03-07-2021, 03:15 PM
কারখানাটা আগে বোধহয় বেশ বড়োসড়োই ছিলো কিন্তু এখন প্রায় অনেকটাই ভেঙে পড়েছে।
মোক্তার দাদুকে বললাম বাইরে এই দুজনকে থাকতে বলো ভিতরে আমি যাবো তুমি এখানেই থাকো।
-- কি বলছো কি বাপজান। তোমায় ফেলে আমি এখানে থাকবো। কতদিন পর আমি আমার ঠাকুরকে খুঁজে পেয়েছি। ওনাকে ফেলে আমি চলে যাবো। আমি যে ওর ছায়া।
কথা না বাড়িয়ে ভিতরে পা বাড়ালাম। কয়েকজনের গলার স্বর শোনা যাচ্ছে। অনেক পুরাতন যন্ত্রপাতি এদিক ওদিক রয়েছে। সেগুলোর আড়ালে আড়ালে এগিয়ে চললাম। একটু এগোতেই চোখে পড়লো দৃশ্যটা।
চারজন লোক মেঝেতে বসে খাবার খাচ্ছে সাথে যে মদও রয়েছে তা আর বলে দিতে হয়না। গোঁঙানিটা খুব স্পষ্ট এখানে, আওয়াজ লক্ষ করে আরো একটু এগিয়ে গেলাম। এবার দেখা গেলো, একটা ভাঙা লোহার চেয়ারের ওপর ম্যাডামকে বসিয়ে রেখেছে। পরনের শাড়িটাকে খুলে সেটা দিয়েই বাঁধার কাজটা সেরেছে। মেয়েদের চরম অপমান তখনই হয় যখন তাদের লজ্জার বস্তুকে সবার সামনে উন্মুখ করে দেওয়া হয়।
ম্যাডাম মুখ নীচু করে একভাবে কেঁদে চলেছে। মুখে সম্ভবত একটা কাপড় গুঁজে দিয়েছে। কাঁদার আওয়াজটা তাই গোঙানির মত শোনাচ্ছে।
মেঝেতে ছোট ছোট ইতস্ততঃ অনেক লোহার টুকরো পড়ে আছে তার একটা তুলে নিয়ে দূরে ছুড়ে দিলাম। ঠঙ ঠঙা ঠঙ শব্দ করে দূরে গিয়ে পড়লো সেটা। চারজনে চমকে উঠলো এর ওর মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। একজন পকেট থেকে রিভলবার বার করলো অন্যরা ছুরি। এটাই দেখতে চাইছিলাম আমি দ্রুত ওখান থেকে সরে গেলাম। মোক্তার দাদু আমার পিছু ছাড়েনি। কানে কানে ওনাকে একটা নির্দেশ দিলাম। একটু অবাক হয়ে চেয়ে দেখলো, তারপর দ্রুত নিঃশব্দে বাইরে চলে গেলো। একটু অপেক্ষা
হঠাৎ বাইরে থেকে একটা আর্ত চিৎকার ভেসে এলো। চারজনেই চমকে খাওয়া থামিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। বন্দুকধারী ও একজন ছুরিওয়ালা বাইরের দিকে পা বাড়ালো।
আহঃ এটাই চাইছিলাম ত আমি। প্ল্যানটা ঠিক কাজই করেছে।
দ্রুত তারা বাইরের অন্ধকারে মিশে গেলো। আমি বেরিয়ে এলাম, এবার সামনা সামনি লড়াই। লোকদুটো আমায় দেখে থমকে গেছে। ছুরি বাগিয়ে প্রশ্ন করলো -- কে তুই ?
-- তোদের যম।
দুজনেই একসাথে ঝাঁপিয়ে পরলো আমার দিকে। প্রস্তুত হয়েই ছিলাম দ্রুত ডান পা দিয়ে একজনের বুকে লাথি মাড়লাম। অন্যজন এগিয়ে এসে ছুরি ধরা ডান হাতটা ওপরে তুলে আমার ওপর নামিয়ে আনলো। সজোরে একটা ঘুসি মারলাম লোকটির বগল লক্ষ করে। ছুরি ধরে যারা এগিয়ে আসে তাদের প্রতিরোধ করার দুটো উপায় আমার প্রিয়, এক সে যদি একটু দূরে থাকে ছুরি ধরা হাতের কবজিতে মারা আর কাছে থাকলে কোন সুযোগ না দিয়ে বগলে মারা। দুটোতেই হাত অকেজো হয়ে পড়ে হঠাৎ রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আর সেটাই সুযোগ।
দ্রুত হাতটাকে পিছনে এনে একটু লাফিয়ে উঠে হাঁটু দিয়ে সজোরে আঘাত করলাম হাতের সংযোগস্থলে। 'মট' করে একটা শব্দ হলো। অন্যজন উঠে এগিয়ে আসলো কাছে পলক ফেলবার আগেই বাঁহাতে ওর ছুরি ধরা ডান হাতটাকে মেরে সঙ্গে সঙ্গে নাকে একটা ঘুষি মারলাম। যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে দুজনে। সময় নেই, দ্রুত ম্যাডামের কাছে গিয়ে হাতের পায়ের বাঁধন খুলে দিলাম। হাউ হাউ করে কেঁদে আমায় জড়িয়ে ধরলো। মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনা দিলাম।
ওকে ছেড়ে মাথার পিছনে হাত তোল, একটু চালাকি করবি ত খুলি উড়িয়ে দেব।
পিছনে তাকিয়ে দেখলাম বন্দুকধারী এসে গেছে। আমাদের দিকেই রিভলবার তাগ করে দাঁড়িয়ে আছে। কোন অভিব্যাক্তি দেখালাম না। ম্যাডাম মুখ তুলে আমার দিকে চেয়ে আছে চোখে ভয়ের ছাপ সুস্পষ্ট। মৃদু হেসে চোখ টিপে আশ্বস্ত করলাম।
হঠাৎ ঝটপট শব্দে পিছনে তাকালাম। ধন্যি মোক্তারের বুড়ো বয়সের খেল। লোকটাকে তুলোধনা করছে। রিভলবারটা দূরে পরে আছে।
আমি ম্যাডামের শাড়িটা মেঝে থেকে তুলে শরীরে কোনরকমে পেঁচিয়ে দিলাম।
ঘুরে দাঁড়াতেই খেয়াল করলাম আরো একজন এসে হাজির হয়েছে। মোক্তার সামাল দিলেও খুঁটি যে নড়বড় করছে তা বেশ বুঝতে পারলাম। দ্রুত এগিয়ে এসে একজনের ঘারে ঘুসি মারলাম। কিন্তু ভুল হয়ে গেলো। অন্যজন মোক্তারকে আমার গায়ে ফেলে দিয়ে রিভলবারটা কুড়িয়ে নিলো। আমি নির্বিকার ভাবে এগিয়ে যাচ্ছি লোকটার দিকে, এটুকু বিশ্বাস বন্দুকের গুলি আমায় ছুঁতে পারবে না। হঠাৎ ম্যাডাম "না" বলে চিৎকার করে আমার দিকে দৌড়ে আসতেই। রিভলবার গর্জে উঠলো। বাকি পথটুকু আসার ক্ষমতা আর রইলোনা ম্যাডামের। আমি দ্রুত গিয়ে লোকটার গলায় পরপর দুবার সজোরে ঘুসি মারলাম। সাথে সাথে গলা ধরে বসে পড়লো।
দৌড়ে গেলাম ম্যাডামের কাছে। থরথর করে কাঁপছে। বুকের বামদিকে গুলি ঢুকেছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে। পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে দৌড় শুরু করলাম। এক্ষুনি হাসপাতালে যেতে হবে। ওই অন্ধকারে তীরের মত জোরে দৌড়ে যে কি করে জঙ্গল পার হয়ে গাড়ির কাছে এলাম তা ভগবান জানেন।
হাসপাতালে পৌছে দ্রুত চিকিতসার জন্য পাঠালাম। কিন্তু পারলাম না বাঁচাতে। চোখ ফেটে জল গড়িয়ে পরলো। শুধু আমার জন্য ম্যাডামকে প্রাণ দিতে হলো।
কত কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।
ভীষন দুরন্ত ছিলাম তবু পড়ানোর সময় এতটুকু না বকে আমায় আদর করে পরিয়েছেন। খুব ভালোবাসতেন উনি আমায়। ভরসা যে করতেন সেদিনের ঘটনাই প্রমান। দুজনের সম্মতিতে যে ঘটনা আমরা ঘটিয়েছি তাতে কোন ভুল নেই।
-- বাপজান, সর্বনাশ হয়ে গেছে।
মোক্তারের কথায় চমকে উঠলাম, জিজ্ঞাসা ভরা দৃষ্টিতে তাকালাম ওনার দিকে।
-- বৌমা আর খুকুমনিকে তুলে নিয়ে গেছে।
চোখের সামনে কালোছায়া নেমে এলো আমার। মা আর মিত্রাকে ওরা নিয়ে গেছে।
মোক্তার দাদুকে বললাম বাইরে এই দুজনকে থাকতে বলো ভিতরে আমি যাবো তুমি এখানেই থাকো।
-- কি বলছো কি বাপজান। তোমায় ফেলে আমি এখানে থাকবো। কতদিন পর আমি আমার ঠাকুরকে খুঁজে পেয়েছি। ওনাকে ফেলে আমি চলে যাবো। আমি যে ওর ছায়া।
কথা না বাড়িয়ে ভিতরে পা বাড়ালাম। কয়েকজনের গলার স্বর শোনা যাচ্ছে। অনেক পুরাতন যন্ত্রপাতি এদিক ওদিক রয়েছে। সেগুলোর আড়ালে আড়ালে এগিয়ে চললাম। একটু এগোতেই চোখে পড়লো দৃশ্যটা।
চারজন লোক মেঝেতে বসে খাবার খাচ্ছে সাথে যে মদও রয়েছে তা আর বলে দিতে হয়না। গোঁঙানিটা খুব স্পষ্ট এখানে, আওয়াজ লক্ষ করে আরো একটু এগিয়ে গেলাম। এবার দেখা গেলো, একটা ভাঙা লোহার চেয়ারের ওপর ম্যাডামকে বসিয়ে রেখেছে। পরনের শাড়িটাকে খুলে সেটা দিয়েই বাঁধার কাজটা সেরেছে। মেয়েদের চরম অপমান তখনই হয় যখন তাদের লজ্জার বস্তুকে সবার সামনে উন্মুখ করে দেওয়া হয়।
ম্যাডাম মুখ নীচু করে একভাবে কেঁদে চলেছে। মুখে সম্ভবত একটা কাপড় গুঁজে দিয়েছে। কাঁদার আওয়াজটা তাই গোঙানির মত শোনাচ্ছে।
মেঝেতে ছোট ছোট ইতস্ততঃ অনেক লোহার টুকরো পড়ে আছে তার একটা তুলে নিয়ে দূরে ছুড়ে দিলাম। ঠঙ ঠঙা ঠঙ শব্দ করে দূরে গিয়ে পড়লো সেটা। চারজনে চমকে উঠলো এর ওর মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। একজন পকেট থেকে রিভলবার বার করলো অন্যরা ছুরি। এটাই দেখতে চাইছিলাম আমি দ্রুত ওখান থেকে সরে গেলাম। মোক্তার দাদু আমার পিছু ছাড়েনি। কানে কানে ওনাকে একটা নির্দেশ দিলাম। একটু অবাক হয়ে চেয়ে দেখলো, তারপর দ্রুত নিঃশব্দে বাইরে চলে গেলো। একটু অপেক্ষা
হঠাৎ বাইরে থেকে একটা আর্ত চিৎকার ভেসে এলো। চারজনেই চমকে খাওয়া থামিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। বন্দুকধারী ও একজন ছুরিওয়ালা বাইরের দিকে পা বাড়ালো।
আহঃ এটাই চাইছিলাম ত আমি। প্ল্যানটা ঠিক কাজই করেছে।
দ্রুত তারা বাইরের অন্ধকারে মিশে গেলো। আমি বেরিয়ে এলাম, এবার সামনা সামনি লড়াই। লোকদুটো আমায় দেখে থমকে গেছে। ছুরি বাগিয়ে প্রশ্ন করলো -- কে তুই ?
-- তোদের যম।
দুজনেই একসাথে ঝাঁপিয়ে পরলো আমার দিকে। প্রস্তুত হয়েই ছিলাম দ্রুত ডান পা দিয়ে একজনের বুকে লাথি মাড়লাম। অন্যজন এগিয়ে এসে ছুরি ধরা ডান হাতটা ওপরে তুলে আমার ওপর নামিয়ে আনলো। সজোরে একটা ঘুসি মারলাম লোকটির বগল লক্ষ করে। ছুরি ধরে যারা এগিয়ে আসে তাদের প্রতিরোধ করার দুটো উপায় আমার প্রিয়, এক সে যদি একটু দূরে থাকে ছুরি ধরা হাতের কবজিতে মারা আর কাছে থাকলে কোন সুযোগ না দিয়ে বগলে মারা। দুটোতেই হাত অকেজো হয়ে পড়ে হঠাৎ রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আর সেটাই সুযোগ।
দ্রুত হাতটাকে পিছনে এনে একটু লাফিয়ে উঠে হাঁটু দিয়ে সজোরে আঘাত করলাম হাতের সংযোগস্থলে। 'মট' করে একটা শব্দ হলো। অন্যজন উঠে এগিয়ে আসলো কাছে পলক ফেলবার আগেই বাঁহাতে ওর ছুরি ধরা ডান হাতটাকে মেরে সঙ্গে সঙ্গে নাকে একটা ঘুষি মারলাম। যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে দুজনে। সময় নেই, দ্রুত ম্যাডামের কাছে গিয়ে হাতের পায়ের বাঁধন খুলে দিলাম। হাউ হাউ করে কেঁদে আমায় জড়িয়ে ধরলো। মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনা দিলাম।
ওকে ছেড়ে মাথার পিছনে হাত তোল, একটু চালাকি করবি ত খুলি উড়িয়ে দেব।
পিছনে তাকিয়ে দেখলাম বন্দুকধারী এসে গেছে। আমাদের দিকেই রিভলবার তাগ করে দাঁড়িয়ে আছে। কোন অভিব্যাক্তি দেখালাম না। ম্যাডাম মুখ তুলে আমার দিকে চেয়ে আছে চোখে ভয়ের ছাপ সুস্পষ্ট। মৃদু হেসে চোখ টিপে আশ্বস্ত করলাম।
হঠাৎ ঝটপট শব্দে পিছনে তাকালাম। ধন্যি মোক্তারের বুড়ো বয়সের খেল। লোকটাকে তুলোধনা করছে। রিভলবারটা দূরে পরে আছে।
আমি ম্যাডামের শাড়িটা মেঝে থেকে তুলে শরীরে কোনরকমে পেঁচিয়ে দিলাম।
ঘুরে দাঁড়াতেই খেয়াল করলাম আরো একজন এসে হাজির হয়েছে। মোক্তার সামাল দিলেও খুঁটি যে নড়বড় করছে তা বেশ বুঝতে পারলাম। দ্রুত এগিয়ে এসে একজনের ঘারে ঘুসি মারলাম। কিন্তু ভুল হয়ে গেলো। অন্যজন মোক্তারকে আমার গায়ে ফেলে দিয়ে রিভলবারটা কুড়িয়ে নিলো। আমি নির্বিকার ভাবে এগিয়ে যাচ্ছি লোকটার দিকে, এটুকু বিশ্বাস বন্দুকের গুলি আমায় ছুঁতে পারবে না। হঠাৎ ম্যাডাম "না" বলে চিৎকার করে আমার দিকে দৌড়ে আসতেই। রিভলবার গর্জে উঠলো। বাকি পথটুকু আসার ক্ষমতা আর রইলোনা ম্যাডামের। আমি দ্রুত গিয়ে লোকটার গলায় পরপর দুবার সজোরে ঘুসি মারলাম। সাথে সাথে গলা ধরে বসে পড়লো।
দৌড়ে গেলাম ম্যাডামের কাছে। থরথর করে কাঁপছে। বুকের বামদিকে গুলি ঢুকেছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে। পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে দৌড় শুরু করলাম। এক্ষুনি হাসপাতালে যেতে হবে। ওই অন্ধকারে তীরের মত জোরে দৌড়ে যে কি করে জঙ্গল পার হয়ে গাড়ির কাছে এলাম তা ভগবান জানেন।
হাসপাতালে পৌছে দ্রুত চিকিতসার জন্য পাঠালাম। কিন্তু পারলাম না বাঁচাতে। চোখ ফেটে জল গড়িয়ে পরলো। শুধু আমার জন্য ম্যাডামকে প্রাণ দিতে হলো।
কত কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।
ভীষন দুরন্ত ছিলাম তবু পড়ানোর সময় এতটুকু না বকে আমায় আদর করে পরিয়েছেন। খুব ভালোবাসতেন উনি আমায়। ভরসা যে করতেন সেদিনের ঘটনাই প্রমান। দুজনের সম্মতিতে যে ঘটনা আমরা ঘটিয়েছি তাতে কোন ভুল নেই।
-- বাপজান, সর্বনাশ হয়ে গেছে।
মোক্তারের কথায় চমকে উঠলাম, জিজ্ঞাসা ভরা দৃষ্টিতে তাকালাম ওনার দিকে।
-- বৌমা আর খুকুমনিকে তুলে নিয়ে গেছে।
চোখের সামনে কালোছায়া নেমে এলো আমার। মা আর মিত্রাকে ওরা নিয়ে গেছে।