02-07-2021, 11:56 PM
আমার যেন মনে হল, শুক্লা যেন আমার মনটাকে খুব ভালো করে পড়ে নিয়েছে। বিদিশার ব্যাপারে কিছু বললে, আমি যে ওর বাড়ীতে যেতে আর আগ্রহ দেখাবো না। সেটা ও ভালোই বুঝতে পারছে। শুক্লা ভাল করেই জানে, এতদিন বাদে বিদিশার পুনরাগমন, আমার কাছে একটা অক্সিজেনের মতন। ওর এই ফিরে আসার মধ্যে যতই রহস্য থাক। যতই বিদিশা আমার কাছে একটু সময় চেয়ে নিক, যতই আমার মনের মধ্যে কষ্টটা বয়ে যাক, একটা আশা নিয়ে দুদিন তো আমাকে ধৈর্য রাখতেই হবে। এই সামান্য বোধটুকু যদি আমার মধ্যে না থাকে, তাহলে বিদিশাই বা কি মুখ নিয়ে আমার কাছে ফিরে আসবে? শুভেন্দুকেই বা কি বলব? রনিকেই বা কি বলব তখন? আমি নিজে থেকেই বিদিশার ফিরে আসাটার দরজাটা বন্ধ করে দিয়েছি। ওকে চির দিনের জন্য বিদায় জানিয়ে দিয়েছি।
একবার মায়ের কথাটা সে সময় খুব মনে হল। মা আমার জন্য খুব ভাবে, কষ্ট পায়। বিদিশাকে অর্জন করে মায়ের মুখেও এবার হাসি ফোটানোটা দরকার।
শুক্লাকে বললাম, ‘যাবো তোর বাড়ী। কবে যেতে হবে বল? অফিস ফেরত একদিন চলে যাব তোর ফ্ল্যাটে।’
শুক্লা বলল, ‘না তুই আজকেই আসবি। আমি আজকেই তোকে আমার এখানে দেখতে চাই।’
ওকে বললাম, ‘আজকেই যাব? তাহলে তো অফিস ফেরত তোর ওখানে যেতে হয়।’
শুক্লা বলল, ‘হ্যাঁ। তোর বাড়ী থেকে তো আর বেশী দূরে নয়। সল্টলেকে আসতে আর কতক্ষণ লাগবে। একটা ট্যাক্সি নিবি। আর ঝটপট চলে আসবি।’
আমি বললাম, ‘খাওয়া দাওয়ার আবার অ্যারেঞ্জ করবি না তো? মাকে কিন্তু কিছু বলে আসিনি। কাল এমনিতেই শুভেন্দুদের বাড়ীতে অনেক খেয়েছি। আজ তোর ওখানে খেলে, মা বহূত চটে যাবে।’
শুক্লা বলল, ‘দেব, তোর আপত্তি থাকলে আমি তোকে জোর করব না। কিন্তু তুই কিন্তু অবশ্যই আসবি। আমাকে আবার ফোন করতে বাধ্য করিস না।’
যেন নাছোড়বান্দা এক মেয়ে। কিছুতেই আমাকে না নিয়ে গিয়ে ছাড়বে না। আমিও শেষ পর্ষন্ত শুক্লাকে কথা না দিয়ে থাকতে পারলাম না।