05-07-2021, 12:10 AM
(This post was last modified: 11-07-2021, 01:56 AM by Odysseus. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
উর্মিলা
Written by Tamal Majumdar, Translated by Odysseus
অফিস থেকে উঠবো উঠবো করছি … ফোন টা এলো সেই সময়ে । সুদীপ call করেছে মরিশাস থেকে। দিন চার-এক হলো অফিসে এর একটা প্রজেক্ট মরিশাস গেছে সুদীপ। কল টা ধরতেই ওপাশ থেক সুদীপ এর উৎকণ্ঠিত গলা পেলাম … ”তমাল .. তুমি এখন কোথায় ?”।
অমি বল্লাম… “শালা .. জানিস না কোথায় থাকতে পারি ?… Mr. Goyel এর অফিস এ কাজ করি … বেটা এক নাম্বার এর দানব … সাত-টার আগে কি ছাড়া পাওয়ার উপায় আছে? "।
সুদীপ বললো .. “ইয়ারকি ছাড় … শোন ভালো করে … খুব বিপদে পরে গেছি। তুই হেল্প না করলে সর্বনাশ হয়ে যাবে ”।
অমি বল্লাম ”কি বিপদ রে? তুই ঠিক আছিস তো? ”।
সুদীপ বললো … ”না না .. অমি ঠিক আছি। উর্মিলা এখুনি ফোন করেছিল। মা এর বুকে খুব pain হচ্ছে। ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তুই একটু দেখ না তমাল .. আমি এতো দুর থেকে টেনশন এ মরে যাচ্ছি … প্লিজ কিছু কর”।
লাফ দিয়ে চেয়ার ছাড়লাম … সুদীপ কে বল্লাম … ”অমি এখুনি যাচ্ছি … তুই চিন্তা করিস না .. অমি দেখছি। তোকে জানাচ্ছি পরে। এখন রাখছি … এক্ষুনি যেতে হবে আমাকে। রাখছি রে ”।
বস কে খবর তা দিয়েই বেরিয়ে আসছি .. হঠাৎ রক্তিমা পেছন থেকে ডাকলো… ”তমাল .. দারাও .. সুদীপ দের বাড়িতে তে যাচ্ছো? অমি ও যাবো ”। বুঝলাম সুদীপ শুধু আমকেই জানায় নি .. রক্তিমা কে নিয়ে গেলে উর্মিলা কেমন ভবে রিএ্যাক্ট করবে বুঝতে পারছি না …
কিন্তু এই রকম অবস্থায় রক্তিমা কে কিভাবে না বলি? বিশেষ করে সুদীপ ই যখন জানিয়েছে … শুধু বললাম … ”বেশ … এসো…“।
ট্যাক্সি তে ওঠার আগে উর্মিলা কে ফোন করে জেনে নিলাম এখন কি অবস্থা মাশিমার। বল্লো বুকের বা দিকে একটা pain হচ্ছে আর ভীষণ ঘামছেন। ওর পরিবারের ডাক্তার কে ইতি মধ্যেই call করেছে উর্মিলা । কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়ে ট্যাক্সি তে উঠে বসলাম রক্তিমা কে নিয়ে।
ট্যাক্সির সিটে গা এলিয়ে দিয়ে পরবর্তী কর্তব্য কি তাই ভাবছিলাম … তবে আগে সুদীপ দের বাড়ি তে পৌঁছনো দরকার। সুদীপ আমার সহকর্মী … এবং ঘনিষ্ট বন্ধুও। আলাপ টা অবশ্য চাকরি তে ঢোকার পরেই হয়েছে । দু জনেরই একটা common interest আছে … theater … আমরা দুজনেই গ্রুপ থিয়েটার এর ভক্ত ।
সেখান থেকেই বন্ধুত্বের শুরু । ও আমার চাইতে বছর দু-একের সিনিয়র। বন্ধুত্বটা বেশ জোম উঠলো আস্তে আস্তে .. সুদীপ এর আমার বাড়িতে আর আমার সুদীপ এর বাড়িতে অবারিত দ্বার। বছর তিন এক হল সুদীপ বিয়ে করেছে … উর্মিলা সুদীপ এর স্ত্রী। বাচ্চা-কাচ্চা হয়নি এখনো। বাড়িতে সুদীপ উর্মিলা আর মাসিমা .. মানে সুদীপ এর মা থাকেন। আমাকে খুব স্নেহ করেন মাসিমা ।
উর্মিলা দেখতে দারুন সুন্দরী .. শিক্ষিতা .. রুচিশীলা .. এবং বুদ্ধিমতী । Sex appeal ও দুর্বার । Figure টাও গড়পরতা বাঙালি মেয়েদের চাইতে যথেষ্ট ভালো। অনায়াশে পাঞ্জাবি মেয়ে বলে চালিয়ে দেওয়া যায়। ফর্সা .. 5’7 ″ উচ্চতা… উচ্চতার নিরিখে এবং ওজন অনুযায়ী তাকে স্লিম ই বলা যায় .. যদিও এখনে-ওখানে একটু বাড়তি মেদ পুরোপুরি পাঞ্জাবি মেয়ে না বানিয়ে বাঙালি ললনা হিশাবে অবিশ্বাসী করে না।
সুদীপ আর উর্মিলা কে বাইরে থেকে দেখলে made for each other মনে হয় … কিন্তু অমি ঠিক বাইরের লোক নই ওদের কাছে .. তাই জানি কথা টা ঠিক নয়। ওদের সুখি না হবার মতো কোনো অপূর্ণতা ছিলো না .. তবু সুখি হতে পারল না। অবিশ্বাস আর আকর্ষণহীনতার মতো দুটো মারাত্বক ত্রুটি কেন ওদের জীবনে দেখা দিল জানি না। উর্মিলার দিক থেকে কি ত্রুটি রয়েছে বলতে পারবো না… কিন্তু সুদীপ এর জলজ্যান্ত ত্রুটি এখন আমার সঙ্গেই একই ট্যাক্সি তে চলেছে … রক্তিমা !
রক্তিমাও আমাদের colleague। সুদীপ এর রক্তিমার ওপর টান অনেকদিন থেকেই রয়েছে। আর রক্তিমার তো পুরো পুরুষ জাতি টার ওপরেই টান । না .. বরং বলা ভালো পুরুষ জাতির নিম্নাঙ্গের বিশেষ স্থান এর ওপর টান। তার পরেও সুদীপ নিজের পিসেমশাই এর আনা ভালো ঘরের মেয়ের সম্বন্ধ, আর উর্মিলা কে দেখে বিয়ে করে ফেললো।
কিছুদিন উর্মিলার লীলা তে ডুবে থেকে আবার দাম্পত্য সম্পর্ক কে রক্তাক্ত করতে রক্তিমার দিকেই ঝুকে পড়ল। অনেক বুঝিয়েছি … স্বাভাবিক অবস্থায় বোঝালে চুপ করে থাকতো .. বা অন্য প্রসঙ্গ টেনে এড়িয়ে যেত। আর গ্লাস-এর আড্ডায় বোঝালে উত্তেজিত হয়ে পড়ত আর উর্মিলার উদ্দেশ্যে যা তা কথা বলতো।
উর্মিলার সঙ্গে বন্ধু-পত্নী হিশাবে বেশ খোলা মেলা সম্পর্ক আমার। ইয়ারকি ঠাট্টা ও হয় … কিন্তু শালীনতার সীমা লংঘন করে নয়। কক্ষনো সুদীপ এর ভাষায় অবিশ্বাসী .. পুরুষ-খেকো … নষ্টা মনে হয়নি । যদিও চাহুনি থেকে আমার প্রতি দুর্বলতা চুইয়ে পরে … বিশেষ পাত্তা দেই নি কখনো … তবে নিজেকে তো নিজে মিথ্যা বলা যায়না? তা ও আবর diary তে… তাই বলতেই হয় যে কখনো কখনো অদ্ভুত একটা আকর্ষন বোধ করেছি উর্মিলার প্রতি … বেশির ভাগ টাই দৈহিক।
রক্তিমা আর সুদীপ এর সম্পর্ক টার কথা উর্মিলার অজানা নয়। বিশেষত গত বছর অফিস ট্যুর এর নাম করে সুদীপ রক্তিমা কে নিয়ে চাঁদিপুর ঘুরে আসার খবর কিভাবে যেন উর্মিলা জেনে যায় … তারপর থেকে উর্মি রক্তিমা কে সহ্যই করতে পারে না। ওর প্রসঙ্গ উঠলেই সেখান থেকে চলে যায়। তাই আজ রক্তিমা কে নিয়ে উর্মিলার সামনে যেতে আমার ভীষণ দ্বিধা হচ্ছে … কিন্তু কিছু করার ও নেই আমার।
বাড়ির বাইরে গাড়ি দাঁড়ানো দেখেই বুঝলাম ডাক্তার এসেছেন। অনেকটা নিশ্চিন্ত হওয়া গেলো। বেল বাজতেই উর্মিলা দরজা খুললো। দুশ্চিন্তায় বিষন্ন হয়ে আছে মুখটা। চোখ দুটোয় একটা অশান্ত হরিণীর ক্লান্ত চাহুনি… আমার দিকে টানা টানা চোখ মেলে চাইলো। কিন্তু দৃষ্টি আমাকে ছাড়িয়ে পিছনে যেতেই মুহুর্তে জ্বলে উঠলো .. মুখের ভাব বদলে গিয়ে থমথমে হয়ে গেল। একপাশে সরে দারিয়ে ছোট্ট করে শুধু বললো… ” এসো”।