Thread Rating:
  • 27 Vote(s) - 3.26 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance জীবন যে রকম ( সম্পূর্ণ ধারাবাহিক উপন্যাস) By Lekhak
#33
কি জ্বালা! পরের বাড়ী আর নিজের বাড়ীর এই হোল তফাৎএতদিন বাদে যাও বা চুমুর সুযোগটা এলোতাও সেটাকে গ্রহন করতে পারবো না? আমি একেবারেই আপসেটমুখটা ঘুরিয়ে চলে গেলাম ছাদের একপাশটায়চুমু খাওয়ার সুযোগ যখন হয় নি অগত্যা আকাশের চাঁদ আর তারা দেখতে লাগলামসামনে একটা বড় নারকেল গাছ হাওয়াতে দুলছেমনে হল আমার শরীরেও কেমন একটা দুলুনি লাগছে, কারণ পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে বিদিশাপেছন থেকে আমার কোমরটা দু’হাতে জড়িয়ে ধরেছেআর আমার পিঠে একটার পর একটা চুমু খেয়ে যাচ্ছে
আমি বিদিশার দিকে মুখ ঘোরালামবিদিশা এবার একটা চুমু খেলো আমার গালেতারপর আলতো করে চুম্বনের স্পর্ষ দিলো ঠোঁটেশিশুরা যখন চুম্বন করে তখন তাদের নিঃশ্বাস আলতো ভাবে গায়ে এসে লাগেতেমনি ভাবে বিদিশার নিঃশ্বাসটাও আমার গায়ে এসে লাগছিলোঠোঁটটা বাড়িয়ে ওর ঠোঁটটাকে এবার আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করলামনিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পণ করে এবার স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো বিদিশা
চুমুর পর চুমু দিয়ে বিদিশাকে আমি চুম্বনস্নাত করে দিচ্ছিহঠাৎই আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে বিদিশা বললো, ‘ওই মাধুরী এসেছে আবার।’
আমি পেছন ঘুরে তাকালাম, বিদিশাকে বললাম, কোথায় মাধুরী? কই কেউ নেই তো
দেখি বিদিশা হাসছে আমার দিকে তাকিয়েআমাকে বললো, ‘খেলে তো চুমুচলো এবার নিচে যাই।’
 
বিদিশা আর আমি নিচে যাবার পর শুভেন্দু বললো, ‘এই তোরা দুজনে এতক্ষণ ধরে কি করছিলিস রে? সেই যে উপরে উঠেছিস নিচে আসার নামই নেই
দেখি মাধুরী সামনে দাঁড়িয়ে মুখ টিপে হাসছেশুভেন্দু ওর হাসিটা দেখামাত্রই বুঝে গেলোবললো, ‘ও বুঝেছি বুঝেছিতোরা তোদের কাজটা করে এসেছিসআমারই ভুলটা হয়ে গেলকেন যে চুপি চুপি ছাদে গিয়ে একবার দেখে এলাম না।’
মাধুরী হাসছিলশুভেন্দুকে বললো, ছোড়দা, তুই না সত্যি, এতো ফাজলামী মারিস না
শুভেন্দুও তখন হাসছেআমার দিকে তাকিয়ে বললো, ঠিক হ্যায় তো বসতাহলে আমাকেও একটা থ্যাঙ্কু দাওদেখো, এইজন্যই তোমাকে বলেছিলাম আসতেসারপ্রাইজ মানে বিদিশার সারপ্রাইজতোমার জীবনে বিদিশার থেকে বড় সারপ্রাইজ কি আর কিছু আছে? আই অ্যাম অলওয়েজ উইথ ইউ মাই ফ্রেন্ডতোমার সুখে দূঃখে সবসময়ই তোমার পাশে ছিলামআর ভবিষ্যতেও থাকবো, এটা জেনে রেখো।’
মাধুরী বিদিশাকে নিয়ে একটু অন্যঘরে চলে গেলোশুভেন্দু বললো, ‘আমার দাদার বৌদের সাথে বিদিশার আলাপ করাবেমোটামুটি পনেরা কুড়ি মিনিট ধরে নেবৌদিরা এমনিতেই খুব কথা বলেতিন তিনটে বউ, সময় তো একটু লাগবেও আসার আগে চট করে দুপেগ মেরে নেসিগনেচার হূইস্কি এনেছে রনিগলাটা ভিজিয়ে নিয়ে তারপরে গান শুরু হবে।’
আমি বললাম, করেছিস কি? গানও গাইবো, আবার মদও খাবো?
শুভেন্দু বললো, ‘দূর ব্যাটা আজকেই তো খাবিআজকে তোর জীবনের স্পেশাল দিন নাবছরে কদিন মাল খাস? হাতে গুনে বলে দিতে পারবো, তুই কদিন খাসআজ একটু সেলিব্রেট করো বৎসবুঝতে পারছো না? তোমার জন্য আমাদেরও আজ কত আনন্দের দিন।’
 রনি আমার দিকে গ্লাসটা বাড়িয়ে বললো, নে চুমুক দেকাম অন, চীয়ার্স
আমি ঢোঁক ঢোঁক করে গ্লাসের অর্ধেক জল মেশানো হূইস্কিটা খেয়ে নিলামগলায় একটা আলতো ঝাঁঝ লাগলোমুখ দিয়ে আওয়াজ করলাম আ-
সঙ্গে সঙ্গে রনি আর শুভেন্দুও গ্লাসে চুমুক দিয়ে মুখ দিয়ে একসাথে আওয়াজ করলো আ- দুজনেই বললো, কি শান্তি আজকেতাই না? শান্তি শান্তিআজ যেন অনেক শান্তি
আমিও বললাম, হ্যা, ভীষন শান্তি
 
রনি বললো, ‘দেব’ বাড়ীতে মাসীমাকে একটা ফোন করে বলে দে, তোর কিন্তু ফিরতে ফিরতে আজ দেরী হবে।’
শুভেন্দুও সায় দিলো, আমাকে বললো, ‘হ্যাঁ, শুধু শুধু মাসীমার চিন্তা বাড়িয়ে লাভ নেইএকেবারে রাতের ডিনার সেরেই এখান থেকে বেরোবিতোর আর বিদিশার জন্য মাধুরী অনেক পদ রান্না করেছেতোদেরকে ও না খাইয়ে ছাড়বে না আজকে।’
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম, এখন বাজে আটটাতারমানে গান বাজনা, গল্পগুজব আর খাওয়া দাওয়া সেরে এখান থেকে বেরোতে বেরোতে মোটামুটি রাত এগারোটা  হবে।  বিদিশাকে যদি ট্যাক্সী করে ওকে ওর বাড়ীতে ড্রপ করে দিই, তাহলে বাড়ী পৌঁছোতে পৌঁছোতে রাত বারোটাতো হবেইমাকে একটা ফোন করা অবশ্যই দরকারনইলে মা আবার চিন্তা করবে আমাকে নিয়ে
ফোনটা করা মাত্রই মা বললো, শুভেন্দুদের বাড়ীতে কি অনুষ্ঠান আছে আজকে? এত দেরী করে ফিরবি, কাল না আবার অফিস আছে তোর?
বিদিশার কথাটা মাকে বলতেই যাচ্ছিলাম, শুভেন্দু ইশারা করলো, বললো, ‘থাক থাক, এখন মাসীমাকে কিছু বলিস না।  ওটা পরে হবেবিদিশাই নিজে থেকেই তোর বাড়ীতে যাবে।’
‘বিদিশা’ নামটা মুখ থেকে বেরোতে গিয়েও শুভেন্দুর জন্য আটকে গেলো শেষ পর্যন্তফোনটা ছেড়ে দিয়ে ওকে বললাম, ‘মা কিন্তু বিদিশার ব্যাপারটা জানেসকালে শুক্লা যখন এসেছিল, বিদিশার কথা বলছিলো, মা আড়াল থেকে সবই শুনেছেতবে এখানে যে বিদিশা আসছে, সেটা মা জানে না।’
রনি, শুভেন্দুকে বললো, ‘শুক্লার ব্যাপারটা কি বলতো শুভেন্দু? হঠাৎ এতদিন বাদে ও দেবের বাড়ীতে? ওর যাবার কারণটাই বা কী? আর তোকে যে একটু আগে ফোনে এতোকথা বললো, তাতে তো মনে হচ্ছে কিছু একটা গোলমেলে ব্যাপার আছে নিশ্চইবিদিশার প্রতি শুক্লার এত বিদ্বেশ, এর কারণটা কি?
শুভেন্দু খুব চালাকরনিকে বললো, ‘শোন, সবকথা তো আর মেয়েরা কখনো খুলে বলে নাওটা বুঝে নিতে হয়, আমি বিদিশার সামনে এসব কথা আলোচনা করতে চাই নাতবে বিদিশার প্রতি শুক্লার বিদ্বেশটা শুনে মনে হলো, কিছুটা একটা ব্যাপার কাজ করছে শুক্লার মনেক ভেতরে ভেতরেহয় দেবের প্রতি ওর কোনো দূর্বলতা তৈরী হয়েছে এতদিন পরে, নয়তো দেবকে ও বিশেষ কোনো কাজে লাগাতে চাইছে, যেটা শুক্লা খুলে বলছে না।’
 
 রনি চোঁ চোঁ করে কিছুটা পেগ মেরে নিয়ে বললো, ‘এই শুক্লাটা বরাবরই অদ্ভূতকলেজে পড়তে পড়তে সৌগতর সাথে প্রেম করলো, বিনা কারনে সৌগতকে বাতিলও করে দিলো, তারপরে যাকে বিয়ে করে বসলো তার সাথেও ঘর করতে পারলো না।  এতদিন বাদে দেবের প্রতি তার প্রেম জেগেছে, বিদিশাকে ছেড়ে দিয়ে দেবও তার সাথে প্রেম শুরু করবে, এও কি সম্ভব নাকি? দরদ যেন উতলে পড়ছেকেন রে? বিদিশা ফিরে এসেছে বলে? ভালোবাসার কথা এতদিন তাহলে বলিস নি কেন?
আমি শুনে বললাম, ‘দরদ? দরদ মানে কিসের দরদ? শুক্লা আমার প্রতি দরদ দেখাবেই বা কেন?’
শুভেন্দু বললো, ‘কি জানি? ফোনে তো আমাকে বললো, ‘শোন, তোরা অত বিদিশা বিদিশা করে লাফাস নাবিদিশার দোষগুলো তো দেবতো কোনোদিন দেখবে নাতাই ওকে সেভাবে বলতেও পারি নাতবে তোকে আমি বলছি,  এতদিন বাদে বিদিশা যে আবার ফিরে এলো, কি ভালোবাসার মর্যাদা দিয়েছে ও দেবের জন্য?’ একবারও দেবকে ফোন করেছে ও? ছেলেটাকে ছেড়ে যখন বিদিশা চলে গেলো, তখন তো ভালোবাসার কথা একবারও মনে পড়েনি তারআজ যখন নিজের স্বামীর সাথে বিদিশার আবার বিচ্ছেদ।  ঠিক তখনই সুর সুর করে ফিরে এসেছে আবার ওই ভালোমানুষটাকে পাবে বলে। ‘
শুভেন্দু দেখলাম শুক্লার ওপর খুব চটেএকটু বিরক্ত হয়েই আমাকে বললো, তুই বল দেব, এসব কথার কি কোনো মানে হয়? বিয়ে তো তুইও করেছিলিতোর বরের সাথে, তুই অ্যাডযাস্ট করতে পারিস নিতাহলে বিদিশাকেই বা শুধু শুধু দোষ দিচ্ছিস কেন? তোর যেমন হয়েছে বিদিশারও তেমনই হয়েছেএই অবস্থায় দেবের কাছে ফিরে না এসে বিদিশা তাহলে কার কাছে যেতো? ও তো ভালোই করেছে
রনি বললো, ঠিক ঠিক, এই হল, একদম পারফেক্ট কথাশুভেন্দু যা বলেছে, এর মধ্যে কোনো ভুল নেইআমাকে রনি বললো, শোন দেব, শুক্লাকে অত পাত্তা দেবার দরকার নেইও যদি ফোন করে তোকে, বলবি কোনো কথা নেই তোর সাথেবিদিশার ব্যাপারে আমি কোনো কথা শুনতে চাই না।’
ঢক ঢক করে একটা সীপ মেরে নিয়ে বললো, আহা রে, কচি খুকী যেনো, এতদিন বাদে দেবের জন্য ভীমরতি জেগেছে
আমি চুপ করে ওদের কথা শুনিছিলামশুভেন্দু রনিকে বললো, এই চুপ চুপ, বিদিশা এসে গেলে সব শুনতে পারবে
রনি চুপ করে গেলোশুভেন্দু বললো, তোরা ভাবিস, আমি তো জীবনে কোনোদিন প্রেম করিনিএকবার আমিও একজনের প্রেমে পড়তে যাচ্ছিলাম
শুভেন্দুর দিকে তাকিয়ে বললাম, তুই? প্রেম? যা বাজে বকিস না
শুভেন্দু বললো, হ্যাঁ রে আমি সত্যি বলছিসেকী দৃষ্টি, সেকী চাউনিনারীর দৃষ্টি মানে মোহিনী শক্তিপুরুষমানুষের মনের শান্তিকে কিভাবে না ওরা নষ্ট করে দেয়মনে হয়, তা যেন কত গভীর, কত আস্বাদে ভরাকি অসীম তার আহ্বানকেউ কেউ বলে এভাবে তাকিয়ে থেকে নাকি প্রেমিক যুগল পরষ্পরের হৃদয় পড়ে নেয়এটা অবশ্য আত্মম্ভরিতার কথামানুষ যদি সত্যিই অপরের মনের কথা পড়তে পারতো, তাহলে সে কী প্রচন্ড জ্ঞানীই না হতচোখ দেখেই বুঝে যেতো তার মধ্যে প্রেম আছে না নেই
আমি বললাম, এটা তো সত্যি কথাইতুই মেয়েটার দিকে তাকালেই তো বুঝতে পারতিস, ওর মধ্যে প্রেম আছে না নেই
শুভেন্দু বললো, তাকিয়েছিলাম তোরোজই আমি ওর দিকে তাকাতামও যেমন তাকিয়ে থাকতো, আমিও তেমন তাকিয়ে থাকতাম
আমি বললাম, তারপর?
[+] 2 users Like Lekhak is back's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:43 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:46 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:49 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:50 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:52 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:54 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:55 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:57 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 11:00 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 11:05 PM
RE: জীবন যে রকম ( সম্পূর্ণ ধারাবাহিক উপন্যাস) By Lekhak - by Lekhak is back - 02-07-2021, 12:48 PM



Users browsing this thread: 9 Guest(s)