগ্রহ থেকে তোর সাথে কথা আমি বলবনা। আর হ্যাঁ, শেষ একটা কথা বলে রাখি। আমার এই মেসেজের কোন উল্টোপাল্টা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা তুই করবিনা। আমাকেও না, আর নিবিড়কে তো না-ই। কারণ তুই নিজেও জানিস যা করেছিস খুব ভুল করেছিস। সুতরাং উত্তর দিতে চাইলে ভালভাবে দিবি। একটা উল্টোপাল্টা কাজ করবি তো কাল তোর সাথে যে কোন উপায়ে দেখা করে এমন মার মারব, কোন ছেলেও এত মারতে পারবেনা কোনদিন তোকে। জানিস যে এটা আমি পারি। নিঝুমকে এতদিনে ভালভাবেই চিনে গেছিস আশা করি। বাই।” একটা নিঃশ্বাস ফেলে আকাশের নাম্বারটা বের করে মেসেজটা সেন্ড করে দেয় নিঝুম। এসব কী হচ্ছে তার জীবনে? ছোটবেলা থেকে ভাইদের মধ্যে বড় হওয়ার কারণেই হোক, আর বিভিন্ন স্পোর্টসে পারদর্শী হওয়ার কারণেই হোক, ছেলেদের সে ভয় করতে শেখেনি কখনও। বরং এটা খুব ভালভাবেই বোঝে যে ছেলেরা তাকে সমীহ করে চলে। কিন্তু কোন ছেলেকে পিটুনি দেওয়ার হুমকি দেওয়া এই প্রথম। নিজের মনেই একটু হেসে ফেলে সে। তার স্বচ্ছ,কোমল অথচ দৃঢ় প্রকৃতির কারণেই কোন ছেলে আজ পর্যন্ত তাকে কোন ফালতু কথা বলতে সাহস পায়নি। শুধুমাত্র নিবিড় তার ভেতরের আসল নিঝুমকে চেনে, বোঝে। নিবিড়ের নামটা মনে আসতেই একটা বিদ্রূপাত্মক হাসিতে ঠোঁটের কোণ বেঁকে যায় নিঝুমের। এ বিদ্রুপ আর কাউকে নয়। এ বিদ্রুপ নিজেকে। নিবিড়! হাহ!