05-07-2021, 10:59 AM
চোদ্দ
একদিন সঞ্জীববাবু কোট থেকে ফিরে নিজের লাইব্রেরী রুমে ঢুকে দেখলেন দেবলীনা লাইব্রেরী রুমে বসে একটা বই পড়ছে।
দেবলীনাকে দেখলেই সঞ্জীববাবুর মন খুশীতে ভরে উঠতো। আজ আবার নিজের লাইব্রেরী রুমে দেখতে পেয়ে আরও উৎফুল্ল হয়ে বললেন - কি মা, তুমি কি আবার ওকালতিও পাশ করতে চাও নাকি? বেশ ভালোই হলো, বাড়ীতে আমার একটা মাস্টার পাবো।
দেবলীনা চোখ কপালে তুলে বললো - আমি আপনার মাস্টার হবো? চিন্তা করলেও ভয় হয়।
সঞ্জীববাবু দেবলীনার পাশে বসে বললেন - কেন মা? ওকালতিতে না হোক, অনেক বিষয়ে তুমি আমার মাস্টার তো হয়েই আছো। আমি যদি এক হই তুমি হবে পাঁচ।
দেবলীনা বইটা কোলে রেখে চোখ দুটো কপালে তুলে বললো - কি যে বলেন ! আমি শূন্য।
এরপর দুজনেই হেঁসে ওঠে।
- হ্যাঁ আর একটা কথা। কাল কিন্তু বিকালের মধ্যেই তোমার গাড়ী আসছে।
দেবলীনা বিস্ময়ে শ্বশুরের দিকে তাকিয়ে রইলো। বললো - কিসের গাড়ী বাবা ?
- কেন, তুমি জানো না? তোমার নিজের জন্য যে আমি একটা গাড়ী অর্ডার দিয়েছি, সে গাড়ী।
- আমার জন্য গাড়ী? আমি গাড়ী নিয়ে কি করবো?
- গাড়ী দিয়ে কি করবে মানে? আগে যা করতে তাই করবে।
দেবলীনা হেঁসে উত্তর দিলো - আগে আমি কি করতাম বাবা?
সঞ্জীববাবু হেঁসে বললেন - এই মনে কর সাইকেলে চড়ে জনসভা, নানা রকম সামাজিক কাজ, তারপর....। মানে আগে তুমি সাইকেলে চেপে তোমার খুশীমতো যে যে কাজ করতে এখন এই নতুন গাড়ীখানায় চেপে তোমাকে সেই সব কাজ করতে হবে।
- এ আপনি কি বলছেন বাবা! দেবলীনার দুচোখ ছলছল হয়ে উঠলো।
সঞ্জীববাবু দেবলীনার দুকাঁধে দুহাত রেখে বললেন - আমি ঠিকই বলছি মা। তুমি মুক্তগণের পাখী, তোমাকে আর বেঁধে রাখতে চাই না। এখন থেকে তোমার মন যা চায় তাই করবে। এ বাড়ী থেকে কোন বাধা আসবে না। আমি তোমাকে আর সংসারের এসব কাজের মধ্যে আটকে রাখতে চাই না।
- তা হয় না বাবা। এখন আমি সংসারী।
- হলেই বা সংসারী তোমাকে তো আমি সংসার ছেড়ে চলে যেতে বলছি না কিন্তু সংসারের আর কোন দায়িত্বই তোমার ওপর থাকবে না। আমার ঘরে এতো লোকজন থাকতে তুমি কেন ওসব করতে যাবে।
দেবলীনা চুপ করে রইলো।
সঞ্জীববাবু আবার বলে চললেন - আমি জানি, আমি বুঝতে পেরেছি, তোমার সেই আগের মত কর্মস্পৃহা আজও মনের মধ্যে জেগে রয়েছে। মাঝে মাঝে সে ইচ্ছা, সে স্বপ্ন মনের অনুশাসন মানতে চায়না। সকলের আহ্বান তোমার মনকে চঞ্চল করে তোলে। কিন্তু তবু তুমি সে সব জোর করে দমিয়ে রাখো। আর আমি তা হতে দেব না।
সঞ্জীববাবু যেন অল্পের জন্য হঠাৎ থেমে আবার বলতে লাগলেন - মা, আমি চাই আবার তুমি তোমার সেই অবিবাহিত জীবন ফিরে পাও। নেমে আসো আগেকার মতো দেশের সেই আর্তদের মধ্যে। করো তাদের সেবা। যে জন্য শিক্ষা নিয়েছো, সেকাজে জীবন উৎসর্গ করো। আমি জানি তোমার মন এটাই চায়। তাই মনকে আটকে রেখোনা। আমরা সবাই তোমার পাশে থাকবো।
একদিন সঞ্জীববাবু কোট থেকে ফিরে নিজের লাইব্রেরী রুমে ঢুকে দেখলেন দেবলীনা লাইব্রেরী রুমে বসে একটা বই পড়ছে।
দেবলীনাকে দেখলেই সঞ্জীববাবুর মন খুশীতে ভরে উঠতো। আজ আবার নিজের লাইব্রেরী রুমে দেখতে পেয়ে আরও উৎফুল্ল হয়ে বললেন - কি মা, তুমি কি আবার ওকালতিও পাশ করতে চাও নাকি? বেশ ভালোই হলো, বাড়ীতে আমার একটা মাস্টার পাবো।
দেবলীনা চোখ কপালে তুলে বললো - আমি আপনার মাস্টার হবো? চিন্তা করলেও ভয় হয়।
সঞ্জীববাবু দেবলীনার পাশে বসে বললেন - কেন মা? ওকালতিতে না হোক, অনেক বিষয়ে তুমি আমার মাস্টার তো হয়েই আছো। আমি যদি এক হই তুমি হবে পাঁচ।
দেবলীনা বইটা কোলে রেখে চোখ দুটো কপালে তুলে বললো - কি যে বলেন ! আমি শূন্য।
এরপর দুজনেই হেঁসে ওঠে।
- হ্যাঁ আর একটা কথা। কাল কিন্তু বিকালের মধ্যেই তোমার গাড়ী আসছে।
দেবলীনা বিস্ময়ে শ্বশুরের দিকে তাকিয়ে রইলো। বললো - কিসের গাড়ী বাবা ?
- কেন, তুমি জানো না? তোমার নিজের জন্য যে আমি একটা গাড়ী অর্ডার দিয়েছি, সে গাড়ী।
- আমার জন্য গাড়ী? আমি গাড়ী নিয়ে কি করবো?
- গাড়ী দিয়ে কি করবে মানে? আগে যা করতে তাই করবে।
দেবলীনা হেঁসে উত্তর দিলো - আগে আমি কি করতাম বাবা?
সঞ্জীববাবু হেঁসে বললেন - এই মনে কর সাইকেলে চড়ে জনসভা, নানা রকম সামাজিক কাজ, তারপর....। মানে আগে তুমি সাইকেলে চেপে তোমার খুশীমতো যে যে কাজ করতে এখন এই নতুন গাড়ীখানায় চেপে তোমাকে সেই সব কাজ করতে হবে।
- এ আপনি কি বলছেন বাবা! দেবলীনার দুচোখ ছলছল হয়ে উঠলো।
সঞ্জীববাবু দেবলীনার দুকাঁধে দুহাত রেখে বললেন - আমি ঠিকই বলছি মা। তুমি মুক্তগণের পাখী, তোমাকে আর বেঁধে রাখতে চাই না। এখন থেকে তোমার মন যা চায় তাই করবে। এ বাড়ী থেকে কোন বাধা আসবে না। আমি তোমাকে আর সংসারের এসব কাজের মধ্যে আটকে রাখতে চাই না।
- তা হয় না বাবা। এখন আমি সংসারী।
- হলেই বা সংসারী তোমাকে তো আমি সংসার ছেড়ে চলে যেতে বলছি না কিন্তু সংসারের আর কোন দায়িত্বই তোমার ওপর থাকবে না। আমার ঘরে এতো লোকজন থাকতে তুমি কেন ওসব করতে যাবে।
দেবলীনা চুপ করে রইলো।
সঞ্জীববাবু আবার বলে চললেন - আমি জানি, আমি বুঝতে পেরেছি, তোমার সেই আগের মত কর্মস্পৃহা আজও মনের মধ্যে জেগে রয়েছে। মাঝে মাঝে সে ইচ্ছা, সে স্বপ্ন মনের অনুশাসন মানতে চায়না। সকলের আহ্বান তোমার মনকে চঞ্চল করে তোলে। কিন্তু তবু তুমি সে সব জোর করে দমিয়ে রাখো। আর আমি তা হতে দেব না।
সঞ্জীববাবু যেন অল্পের জন্য হঠাৎ থেমে আবার বলতে লাগলেন - মা, আমি চাই আবার তুমি তোমার সেই অবিবাহিত জীবন ফিরে পাও। নেমে আসো আগেকার মতো দেশের সেই আর্তদের মধ্যে। করো তাদের সেবা। যে জন্য শিক্ষা নিয়েছো, সেকাজে জীবন উৎসর্গ করো। আমি জানি তোমার মন এটাই চায়। তাই মনকে আটকে রেখোনা। আমরা সবাই তোমার পাশে থাকবো।