Thread Rating:
  • 21 Vote(s) - 3.38 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance সুনিতা মাতা
#24
কত দিন দেখিনি তোমায় -
বড় সাধ জাগে একবার তোমায় দেখি
কতকাল দেখিনি তোমায়, একবার তোমায় দেখি
স্মৃতির জানালা খুলে চেয়ে থাকি
চোখ তুলে যতটুকু আলো আসে
সে আলোয় মন ভরে যায়
কতকাল দেখিনি তোমায়, একবার তোমায় দেখি
আমার এ অন্ধকারে কত রাত কেটে গেল
আমি আঁধারেই রয়ে গেলাম
তবু ভোরের স্বপ্ন দেখে সেই ছবি
যাই এঁকে রঙে রঙে সুরে সুরে
ওরা যদি গান হয়ে যায়
কতকাল দেখিনি তোমায়, একবার তোমায় দেখি
বড় সাধ জাগে একবার তোমায় দেখি
একবার তোমায় দেখি
 
সুনিতা এই গানটা জানত না। কিন্তু ওর মনে ঠিক এইটাই মনে হত। রোজ সকালে উঠে ওই মেহগনি গাছের নীচে দিয়ে বসত। আর ভাবত আকাশের সাথে বসে আছে। আকাশের দিকে তাকিয়ে আকাশের সূর্যকে দেখতে দেখতে নিজের আকাশের কথা ভাবত। নিজের মনে কত কি বলে যেত আকাশকে। চোখ বন্ধ করলেই ওর মনে হত আকাশ বসে আছে ওর পাশে আর আকাশের হাত ওর পেটে খেলা করছে। দূরে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবত ওই বুঝি আকাশ এলো। অল্প কিছু দিনের স্মৃতি, তবু ওর মনে হত জন্ম জন্মান্তর ও আকাশের সাথেই কাটিয়েছে। চোখ বন্ধ করলেই দেখত আকাশ আসছে, মনের খুশীতে চোখ খুলে দেখত কেউ নেই। মাঝে মাঝে দূর থেকে কাউকে আসতে দেখলে ওর মনে হত আকাশ আসছে। ওর মন খুশীতে ভরে উঠত। কিন্তু শেষে যখন সে অন্য দিকে চলে যেত বা সে কাছে এলে সুনিতা দেখত অন্য কেউ ওর চোখে জল এসে যেত। সকালের সূর্যকে দেখে ভাবত সূর্যের আলোতে যেরকম সব অন্ধকার কেটে যায়, ওর জীবনেরও অন্ধকার কেটে যাবে। পাখির ডাকের সুরে ওর মনে হত ওর জীবনের ফেলে আশা সময় টুকু ওর সামনে গান হয়ে ফিরে আসবে। কবে আবার আকাশ ওর পেটে হাত দিয়ে খেলবে। ওর সারা শরীর পুড়ে যেত আকাশের আদর খাবার জন্য। রোজ ওখানে বসে থাকার সময় ওর আর কিছুই মনে থাকতো না। ও বসেই থাকতো যতক্ষণ না ওর মা এসে ওকে ঘরে নিয়ে যেতেন। ও বার বার সূর্যকে বলে যেত, কতকাল দেখিনি আকাশকে, ওকে এনে দাও, একবার আকাশ দেখি।

ঘরে গিয়ে ওর মা ওকে বলে বলে সব কিছু করাতেন। উনিও রাগ করতেন না, কারণ উনি বুঝতেন মেয়ের মনের অবস্থা। সুনিতা আকাশের কাছ থেকে ওরতিনবন্ধুবইটা রেখে দিয়েছিল। যতক্ষণ ঘরে থাকতো ওই বইটা নিয়ে বসে বসে পাটা ওলটাত। কিছু পড়তে পারত না কিন্তু ওই বইটার প্রত্যেক পাতায় আকাশের হাতের ছোঁয়া ছিল। ও সেই হাতের ছোঁয়া অনুভব করার চেষ্টা করতো। ওই বইয়ের প্রত্যেক লাইনে আকাশের গলার স্বর আর আবেগ লুকিয়ে ছিল। ও সেই ভালবাসা অনুভব করতো। ক্যানালের ধারেও যেত না বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতে। লতা আর দিব্যা অনেক বললেও যেত না।

এই ভাবে দশ দিন মত কেটে গেলে সুনিতা একটু সামলে ওঠেতাও রোজ মেহগনি গাছের নীচে বসে সূর্যোদয় দেখত আর সূর্য দেবতাকে নিজের দুঃখের কথা বলত। ঘরে ফিরে মায়ের সাথে কিছু কাজ করত। পরে বন্ধুদের সাথে গল্প করতে ক্যানালের পাশে যেত। চুপচাপ বসে থাকতো, কিছু জিজ্ঞাসা করলে ছোটো করে উত্তর দিত। নিজের থেকে কিছুই বলত না।

একদিন রাজন আর দিব্যা ওকে ঘুরতে নিয়ে যায়রাজনের সাথে দিব্যাকে দেখে ওর মন খারাপ আরও বেড়ে গেল। ওর মনে হতে লাগলো আকাশ থাকলে ওকেও ওদের মত ভালবেসে হাত ধরে ঘুরত। ও আরও মন মরা হয়ে ওদের সাথে কথা বলছিল। দিব্যা ওদের পুরনো ভালবাসার জঙ্গলের দিকে যেতে গেলে সুনিতা বলল ও যাবে না ওই দিকে। ওদিকে গেলে সুনিতার আকাশের কথা বেশী করে মনে পড়বে, তাই ওদিকে যাবেনা। তখন দিব্যা রাজনের হাত ছেড়ে সুনিতার হাত ধরে অন্য কথা বলতে লাগলো। ওদের ছোটবেলার হাসির মুহূর্ত মনে করানোর চেষ্টা করল। সুনিতা একটু শুকনো হাঁসি হেঁসে চুপ করে গেল। তখন রাজন ওকে তিনবন্ধুগল্পটা শোনাতে বলল।

সুনিতা কোথাও বসতে বলল। ওরা ক্যানালের ধারে একজায়গায় বসল আর সুনিতা ওই গল্প বলতে শুরু করল। গল্প বলতে বলতে ওর মুখের ভাব বদলে যাচ্ছিল। ওর মনে হতে থাকল আকাশ ওর সাথে আছে। প্রায় এক ঘণ্টা পরে যখন গল্প শেষ করল, বাকি সবাই চুপ। কেউ কোন কথা বলতে পারছিল না। দিব্যা বলল, “তুই রবার্টের কথা ভাব, ওর ভালবাসা আর কোনদিন ফিরবে না। তোর ভালবাসা তো ফিরে আসবে। এত দুঃখ কেন তোর ? রবার্টের মনের অবস্থার সাথে তোর যদি তুলনা করিস তবে তোর তো কিছুই হয়নি। আকাশ তো আবার ফিরে আসবে”।
সুনিতা বলল, “আমি তো জানি ও ফিরে আসবে। কিন্তু কবে”?

একটু থেমে আবার বলল, “যদি না ফেরে, যদি ওর বাবা মা আসতে না দেয়! তখন কি হবে ? আমি তো বেঁচে থেকে মরে যাব”।
রাজন আর দিব্যা দুজনেই ওকে বলল যে ওর কোন চিন্তা নেই। ওরা আকাশকে যতটা দেখেছে আর বুঝেছে তাতে ওরা জানে আকাশ ফিরে আসবে। আকাশের জীবনে যত বিপর্যয়ই আসুক না কেন ও সুনিতাকে ছেড়ে থাকতে পারবে না। আরও কিছু সময় এইসব কথা বলে ওরা বাড়ি ফিরে গেল। তারপর থেকে রোজ ক্যানালের ধারে দিব্যা আর লতা “তিনবন্ধু” নিয়ে আলোচনা করতো। যতক্ষণ ওরা ওই গল্পে থাকতো ততক্ষন সুনিতার মন ভালো থাকতো।

সখি ভালবাসা একেই বলে।

একদিন সুনিতার বাবা অফিস থেকে ফিরে বলল আকাশ ফোন করেছিল। মুহূর্তের মধ্যে সুনিতার মুখ, সুনিতার চাহনি, সুনিতার সারা শরীরের অভিব্যক্তি বদলে গেল। যেন পি সি সরকারের ইন্দ্রজাল! ও বাবাকে উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “আকাশ কেমন আছে? আমার কথা কি জিজ্ঞাসা করল? আমাকে কি ভুলে গেছে? ও কি ওর বাবা মায়ের সাথে কিছু কথা বলেছে? ওর শরীর ঠিক আছে তো”?
ও আরও কিছু জিজ্ঞাসা করতে যাচ্ছিল। ওর মা থামিয়ে দিল আর একটু ধৈর্য ধরতে বললেন। সুনিতা ছেলে মানুষের মত অ্যাঁ অ্যাঁ করতে লাগলো। ওর বাবা বললেন  চিন্তা করার কোন কারণ নেই। আকাশ ওর বাবা মাকে চিঠি লিখে দিয়েছে। ওরা কোন আপত্তি করেননি। বলেছেন আকাশ ফিরে গেলেই সব কথা শুনে ওনারা কি করা যাবে ঠিক করবেন। আর বলেছেন ওঁদের আকাশের ওপর পুরো বিশ্বাস আছে। সুনিতাকে সাবধানে থাকতে বলেছে। সুনিতা শান্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করল আকাশ কবে পালঘাট আসবে। ওর বাবা বললেন আরও একমাস পরে ও কোলকাতা যাবে তারপর আসবে। সুনিতা সেদিন খুব শান্তিতে ঘুমাল।

তার পরদিন সকালে উঠেই আগে সূর্য দেবতাকে অনেক করে প্রনাম করল। বলল, “তুমি কি ভালো ঠাকুর। তুমিই সবথেকে ভালো জান আমি আকাশকে কতটা ভালোবাসি। তুমিই আমাদের ভালবাসা শুরু হবার সাক্ষী। একমাত্র তুমিই দেখেছ আমরা কি ভাবে একজন আরেকজনের কাছে এসেছি। রোজ তোমার সামনেই আমরা দুজনকে ভালবাসতাম। তোমার কাছে আমরা কখনো কিছু লুকাইনি। আমার তোমার ওপর পুরো বিশ্বাস আছে তুমি আমাদের কোনদিন দুঃখ পেতে দেবে না”।

তারপর ও সূর্যের দিকে মুখ করে মাথা নিচু করে ওনাকে শ্রদ্ধা জানালো। মাথা তুলে দেখে সূর্য মেঘের পেছনে লুকিয়ে গেছে। সুনিতা বলল, “তোমার আবার মন খারাপ হল কেন”?

সূর্য এক পলকের জন্য মেঘের বাইরে এসে আবার লুকিয়ে গেল। সুনিতা বলল, “তবে তোমার কিসে রাগ হল?”

সূর্য আবার এক পলকের জন্য মেঘের বাইরে এসে আবার লুকিয়ে গেল। সুনিতা বলল, “ও আমি বুজেছিআমি কেন আগে কেঁদে ছিলাম। আমি এই কান ধরছি, আমি তোমাকে আর অবিস্বাস করবো না। আমি জানি তুমি আছ, আকাশ ফিরে আসবেই। আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আর কাঁদব না আমি”।
সূর্য মেঘের পেছন থেকে বেরিয়ে এসে সব দিক উজ্জ্বল করে দিল। সুনিতার মুখ হাসিতে ভরে গেল। ঘরে ফিরে মার সাথে একটু কাজ করেই কোন রকমে একটু খেয়ে দৌড়ালো ক্যানালের ধারে। দিব্যা আর লতা আসতেই ও কলকলিয়ে সব বলল। আর বলল ও খুব খুশী। সেদিন সূর্য দেবতাও ওর সাথে কথা বলেছে। দিব্যারা ওর সূর্যের সাথে কি ভাবে কথা হয়েছে সেটাও শুনল। তারপর থেকে রোজ ওরা আকাশের সাথে কি করবে, ওর বাড়ি গেলে কিভাবে থাকবে সেই গল্পই করতো। আর তিনজন মিলে স্বপ্ন দেখত।

সখি ভালবাসা একেই বলে।

এরমধ্যে সুনিতার ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোল। ভালভাবেই পাস করেছে। দিব্যা আর লতাও পাস করেছে। রাজন সবাইকে নিয়ে ওখানকার সেইসময়ের ভালো রেস্টুরান্ট “হোটেল ক্যাসিনো” তে ওদেরকে খাওয়াল। পালঘাটে ওই একটা হোটেলেই বাঙালি মাছের ঝোল পাওয়া যেত। সুনিতা তাই খেল। ও খেয়েছিল তেলাপিয়া মাছের সর্ষে বাটা। ও আবার হোটেলের ম্যানেজারকে অনুরোধ করল ওকে ওই রান্নাটা শিখিয়ে দিতে। রাজন ওই ম্যানেজারকে আলাদা ডেকে বোঝাল কেন সুনিতা ওই রান্না শিখতে চাইছিল। অনেক অনুরোধ করার পরে উনি রাজী হলেন শিখিয়ে দেবার জন্য।  সুনিতা আর দিব্যা এরপরে তিনদিন ওই হোটেলে গিয়েছিল আর হোটেলের রাঁধুনির কাছ থেকে মাছের সর্ষে বাটা, কালিয়া আর দই মাছ করা শিখে নিল।

সখি ভালবাসা একেই বলে।

এখনকার কোন কবি যদি সুনিতার কথা জানতেন তবে উনি রবিন্দ্রনাথের “সখি ভালবাসা কারে কয়” গানটার উত্তর দিতে পারতেন। “সখি ভালবাসা এরে কয়, সেতো মোটেই যাতনার নয়”। ভালবাসা সবসময়ের জন্য সুখের। বিরহ সবসময় দুঃখের। এটা ঠিক যে ভালবাসার থেকেই বিরহের জন্ম। কিন্তু তা বলে ভালবাসা কক্ষনো যাতনাময় হতেই পারে না।

যাই হোক সুনিতার দিন কাটতে লাগলো। ও কলেজে ভর্তি হল। তখন রোজ সকালে ও সূর্যোদয় দেখতে যায়। আধঘন্টা সূর্যের সাথে সুখ দুঃখের গল্প করেবসে খানিকক্ষণ আকাশের কথা ভাবে। ভাবে আকাশ থাকলে তখন কি ভাবে আদর করতো। চোখ বন্ধ করে সেই সময়টাকে অনুভব করার চেষ্টা করে। তারপর কলেজ যায়। বাড়ি ফেরে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারে। ব্যাস এইভাবেই চলে যাচ্ছিল। এইভাবে তিনমাস কেটে গেল। আকাশ মাঝে মাঝে সুনিতার বাবার সাথে ফোনে কথা বলত। আর বাড়ি ফিরে সব জানাত। সুনিতার মন দুদিন ভালো থাকতো। তারপর সুনিতা আবার নিজের মধ্যে গুটিয়ে যেত। 

কলেজে সুনিতাদের ক্লাসে ১০ জন মেয়ে আর ৩০ জন ছেলে। সব ছেলেমেয়েরাই হইচই করে দিন কাটাত। সুনিতা সবার সাথে থেকেও কেমন যেন আলাদা। দিব্যা আর লতাও একই ক্লাসে পড়ত। সুনিতা কোন ছেলের সাথে কথাই বলত না, আর দিব্যা আর লতা ছাড়া অন্য মেয়েদের সাথে অল্প কথা বলত। লতার অনেক বেশী ছেলে বন্ধু ছিল। ও সব ছেলেদের সাথে ফ্রীলি মিশত। অনেক ছেলেই ওর শরীরের নানা জায়গা ছুঁয়ে দেখেছে। লতা কিছুই বলত না। আসলে লতার খুব বেশী ইচ্ছা করতো সেক্স করতে। দিব্যা আর সুনিতার সেক্সের গল্প শুনে ওর আরও বেশী ইচ্ছা করতো। সবসময় কলজে ক্লাস করার সময় সুনিতা আর দিব্যা আলাদা বসত, আর লতা সব ছেলেদের মধ্যে গিয়ে বসত। আর লতা যা যা করতো সুনিতা বা দিব্যা কে বলত না, কিন্তু ওরা বুঝতে পারত। মাস খানেক পড়ে লতা ওদের বলত কোন ছেলেটার লিঙ্গ কত বড়। সুনিতা জিজ্ঞাসা করেছিল যে ও কি করে জানল। লতা বলল, “আমি রোজ ছেলেদের মধ্যে বসে বসে কি গান গাই, আমি সব ছেলেদের লিঙ্গ টিপে টিপে দেখি”।

সুনিতা বলল, “ওরা কিছু বলে না”?

লতা বলল, “সব ছেলেদের লিঙ্গ তে মেয়েরা হাত দিলে ওরা খুশীই হয়, তো কিছু বলবে কেন, আর ওরাও আমার স্তনে আর থাইয়ে বেশ ভালো টেপা টিপি করে”।

দিব্যা বলল, “অন্য কেউ দেখে না”?

লতা বলল, “দেখবে না কেন, আমি রোজ যেখানে গিয়ে বসি, ওখানে সব কটা ছেলেই জানে আমি কি করি, তাই আমার দুই পাশে কে বসবে সেই নিয়ে ওদের মধ্যে লড়াই হয়”।

সুনিতা আর লতা দুজনেই বলল ভীষণ সাঙ্ঘাতিক মেয়ে লতা। সুনিতা অবশ্য কলেজ শুরু হবার পর থেকে আকাশের দুঃখ একটু ভুলতে পেরেছে। তার মানে এই নয় যে ও আকাশকে ভুলে গেছে। ও কখনই আকাশকে ভোলেনি। ও কোনদিন আকাশকে ভুলবেও না। শুধু কলেজের পড়াশুনো ওকে অন্যদিকে ব্যস্ত করেছে। ও হেঁসে খেলে জীবন কাটানোর থেকে পড়াশুনো করাকে বেশী জরুরি মনে করেছে। মাঝে মাঝে সব বন্ধুদের হাঁসি, খেলা, হইচই ওকেও টানে, ওকেও দুর্বল করে দিতে চায়, কিন্তু ওর মনে তখন একটা জেদ চেপে গিয়েছিল যে ওকে নিজেকে প্রস্তুত হতে হবে। যদি কোন কারনে আকাশ ওর কাছে না আসতে পারে তখন ও যেন ও আকাশকে খুঁজে নিয়ে আসতে পারে। ও আকাশকে পাবার জন্য যেকোনো মুল্য দিতে রাজী ছিল। তাই ওর কাছে তখন পড়াশুনোর চাপ কোন চাপই নয়। আর সুনিতা বাকি সব বন্ধুদের সাথে হইচই কম করতো বা করতেই চাইতো না এই ভয়ে যে তাতে যদি ওর মন থেকে আকাশ হারিয়ে যায়। ও জীবনে FAST FOOD –এর আনন্দ একদমই চাইছিল না। ওর সামনে আরও বৃহত্তর আনন্দের ছবি ভাসছিল।
ওর পড়াশুনো করতেও ভালো লাগত। ও কোনদিনই মেধাবী ছাত্রী ছিল না। কিন্তু মন দিয়ে পড়াশুনো করতো। আর এখন তো আরও বেশী করে পড়ত। পড়তে পড়তে কখনো ক্লান্ত হয়ে পড়ত না। তার কারণ বোঝাতে একটা উদাহরন দিচ্ছি। আমরা প্রায় সবাই “Three Idiots” সিনামা টা দেখেছি। অনেকেই অনেক বার দেখেছি। আর এই সিনেমা দেখার পর আমরা আমীর খান আর ওর সব বন্ধু আর কার্যকলাপ নিয়ে অনেক আলোচনা করেছি। অনেকেই আমীর খানের (মানে র‍্যানচো) বলা “বই” এর ডেফিনিশন মুখস্ত বলে দিতে পারবে। কিন্তু যদি এই “Three Idiots” কলেজের বা পাঠ্য বই হত আর পরিক্ষাতে প্রশ্ন আসতো, “র‍্যানচোর দেওয়া বই এর সংজ্ঞা লেখ বা র‍্যানচোর চরিত্র ১৫ বাক্যের মধ্যে লেখ” তখন সবাই কি উত্তর দিত। অনেকেই বলত “কি কঠিন প্রশ্ন”। এই উদাহরনটা আকাশ একদিন সুনিতাকে বুঝিয়েছিল। তখন অবশ্য “Three Idiots” সিনেমাতা ছিল না। তবে “এক দুজে কে লিয়ে” ছিল। ওই সিনেমাতা ওরা দুজনেই দেখে ছিল অবশ্য আলাদা আলাদা ভাষায়। তাই আকাশ উদাহরন ওই সিনেমাটা দিয়ে বুঝিয়েছিল

আরও বুঝিয়েছিল যে কোন কাজ আমাদের ক্লান্ত কেন করে দেয়। আমরা যখন কোন কাজ সখ করে করি (Hobby)  তখন আমরা কখনো ক্লান্ত হই না। বরঞ্চ অনেক তাড়াতাড়ি অনেক ভালভাবে করি। অন্যথায় সেই একই কাজ যদি আমাদের কাছে টাস্ক (Task) হিসাবে আসে তখন আমরা খুব সহজেই ক্লান্ত হয়ে পরি আর কাজটাও হয় না। তাই আমাদের কাছে যেটা করা জরুরি হয়ে পড়বে সেই কাজ কে কাজ হিসাবে না দেখে “সখ” হিসাবেই দেখা উচিত। সুনিতা ওর জীবনে এইরকম কথা কোনদিন শোনেনি আগে। ওর শুনে খুব ভালো লেগেছিল আর তাই ও পড়াশুনা Hobby হিসাবেই করতো। আর ক্লাসের মধ্যে সব থেকে ভালো ছাত্রী হয়ে যেতে পেরেছিল।

শুধু ভালবাসা আমাদের কত কিছু শিখিয়ে দেয়। একটা সাধারণ মেয়ে বা ছেলে শুধু ভালবাসার জন্য অসাধারণ খুব সহজেই হয়ে যেতে পারে। আকাশ যদি “তিনবন্ধু” না পড়ে সুনিতাকে ইতিহাস পড়ে শোনাত সুনিতা তবে ইতিহাসে ৯০% নম্বর পেত। (শেষ পরীক্ষায় ও ৫২ পেয়েছিল)। সুনিতা সেই ভালবাসা কে ভরসা আর অবলম্বন করেই জীবনে এগিয়ে যাচ্ছিল। আমাদের দেশের প্রত্যেকটা ছাত্র ছাত্রীর জীবনে যদি একজন করে আকাশ বা সুনিতা থাকতো তবে আমদের দেশটাই অন্যরকম হত। উন্নতির সাথে সাথে সমাজে নোংরা রাজনীতিও থাকতো না। দ্রৌপদীকে পাবার জন্য অর্জুনের সামনে একটাই লক্ষ্য ছিল “মাছের চোখ”। সুনিতার জীবনে একটাই লক্ষ্য ছিল ও কোনভাবেই আকাশকে হাড়াবে না। ওকে তার যোগ্য হয়ে উঠতেই হবে।

একদিন সুনিতাদের পর পর তিনটে ক্লাস ছিল না। সুনিতা আর দিব্যা ঘুরে বেড়াচ্ছিল। ওরা লতাকে খুঁজে পাচ্ছিল না।  ওরা ওকে কলেজের সব দিকে খুজল কিন্তু পেল না। শেষে দিব্যা বলল ও দুএকদিন লতাকে ক্যান্টিনের পেছনের দিকে যেতে দেখেছিল। ওদের কলেজের ক্যান্টিন একদম এক কোনায়। দিব্যা সুনিতাকে নিয়ে সেই দিকে গেল। গিয়ে যা দেখল তাতে সুনিতা নিজেকে ধরে রাখতে পারছিল না। ওখানে কিছু ঝোপের পেছনে লতা দুটো ছেলের সাথে ছিল। লতা শুয়ে, ওর জামা খোলা, প্যান্ট নীচে নামানো। ও একটা ছেলের লিঙ্গ চুসছে, সেই ছেলেটা লতার স্তন নিয়ে টিপে যাচ্ছে। আর একটা ছেলে লতার যোনির মধ্যে আঙ্গুল দিয়ে অঙ্গুলি-রমন করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সুনিতা চলে যাচ্ছিল। দিব্যা ওর হাত ধরে থামিয়ে দিল, আর দেখতে লাগলো লতা কি করে।

দিব্যা দেখল লতা ওই ছেলেটার কালো লম্বা লিঙ্গ অনায়াসে ওর মুখের মধ্যে নিয়ে নিচ্ছিল, মুখের মধ্যে নিয়ে ভালো করে চুসচ্ছিল, তারপর মুখের মধ্যে থেকে বের করে কালো লিঙ্গের ফ্যাকাসে মাথাটা চেটে দিচ্ছিল। তারপর আবার মুখের মধ্যে ভরে নিচ্ছিল। অন্য ছেলেটা হাত দিয়ে লতার যোনি খেলতে খেলতে তিনটে আঙ্গুল ওর যোনির মধ্যে ঢুকিয়ে আগে পেছনে করছিল। প্রত্যেকবার ছেলেটা আঙ্গুল ভেতরে ঢোকাতেই লতা কেঁপে কেঁপে উঠছিল। দিব্যার মনে হল ছেলেটা লতার যোনির ভেতর আঙ্গুল ঢুকিয়ে ভেতরে আঙ্গুল নাড়াচ্ছিল আর তাই লতা ওভাবে কাঁপছিল। প্রায় দশ মিনিট পড়ে লতা যে লিঙ্গটা চুসছিল সেটার থেকে বীর্য পড়তে শুরু করল। কিছুটা লতার মুখের ভেতর আর কিছুটা বাইরে। যতটা লতার মুখের মধ্যে পড়লো সেটা ও গিলে খেয়ে নিল আর বাকিটা একটা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলল। ওই ছেলেটা প্যান্ট খোলা অবস্থাতেই শুয়ে শুয়ে হাঁপাতে লাগলো। অন্য ছেলেটা বলল ওরটারও কিছু ব্যবস্থা করতে। লতা তখন উঠে বসে দ্বিতীয় ছেলেটার লিঙ্গ নিয়ে একটু চুষে দিল, তারপর হাত দিয়ে জোরে জোরে পাম্প করতে লাগলো। সুনিতার মনে পড়ে যাচ্ছিল ও আকাশের সাথে সেই দুই রাতে কি কি করেছিল আর কি ভাবে করেছিল। ও চোখ বন্ধ করে দিব্যার হাত ধরে সেটাই ভাবছিল। ও ঠিক ভাবে দেখছিলও না লতা কি করছে। ওদিকে লতা কিছুক্ষন খেলার পরেই দ্বিতীয় ছেলেটারও বীর্য পড়তে লাগলো। লতা ওর পুরো বীর্য হাতে নিয়ে চেটে চেটে খেতে লাগলো। দিব্যা ওই দেখে আর থাকতে পারল না। ওর মাথা ঝিম ঝিম করছিল। কোনরকমে ও সুনিতার হাত ধরে টান দিল। সুনিতা থতমত খেয়ে চোখ খুলে দেখেই আরও অবাক হয়ে গেল আর দিব্যার সাথে চলে গেল।

সুনিতা আর দিব্যা ক্লাসে চলে গেল। তখনও কেউ ক্লাসে আসেনি। দিব্যা বলল যে লতা খুব বেশী বেড়ে গিয়েছি। ওইভাবে কোনদিন ও বিপদে পড়বে। সুনিতাও বলল হ্যাঁ যে কেউ দেখে ফেলতে পারে আর কেউ যদি দেখার পর এই কথা সবাইকে বলে দেয় তবে লতার কি হবে। দিব্যা বলল শুধু সেইটাই না, ওইভাবে সেক্স করতে গিয়ে লতা যদি কোনদিন প্রেগন্যান্ট অয়ে যায় তখন কি হবে। ছেলেগুলো তো ভেগে যাবে, ওদের কেউ তো এসে বলবে না যে ওর বীর্যে বাচ্চা হয়েছে তাই ওটা ওর বাচ্চা। কোন ছেলেই ওর কাছে যাবে না। সমাজ ওকে আলাদা করে দেবে। লতার বাবা মায়ের কি হবে তখন।

দিব্যা বলল লতার মত মেয়ের সাথে ওদের বন্ধুত্ব রাখা উচিত নয়। কারণ লতার কোনদিন বদনাম হলে ওদেরও বদনাম হবে। সবাই বলবে ওই তিনটে মেয়েই খারাপ মেয়ে। সুনিতা বলল লতা ওদের বন্ধু। ওদের বন্ধু বিপথে গেলে ওদের প্রথম দায়িত্ব বন্ধুকে ফিরিয়ে আনা, বন্ধুকে ছেড়ে চলে যাওয়া নয়। সবার বন্ধত্বকে বেশী প্রাধান্য দেওয়া উচিত। বন্ধুর কোন ভুল কাজকে ঘৃণা করা উচিত, কিন্তু বন্ধুকে ঘৃণা করা বা ছেড়ে যাওয়া কখনই ঠিক নয়। যে একবার বন্ধু হয় সে সারাজীবন বন্ধু থাকে। তাই ও লতাকে বোঝাবে আর চেষ্টা করবে ওকে ঠিক করার। দিব্যা বলল ওরও কোন ইচ্ছা নেই লতাকে ছেড়ে দেবার, কিন্তু ওর মনে সুনিতার মত সাহস নেই। ওর ভয় লাগে ভবিস্যতের জন্য। ওর রাজন যদি জানতে পারে এইসব, আর ভাবে দিব্যাও লতারই মত। আর যদি রাজন দিব্যাকে ছেড়ে চলে যায় তবে ওর কি হবে। সুনিতা বলল যাই হোক না কেন আকাশ যেমন ওর ভালবাসা, যেমন ও কোনদিন কোন কিছুর জন্যই এই ভালবাসা ছাড়বে নয়া। সেইরকমই যাই হোক না কেন দিব্যা আর লতা ওর বন্ধু। ওরা সারা জীবন কোনকিছুর বিনিময়েই ওর এই বন্ধুত্ব ছাড়বে না।

পরদিন কলেজে সুনিতা আর দিব্যা লতাকে একা কোথাও যেতে না দিয়ে একটু ফাঁকা জায়গায় বসল। সুনিতা ওকে জিজ্ঞাসা করল আগেরদিন লতা কি করছিল দুটো ছেলের সাথে। লতা প্রথমে অস্বীকার করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু তারপর দিব্যা ওকে জায়গা সময় আর ছেলেদের নাম বলাতে লতা কাঁদতে লাগলো। বলল ওর খুব সেক্স করতে ইচ্ছা করছিল। ওর সেক্সের ইচ্ছা আগে থেকেই ছিল, কিন্তু অবদমিত ছিল। দিব্যার কাছে রাজনের কথা শুনে আর সুনিতার কাছে আকাশের গল্প শুনে ওর সেক্সের ইচ্ছা বেড়ে গেছে। কিন্তু কোন ছেলেই ওকে ভালোবাসে না। তো সোজা রাস্তায় ও সেক্স কোথায় আর পাবে। তাই ক্লাসের  একটু কম শালীন ছেলেদের ধরেছে, ওর শরীর দেখিয়ে প্রলুব্ধ করেছে। সুনিতা জিজ্ঞাসা করল ও কোন জন্ম নিরোধক ব্যবহার করছে কিনা। লতা বলল ও কখনো কোন ছেলের সাথে সঙ্গম করেনি আর করবেও না। যদি কোনদিন করে তবে সব সাবধানতা নিয়েই করবে। দিব্যা বলল ওইরকম যার তার সাথে সেক্স না করে একজনকে পছন্দ করে তাকে ভালবাসুক। তবেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। লতা বলল ওর সেটাই তো সমস্যা সবাই ওর সাথে সেক্স করতে চায় কিন্তু কেউ ওকে ভালবাসতে চায় না। সুনিতা ওকে ওর মায়ের বলা কথাতাই বলল। সবাই যদি বিনা পয়সায় দুধ পেয়ে যায় তবে গরু কেন কিনবে। লতা বলল, “সুনিতা দয়া করে আমাকে ভালবাসা শিখিয়ে দে”।

হায়! ভালবাসা কাউকে শেখাতে হয় না। সবাই জন্ম থেকেই ভালবাসার শিক্ষা নিয়েই জন্মায়। কেউ বোঝে না, কেউ বোঝে। সুনিতা লতাকে বলল ভালবাসা সব জায়গাতেই আছে, কিন্তু লতা শুধু শরীর দেখে, তাই ভালবাসা বুঝতে পারে না। লতাকে বলল শরীর না দেখে চোখ দেখতে, ও কারো না কারো চোখের মধ্যে ভালবাসা ঠিক দেখতে পাবে। কিন্তু দেখলেই চেনা যায় না। চোখের মধ্যে ভালবাসা দেখে তাকে অন্য সব দৃষ্টি থেকে আলাদা বোঝা খুব সোজা আবার না চিনলে ভীষণ কঠিন। শরীর দিয়ে বা সেক্স দিয়ে ভালবাসা খোঁজা যায় না। মন থেকে সেক্স বাদ দিয়ে ভালবাসা খুঁজতে হবে। তার জন্য আগে নিজের মন পবিত্র করতে হবে। নিজের মন থেকে যদি সেক্সের চিন্তা আলাদা করা যায় তবেই ভালবাসাকে চেনা যায়। ভালবাসা পেলেই সেক্স পাবে। কিন্তু আগে সেক্স পেলে ভালবাসা কোনদিনই পাওয়া যাবে না। লতা যদি কোনদিন এইভাবে ছেলেদের চোখের দিকে তাকায় তবে ঠিক লতা ওর ভালবাসাকে খুঁজে পেয়ে যাবে। ভগবান জানেন সুনিতাকে এতবড় তত্বকথা কে শিখিয়ে ছিল। কিছুদিন আগে মানে আকাশের সাথে দেখা হবার আগে বা দেখা হবার ঠিক পরেই সুনিতা সবাইকে জিজ্ঞাসা করেছিল ভালবাসা কাকে বলে। আর সেদিন সুনিতা নিজে ভালবাসার একটা সঠিক ব্যাখা দিতে পারছে বা বোঝাতে পারছে ভালবাসা কিভাবে চিনতে হয়। আসলে কাউকে এটা শিখিয়ে দিতে হয় না। সত্যিকারের ভালবাসা পেলে সবাই এমনিতেই শিখে যায়। 

বেশ কিছুদিন কেটে গেল। এক রবিবারে সকালে লতা টিশার্ট আর ফুলপ্যান্ট পড়লো, একদম আকাশ যে ভাবে ড্রেস করতো সেই ভাবে। মাথা আঁচড়াল একদম আকাশের স্টাইলে। লতা আগের দিন ওখানকার সেলুনে গিয়ে ছেলেদের মত করে চুল কেটে এসেছিল। ওইভাবে আকাশ সেজে লতা সুনিতাদের বাড়ি গেল। সুনিতা ওকে দেখে একটু থমকে থাকল। তারপর জিজ্ঞাসা করল ও কি করছে ওইভাবে ড্রেস করে। লতা বলল ও সুনিতাকে আকাশের সাথে বেড়াতে নিয়ে যাবার জন্য গিয়েছে। সুনিতার মা বেরিয়ে লতাকে দেখে বুঝতে পারলেন ও কি করতে চায়। উনি সুনিতাকে বললেন লতার সাথে ঘুরে আসতে।

সুনিতা আকাশরূপি লতার সাথে বেরোল। লতা বলল সেদিনের জন্য সুনিতা যেন ওকে আকাশ ভাবে আর আকাশের সাথে যে ভাবে কথা বলত সেই ভাবে কথা বলবে। লতাও চেষ্টা করবে আকাশের মত ব্যবহার করতে। ওরা দুজনে হাত ধরে ওদের সেই ক্যানালের পরের জঙ্গলের দিকে হাঁটতে লাগলো।
সুনিতা জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কবে থেকে বরাবরের জন্য আমার হবে”?

আকাশ (লতা) বলল, “আমি তো প্রথম দিন থেকেই তোমার হয়ে গেছি, চিরদিনের জন্য”।

সুনিতা – কিন্তু আমাকে কবে তোমার সাথে নিয়ে যাবে ?

আকাশ (লতা) – তুমি তো সবসময় আমার সাথেই আছো। হয় চোখের সামনে আছো না হলে মনের মধ্যে আছো।

সুনিতা – আমি সব সময় তোমার চোখের সামনে থাকতে চাই প্রভু।

আকাশ (লতা) – আমিও তো সবসময় তোমাকেই ধরে থাকতে চাই সোনা।

এই বলে আকাশ (লতা) সুনিতার ঠোঁটে একটা চুমু খেল। সুনিতাও চুমুতে সাড়া দিল। তারপরেই ওর মনে পড়লো ওটাতো আকাশ নয়, ও যে লতা। ও বলল, “তুই আমাকে চুমু খেলি কেন?”

লতা বলল, “আমি কোথায় চুমু খেলাম, চুমুতো আকাশ খেল তোকে”।

সুনিতা বলল, “মনে মনে তুই আকাশ হয়েছিলি, কিন্তু শারীরিক ভাবে ঠোঁট তো তোরই ছিল হতভাগী”।  

লতা বলল – “শারীরিক ভাবেও আজ আমি আকাশ। তুই আমাকে আকাশই ভাব”

এই বলে আকাশ (লতা) আবার চুমু খেল সুনিতাকে। কিন্তু সুনিতা কখনই লতার চুমু কে আকাশের চুমু বলে মানতে পারে না। তাই বলে যে লতা যেন ওইরকম না করে, কারণ শারীরিক ভাবে লতা কখনো আকাশ হতে পারবে না। ও এমনি আকাশের অভিনয় করছে, আকাশের মত কথা বলার চেষ্টা করছে সেটা ঠিক আছে কিন্তু ওর শরীরের থেকে যেন দূরে থাকে।  

তারপর  দুজনে আবার চলতে থাকল। সেই জঙ্গলে পৌঁছে ওরা আকাশ-সুনিতার লুকানো জায়গায় চলে গেল আর দুজনেই জঙ্গলে শুয়ে পরে গল্প করতে থাকল।  সুনিতা বলতে থাকে “আমার প্রভু আমাকে ছেড়ে কি ভাবে এতদুরে গিয়ে থাকতে পারে” ?

লতা সুনিতার চুলে বিলি কেটে দিতে লাগে আর বলে, “আকাশ তোর কাছেই আছে, ও তোর মন থেকে কখনই দূরে যায় নি, কখনো যাবেও না। অফিসের কাজের জন্যে ক’দিনের জন্য আলাদা আছে কিন্তু আমি নিশ্চিত যে আকাশও ওর মনের ভেতরে তোর কাছেই আছে”।  

তারপর আকাশ(লতা) সুনিতার পেটে আদর করতে লাগলো। সুনিতা ভাবার চেষ্টা করে লতার হাত কে আকাশের হাত বলে মেনে নেবার কিন্তু ওর শরীর কখনই আরেকটা মেয়ের ছোঁয়া মেনে নিতে পারেনা। ও লতার হাত সরিয়ে দেয়। তারপর আবার চোখ বন্ধ করে শুয়ে শুয়ে আকাশের কথা ভাবতে শুরু করে। আকাশ ওকে কিভাবে সেদিন আদর করেছিল তাই ভাবতে থাকে।

লতার মনে আকাশ হবার থেকেও সুনিতার সাথে সেক্সের খেলা খেলবার ইচ্ছা বেশী ছিল। তাই একটু পরে ও সুনিতার জামার সব বোতাম খুলে দিল। ওর স্তনে আলতো করে হাত বুলতে লাগলো। সুনিতা চোখ বন্ধ করে ভাবার চেস্টা করল যে সত্যি কারের আকাশ ওকে আদর করছেকিন্তু আকাশ সব সময় আকাশ, লতার মেয়েলি হাতকে কখনই ও আকাশের হাত বলে ভাবতে পারেনা। তাই আবার উঠে পরে লতার ওপর চেঁচিয়ে ওঠে যে লতা কেন ওকে বিরক্ত করছে। ও চায় না লতা ওকে শারীরিক ভাবে সেক্স দেবার চেষ্টা করুক। ও আকাশের ভাবনা নিয়ে ভালই আছে। ওর শরীরে আরেকটা মেয়ের কামনা জড়িত ছোঁয়া কখনই ওর ভালো লাগছে না। ও নিজের শরীরকে অপবিত্র করতে চায় না। এই বলে সুনিতা লতার থেকে একটু দূরে গিয়ে একটা গাছে হেলান দিয়ে আকাশের কথা ভাবতে থাকে।

লতা দুরে একাই বসে ছিল। কিন্তু ও নিজের মন থেকে সেক্স সরাতে পারছিল না। ওর মন চাইছিল কোন ছেলের বলিষ্ঠ স্পর্শ। কিন্তু ওখানে কোন ছেলে ছিল না তাই ও সুনিতার শরীরকে পাওয়ার শেষ চেষ্টা করতে গেল। ও আবার সুনিতার পাশে গিয়ে ওর গলা জড়িয়ে বসে পরে। তারপর এক হাত সুনিতার বুকে আর এক হাত ওর যোনির ওপর রাখে। সুনিতা ঘোরের মধ্যে ছিল, কিন্তু এক মিনিটের মধ্যেই চেঁচিয়ে ওঠে, “তুমি কে তুমি কে, তুমি আমার আকাশ নও, তুমি কে”?

ও চোখ খুলে লতাকে দেখেই পরে সব বুঝতে পেরে কাঁদতে লাগলো। লতা ওর মাথায় হাত দিয়ে চুপ করতে বলল। সুনিতা একটু শান্ত হলে লতা বলল কিছুক্ষনের জন্য তো ও আকাশের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলসুনিতা আবার চেঁচিয়ে বলে লতার আকাশ সাজার কোন দরকার নেই। ও কোন রকম পাপ কাজ করতে পারবে না। ওর ঠোঁট, ওর স্তন, ওর যোনি ওর সব কিছু আকাশের। ওখানে আর কারো কোন অধিকার নেই।  লতা ওকে বলল সে বারের মত ক্ষমা করে দিতেও আর কোনদিন ওরকম করবে না।

পরদিন সকালে উঠে সুনিতা অভ্যেস মত মেহগনি গাছের দিকে যাচ্ছিল, সূর্যোদয় দেখবে বলে। একটু গিয়েই দেখে কেউ গাছতলায় বসে আছে। কাছে গিয়ে দেখে আবার লতা আকাশের মত ড্রেস করে মাথা হাঁটুর মধ্যে রেখে বসে আছে। সুনিতা পাশে গিয়ে ওকে ধাক্কা দিয়ে বলল সকাল বেলা আবার কেন ওর পেছনে লাগতে এসেছে। লতা মুখ তুলে একটু অবাক হয়ে বলল “আমি তোমাকে দেখব বলে এসেছি সোনা”। সুনিতা দেখল আকাশ বসে আছে, সত্যিকারের আকাশ। সুনিতা ওর বুকে মাথা রেখে অজ্ঞান হয়ে গেল।
Like Reply


Messages In This Thread
সুনিতা মাতা - by TumiJeAmar - 28-06-2021, 12:11 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 28-06-2021, 12:29 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 29-06-2021, 01:53 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 29-06-2021, 02:30 PM
RE: সুনিতা মাতা - by Kallol - 29-06-2021, 05:09 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 01-07-2021, 01:35 PM
RE: সুনিতা মাতা - by Kallol - 02-07-2021, 05:55 PM
RE: সুনিতা মাতা - by TumiJeAmar - 03-07-2021, 01:09 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 05-07-2021, 10:05 AM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 07-07-2021, 04:03 PM
RE: সুনিতা মাতা - by Kallol - 07-07-2021, 07:13 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 06-01-2022, 10:14 AM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 06-01-2022, 03:53 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 06-01-2022, 03:54 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 06-01-2022, 05:44 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 06-01-2022, 05:45 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 06-01-2022, 05:47 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 06-01-2022, 05:48 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 06-01-2022, 05:49 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 06-01-2022, 05:51 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 06-01-2022, 10:09 PM
RE: সুনিতা মাতা - by Siraz - 06-01-2022, 10:15 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 30-03-2022, 01:15 PM
RE: সুনিতা মাতা - by ddey333 - 09-01-2023, 07:05 AM
RE: সুনিতা মাতা - by S_Mistri - 09-01-2023, 10:10 AM
RE: সুনিতা মাতা - by kourav - 12-01-2023, 07:38 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)